10

ইউনুস

আয়াত সংখ্যা 109

0.00

24:36

الٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡحَکِیۡمِ ﴿۱﴾

আলিফ-লাম-রা। এগুলো হিকমতপূর্ণ কিতাবের আয়াত ।


اَکَانَ لِلنَّاسِ عَجَبًا اَنۡ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی رَجُلٍ مِّنۡہُمۡ اَنۡ اَنۡذِرِ النَّاسَ وَ بَشِّرِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنَّ لَہُمۡ قَدَمَ صِدۡقٍ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ ؕؔ قَالَ الۡکٰفِرُوۡنَ اِنَّ ا لَسٰحِرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۲﴾

মানুষের কাছে কি আশ্চর্য লাগছে যে, আমি ওহী পাঠিয়েছি তাদেরই মধ্য থেকে একজনের কাছে যেন তিনি মানুষকে ভয়ের কথা শুনিয়ে দেন এবং সুসংবাদ শুনিয়ে দেন ঈমানদারকে যে, তাদের জন্য সত্য মর্যাদা রয়েছে তাদের পরওয়ারদিগারের কাছে । কাফিররা বলতে লাগল, নি:সন্দেহে এ লোক প্রকাশ্য যাদুকর ।


اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ یُدَبِّرُ الۡاَمۡرَ ؕ مَا مِنۡ شَفِیۡعٍ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ اِذۡنِہٖ ؕ ذٰلِکُمُ اللّٰہُ رَبُّکُمۡ فَاعۡبُدُوۡہُ ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳﴾

নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্ যিনি তৈরি করেছেন আসমান ও যমীন ছয় দিনে, অত:পর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন । তিনি পরিচালনা করেন কাজের । কেউ সুপারিশ করতে পারবে না তবে তাঁর অনুমতির পর । আল্লাহ হচ্ছেন তোমাদের পালনকর্তা । অতএব, তোমরা তাঁরই ইবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না ?


اِلَیۡہِ مَرۡجِعُکُمۡ جَمِیۡعًا ؕ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقًّا ؕ اِنَّہٗ یَبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ بِالۡقِسۡطِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَہُمۡ شَرَابٌ مِّنۡ حَمِیۡمٍ وَّ عَذَابٌ اَلِیۡمٌۢ بِمَا کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ ﴿۴﴾

তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে তোমাদের সবাইকে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, তিনিই সৃষ্টি করেন প্রথমবার, পুনর্বার তৈরি করবেন তাদেরকে বদলা দেওয়ার জন্য, যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে ইনসাফের সাথে । আর যারা কাফির হয়েছে, তাদের পান করতে হবে ফুটন্ত পানি এবং ভোগ করতে হবে যন্ত্রনাদায়ক আযাব এ জন্য যে, তারা কুফরী করছিল ।


هُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ الشَّمۡسَ ضِیَآءً وَّ الۡقَمَرَ نُوۡرًا وَّ قَدَّرَہٗ مَنَازِلَ لِتَعۡلَمُوۡا عَدَدَ السِّنِیۡنَ وَ الۡحِسَابَ ؕ مَا خَلَقَ اللّٰہُ ذٰلِکَ اِلَّا بِالۡحَقِّ ۚ یُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۵﴾

তিনিই সেই মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সূর্যকে চমকদার, আর চন্দ্রকে আলো হিসেবে এবং অত:পর নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনমিলসমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব । আল্লাহ পাক এই সমস্ত কিছু এমনিই বানিয়ে দেননি—কিন্তু তদবীরের সাথে । তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সেই সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে ।


اِنَّ فِی اخۡتِلَافِ الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰہُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَّقُوۡنَ ﴿۶﴾

নিশ্চয়ই রাত-দিনের পরিবর্তনের মাঝে এবং যা কিছু তিনি সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীনে, সবই হলো নিদর্শন সেসব লোকের জন্য যারা ভয় করে ।


اِنَّ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا وَ رَضُوۡا بِالۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ اطۡمَاَنُّوۡا بِہَا وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ عَنۡ اٰیٰتِنَا غٰفِلُوۡنَ ۙ﴿۷﴾

অবশ্যই সেসব লোক আমার সাক্ষাৎ লাভের আশা রাখে না এবং পার্থিব জীবন নিয়েই উৎফুল্ল রয়েছে, তাতেই প্রশান্তি অনুভব করেছে এবং যারা আমার নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বেখবর ।


اُولٰٓئِکَ مَاۡوٰىہُمُ النَّارُ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۸﴾

এমন লোকদের ঠিকানা হলো আগুন সেসবের বদলা হিসেবে যা তারা অর্জন করছিল ।


اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَہۡدِیۡہِمۡ رَبُّہُمۡ بِاِیۡمَانِہِمۡ ۚ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمُ الۡاَنۡہٰرُ فِیۡ جَنّٰتِ النَّعِیۡمِ ﴿۹﴾

অবশ্য যেসব লোক ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে, তাদেরকে হিদায়েত করবেন তাদের পালনকর্তা, তাদের ঈমানের মাধ্যমে । তাদের তলদেশে প্রবাহিত হয় প্রস্রবণসমূহ সুখময় কাননকুঞ্জে ।


دَعۡوٰىہُمۡ فِیۡہَا سُبۡحٰنَکَ اللّٰہُمَّ وَ تَحِیَّتُہُمۡ فِیۡہَا سَلٰمٌ ۚ وَ اٰخِرُ دَعۡوٰىہُمۡ اَنِ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿٪۱۰﴾

সেখানে তাদের প্রার্থনা হলো ‘পবিত্র তোমার সত্তা হে আল্লাহ’ । আর শুভেচ্ছা হলো সালাম আর তাদের প্রার্থনার সমাপ্তি হয়, সমস্ত প্রশংসা ‘বিশ্বপালক আল্লাহর জন্য’ বলে ।


وَ لَوۡ یُعَجِّلُ اللّٰہُ لِلنَّاسِ الشَّرَّ اسۡتِعۡجَالَہُمۡ بِالۡخَیۡرِ لَقُضِیَ اِلَیۡہِمۡ اَجَلُہُمۡ ؕ فَنَذَرُ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ﴿۱۱﴾

আর যদি আল্লাহ তা’আলা মানুষকে যথাশীঘ্র অকল্যাণ পৌঁছে দেন, যত শীঘ্র তারা কল্যাণ কামনা করে, তাহলে তাদের আশাই শেষ করে দিতে হতো । সুতরাং যাদের মনে আমার সাক্ষাতের আশা নেই, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামিতে ব্যতিব্যস্ত ছেড়ে দিয়ে রাখি ।


وَ اِذَا مَسَّ الۡاِنۡسَانَ الضُّرُّ دَعَانَا لِجَنۡۢبِہٖۤ اَوۡ قَاعِدًا اَوۡ قَآئِمًا ۚ فَلَمَّا کَشَفۡنَا عَنۡہُ ضُرَّہٗ مَرَّ کَاَنۡ لَّمۡ یَدۡعُنَاۤ اِلٰی ضُرٍّ مَّسَّہٗ ؕ کَذٰلِکَ زُیِّنَ لِلۡمُسۡرِفِیۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲﴾

আর যখন মানুষ কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে, বসে, দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে । তারপর আমি যখন তা থেকে মুক্ত করে দেই, সে কষ্ট যখন চলে যায়, তখন মনে হয়, কখনো কোন কষ্টের সম্মুখীন হয়ে যেন আমাকে ডাকেইনি । এমনিভাবে মন:পুত হয়েছে নির্ভয় লোকদের যা তারা করেছে ।


وَ لَقَدۡ اَهْلَکۡنَا الۡقُرُوۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَمَّا ظَلَمُوۡا ۙ وَ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ وَ مَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا ؕ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡقَوۡمَ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۳﴾

অবশ্য তোমাদের পূর্বে বহু দলকে ধ্বংস করে দিয়েছি, তখন তারা জালিম হয়ে গেছে । অথচ রাসূল তাদের কাছেও এসব বিষয়ের প্রকৃষ্ট নির্দেশ নিয়ে এসেছিলেন । কিন্তু কিছুতেই তারা ঈমান আনল না । এমনিভাবে আমি শাস্তি দিয়ে থাকি পাপী সম্প্রদায়কে !


