11

হুদ

আয়াত সংখ্যা 123

0.00

26:55

الٓرٰ ۟ کِتٰبٌ اُحۡکِمَتۡ اٰیٰتُہٗ ثُمَّ فُصِّلَتۡ مِنۡ لَّدُنۡ حَکِیۡمٍ خَبِیۡرٍ ۙ﴿۱﴾

আলিফ, লা-ম, রা; এ এমন এক কিতাব, যার আয়াতসমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত অত:পর সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ থেকে !


اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰہَ ؕ اِنَّنِیۡ لَکُمۡ مِّنۡہُ نَذِیۡرٌ وَّ بَشِیۡرٌ ۙ﴿۲﴾

যেন তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো বন্দেগী না কর । নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি তাঁরই পক্ষ হতে সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা ।


وَّ اَنِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ یُمَتِّعۡکُمۡ مَّتَاعًا حَسَنًا اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی وَّ یُؤۡتِ کُلَّ ذِیۡ فَضۡلٍ فَضۡلَہٗ ؕ وَ اِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ کَبِیۡرٍ ﴿۳﴾

আর তোমরা নিজেদের পালনকর্তা সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা কর । অনন্তর তারই প্রতি মনোনিবেশ কর । তাহলে তিনি তোমাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎকৃষ্ট জীবনোকরণ দান করবেন এবং অধিক আমলকারীকে বেশি করে দেবেন । আর যদি তোমরা বিমুখ হতে থাক, তবে আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের আশংকা করছি ।


اِلَی اللّٰہِ مَرۡجِعُکُمۡ ۚ وَ هُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۴﴾

আল্লাহর সান্নিধ্যেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে । আর তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান ।


اَلَاۤ اِنَّہُمۡ یَثۡنُوۡنَ صُدُوۡرَهُمۡ لِیَسۡتَخۡفُوۡا مِنۡہُ ؕ اَلَا حِیۡنَ یَسۡتَغۡشُوۡنَ ثِیَابَہُمۡ ۙ یَعۡلَمُ مَا یُسِرُّوۡنَ وَ مَا یُعۡلِنُوۡنَ ۚ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۵﴾

জেনে রাখ, নিশ্চয়ই তারা নিজেদের বক্ষদেশ ঘুরিয়ে দেয় যেন আল্লাহর নিকট হতে লুকাতে পারে । শুন, তারা তখন কাপড়ে নিজেদেরকে আচ্ছাদিত করে, তিনি তখনও জানেন যা কিছু তারা চুপিসারে বলে আর প্রকাশ্যভাবে বলে । নিশ্চয় তিনি জানেন যা কিছু অন্তরসমূহে নিহিত রয়েছে ।


وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ رِزۡقُہَا وَ یَعۡلَمُ مُسۡتَقَرَّهَا وَ مُسۡتَوۡدَعَہَا ؕ کُلٌّ فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶﴾

আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন, তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাহিত হয় । সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে ।


وَ هُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ وَّ کَانَ عَرۡشُهٗ عَلَی الۡمَآءِ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَ لَئِنۡ قُلۡتَ اِنَّکُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡمَوۡتِ لَیَقُوۡلَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِنۡ هٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷﴾

তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেন, তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে; তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভাল কাজ করে । আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে, নিশ্চয় তোমাদেরকে মৃত্যুর পরে জীবিত উঠানো হবে , তখন কাফিররা অবশ্য বলে, “এটা তো স্পষ্ট যাদু ।”


وَ لَئِنۡ اَخَّرۡنَا عَنۡہُمُ الۡعَذَابَ اِلٰۤی اُمَّۃٍ مَّعۡدُوۡدَۃٍ لَّیَقُوۡلُنَّ مَا یَحۡبِسُہٗ ؕ اَلَا یَوۡمَ یَاۡتِیۡہِمۡ لَیۡسَ مَصۡرُوۡفًا عَنۡہُمۡ وَ حَاقَ بِہِمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ٪﴿۸﴾

আর যদি আমি এক নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত তাদের আযাব স্থগিত রাখি, তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবে—কোন জিনিসে আযাব ঠেকিয়ে রাখছে ? শুনে রাখ, যেদিন তাদের উপর আযাব এসে পড়বে, সেদিন কিন্তু তা ফিরে যাওয়ার নয়: তারা যে ব্যাপারে উপহাস করত তাই তাদেরকে ঘিরে ফেলবে ।


وَ لَئِنۡ اَذَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ مِنَّا رَحۡمَۃً ثُمَّ نَزَعۡنٰہَا مِنۡہُ ۚ اِنَّہٗ لَیَـُٔوۡسٌ کَفُوۡرٌ ﴿۹﴾

আর অবশ্যই যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আস্বাদ গ্রহণ করতে দেই, অত:পর তা তার থেকে ছিনিয়ে নেই; তাহলে সে হতাশ ও কৃতঘ্ন হয় ।


وَ لَئِنۡ اَذَقۡنٰہُ نَعۡمَآءَ بَعۡدَ ضَرَّآءَ مَسَّتۡہُ لَیَقُوۡلَنَّ ذَهَبَ السَّیِّاٰتُ عَنِّیۡ ؕ اِنَّہٗ لَفَرِحٌ فَخُوۡرٌ ﴿ۙ۱۰﴾

আর যদি তার উপর আপতিত দু:খ-কষ্টের পরে তাকে সুখভোগ করতে দেই, তবে সে বলতে থাকে যে, আমার অমঙ্গল দূর হয়ে গেছে, আর সে আনন্দে আত্মহারা হয়, অহংকারে উদ্ধত হয়ে পড়ে ।


اِلَّا الَّذِیۡنَ صَبَرُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ وَّ اَجۡرٌ کَبِیۡرٌ ﴿۱۱﴾

তবে যারা ধৈর্য ধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে ।


فَلَعَلَّکَ تَارِکٌۢ بَعۡضَ مَا یُوۡحٰۤی اِلَیۡکَ وَ ضَآئِقٌۢ بِہٖ صَدۡرُکَ اَنۡ یَّقُوۡلُوۡا لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ کَنۡزٌ اَوۡ جَآءَ مَعَہٗ مَلَکٌ ؕ اِنَّمَاۤ اَنۡتَ نَذِیۡرٌ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ وَّکِیۡلٌ ﴿ؕ۱۲﴾

আর সম্ভবত ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট পাঠানো হয়, তার কিছু অংশ বর্জন করবে ? এবং এতে মন ছোট করে বসবে ? তাদের এ কথায় যে, তার উপর কোন ধনভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নি ? অথবা তাঁর সাথে কোন ফেরেশতা আসেনি কেন ? তুমি তো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুর দায়িত্বভারই তো আল্লাহ নিয়েছেন ।


اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ فَاۡتُوۡا بِعَشۡرِ سُوَرٍ مِّثۡلِہٖ مُفۡتَرَیٰتٍ وَّ ادۡعُوۡا مَنِ اسۡتَطَعۡتُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۳﴾

তারা কি বলে ? কোরআন তুমি তৈরী করেছ ? তুমি বল, তবে তোমরাও অনুরুপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আসো ; এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে নাও, যদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে ।


فَاِلَّمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکُمۡ فَاعۡلَمُوۡۤا اَنَّمَاۤ اُنۡزِلَ بِعِلۡمِ اللّٰہِ وَ اَنۡ لَّاۤ اِلٰہَ اِلَّا هُوَ ۚ فَہَلۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ ﴿۱۴﴾

অত:পর তারা যদি তোমাদের কথা পূরণ করতে অপারক হয়; তবে জেনে রাখ এটা আল্লাহর ইলম দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে; আরো একীন করে নাও যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মা’বুদ নেই । অতএব, এখন কি তোমরা আত্মসমর্পণ করবে ?


مَنۡ کَانَ یُرِیۡدُ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا وَ زِیۡنَتَہَا نُوَفِّ اِلَیۡہِمۡ اَعۡمَالَہُمۡ فِیۡہَا وَ هُمۡ فِیۡہَا لَا یُبۡخَسُوۡنَ ﴿۱۵﴾

যে ব্যক্তি পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্যই কামনা করে, আমি দুনিয়াতেই তাদের আমলের প্রতিফল ভোগ করিয়ে দেব এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হবে না ।


اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ لَیۡسَ لَہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ اِلَّا النَّارُ ۫ۖ وَ حَبِطَ مَا صَنَعُوۡا فِیۡہَا وَ بٰطِلٌ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶﴾

এরাই হলো সেসব লোক, আখিরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া নেই । তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ করেছে; আর যা কিছু উপার্জন করেছিল, সবই বিনষ্ট হলো ।


اَفَمَنۡ کَانَ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّہٖ وَ یَتۡلُوۡہُ شَاهِدٌ مِّنۡہُ وَ مِنۡ قَبۡلِہٖ کِتٰبُ مُوۡسٰۤی اِمَامًا وَّ رَحۡمَۃً ؕ اُولٰٓئِکَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ ؕ وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِہٖ مِنَ الۡاَحۡزَابِ فَالنَّارُ مَوۡعِدُہٗ ۚ فَلَا تَکُ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّنۡہُ ٭ اِنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّکَ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۷﴾

আচ্ছা বলতো—যে ব্যক্তি তার প্রভুর সুস্পষ্ট পথে রয়েছে, আর সাথে সাথে আল্লাহর তরফ হতে একটি সাক্ষীও বর্তমান রয়েছে এবং তার পূর্ববর্তী মূসা ( আ )-এর কিতাবও সাক্ষী যা ছিল পথ নির্দেশক ও রহমতস্বরুপ, ( তিনি কি অন্যান্যের সমান ? ) অতএব তারা কোরআনের প্রতি ঈমান আনে । আর ঐসব দলের যে কেউ তা অস্বীকার করে, দোযখই হবে তার ঠিকানা । অতএব, আপনি তাতে কোন সন্দেহে থাকবেন না । নি:সন্দেহে এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে ধ্রুব সত্য; তথাপি অনেকেই তা বিশ্বাস করে না ।


وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰهِ کَذِبًا ؕ اُولٰٓئِکَ یُعۡرَضُوۡنَ عَلٰی رَبِّهِمۡ وَ یَقُوۡلُ الۡاَشۡهَادُ هٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ کَذَبُوۡا عَلٰی رَبِّهِمۡ ۚ اَلَا لَعۡنَۃُ اللّٰهِ عَلَی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۱۸﴾

আর তাদের চেয়ে বড় জালিম কে হতে পারে, যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে । এসব লোককে তাদের পালনকর্তার সাক্ষাৎ সম্মুখীন করা হবে আর সাক্ষীগণ বলতে থাকবে, এরাই ঐ সব লোক, যারা তাদের পালনকর্তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল; শুনে রাখ, জালিমদের উপরে আল্লাহর অভিসম্পাত রয়েছে ।


الَّذِیۡنَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ یَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ؕ وَ هُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ هُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۱۹﴾

যারা আল্লাহর পথে বাধা দেয়, আর তাতে বক্রতা খুঁজে বেড়ায়, এরাই আখিরাতকে অস্বীকার করে ।


اُولٰٓئِکَ لَمۡ یَکُوۡنُوۡا مُعۡجِزِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا کَانَ لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ اَوۡلِیَآءَ ۘ یُضٰعَفُ لَہُمُ الۡعَذَابُ ؕ مَا کَانُوۡا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ السَّمۡعَ وَ مَا کَانُوۡا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۲۰﴾

তারা পৃথিবীতেও আল্লাহকে অপারক করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই; তাদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি রয়েছে । তারা শুনতে পারত না এবং দেখতেও পেত না


اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۲۱﴾

এরা সেই লোক যারা নিজেরাই নিজেদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আর তারা যা কিছু মিথ্যা মা’বুদ সাব্যস্ত করেছিল, তা সবই তাদের থেকে হারিয়ে গেছে ।


لَا جَرَمَ اَنَّہُمۡ فِی الۡاٰخِرَۃِ هُمُ الۡاَخۡسَرُوۡنَ ﴿۲۲﴾

আখিরাতে এরাই হবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত, কোন সন্দেহ নেই ।


اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ اَخۡبَتُوۡۤا اِلٰی رَبِّہِمۡ ۙ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ هُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۳﴾

নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে এবং স্বীয় পালনকর্তার সমীপে বিনয় প্রকাশ করেছে , তারাই বেহেশতবাসী , সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে ।


مَثَلُ الۡفَرِیۡقَیۡنِ کَالۡاَعۡمٰی وَ الۡاَصَمِّ وَ الۡبَصِیۡرِ وَ السَّمِیۡعِ ؕ هَلۡ یَسۡتَوِیٰنِ مَثَلًا ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿٪۲۴﴾

উভয় পক্ষের দৃষ্টান্ত হচ্ছে যেমন অন্ধ ও বধির এবং যে দেখতে পায় ও শুনতে পায় উভয়ের অবস্থা কি এক সমান ? তবুও তোমরা কি ভেবে দেখ না ?


وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِہٖۤ ۫ اِنِّیۡ لَکُمۡ نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۙ۲۵﴾

আর অবশ্যই আমি নূহ (আ) কে তাঁর জাতির প্রতি প্রেরণ করেছি, (তিনি বললেন--) নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য প্রকাশ্য সতর্ককারী ।


اَنۡ لَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّا اللّٰہَ ؕ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ اَلِیۡمٍ ﴿۲۶﴾

তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারো ইবাদত করবে না । নিশ্চয় আমি তোমাদের ব্যাপারে এক যন্ত্রণাদায়ক দিনের আযাবের ভয় করছি ।


فَقَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ مَا نَرٰىکَ اِلَّا بَشَرًا مِّثۡلَنَا وَ مَا نَرٰىکَ اتَّبَعَکَ اِلَّا الَّذِیۡنَ هُمۡ اَرَاذِلُنَا بَادِیَ الرَّاۡیِ ۚ وَ مَا نَرٰی لَکُمۡ عَلَیۡنَا مِنۡ فَضۡلٍۭ بَلۡ نَظُنُّکُمۡ کٰذِبِیۡنَ ﴿۲۷﴾

তখন তাঁর কওমের কাফির প্রধানরা বলল—আমরা তো আপনাকে আমাদের মত একজন মানুষ ব্যতীত আর কিছু মনে করি না; আর আমাদের মধ্যে যারা ইতর ও স্থুল-বুদ্ধিসম্পন্ন তারা ব্যতীত কাউকে তো আপনার আনুগত্য করতে দেখি না; এবং আমাদের উপর আপনাদের কোন প্রাধান্য দেখি না, বরং আপনারা সবাই মিথ্যাবাদী বলে আমরা মনে করি ।


قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ اٰتٰىنِیۡ رَحۡمَۃً مِّنۡ عِنۡدِهٖ فَعُمِّیَتۡ عَلَیۡکُمۡ ؕ اَنُلۡزِمُکُمُوۡهَا وَ اَنۡتُمۡ لَهَا کٰرِهُوۡنَ ﴿۲۸﴾

নূহ (আ) বললেন—হে আমার জাতি ! দেখ তো আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে স্পষ্ট দলীলের উপর থাকি, আর তিনি যদি তাঁর পক্ষ হতে আমাকে রহমত দান করে থাকেন, তারপরেও তা তোমাদের চোখে পড়ে, তাহলে আমি কি তা তোমাদের উপর তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই চাপিয়ে দিতে পারি ?