ثُمَّ جَعَلۡنٰکُمۡ خَلٰٓئِفَ فِی الۡاَرۡضِ مِنۡۢ بَعۡدِهُمۡ لِنَنۡظُرَ کَیۡفَ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴﴾

অত:পর আমি তোমাদেরকে যমীনে তাদের পর প্রতিনিধি বানিয়েছি যাতে দেখতে পারি তোমরা কি কর ।


وَ اِذَا تُتۡلٰی عَلَیۡهِمۡ اٰیَاتُنَا بَیِّنٰتٍ ۙ قَالَ الَّذِیۡنَ لَا یَرۡجُوۡنَ لِقَآءَنَا ائۡتِ بِقُرۡاٰنٍ غَیۡرِ هٰذَاۤ اَوۡ بَدِّلۡهُ ؕ قُلۡ مَا یَکُوۡنُ لِیۡۤ اَنۡ اُبَدِّلَهٗ مِنۡ تِلۡقَآیِٔ نَفۡسِیۡ ۚ اِنۡ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ ۚ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اِنۡ عَصَیۡتُ رَبِّیۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۵﴾

আর যখন তাদের কাছে আমার প্রকৃষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করা হয়, তখন সে সমস্ত লোক বলে, যাদের আশা নেই আমার সাক্ষাতের, নিয়ে এসো কোন কোরআন এটি ছাড়া, অথবা একে পরিবর্তিত করে দাও । তাহলে বলে দাও, একে নিজের পক্ষ থেকে পরিবর্তিত করা আমার কাজ নয় । আমি সে নির্দেশেরই আনুগত্য করি, যা আমার কাছে আসে । আমি যদি স্বীয় পরওয়ারদিগারের নাফরমানী করি, তবে কঠিন দিবসের আযাবের ভয় করি ।


قُلۡ لَّوۡ شَآءَ اللّٰہُ مَا تَلَوۡتُہٗ عَلَیۡکُمۡ وَ لَاۤ اَدۡرٰىکُمۡ بِہٖ ۫ۖ فَقَدۡ لَبِثۡتُ فِیۡکُمۡ عُمُرًا مِّنۡ قَبۡلِہٖ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۶﴾

বলে দাও, যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে আমি এটি তোমাদের সামনে পড়তাম না, আর নাইবা তিনি তোমাদেরকে অবহিত করতেন এ সম্পর্কে । কারণ আমি তোমাদের মাঝে ইতিপূর্বেও একটা বয়স অতিবাহিত করেছি । তারপরেও কি তোমরা চিন্তা করবে না ?


فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِہٖ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۱۷﴾

অত:পর তার চেয়ে বড় জালিম কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করেছে কিংবা তার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে অভিহিত করছে ? কস্মিনকালেও পাপীদের কোন কল্যাণ হয় না ।


وَ یَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مَا لَا یَضُرُّهُمۡ وَ لَا یَنۡفَعُهُمۡ وَ یَقُوۡلُوۡنَ هٰۤؤُلَآءِ شُفَعَآؤُنَا عِنۡدَ اللّٰهِ ؕ قُلۡ اَتُنَبِّـُٔوۡنَ اللّٰهَ بِمَا لَا یَعۡلَمُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ لَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ سُبۡحٰنَهٗ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۸﴾

আর উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুর, যা না তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারে, না লাভ এবং বলে , এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী । তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে ? তিনি পূত:পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছ ।


وَ مَا کَانَ النَّاسُ اِلَّاۤ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً فَاخۡتَلَفُوۡا ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ فِیۡمَا فِیۡہِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۱۹﴾

আর সমস্ত মানুষ একই উম্মতভূক্ত ছিল, পরে পৃথক হয়ে গেছে । আর একটি কথা যদি তোমার পরওয়ারদিগারের পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত না হয়ে যেত; তবে তারা যে বিষয়ে বিরোধ করছে তার মীমাংসা হয়ে যেত ।


وَ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ۚ فَقُلۡ اِنَّمَا الۡغَیۡبُ لِلّٰہِ فَانۡتَظِرُوۡا ۚ اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿٪۲۰﴾

বস্তুত তারা বলে, তার কাছে তার পরওয়ারদিগারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন ? বলে দাও, গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন ! আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম ।


وَ اِذَاۤ اَذَقۡنَا النَّاسَ رَحۡمَۃً مِّنۡۢ بَعۡدِ ضَرَّآءَ مَسَّتۡہُمۡ اِذَا لَہُمۡ مَّکۡرٌ فِیۡۤ اٰیَاتِنَا ؕ قُلِ اللّٰہُ اَسۡرَعُ مَکۡرًا ؕ اِنَّ رُسُلَنَا یَکۡتُبُوۡنَ مَا تَمۡکُرُوۡنَ ﴿۲۱﴾

আর যখন আমি আস্বাদন করাই স্বীয় রহমত সে কষ্টের পর, যা তাদের ভোগ করতে হয়েছিল, তখনই তারা আমার শক্তিমত্তার মাঝে নানা রকম ছলাকলা তৈরি করতে আরম্ভ করবে । আপনি বলে দিন, আল্লাহ সবচেয়ে দ্রুত কলা-কৌশল তৈরি করতে পারেন । নিশ্চয়ই আমাদের ফেরেশতারা লিখে রাখে তোমাদের ছল-চাতুরী ।


هُوَ الَّذِیۡ یُسَیِّرُکُمۡ فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ ؕ حَتّٰۤی اِذَا کُنۡتُمۡ فِی الۡفُلۡکِ ۚ وَ جَرَیۡنَ بِهِمۡ بِرِیۡحٍ طَیِّبَۃٍ وَّ فَرِحُوۡا بِهَا جَآءَتۡهَا رِیۡحٌ عَاصِفٌ وَّ جَآءَهُمُ الۡمَوۡجُ مِنۡ کُلِّ مَکَانٍ وَّ ظَنُّوۡۤا اَنَّهُمۡ اُحِیۡطَ بِهِمۡ ۙ دَعَوُا اللّٰهَ مُخۡلِصِیۡنَ لَهُ الدِّیۡنَ ۬ۚ لَئِنۡ اَنۡجَیۡتَنَا مِنۡ هٰذِهٖ لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۲۲﴾

তিনিই তোমাদেরকে ভ্রমণ করান স্থলে ও সাগরে । এমনকি যখন তোমরা নৌকাসমূহে আরোহণ করলে আর তা লোকজনকে অনুকূল হাওয়ায় বয়ে নিয়ে চলল এবং এতে তারা আনন্দিত হলো, নৌকাগুলোর উপর এল তীব্র বাতাস, আর সর্বদিক থেকে সেগুলোর উপর ঢেউ আসতে লাগল এবং তারা জানতে পারল যে তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে, তখন ডাকতে লাগল আল্লাহকে তার ইবাদতে নি:স্বার্থ হয়ে : যদি তুমি আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করে তোল, তাহলে নি:সন্দেহে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব ।


فَلَمَّاۤ اَنۡجٰہُمۡ اِذَا هُمۡ یَبۡغُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنَّمَا بَغۡیُکُمۡ عَلٰۤی اَنۡفُسِکُمۡ ۙ مَّتَاعَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۫ ثُمَّ اِلَیۡنَا مَرۡجِعُکُمۡ فَنُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۳﴾

তারপর যখন তাদেরকে আল্লাহ বাঁচিয়ে দিলেন, তখনই তারা পৃথিবীতে অনাচার করতে লাগল অন্যায়ভাবে । হে মানুষ শোন, তোমাদের অনাচার তোমাদেরই উপর পড়বে । পার্থিব জীবনের সুফল ভোগ করে নাও-অত:পর আমার নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে । তখন আমি বাতলে দেব, যা কিছু তোমরা করতে ।