وَ یٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡئَلُکُمۡ عَلَیۡہِ مَالًا ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی اللّٰہِ وَ مَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ؕ اِنَّہُمۡ مُّلٰقُوۡا رَبِّہِمۡ وَ لٰکِنِّیۡۤ اَرٰىکُمۡ قَوۡمًا تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۲۹﴾

আর হে আমার জাতি ! আমি তো এজন্য তোমাদের কাছে কোন অর্থ চাই না; আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহর যিম্মায় রয়েছে । আমি কিন্তু ঈমানদারদের তাড়িয়ে দিতে পারি না । তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সাক্ষাৎ লাভ করবে । বরঞ্চ তোমাদেরই আমি অজ্ঞ সম্প্রদায় দেখছি ।


وَ یٰقَوۡمِ مَنۡ یَّنۡصُرُنِیۡ مِنَ اللّٰہِ اِنۡ طَرَدۡتُّہُمۡ ؕ اَفَلَا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳۰﴾

আর হে আমার জাতি ! আমি যদি তাদেকে তাড়িয়ে দেই তাহলে আমাকে আল্লাহ হতে রেহাই দেবে কে ? তোমরা কি চিন্তা করে দেখ না ?


وَ لَاۤ اَقُوۡلُ لَکُمۡ عِنۡدِیۡ خَزَآئِنُ اللّٰہِ وَ لَاۤ اَعۡلَمُ الۡغَیۡبَ وَ لَاۤ اَقُوۡلُ اِنِّیۡ مَلَکٌ وَّ لَاۤ اَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ تَزۡدَرِیۡۤ اَعۡیُنُکُمۡ لَنۡ یُّؤۡتِیَہُمُ اللّٰہُ خَیۡرًا ؕ اَللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا فِیۡۤ اَنۡفُسِہِمۡ ۚۖ اِنِّیۡۤ اِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۳۱﴾

আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়েবী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্ছিত আল্লাহ তাদেরকে কোন কল্যাণ দান করবেন না । তাদের মনের কথা আল্লাহ ভাল করেই জানেন । সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায়কারী হবো ।


قَالُوۡا یٰنُوۡحُ قَدۡ جٰدَلۡتَنَا فَاَکۡثَرۡتَ جِدَالَنَا فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۳۲﴾

তারা বলল—হে নূহ ! আমাদের সাথে আপনি তর্ক করেছেন এবং অনেক কলহ করেছেন । এখন আপনার সেই আযাব নিয়ে আসুন, যে সম্পর্কে আপনি আমাদেরকে সতর্ক করেছেন, যদি আপনি সত্যবাদী হয়ে থাকেন ।


قَالَ اِنَّمَا یَاۡتِیۡکُمۡ بِہِ اللّٰہُ اِنۡ شَآءَ وَ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ ﴿۳۳﴾

তিনি বলেন, তা তোমাদের কাছে আল্লাহই আসবেন, যদি তিনি ইচ্ছা করেন । তখন তোমরা পালিয়ে তাঁকে অপারক করতে পারবে না ।


وَ لَا یَنۡفَعُکُمۡ نُصۡحِیۡۤ اِنۡ اَرَدۡتُّ اَنۡ اَنۡصَحَ لَکُمۡ اِنۡ کَانَ اللّٰہُ یُرِیۡدُ اَنۡ یُّغۡوِیَکُمۡ ؕ هُوَ رَبُّکُمۡ ۟ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿ؕ۳۴﴾

আর আমি তোমাদের নছীয়ত করতে চাইলেও তা তোমাদের জন্য ফলপ্রসূ হবে না, যদি আল্লাহ তোমাদেরকে গোমরাহ করতে চান; তিনিই তোমাদের পালনকর্তা এবং তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে ।


اَمۡ یَقُوۡلُوۡنَ افۡتَرٰىہُ ؕ قُلۡ اِنِ افۡتَرَیۡتُہٗ فَعَلَیَّ اِجۡرَامِیۡ وَ اَنَا بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُجۡرِمُوۡنَ ﴿٪۳۵﴾

তারা কি বলে ? আপনি কোরআন রচনা করে এনেছেন ? আপনি বলে দিন আমি যদি রচনা করে এনে থাকি, তবে সে অপরাধ আমার, আর তোমরা যেসব অপরাধ কর তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই ।


وَ اُوۡحِیَ اِلٰی نُوۡحٍ اَنَّہٗ لَنۡ یُّؤۡمِنَ مِنۡ قَوۡمِکَ اِلَّا مَنۡ قَدۡ اٰمَنَ فَلَا تَبۡتَئِسۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿ۚۖ۳۶﴾

আর নূহ (আ) -এর প্রতি ওহী প্রেরণ করা হলো যে, যারা ইতিমধ্যেই ঈমান এনেছে তাদের ছাড়া আপনার জাতির অন্য কেউ ঈমান আনবে না । অতএব, তাদের কার্যকলাপে বিমর্ষ হবেন না ।


وَ اصۡنَعِ الۡفُلۡکَ بِاَعۡیُنِنَا وَ وَحۡیِنَا وَ لَا تُخَاطِبۡنِیۡ فِی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ۚ اِنَّہُمۡ مُّغۡرَقُوۡنَ ﴿۳۷﴾

আর আপনি আমার সম্মুখে আমারই নির্দেশ মুতাবিক একটি নৌকা তৈরি করুন এবং পাপিষ্ঠদের ব্যাপারে আমাকে কোন কথা বলবেন না। অবশ্যই তারা ডুবে মরবে ।


وَ یَصۡنَعُ الۡفُلۡکَ ۟ وَ کُلَّمَا مَرَّ عَلَیۡہِ مَلَاٌ مِّنۡ قَوۡمِہٖ سَخِرُوۡا مِنۡہُ ؕ قَالَ اِنۡ تَسۡخَرُوۡا مِنَّا فَاِنَّا نَسۡخَرُ مِنۡکُمۡ کَمَا تَسۡخَرُوۡنَ ﴿ؕ۳۸﴾