اِنَّمَا مَثَلُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا کَمَآءٍ اَنۡزَلۡنٰہُ مِنَ السَّمَآءِ فَاخۡتَلَطَ بِہٖ نَبَاتُ الۡاَرۡضِ مِمَّا یَاۡکُلُ النَّاسُ وَ الۡاَنۡعَامُ ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَخَذَتِ الۡاَرۡضُ زُخۡرُفَہَا وَ ازَّیَّنَتۡ وَ ظَنَّ اَهْلُہَاۤ اَنَّہُمۡ قٰدِرُوۡنَ عَلَیۡہَاۤ ۙ اَتٰہَاۤ اَمۡرُنَا لَیۡلًا اَوۡ نَہَارًا فَجَعَلۡنٰہَا حَصِیۡدًا کَاَنۡ لَّمۡ تَغۡنَ بِالۡاَمۡسِ ؕ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۲۴﴾

পার্থিব জীবনের উদাহরণ তেমনি, যেমন আমি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করলাম, পরে তা মিলিত-সংমিশ্রিত হয়ে তা থেকে যমীনের শ্যামল উদ্ভিদ বেরিয়ে এল, যা মানুষ ও জীব-জন্তুরা খেয়ে থাকে । এমনকি যমীন যখন সৌন্দর্য-সুষমায় ভরে উঠল আর যমীনের অধিকর্তারা ভাবতে লাগল, এগুলো আমাদের হাতে আসবে, হঠাৎ করে তার উপর আমার নির্দেশ এল রাতে কিংবা দিনে, তখন সেগুলোকে কেটে স্তুপাকার করে দিল যেন কালও এখানে কোন আবাদ ছিল না । এমনিভাবে আমি খোলাখুলি বর্ণনা করে থাকি নিদর্শনসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য, যারা লক্ষ্য করে ।


وَ اللّٰہُ یَدۡعُوۡۤا اِلٰی دَارِ السَّلٰمِ ؕ وَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۲۵﴾

আর আল্লাহ শান্তি-নিরাপত্তার আলয়ের প্রতি আহবান জানান এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথ প্রদর্শন করেন ।


لِلَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوا الۡحُسۡنٰی وَ زِیَادَۃٌ ؕ وَ لَا یَرۡهَقُ وُجُوۡهَهُمۡ قَتَرٌ وَّ لَا ذِلَّۃٌ ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ هُمۡ فِیۡهَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۶﴾

যারা সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তারও চেয়ে বেশি । আর তাদের মুখমন্ডলকে আবৃত করবে না মালিনতা কিংবা অপমান । তারাই হলো জান্নাতবাসী, এতেই তারা বসবাস করতে থাকবে অনন্তকাল ।


وَ الَّذِیۡنَ کَسَبُوا السَّیِّاٰتِ جَزَآءُ سَیِّئَۃٍۭ بِمِثۡلِہَا ۙ وَ تَرۡہَقُہُمۡ ذِلَّۃٌ ؕ مَا لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ عَاصِمٍ ۚ کَاَنَّمَاۤ اُغۡشِیَتۡ وُجُوۡہُہُمۡ قِطَعًا مِّنَ الَّیۡلِ مُظۡلِمًا ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ هُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۷﴾

আর যারা সঞ্চয় করেছে অকল্যাণ ও অসৎ কর্মের বদলায় সে পরিমাণ অপমান তাদের চেহারাকে আবৃত করে ফেলবে । কেউ নেই তাদেরকে বাঁচাতে পারে আল্লাহর হাত থেকে । তাদের মুখমন্ডল যেন ঢেকে দেয়া হয়েছে আঁধার রাতের টুকরো দিয়ে । এরা হলো দোযখবাসী । এরা এতেই থাকতে পারবে অনন্তকাল ।


وَ یَوۡمَ نَحۡشُرُهُمۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ نَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡا مَکَانَکُمۡ اَنۡتُمۡ وَ شُرَکَآؤُکُمۡ ۚ فَزَیَّلۡنَا بَیۡنَہُمۡ وَ قَالَ شُرَکَآؤُهُمۡ مَّا کُنۡتُمۡ اِیَّانَا تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۲۸﴾

আর যেদিন আমি তাদের সবাইকে সমবেত করব; আর যারা শিরক করত তাদেরকে বলব : তোমরা এবং তোমাদের শরীকরা নিজ নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে যাও—অত:পর তাদেরকে পারস্পরিক বিচ্ছিন্ন করে দেব , তখন তাদের শরীকরা বলবে তোমরা তো আমাদের উপাসনা-বন্দেগী করনি ।


فَکَفٰی بِاللّٰہِ شَہِیۡدًۢا بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکُمۡ اِنۡ کُنَّا عَنۡ عِبَادَتِکُمۡ لَغٰفِلِیۡنَ ﴿۲۹﴾

বস্তুত আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসেবে যথেষ্ট । আমরা তোমাদের বন্দেগী সম্পর্কে জানতাম না ।


هُنَالِکَ تَبۡلُوۡا کُلُّ نَفۡسٍ مَّاۤ اَسۡلَفَتۡ وَ رُدُّوۡۤا اِلَی اللّٰہِ مَوۡلٰىہُمُ الۡحَقِّ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿٪۳۰﴾

সেখানে প্রত্যেকে যাচাই করে নিতে পারবে যা কিছু সে ইতিপূর্বে করেছিল এবং আল্লাহর প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে যিনি প্রকৃত মালিক আর তাদের কাছ থেকে দূরে যেতে থাকবে, যারা মিথ্যা বলত ।


قُلۡ مَنۡ یَّرۡزُقُکُمۡ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ اَمَّنۡ یَّمۡلِکُ السَّمۡعَ وَ الۡاَبۡصَارَ وَ مَنۡ یُّخۡرِجُ الۡحَیَّ مِنَ الۡمَیِّتِ وَ یُخۡرِجُ الۡمَیِّتَ مِنَ الۡحَیِّ وَ مَنۡ یُّدَبِّرُ الۡاَمۡرَ ؕ فَسَیَقُوۡلُوۡنَ اللّٰہُ ۚ فَقُلۡ اَفَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۳۱﴾

তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক ? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন ? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা ? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ । তখন তুমি বলো, তারপরেও ভয় করছ না ?


فَذٰلِکُمُ اللّٰہُ رَبُّکُمُ الۡحَقُّ ۚ فَمَا ذَا بَعۡدَ الۡحَقِّ اِلَّا الضَّلٰلُ ۚۖ فَاَنّٰی تُصۡرَفُوۡنَ ﴿۳۲﴾

অতএব, এ আল্লাহই তোমাদের প্রকৃত পালনকর্তা । আর সত্য প্রকাশের পরে ( উদ্ভাস্ত ঘোরার মাঝে ) কি রয়েছে গোমরাহী ছাড়া—সুতরাং কোথায় ঘুরছে ?


کَذٰلِکَ حَقَّتۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ عَلَی الَّذِیۡنَ فَسَقُوۡۤا اَنَّہُمۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۳۳﴾

এমনিভাবে প্রমাণিত হয়ে গেছে তোমার পরওয়ারদিগারের বাণী সেসব নাফরমানের ব্যাপারে যে, এরা ঈমান আনবে না ।


قُلۡ هَلۡ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ فَاَنّٰی تُؤۡفَکُوۡنَ ﴿۳۴﴾

বল, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মাঝে যে সৃষ্টিকে পয়দা করতে পারে এবং আবার জীবিত করতে পারে ? বল, আল্লাহই প্রথমবার সৃষ্টি করেন এবং অত:পর তার পুনরুদ্ভব করবেন । অতএব, কোথায় ঘুরপাক খাচ্ছ ?