তিনি নৌকা তৈরি করতে লাগলেন, আর তাঁর কওমের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা যখন পার্শ্ব দিয়ে যেত, তখন তাকে বিদ্রুপ করত । তিনি বললেন, তোমরা যদি আমাদের উপহাস করে থাক, তবে তোমরা যেমন উপহাস করছ আমরাও তদ্রুপ তোমাদের উপহাস করছি ।


فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ یَّاۡتِیۡہِ عَذَابٌ یُّخۡزِیۡہِ وَ یَحِلُّ عَلَیۡہِ عَذَابٌ مُّقِیۡمٌ ﴿۳۹﴾

অত:পর অচিরেই জানতে পারবে—লাঞ্ছনাজনক আযাব কার উপর আসে এবং চিরস্থায়ী আযাব কার উপর অবতরণ করে ।


حَتّٰۤی اِذَا جَآءَ اَمۡرُنَا وَ فَارَ التَّنُّوۡرُ ۙ قُلۡنَا احۡمِلۡ فِیۡہَا مِنۡ کُلٍّ زَوۡجَیۡنِ اثۡنَیۡنِ وَ اَهْلَکَ اِلَّا مَنۡ سَبَقَ عَلَیۡہِ الۡقَوۡلُ وَ مَنۡ اٰمَنَ ؕ وَ مَاۤ اٰمَنَ مَعَہٗۤ اِلَّا قَلِیۡلٌ ﴿۴۰﴾

অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌছাল এবং ভূপৃষ্ঠ উচ্ছসিত হয়ে উঠল, আমি বললাম : সর্বপ্রকার জোড়ার দু’টি করে এবং যাদের উপরে পূর্বাহেৃই হুকুম হয়ে গেছে তাদেরকে বাদ দিয়ে, আপনার পরিজনবর্গ সকল ঈমানদারগণকে নৌকায় তুলে নিন । বলা বাহুল্য, অতি অল্প সংখ্যক লোকই তার সাথে ঈমান এনেছিল


وَ قَالَ ارۡکَبُوۡا فِیۡہَا بِسۡمِ اللّٰہِ مَ‍‍جۡؔرٖىہَا وَ مُرۡسٰىہَا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۴۱﴾

আর তিনি বললেন, তোমরা এতে আরোহণ কর । আল্লাহর নামেই এর গতি ও স্থিতি । আমার পালনকর্তা অতি ক্ষমাপরায়ণ, মেহেরবান ।


وَ هِیَ تَجۡرِیۡ بِہِمۡ فِیۡ مَوۡجٍ کَالۡجِبَالِ ۟ وَ نَادٰی نُوۡحُۨ ابۡنَہٗ وَ کَانَ فِیۡ مَعۡزِلٍ یّٰـبُنَیَّ ارۡکَبۡ مَّعَنَا وَ لَا تَکُنۡ مَّعَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۴۲﴾

আর নৌকাখানি তাদের বহন করে চলল পর্বতপ্রমাণ তরঙ্গমালার মাঝে, আর নূহ (আ) তার পুত্রকে ডাক দিলেন আর সে সরে রয়েছিল, তিনি বললেন, প্রিয় বৎস ! আমাদের সাথে আরোহণ কর এবং কাফিরদের সাথে থেকো না ।


قَالَ سَاٰوِیۡۤ اِلٰی جَبَلٍ یَّعۡصِمُنِیۡ مِنَ الۡمَآءِ ؕ قَالَ لَا عَاصِمَ الۡیَوۡمَ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰہِ اِلَّا مَنۡ رَّحِمَ ۚ وَ حَالَ بَیۡنَہُمَا الۡمَوۡجُ فَکَانَ مِنَ الۡمُغۡرَقِیۡنَ ﴿۴۳﴾

সে বলল, আমি অচিরেই কোন পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে । নূহ (আ) বললেন, আজকের দিনে আল্লাহর হুকুম থেকে কোন রক্ষাকারী নেই । একমাত্র তিনি যাকে দয়া করবেন । এমন সময় উভয়ের মাঝে তরঙ্গ আড়াল হয়ে দাঁড়াল, ফলে সে নিমজ্জিত হলো ।


وَ قِیۡلَ یٰۤاَرۡضُ ابۡلَعِیۡ مَآءَکِ وَ یٰسَمَآءُ اَقۡلِعِیۡ وَ غِیۡضَ الۡمَآءُ وَ قُضِیَ الۡاَمۡرُ وَ اسۡتَوَتۡ عَلَی الۡجُوۡدِیِّ وَ قِیۡلَ بُعۡدًا لِّلۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۴﴾

আর নির্দেশ দেয়া হলো—হে পৃথিবী ! তোমার পানি গিলে ফেল, আর হে আকাশ ক্ষান্ত হও । আর পানি হ্রাস করা হলো এবং কাজ শেষ হয়ে গেল, আর জুদী পর্বতে নৌকা ভিড়ল এবং ঘোষণা করা হলো দুরাত্মা কাফিররা নিপাত যাক ।


وَ نَادٰی نُوۡحٌ رَّبَّہٗ فَقَالَ رَبِّ اِنَّ ابۡنِیۡ مِنۡ اَهْلِیۡ وَ اِنَّ وَعۡدَکَ الۡحَقُّ وَ اَنۡتَ اَحۡکَمُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۴۵﴾

আর নূহ (আ) তার পালনকর্তাকে বললেন—হে পরওয়ারদিগার ! আমার পুত্র তো আমার পরিজনদের অন্তর্ভুক্ত; আর আপনার ওয়াদাও নি:সন্দেহে সত্য আর আপনিই সর্বাপেক্ষা বিজ্ঞ ফয়সালাকারী ।


قَالَ یٰنُوۡحُ اِنَّہٗ لَیۡسَ مِنۡ اَهْلِکَ ۚ اِنَّہٗ عَمَلٌ غَیۡرُ صَالِحٍ ٭۫ۖ فَلَا تَسۡـَٔلۡنِ مَا لَـیۡسَ لَکَ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ اِنِّیۡۤ اَعِظُکَ اَنۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۴۶﴾

আল্লাহ বলেন—হে নূহ ! নিশ্চয় সে আপনার পরিবারভুক্ত নয় । নিশ্চয়ই সে দুরাচার । সুতরাং আমার কাছে এমন দরখাস্ত করবেন না যার খবর আপনি জানেন না । আমি আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, আপনি অজ্ঞদের দলভুক্ত হবেন না ।


قَالَ رَبِّ اِنِّیۡۤ اَعُوۡذُ بِکَ اَنۡ اَسۡـَٔلَکَ مَا لَـیۡسَ لِیۡ بِہٖ عِلۡمٌ ؕ وَ اِلَّا تَغۡفِرۡ لِیۡ وَ تَرۡحَمۡنِیۡۤ اَکُنۡ مِّنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۴۷﴾

নূহ (আ) বলেন—হে আমার পালনকর্তা ! আমার যা জানা নেই এমন কোন দরখাস্ত করা হতে আমি আপনার কাছেই আশ্রয় চাইতেছি । আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন, দয়া না করেন, তাহলে আমি ক্ষতিগ্র্রস্থ হবো ।


قِیۡلَ یٰنُوۡحُ اهْبِطۡ بِسَلٰمٍ مِّنَّا وَ بَرَکٰتٍ عَلَیۡکَ وَ عَلٰۤی اُمَمٍ مِّمَّنۡ مَّعَکَ ؕ وَ اُمَمٌ سَنُمَتِّعُہُمۡ ثُمَّ یَمَسُّہُمۡ مِّنَّا عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۴۸﴾

হুকুম হলো—হে নূহ (আ) ! আমার পক্ষ হতে নিরাপত্তা এবং আপনার নিজের ও সঙ্গীর সম্প্রদায়গুলীর উপর বরকত সহকারে অবতরণ করুন । আর অন্যান্য যেসব সম্প্রদায় রয়েছে আমি তাদেরকেও উপকৃত হতে দেব । অত:পর তাদের উপর আমার দারুণ আযাব আপতিত হবে ।


تِلۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡغَیۡبِ نُوۡحِیۡهَاۤ اِلَیۡکَ ۚ مَا کُنۡتَ تَعۡلَمُهَاۤ اَنۡتَ وَ لَا قَوۡمُکَ مِنۡ قَبۡلِ هٰذَا ؕۛ فَاصۡبِرۡ ؕۛ اِنَّ الۡعَاقِبَۃَ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۴۹﴾

এটা গায়েবের খবর, আমি আপনার প্রতি ওহী প্রেরণ করছি । ইতিপূর্বে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না । আপনি ধৈর্য ধারণ করুন । যারা ভয় করে চলে; তাদের পরিণাম ভাল, সন্দেহ নেই ।


وَ اِلٰی عَادٍ اَخَاهُمۡ هُوۡدًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا مُفۡتَرُوۡنَ ﴿۵۰﴾

আর আদ জাতির প্রতি আমি তাদের ভাই হুদকে প্রেরণ করেছি; তিনি বলেন—হে আমার জাতি, আল্লাহর বন্দেগী কর, তিনি ভিন্ন তোমাদের কোন মাবুদ নেই, তোমরা সবাই মিথ্যা আরোপ করছ ।


یٰقَوۡمِ لَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ اَجۡرًا ؕ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلَی الَّذِیۡ فَطَرَنِیۡ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۵۱﴾

হে আমার জাতি ! আমি এজন্য তোমাদের কাছে কোন মজুরি চাইনা; আমার মজুরি তাঁরই কাছে যিনি আমাকে পয়দা করেছেন; তবু তোমরা কেন বুঝ না ?


وَ یٰقَوۡمِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ یُرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡکُمۡ مِّدۡرَارًا وَّ یَزِدۡکُمۡ قُوَّۃً اِلٰی قُوَّتِکُمۡ وَ لَا تَتَوَلَّوۡا مُجۡرِمِیۡنَ ﴿۵۲﴾

আর হে আমার কওম ! তোমাদের পালনকর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থণা কর, অত:পর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টিধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর বৃদ্ধি করবেন, তোমরা কিন্তু অপরাধীদের মত বিমুখ হয়ো না ।


قَالُوۡا یٰہُوۡدُ مَا جِئۡتَنَا بِبَیِّنَۃٍ وَّ مَا نَحۡنُ بِتَارِکِیۡۤ اٰلِہَتِنَا عَنۡ قَوۡلِکَ وَ مَا نَحۡنُ لَکَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۵۳﴾

তারা বলল—হে হুদ, আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে আস নি, আমরা তোমার কথায় আমাদের দেবদেবীদের বর্জন করতে পারি না আর আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনয়নকারীও নই ।