قُلۡ هَلۡ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَہۡدِیۡ لِلۡحَقِّ ؕ اَفَمَنۡ یَّہۡدِیۡۤ اِلَی الۡحَقِّ اَحَقُّ اَنۡ یُّتَّبَعَ اَمَّنۡ لَّا یَہِدِّیۡۤ اِلَّاۤ اَنۡ یُّہۡدٰی ۚ فَمَا لَکُمۡ ۟ کَیۡفَ تَحۡکُمُوۡنَ ﴿۳۵﴾

জিজ্ঞেস কর, আছে কি কেউ তোমাদের শরীকদের মধ্যে যে সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করবে ? বল, আল্লাহই সত্য-সঠিক পথ প্রদর্শন করেন । সুতরাং এমন যে লোক সঠিক পথ দেখাবে তার কথা মান্য করা কিংবা যে লোক নিজে নিজে পথ খুঁজে পায় না, তাকে পথ দেখানো কর্তব্য । অতএব, তোমাদের কি হলো, কেমন তোমাদের বিচার ?


وَ مَا یَتَّبِعُ اَکۡثَرُهُمۡ اِلَّا ظَنًّا ؕ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۳۶﴾

বস্তুত তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ অনুমানের উপর চলে, অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না । আল্লাহ ভাল করেই জানেন, তারা যা কিছু করে ।


وَ مَا کَانَ هٰذَا الۡقُرۡاٰنُ اَنۡ یُّفۡتَرٰی مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَ لٰکِنۡ تَصۡدِیۡقَ الَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡهِ وَ تَفۡصِیۡلَ الۡکِتٰبِ لَا رَیۡبَ فِیۡهِ مِنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۟۳۷﴾

আর কোরআন সে জিনিস নয় যে, আল্লাহ ব্যতীত কেউ তা বানিয়ে নেবে । অবশ্য এটি পূর্ববর্তী কালামের সত্যায়ন করে এবং সে সমস্ত বিষয়ের বিশ্লেষণ দান করে যা তোমার প্রতি দেয়া হয়েছে, যাতে কোন সন্দেহ নেই—তোমার বিশ্বপালনকর্তার পক্ষ থেকে ।


اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِسُوۡرَۃٍ مِّثۡلِہٖ وَ ادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۳۸﴾

মানুষ কি বলে যে, এটি বানিয়ে এনেছ ? বলে দাও, তোমরা নিয়ে এসো একটিই সূরা আর ডেকে নাও, যাদেরকে নিতে সক্ষম হও আল্লাহ ব্যতীত, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক ।


بَلۡ کَذَّبُوۡا بِمَا لَمۡ یُحِیۡطُوۡا بِعِلۡمِہٖ وَ لَمَّا یَاۡتِہِمۡ تَاۡوِیۡلُہٗ ؕ کَذٰلِکَ کَذَّبَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۳۹﴾

কিন্তু কথা হলো এই যে, তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে আরম্ভ করেছে যাকে বুঝতে তারা অক্ষম । অথচ এখনো এর বিশ্লেষণ আসেনি । এমনিভাবে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তাদের পূর্ববর্তীরা । অতএব, লক্ষ্য করে দেখ, কেমন হয়েছে পরিণতি !


وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یُّؤۡمِنُ بِہٖ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ لَّا یُؤۡمِنُ بِہٖ ؕ وَ رَبُّکَ اَعۡلَمُ بِالۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿٪۴۰﴾

আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ কোরআনকে বিশ্বাস করবে এবং কেউ কেউ বিশ্বাস করবে না । বস্তুত তোমার পরওয়ারদিগার যথার্থই জানেন দুরাচারদেরকে ।


وَ اِنۡ کَذَّبُوۡکَ فَقُلۡ لِّیۡ عَمَلِیۡ وَ لَکُمۡ عَمَلُکُمۡ ۚ اَنۡتُمۡ بَرِیۡٓـــُٔوۡنَ مِمَّاۤ اَعۡمَلُ وَ اَنَا بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۴۱﴾

আর যদি তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তবে বল, আমার জন্য আমার কর্ম, আর তোমাদের জন্য তোমাদের কর্ম । তোমাদের দায়দায়িত্ব নেই আমার কর্মের উপর এবং আমার দায়দায়িত্ব নেই তোমরা যা কর সেজন্য ।


وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّسۡتَمِعُوۡنَ اِلَیۡکَ ؕ اَفَاَنۡتَ تُسۡمِعُ الصُّمَّ وَ لَوۡ کَانُوۡا لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۴۲﴾

তাদের কেউ কেউ কান রাখে তোমাদের প্রতি; তুমি বধিরদেরকে কি শোনাবে যদি তাদের বিবেক-বুদ্ধি না থাকে ।


وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّنۡظُرُ اِلَیۡکَ ؕ اَفَاَنۡتَ تَہۡدِی الۡعُمۡیَ وَ لَوۡ کَانُوۡا لَا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۴۳﴾

আবার তাদের মধ্যে কেউ কেউ তোমাদের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে; তুমি অন্ধদেরকে কি পথ দেখাবে যদি তারা মোটেও দেখতে না পারে ।


اِنَّ اللّٰہَ لَا یَظۡلِمُ النَّاسَ شَیۡئًا وَّ لٰکِنَّ النَّاسَ اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۴۴﴾

আল্লাহ জুলুম করেন না মানুষের উপর, বরং মানুষ নিজেই নিজের উপর জুলুম করে ।


وَ یَوۡمَ یَحۡشُرُهُمۡ کَاَنۡ لَّمۡ یَلۡبَثُوۡۤا اِلَّا سَاعَۃً مِّنَ النَّہَارِ یَتَعَارَفُوۡنَ بَیۡنَہُمۡ ؕ قَدۡ خَسِرَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِلِقَآءِ اللّٰہِ وَ مَا کَانُوۡا مُہۡتَدِیۡنَ ﴿۴۵﴾

আর যেদিন তাদেরকে সমবেত করা হবে, যেন তারা অবস্থান করেনি, তবে দিনের একদন্ড । একজন অপরজনকে চিনবে । নি:সন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতকে এবং সরলপথে আসেনি ।


وَ اِمَّا نُرِیَنَّکَ بَعۡضَ الَّذِیۡ نَعِدُهُمۡ اَوۡ نَتَوَفَّیَنَّکَ فَاِلَیۡنَا مَرۡجِعُہُمۡ ثُمَّ اللّٰہُ شَہِیۡدٌ عَلٰی مَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۴۶﴾

আর যদি আমি দেখাই তোমাকে সে ওয়াদাসমূহের মধ্য থেকে কোন কিছু যা আমি তাদের সাথে করেছি, অথবা তোমাকে মৃত্যুদান করি, যাইহোক, আমার কাছেই তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে । বস্তুত আল্লাহ সে সমস্ত কর্মের সাক্ষী যা তারা করে ।


وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ رَّسُوۡلٌ ۚ فَاِذَا جَآءَ رَسُوۡلُہُمۡ قُضِیَ بَیۡنَہُمۡ بِالۡقِسۡطِ وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۴۷﴾

আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একেকজন রাসূল রয়েছে । যখন তাদের কাছে তাদের ন্যায়দন্ডসহ উপস্থিত হলো, তখন আর তাদের উপর জুলুম হয় না ।


وَ یَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی هٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۴۸﴾

তারা আরো বলে, এ ওয়াদা কবে আসবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক ?


قُلۡ لَّاۤ اَمۡلِکُ لِنَفۡسِیۡ ضَرًّا وَّ لَا نَفۡعًا اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ ؕ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ؕ اِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ فَلَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّ لَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۴۹﴾

তুমি বল, আমি আমার নিজের ক্ষতি কিংবা লাভেরও মালিক নই, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন । প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই একেকটি ওয়াদা রয়েছে, যখন তাদের সে ওয়াদা এসে পৌঁছে যাবে, তখন না একদন্ড পেছনে সরতে পারবে, না সামনে ফসকাতে পারবে ।


قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ اَتٰىکُمۡ عَذَابُہٗ بَیَاتًا اَوۡ نَہَارًا مَّاذَا یَسۡتَعۡجِلُ مِنۡہُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۵۰﴾

তুমি বল, আচ্ছা দেখ তো দেখি, যদি তোমাদের উপর তাঁর আযাব রাতারাতি অথবা দিনের বেলায় এসে পৌঁছে যায়, তবে এর আগে পাপীরা কি করবে ?


اَثُمَّ اِذَا مَا وَقَعَ اٰمَنۡتُمۡ بِہٖ ؕ آٰلۡـٰٔنَ وَ قَدۡ کُنۡتُمۡ بِہٖ تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ ﴿۵۱﴾

তাহলে কি আযাব সংঘটিত হয়ে যাবার পর এর প্রতি বিশ্বাস করবে ? এখন স্বীকার করলে ? অথচ তোমরা এরই তাকাদা করতে ?


ثُمَّ قِیۡلَ لِلَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ذُوۡقُوۡا عَذَابَ الۡخُلۡدِ ۚ هَلۡ تُجۡزَوۡنَ اِلَّا بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡسِبُوۡنَ ﴿۵۲﴾

অত:পর বলা হবে গোনাহগারদেরকে, ভোগ করতে থাক অনন্ত আযাব-তোমরা যা কিছু করতে তার তাই প্রতিফল ।


وَ یَسۡتَنۡۢبِئُوۡنَکَ اَحَقٌّ هُوَ ؕؔ قُلۡ اِیۡ وَ رَبِّیۡۤ اِنَّہٗ لَحَقٌّ ۚؕؔ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ ﴿٪۵۳﴾

আর তোমার কাছে সংবাদ জিজ্ঞেস করে এটা কি সত্য ? বলে দাও, অবশ্যই আমার পরওয়ারদিগারের কসম এটা সত্য । আর তোমরা পরিশ্রান্ত করে দিতে পারবে না ।


وَ لَوۡ اَنَّ لِکُلِّ نَفۡسٍ ظَلَمَتۡ مَا فِی الۡاَرۡضِ لَافۡتَدَتۡ بِہٖ ؕ وَ اَسَرُّوا النَّدَامَۃَ لَمَّا رَاَوُا الۡعَذَابَ ۚ وَ قُضِیَ بَیۡنَہُمۡ بِالۡقِسۡطِ وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۵۴﴾

বস্তুত যদি প্রত্যেক গোনাহগারের কাছে এত পরিমাণ থাকে যা আছে সমগ্র যমীনের মাঝে, আর অবশ্যই যদি সেগুলো নিজের মুক্তির বিনিময়ে দিতে চাইবে আর গোপনে গোপনে অনুতাপ করবে, যখন আযাব দেখবে । বস্তুত তাদের জন্য সিদ্ধান্ত হবে ন্যায়সঙ্গত এবং তাদের উপর জুলুম হবে না ।


اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۵۵﴾

শুনে রাখ; যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে সবই আল্লাহর । শুনে রাখ, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য । তবে অনেকেই জানে না ।


هُوَ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۵۶﴾

তিনিই জীবন ও মরণ দান করেন এবং তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে ।


یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ مَّوۡعِظَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ شِفَآءٌ لِّمَا فِی الصُّدُوۡرِ ۬ۙ وَ هُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۵۷﴾

হে মানবকূল, তোমাদের কাছে উপদেশবাণী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদিগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হিদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য ।


قُلۡ بِفَضۡلِ اللّٰہِ وَ بِرَحۡمَتِہٖ فَبِذٰلِکَ فَلۡیَفۡرَحُوۡا ؕ هُوَ خَیۡرٌ مِّمَّا یَجۡمَعُوۡنَ ﴿۵۸﴾

বল, আল্লাহর দয়া ও মেহেরবাণীতে । সুতরাং এরই প্রতি তাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিত । এটিই উত্তম সে সমুদয় থেকে যা সঞ্চয় করছ ।


قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ مَّاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ لَکُمۡ مِّنۡ رِّزۡقٍ فَجَعَلۡتُمۡ مِّنۡہُ حَرَامًا وَّ حَلٰلًا ؕ قُلۡ آٰللّٰہُ اَذِنَ لَکُمۡ اَمۡ عَلَی اللّٰہِ تَفۡتَرُوۡنَ ﴿۵۹﴾

বল, আচ্ছা নিজেই লক্ষ্য করে দেখ, যা কিছু আল্লাহ তোমাদের জন্য রিযিক হিসেবে অবতীর্ণ করেছেন, তোমরা সেগুলোর মধ্য থেকে কোনটাকে হারাম আর কোনটাকে হালাল সাব্যস্ত করেছ ? বল, তোমাদেরকে কি আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, নাকি আল্লাহর উপর অপবাদ আরোপ করছ ?


وَ مَا ظَنُّ الَّذِیۡنَ یَفۡتَرُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَشۡکُرُوۡنَ ﴿٪۶۰﴾

আর আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপকারীদের কি ধারণা কিয়ামত সম্পর্কে ? আল্লাহ তো মানুষের প্রতি অনুগ্রহই করেন, কিন্তু অনেকেই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না ।


وَ مَا تَکُوۡنُ فِیۡ شَاۡنٍ وَّ مَا تَتۡلُوۡا مِنۡہُ مِنۡ قُرۡاٰنٍ وَّ لَا تَعۡمَلُوۡنَ مِنۡ عَمَلٍ اِلَّا کُنَّا عَلَیۡکُمۡ شُہُوۡدًا اِذۡ تُفِیۡضُوۡنَ فِیۡہِ ؕ وَ مَا یَعۡزُبُ عَنۡ رَّبِّکَ مِنۡ مِّثۡقَالِ ذَرَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فِی السَّمَآءِ وَ لَاۤ اَصۡغَرَ مِنۡ ذٰلِکَ وَ لَاۤ اَکۡبَرَ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶۱﴾

বস্তুত যেকোন কাজই তোমরা কর অথচ আমি তোমাদের নিকটে উপস্থিত থাকি যখন তোমরা তাতে আত্মনিয়োগ কর। আর তোমার পরওয়ারদিগার থেকে গোপন থাকে না একটি কণাও যমীনের এবং না আসমানের । না এর চেয়ে ক্ষুদ্র কোন কিছু আছে, না বড় যা এই প্রকৃষ্ট কিতাবে নেই ।


اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰہِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿ۚۖ۶۲﴾

মনে রেখো, যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের না কোন ভয়ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে ।


الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿ؕ۶۳﴾

যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে ।


لَہُمُ الۡبُشۡرٰی فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ فِی الۡاٰخِرَۃِ ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِکَلِمٰتِ اللّٰہِ ؕ ذٰلِکَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿ؕ۶۴﴾

তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে । আল্লাহর কথার কখনো হেরফের হয় না । এটাই হলো মহা সফলতা ।


وَ لَا یَحۡزُنۡکَ قَوۡلُہُمۡ ۘ اِنَّ الۡعِزَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ؕ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۶۵﴾

আর তাদের কথায় দু:খ নিয়ো না । আসলে সমস্ত ক্ষমতা আল্লাহর । তিনিই শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ ।


اَلَاۤ اِنَّ لِلّٰہِ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا یَتَّبِعُ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ شُرَکَآءَ ؕ اِنۡ یَّـتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ هُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ ﴿۶۶﴾

শুনছ, আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর । আর এরা যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে শরীকদের উপাসনার পেছনে পড়ে আছে—তা আসলে কিছুই নয়; এরা নিজেরই কল্পনার পেছনে পড়ে রয়েছে এবং এছাড়া আর কিছু নয় যে, এরা বুদ্ধি খাটাচ্ছে ।


هُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ الَّیۡلَ لِتَسۡکُنُوۡا فِیۡہِ وَ النَّہَارَ مُبۡصِرًا ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّسۡمَعُوۡنَ ﴿۶۷﴾

তিনি তোমাদের জন্য তৈরি করেছেন রাত, যাতে করে তোমরা তাতে প্রশান্তি লাভ করতে পার, আর দিন দিয়েছেন দর্শন করার জন্য । নি:সন্দেহে এতে নিদর্শন রয়েছে সেসব লোকের জন্য যারা শ্রবণ করে ।


قَالُوا اتَّخَذَ اللّٰہُ وَلَدًا سُبۡحٰنَہٗ ؕ هُوَ الۡغَنِیُّ ؕ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ اِنۡ عِنۡدَکُمۡ مِّنۡ سُلۡطٰنٍۭ بِہٰذَا ؕ اَتَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۸﴾

তারা বলে, আল্লাহ পুত্র সাব্যস্ত করে নিয়েছেন—তিনি পবিত্র । তিনি অমুখাপেক্ষী । যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে সবই তাঁর । তোমাদের কাছে তার কোন সনদ নেই । কেন তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ কর—যার কোন সনদই তোমাদের কাছে নেই ?