اِنۡ نَّقُوۡلُ اِلَّا اعۡتَرٰىکَ بَعۡضُ اٰلِہَتِنَا بِسُوۡٓءٍ ؕ قَالَ اِنِّیۡۤ اُشۡہِدُ اللّٰہَ وَ اشۡہَدُوۡۤا اَنِّیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُشۡرِکُوۡنَ ﴿ۙ۵۴﴾

বরং আমরা তো বলি যে, আমাদের কোন দেবতা তোমার উপরে শোচনীয় ভুত চাপিয়ে দিয়েছে । হুদ বললেন—আমি আল্লাহকে সাক্ষী করেছি আর তোমরাও সাক্ষী থাক যে, আমার কোন সম্পর্ক নেই তাদের সাথে, যাদেরকে তোমরা শরীক করছ;


مِنۡ دُوۡنِہٖ فَکِیۡدُوۡنِیۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ لَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۵۵﴾

তাকে ছাড়া, তোমরা সবাই মিলে আমার অনিষ্ট করার প্রয়াস চালাও, অত:পর আমাকে কোন অবকাশ দিও না ।


اِنِّیۡ تَوَکَّلۡتُ عَلَی اللّٰہِ رَبِّیۡ وَ رَبِّکُمۡ ؕ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ اِلَّا هُوَ اٰخِذٌۢ بِنَاصِیَتِہَا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۵۶﴾

আমি আল্লাহর উপর নিশ্চিত ভরসা করেছি যিনি আমার এবং তোমাদের পরওয়ারদিগার । পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যা তার পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয় । আমার পালনকর্তা সরল পথে, সন্দেহ নেই ।


فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ مَّاۤ اُرۡسِلۡتُ بِہٖۤ اِلَیۡکُمۡ ؕ وَ یَسۡتَخۡلِفُ رَبِّیۡ قَوۡمًا غَیۡرَکُمۡ ۚ وَ لَا تَضُرُّوۡنَہٗ شَیۡئًا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ حَفِیۡظٌ ﴿۵۷﴾

তথাপি যদি তোমরা মুখ ফিরাও, তবে আমি তোমাদেরকে তা পৌঁছায়েছি, যা আমার কাছে তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছে; আর আমার পালনকর্তা অন্য কোন জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন, আর তোমরা তার কিছুই বিগড়াতে পারবে না; নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদিগারই প্রতিটি বস্তুর হিফাযতকারী ।


وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا هُوۡدًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا ۚ وَ نَجَّیۡنٰہُمۡ مِّنۡ عَذَابٍ غَلِیۡظٍ ﴿۵۸﴾

আর আমার আদেশ যখন উপস্থিত হলো, তখন আমি নিজ রহমতে হুদ এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে পরিত্রাণ করি এবং তাদেরকে এক কঠিন শাস্তি হতে রক্ষা করি ।


وَ تِلۡکَ عَادٌ ۟ۙ جَحَدُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ عَصَوۡا رُسُلَہٗ وَ اتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ کُلِّ جَبَّارٍ عَنِیۡدٍ ﴿۵۹﴾

এ ছিল ‘আদ জাতি, যারা তাদের পালনকর্তার আয়াতকে অমান্য করেছে, আর তদীয় রাসূলগণের অবাধ্যতা করেছে এবং প্রত্যেক উদ্ধত বিরোধীদের আদেশ পালন করেছে ।


وَ اُتۡبِعُوۡا فِیۡ هٰذِهِ الدُّنۡیَا لَعۡنَۃً وَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ عَادًا کَفَرُوۡا رَبَّهُمۡ ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّعَادٍ قَوۡمِ هُوۡدٍ ﴿۶۰﴾

এ দুনিয়ায় তাদের পিছনে পিছনে লা’নত রয়েছে এবং কিয়ামতের দিনেও; জেনে রাখ, ‘আদ জাতি তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছে, হুদের জাতি ‘আদ জাতির প্রতি অভিসম্পাত রয়েছে জেনে রাখ ।


وَ اِلٰی ثَمُوۡدَ اَخَاهُمۡ صٰلِحًا ۘ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ هُوَ اَنۡشَاَکُمۡ مِّنَ الۡاَرۡضِ وَ اسۡتَعۡمَرَکُمۡ فِیۡہَا فَاسۡتَغۡفِرُوۡہُ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ قَرِیۡبٌ مُّجِیۡبٌ ﴿۶۱﴾

আর সামুদ জাতির প্রতি তাদের ভাই সালেহকে প্রেরণ করি; তিনি বললেন—হে আমার জাতি ! আল্লাহর বন্দেগী কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন উপাস্য নেই, তিনিই যমীন হতে তোমাদেরকে পয়দা করেছেন, তন্মধ্যে তোমাদেরকে বসতি দান করেছেন । অতএব, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা কর । অত:পর তারই দিকে ফিরে চল; আমার পালনকর্তা নিকটেই আছেন, কবুল করে থাকেন, সন্দেহ নেই ।


قَالُوۡا یٰصٰلِحُ قَدۡ کُنۡتَ فِیۡنَا مَرۡجُوًّا قَبۡلَ هٰذَاۤ اَتَنۡهٰنَاۤ اَنۡ نَّعۡبُدَ مَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَا وَ اِنَّنَا لَفِیۡ شَکٍّ مِّمَّا تَدۡعُوۡنَاۤ اِلَیۡهِ مُرِیۡبٍ ﴿۶۲﴾