قُلۡ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَفۡتَرُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ الۡکَذِبَ لَا یُفۡلِحُوۡنَ ﴿ؕ۶۹﴾

বলে দাও, যারা এরুপ করে তারা অব্যাহতি পায় না ।


مَتَاعٌ فِی الدُّنۡیَا ثُمَّ اِلَیۡنَا مَرۡجِعُہُمۡ ثُمَّ نُذِیۡقُہُمُ الۡعَذَابَ الشَّدِیۡدَ بِمَا کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ ﴿٪۷۰﴾

পার্থিব জীবনে সামান্যই লাভ, অত:পর আমার নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে । তখন আমি তাদেরকে আস্বাদন করাব কঠিন আযাব—তাদেরই কৃত কূফরীর বদলাতে ।


وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ نُوۡحٍ ۘ اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖ یٰقَوۡمِ اِنۡ کَانَ کَبُرَ عَلَیۡکُمۡ مَّقَامِیۡ وَ تَذۡکِیۡرِیۡ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَعَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡتُ فَاَجۡمِعُوۡۤا اَمۡرَکُمۡ وَ شُرَکَآءَکُمۡ ثُمَّ لَا یَکُنۡ اَمۡرُکُمۡ عَلَیۡکُمۡ غُمَّۃً ثُمَّ اقۡضُوۡۤا اِلَیَّ وَ لَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۷۱﴾

আর তাদেরকে শুনিয়ে দাও নূহের অবস্থা—যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমাদের মাঝে আমার অবস্থিতি এবং আল্লাহর আয়াতসমূহের মাধ্যমে নছীহত করা ভারী বলে মনে হয়ে থাকে, তবে আমি আল্লাহর উপর ভরসা করছি ! এখন তোমরা সবাই মিলে নিজেদের কর্ম সাব্যস্ত কর এবং এতে তোমাদের শরীকদেরকেও সমবেত করে নাও, যাতে তোমাদের মাঝে নিজেদের কাজের ব্যাপারে কোন সন্দেহ-সংশয় না থাকে । অত:পর আমার সম্পর্কে যা কিছু করার করে ফেল এবং আমাকে অব্যাহতি দিও না ।


فَاِنۡ تَوَلَّیۡتُمۡ فَمَا سَاَلۡتُکُمۡ مِّنۡ اَجۡرٍ ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ ۙوَ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۷۲﴾

তারপরও যদি বিমুখতা অবলম্বন কর, তবে আমি তোমাদের কাছে কোন রকম বিনিময় কামনা করি না । আমার বিনিময় হলো আল্লাহর দায়িত্বে । আর আমার প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন আমি আনুগত্য অবলম্বন করি ।


فَکَذَّبُوۡہُ فَنَجَّیۡنٰہُ وَ مَنۡ مَّعَہٗ فِی الۡفُلۡکِ وَ جَعَلۡنٰہُمۡ خَلٰٓئِفَ وَ اَغۡرَقۡنَا الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُنۡذَرِیۡنَ ﴿۷۳﴾

তারপরও এরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল । সুতরাং তাকে এবং তার সাথে নৌকায় যারা ছিল তাদেরকে বাঁচিয়ে নিয়েছি এবং যথাস্থানে আবাদ করেছি । আর তাদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছি; যারা আমার কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে । সুতরাং লক্ষ্য কর, কেমন পরিণতি ঘটেছে তাদের যাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল ।


ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِہٖ رُسُلًا اِلٰی قَوۡمِہِمۡ فَجَآءُوۡهُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ فَمَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا بِمَا کَذَّبُوۡا بِہٖ مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَذٰلِکَ نَطۡبَعُ عَلٰی قُلُوۡبِ الۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿۷۴﴾

অনন্তর আমি নূহের পরে বহু নবী-রাসূল পাঠিয়েছি তাদের সম্প্রদায়ের প্রতি । তারপর তাদের কাছে তারা প্রকাশ্য দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে, কিন্তু তাদের দ্বারা এমনটি হয়নি যে, ঈমান আনবে সে ব্যাপারে, যাকে তারা ইতিপূর্বে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল । এভাবেই আমি মোহর এঁটে দেই সীমালংঘনকারীদের অন্তরসমূহের উপর ।


ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِهِمۡ مُّوۡسٰی وَ هٰرُوْنَ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ بِاٰیٰتِنَا فَاسۡتَکۡبَرُوۡا وَ کَانُوۡا قَوۡمًا مُّجۡرِمِیۡنَ ﴿۷۵﴾

অত:পর তাদের পেছনে পাঠিয়েছি আমি মূসা ও হারুনকে ফিরাউন ও তার সর্দারের প্রতি স্বীয় নির্দেশাবলী সহকারে । অথচ তারা অহংকার করতে আরম্ভ করেছে ।


فَلَمَّا جَآءَهُمُ الۡحَقُّ مِنۡ عِنۡدِنَا قَالُوۡۤا اِنَّ هٰذَا لَسِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷۶﴾

বস্তুত তারা ছিল গোনাহগার । তারপর আমার পক্ষ থেকে যখন তাদের কাছে সত্য বিষয় উপস্থিত হলো, তখন বলতে লাগলো, এগুলো তো প্রকাশ্য যাদু ।


قَالَ مُوۡسٰۤی اَتَقُوۡلُوۡنَ لِلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَکُمۡ ؕ اَسِحۡرٌ هٰذَا ؕ وَ لَا یُفۡلِحُ السّٰحِرُوۡنَ ﴿۷۷﴾

মূসা বলল, সত্যের ব্যাপারে একথা বলছ, তা তোমাদের কাছে পৌঁছার পর ? এ কি যাদু ? অথচ যারা যাদুকর, তারা সফল হতে পারে না ।


قَالُوۡۤا اَجِئۡتَنَا لِتَلۡفِتَنَا عَمَّا وَجَدۡنَا عَلَیۡہِ اٰبَآءَنَا وَ تَکُوۡنَ لَکُمَا الۡکِبۡرِیَآءُ فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا نَحۡنُ لَکُمَا بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۷۸﴾

তারা বলল, তুমি কি আমাদেরকে সে পথ থেকে ফিরিয়ে দিতে এসেছ যাতে আমরা পেয়েছি আমাদের বাপ-দাদাদেরকে ? আর যাতে তোমরা দুইজন এদেশের সর্দারী পেয়ে যেতে পার ? আমরা তোমাদেরকে কিছুতেই মানব না ।


وَ قَالَ فِرۡعَوۡنُ ائۡتُوۡنِیۡ بِکُلِّ سٰحِرٍ عَلِیۡمٍ ﴿۷۹﴾

আর ফিরাউন বলল, আমার কাছে নিয়ে এস সুদক্ষ যাদুকরদেরকে ।


فَلَمَّا جَآءَ السَّحَرَۃُ قَالَ لَہُمۡ مُّوۡسٰۤی اَلۡقُوۡا مَاۤ اَنۡتُمۡ مُّلۡقُوۡنَ ﴿۸۰﴾

তারপর যখন যাদুকররা এল, মূসা তাদেরকে বলল, নিক্ষেপ কর, তোমরা যা কিছু নিক্ষেপ করে থাক ।


فَلَمَّاۤ اَلۡقَوۡا قَالَ مُوۡسٰی مَا جِئۡتُمۡ بِہِ ۙ السِّحۡرُ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَیُبۡطِلُہٗ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُصۡلِحُ عَمَلَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۸۱﴾

অত:পর যখন তারা নিক্ষেপ করল, মূসা বলল, যা কিছু তোমরা এনেছ তা সবই যাদু-এবার আল্লাহ এসব ভঙ্কর করে দিচ্ছেন । নি:সন্দেহে আল্লাহ দূস্কর্মদের কর্মকে সুষ্ঠতা দান করেন না ।


وَ یُحِقُّ اللّٰہُ الۡحَقَّ بِکَلِمٰتِہٖ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿٪۸۲﴾

আল্লাহ সত্যকে সত্য পরিণত করেন স্বীয় নির্দেশে যদিও পাপীদের তা মন:পূত নয় ।


فَمَاۤ اٰمَنَ لِمُوۡسٰۤی اِلَّا ذُرِّیَّۃٌ مِّنۡ قَوۡمِہٖ عَلٰی خَوۡفٍ مِّنۡ فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہِمۡ اَنۡ یَّفۡتِنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّ فِرۡعَوۡنَ لَعَالٍ فِی الۡاَرۡضِ ۚ وَ اِنَّہٗ لَمِنَ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۸۳﴾

আর কেউ ঈমান আনল না মূসার প্রতি, তাঁর কওমের কতিপয় বালক ছাড়া—ফিরাউন ও তার সর্দারদের ভয়ে যে, এরা না আবার কোন বিপদে ফেলে দেয় । ফিরাউন দেশময় কর্তৃত্বের শিখরে আরোহণ করেছিল । আর সে তার হাত ছেড়ে রেখেছিল ।


وَ قَالَ مُوۡسٰی یٰقَوۡمِ اِنۡ کُنۡتُمۡ اٰمَنۡتُمۡ بِاللّٰہِ فَعَلَیۡہِ تَوَکَّلُوۡۤا اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّسۡلِمِیۡنَ ﴿۸۴﴾

আর মূসা বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা যদি আল্লাহর উপর ঈমান এনে থাক, তবে তারই উপর ভরসা কর যদি তোমরা ফরমাবরজারও হয়ে থাক ।


فَقَالُوۡا عَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡنَا ۚ رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا فِتۡنَۃً لِّلۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۸۵﴾

তখন তারা বলল, আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করেছি । হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের উপর এ জালিম কওমের শক্তি পরীক্ষা করো না ।


وَ نَجِّنَا بِرَحۡمَتِکَ مِنَ الۡقَوۡمِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۸۶﴾

আর আমাদেরকে অনূগ্রহ করে ছাড়িয়ে দাও এই কাফিরদের কবল থেকে ।


وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰی وَ اَخِیۡہِ اَنۡ تَبَوَّاٰ لِقَوۡمِکُمَا بِمِصۡرَ بُیُوۡتًا وَّ اجۡعَلُوۡا بُیُوۡتَکُمۡ قِبۡلَۃً وَّ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۸۷﴾

আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইদের প্রতি যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাসস্থান নির্ধারণ কর । আর তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কিবলামুখী করে এবং নামায কায়েম কর আর যারা ঈমানদার তাদেরকে সুসংবাদ দান কর ।


وَ قَالَ مُوۡسٰی رَبَّنَاۤ اِنَّکَ اٰتَیۡتَ فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَاَہٗ زِیۡنَۃً وَّ اَمۡوَالًا فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ۙ رَبَّنَا لِیُضِلُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِکَ ۚ رَبَّنَا اطۡمِسۡ عَلٰۤی اَمۡوَالِہِمۡ وَ اشۡدُدۡ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ فَلَا یُؤۡمِنُوۡا حَتّٰی یَرَوُا الۡعَذَابَ الۡاَلِیۡمَ ﴿۸۸﴾

মূসা বলল, হে আমার পরওয়ারদিগার, তুমি ফিরাউনকে এবং তার সর্দারদেরকে পার্থিব জীবনের আড়ম্বর দান করেছ এবং সম্পদ দান করেছ—হে আমার পরওয়ারদিগার, এ জন্যই যে তারা তোমার পথ থেকে বিপথগামী করবে ! হে আমার পরওয়ারদিগার, তাদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দাও এবং তাদের অন্তরগুলোকে কঠোর করে দাও যাতে করে তারা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনে যতক্ষণ না বেদনাদায়ক আযাব প্রত্যক্ষ করে দেয় ।


قَالَ قَدۡ اُجِیۡبَتۡ دَّعۡوَتُکُمَا فَاسۡتَقِیۡمَا وَ لَا تَتَّبِعٰٓنِّ سَبِیۡلَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۸۹﴾

বললেন, তোমাদের দোয়া মঞ্জর হয়েছে । অতএব, তোমরা দু’জন অটল থাক এবং তাদের পথে চলো না যারা অজ্ঞ ।


وَ جٰوَزۡنَا بِبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ الۡبَحۡرَ فَاَتۡبَعَہُمۡ فِرۡعَوۡنُ وَ جُنُوۡدُہٗ بَغۡیًا وَّ عَدۡوًا ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَدۡرَکَہُ الۡغَرَقُ ۙ قَالَ اٰمَنۡتُ اَنَّہٗ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا الَّذِیۡۤ اٰمَنَتۡ بِہٖ بَنُوۡۤا اِسۡرَآءِیۡلَ وَ اَنَا مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۹۰﴾

আর বনী ইসরাঈলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী । তারপর তাদের পশ্চদ্ধবন করেছে ফিরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশ্যে । এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি যে, কোন মা’বুদ নেই তাঁকে ছাড়া যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী ইসরাঈলরা । বস্তুত আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত ।


آٰلۡـٰٔنَ وَ قَدۡ عَصَیۡتَ قَبۡلُ وَ کُنۡتَ مِنَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۹۱﴾

এখন এ কথা বলছ ! অথচ তুমি ইতিপূর্বে নাফরমানী করছিলে । এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে ।


فَالۡیَوۡمَ نُنَجِّیۡکَ بِبَدَنِکَ لِتَکُوۡنَ لِمَنۡ خَلۡفَکَ اٰیَۃً ؕ وَ اِنَّ کَثِیۡرًا مِّنَ النَّاسِ عَنۡ اٰیٰتِنَا لَغٰفِلُوۡنَ ﴿٪۹۲﴾

অতএব আজকের দিনে বাঁচিয়ে দিচ্ছি আমি তোমার দেহকে যাতে তোমার পশ্চাৎবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে । আর নি:সন্দেহে বহু লোক আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না ।


وَ لَقَدۡ بَوَّاۡنَا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ مُبَوَّاَ صِدۡقٍ وَّ رَزَقۡنٰہُمۡ مِّنَ الطَّیِّبٰتِ ۚ فَمَا اخۡتَلَفُوۡا حَتّٰی جَآءَهُمُ الۡعِلۡمُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ یَقۡضِیۡ بَیۡنَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فِیۡمَا کَانُوۡا فِیۡہِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۹۳﴾

আর আমি বনী ইসরাঈলদেরকে দান করেছি উত্তম স্থান এবং তাদেরকে আহার্য দিয়েছি পবিত্র-পরিচ্ছন্ন বস্তু-সামগ্রী । বস্তুত তাদের মধ্যে মতবিরোধ হয়নি যতক্ষণ না তাদের কাছে এসে পৌঁছেছে সংবাদ । নি:সন্দেহে তোমার পরওয়ারদিগার তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবেন কিয়ামতের দিন, যে ব্যাপারে তাদের মাঝে মতবিরোধ হয়েছিল ।


فَاِنۡ کُنۡتَ فِیۡ شَکٍّ مِّمَّاۤ اَنۡزَلۡنَاۤ اِلَیۡکَ فَسۡـَٔلِ الَّذِیۡنَ یَقۡرَءُوۡنَ الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ لَقَدۡ جَآءَکَ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکَ فَلَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُمۡتَرِیۡنَ ﴿ۙ۹۴﴾

সুতরাং তুমি যদি সে বস্তু সম্পর্কে কোন সন্দেহের সম্মুখীন হয়ে থাক যা তোমার প্রতি আমি নাযিল করেছি , তবে তাদেরকে জিজ্ঞেস করো যারা তোমার পূর্ব থেকে কিতাব পাঠ করছে । এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তোমার পরওয়ারদিগারের নিকট থেকে তোমার নিকট সত্য বিষয় এসেছে । কাজেই তুমি কস্মিনকালেও সন্দেহকারী হয়ো না ।


وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَتَکُوۡنَ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۹۵﴾

এবং তাদের অন্তর্ভুক্তও হয়ো না যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আল্লাহর বাণীকে । তাহলে তুমিও অকল্যাণে পতিত হয়ে যাবে ।


اِنَّ الَّذِیۡنَ حَقَّتۡ عَلَیۡہِمۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿ۙ۹۶﴾

যাদের ব্যাপারে তোমার পরওয়ারদিগারের সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হয়ে গেছে তারা ঈমান আনবে না ।


وَ لَوۡ جَآءَتۡہُمۡ کُلُّ اٰیَۃٍ حَتّٰی یَرَوُا الۡعَذَابَ الۡاَلِیۡمَ ﴿۹۷﴾

যদি তাদের সামনে সমস্ত নিদর্শন এসে উপস্থিত হয় তবুও যতক্ষণ না তারা দেখতে পায় বেদনাদায়ক আযাব ।


فَلَوۡ لَا کَانَتۡ قَرۡیَۃٌ اٰمَنَتۡ فَنَفَعَہَاۤ اِیۡمَانُہَاۤ اِلَّا قَوۡمَ یُوۡنُسَ ؕ لَمَّاۤ اٰمَنُوۡا کَشَفۡنَا عَنۡہُمۡ عَذَابَ الۡخِزۡیِ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ مَتَّعۡنٰہُمۡ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۹۸﴾

সুতরাং কোন জনপদ কেন এমন হল না যা ঈমান এনেছে অত:পর তার সে ঈমান গ্রহণ হয়েছে কল্যাণকর ? অবশ্য ইউনুসের সম্প্রদায়ের কথা আলাদা । তারা যখন ঈমান আনে, তখন আমি তুলে নেই তাদের উপর থেকে অপমানজনক আযাব-পার্থিব জীবনে এবং তাদেরকে কল্যাণ পৌছাই এক নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ।


وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ لَاٰمَنَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ کُلُّہُمۡ جَمِیۡعًا ؕ اَفَاَنۡتَ تُکۡرِہُ النَّاسَ حَتّٰی یَکُوۡنُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۹۹﴾

আর তোমার পরওয়ারদিগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসত সমবেতভাবে । তুমি কি মানুষের উপর জবরদস্তি করবে ঈমান আনার জন্য ?


وَ مَا کَانَ لِنَفۡسٍ اَنۡ تُؤۡمِنَ اِلَّا بِاِذۡنِ اللّٰہِ ؕ وَ یَجۡعَلُ الرِّجۡسَ عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾

আর কারো ঈমান আনা হতে পারে না, যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয় । পক্ষান্তরে তিনি অপবিত্রতা আরোপ করেন যারা বুদ্ধি প্রয়োগ করে না তাদের উপর ।


قُلِ انۡظُرُوۡا مَاذَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ مَا تُغۡنِی الۡاٰیٰتُ وَ النُّذُرُ عَنۡ قَوۡمٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۰۱﴾

তাহলে আপনি বলে দিন, চেয়ে দেখ তো আসমানসমূহ ও যমীনে কি রয়েছে । আর কোন নিদর্শন এবং কোন ভীতি প্রদর্শনই কোন কাজে আসে না সেসব লোকের জন্য যারা মান্য করে না ।


فَہَلۡ یَنۡتَظِرُوۡنَ اِلَّا مِثۡلَ اَیَّامِ الَّذِیۡنَ خَلَوۡا مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ قُلۡ فَانۡتَظِرُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾

সুতরাং এখন আর এমন কিছু নেই, যার অপেক্ষা করবে, কিন্তু সেসব দিনের মতই দিন, যা অতীত হয়ে গেছে এর পূর্বে ! আপনি বলুন, এখন পথ দেখ, আমিও তোমাদের সাথে পথ চেয়ে রইলাম ।


ثُمَّ نُنَجِّیۡ رُسُلَنَا وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کَذٰلِکَ ۚ حَقًّا عَلَیۡنَا نُنۡجِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾٪

অত:পর আমি বাঁচিয়ে নেই নিজের রাসূলগণকে এবং তাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে এমনিভাবে । ঈমানদারদের বাঁচিয়ে নেয়া আমার দায়িত্ব বটে ।


قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ شَکٍّ مِّنۡ دِیۡنِیۡ فَلَاۤ اَعۡبُدُ الَّذِیۡنَ تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ لٰکِنۡ اَعۡبُدُ اللّٰہَ الَّذِیۡ یَتَوَفّٰىکُمۡ ۚۖ وَ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾ۙ

বলে দাও—হে মানবকুল, তোমরা যদি আমার দ্বীনের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে থাক, তবে ( জেনো ) আমি তাদের ইবাদত করি না, যাদের ইবাদত তোমরা কর আল্লাহ ব্যতীত । কিন্তু আমি ইবাদত করি আল্লাহ তা’আলার, যিনি তুলে নেন তোমাদেরকে । আর আমার প্রতি নির্দেশ হয়েছে যাতে আমি ঈমানদারদের অন্তর্ভুক্ত থাকি ।


وَ اَنۡ اَقِمۡ وَجۡہَکَ لِلدِّیۡنِ حَنِیۡفًا ۚ وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۰۵﴾

আর যেন সোজা দ্বীনের প্রতি মুখ করি সরল হয়ে এবং যেন মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত না হই ।


وَ لَا تَدۡعُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَا یَنۡفَعُکَ وَ لَا یَضُرُّکَ ۚ فَاِنۡ فَعَلۡتَ فَاِنَّکَ اِذًا مِّنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۰۶﴾

আর নির্দেশ হয়েছে আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকবে না, যে তোমার ভাল করবে না মন্দও করবে না । বস্তুত তুমি যদি এমন কাজ কর, তাহলে তখন তুমিও জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে ।


وَ اِنۡ یَّمۡسَسۡکَ اللّٰہُ بِضُرٍّ فَلَا کَاشِفَ لَہٗۤ اِلَّا هُوَ ۚ وَ اِنۡ یُّرِدۡکَ بِخَیۡرٍ فَلَا رَآدَّ لِفَضۡلِہٖ ؕ یُصِیۡبُ بِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۰۷﴾

আর আল্লাহ যদি তোমার উপর কোন কষ্ট আরোপ করেন তাহলে কেউ নেই তা খন্ডাবার মত তাঁকে ছাড়া । পক্ষান্তরে যদি তিনি কিছু কল্যাণ দান করেন, তবে তাঁর মেহেরবাণীকে রহিত করার মতও কেউ নেই । তিনি যার প্রতি অনুগ্রহ দান করতে চান স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাকেই দান করেন; বস্তুত তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু ।


قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَکُمُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکُمۡ ۚ فَمَنِ اهْتَدٰی فَاِنَّمَا یَہۡتَدِیۡ لِنَفۡسِہٖ ۚ وَ مَنۡ ضَلَّ فَاِنَّمَا یَضِلُّ عَلَیۡہَا ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡکُمۡ بِوَکِیۡلٍ ﴿۱۰۸﴾ؕ

বলে দাও, হে মানবকূল, সত্য তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদিগারের তরফ থেকে । এমন যে কেউ পথে আসে সে পথ প্রাপ্ত হয় স্বীয় মঙ্গলের জন্য । এর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে, সে স্বীয় অমঙ্গলের জন্য বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে । অনন্তর আমি তোমাদের উপর অধিকারী নই ।


وَ اتَّبِعۡ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیۡکَ وَ اصۡبِرۡ حَتّٰی یَحۡکُمَ اللّٰہُ ۚۖ وَ هُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۱۰۹﴾٪

আর তুমি চল সে অনুযায়ী যেমন নির্দেশ আসে তোমার প্রতি এবং সবর কর, যতক্ষণ না ফয়সালা করেন আল্লাহ । বস্তুত তিনি হচ্ছেন সর্বোত্তম ফয়সালাকারী ।