তারা বলল,--হে সালিহ, ইতিপূর্বে তোমার কাছে আমাদের বড় আশা ছিল । আমাদের বাপ-দাদা যার পূজা করত তুমি কি আমাদেরকে তার পূজা করতে নিষেধ কর ? কিন্তু যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচ্ছ আমাদের তাতে এমন সন্দেহ রয়েছে যে, মন মোটেও সায় দিচ্ছে না ।


قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ اٰتٰىنِیۡ مِنۡہُ رَحۡمَۃً فَمَنۡ یَّنۡصُرُنِیۡ مِنَ اللّٰہِ اِنۡ عَصَیۡتُہٗ ۟ فَمَا تَزِیۡدُوۡنَنِیۡ غَیۡرَ تَخۡسِیۡرٍ ﴿۶۳﴾

সালেহ বললেন—হে আমার জাতি ! তোমরা কি মনে কর, আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে বুদ্ধি-বিবেচনা লাভ করে থাকি আর তিনি যদি আমাকে নিজের তরফ হতে রহমত দান করে থাকেন, অত:পর আমি যদি তাঁর অবাধ্য ই তবে তাঁর থেকে কে আমায় রক্ষা করবে ? তোমরা তো আমার ক্ষতি ছাড়া কিছুই বৃদ্ধি করতে পারবে না ।


وَ یٰقَوۡمِ هٰذِهٖ نَاقَۃُ اللّٰهِ لَکُمۡ اٰیَۃً فَذَرُوۡهَا تَاۡکُلۡ فِیۡۤ اَرۡضِ اللّٰهِ وَ لَا تَمَسُّوۡهَا بِسُوۡٓءٍ فَیَاۡخُذَکُمۡ عَذَابٌ قَرِیۡبٌ ﴿۶۴﴾

আর হে আমার জাতি, আল্লাহর এ উষ্ট্রীটি তোমাদের জন্য নিদর্শন, অতএব তাকে আল্লাহর যমীনে বিচরণ করে খেতে দাও, এবং তাকে মন্দভাবে স্পর্শও করবে না । নতুবা অতি সত্ত্বর তোমাদেরকে আযাব পাকড়াও করবে ।


فَعَقَرُوۡهَا فَقَالَ تَمَتَّعُوۡا فِیۡ دَارِکُمۡ ثَلٰثَۃَ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ وَعۡدٌ غَیۡرُ مَکۡذُوۡبٍ ﴿۶۵﴾

তবু তারা এটায় পা কেটে দিল । তখন সালিহ বললেন—তোমরা নিজেদের গৃহে তিনটি দিন উপভোগ করে নাও । এটা এমন ওয়াদা যা মিথ্যা হবে না ।


فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا صٰلِحًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ مِنۡ خِزۡیِ یَوۡمِئِذٍ ؕ اِنَّ رَبَّکَ هُوَ الۡقَوِیُّ الۡعَزِیۡزُ ﴿۶۶﴾

অত:পর আমার আযাব যখন উপস্থিত হলো, তখন আমি সালিহকে ও তদীয় সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে উদ্ধার করি, এবং সেদিনকার অপমান হতে রক্ষা করি । নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা তিনিই সর্বশক্তিমান পরাক্রমশালী ।


وَ اَخَذَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دِیَارِهِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۙ۶۷﴾

আর ভয়ংকর গর্জন পাপিষ্ঠদের পাকড়াও করল, ফলে ভোর হতে না হতেই তারা নিজ নিজ গৃহসমূহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল ।


کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ؕ اَلَاۤ اِنَّ ثَمُوۡدَا۠ کَفَرُوۡا رَبَّہُمۡ ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّثَمُوۡدَ ﴿٪۶۸﴾

যেন তারা কোনদিনই সেখানে ছিল না । জেনে রাখ, নিশ্চয় সামুদ জাতি তাদের পালনকর্তার প্রতি অস্বীকার করেছিল ! আরো শুনে রাখ, সামুদ জাতির জন্য অভিশাপ রয়েছে ।


وَ لَقَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُنَاۤ اِبۡرٰهِیۡمَ بِالۡبُشۡرٰی قَالُوۡا سَلٰمًا ؕ قَالَ سَلٰمٌ فَمَا لَبِثَ اَنۡ جَآءَ بِعِجۡلٍ حَنِیۡذٍ ﴿۶۹﴾

আর অবশ্যই আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ইবরাহীমের কাছে সুসংবাদ নিয়ে এসেছিল, তারা বলল—সালাম, তিনিও বললেন—সালাম । অত:পর অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি একটি ভুনা করা বাছুর নিয়ে এলেন !


فَلَمَّا رَاٰۤ اَیۡدِیَہُمۡ لَا تَصِلُ اِلَیۡہِ نَکِرَهُمۡ وَ اَوۡجَسَ مِنۡہُمۡ خِیۡفَۃً ؕ قَالُوۡا لَا تَخَفۡ اِنَّاۤ اُرۡسِلۡنَاۤ اِلٰی قَوۡمِ لُوۡطٍ ﴿ؕ۷۰﴾

কিন্তু যখন দেখলেন যে, আহার্যর দিকে তাদের হস্ত প্রসারিত হচ্ছে না, তখন তিনি সন্দিগ্ধ হলেন এবং মনে মনে তাদের সম্পর্কে ভয় অনুভব করতে লাগলেন । তারা বলল—ভয় পাবেন না ! আমরা লূতের কওমের প্রতি প্রেরিত হয়েছি ।


وَ امۡرَاَتُہٗ قَآئِمَۃٌ فَضَحِکَتۡ فَبَشَّرۡنٰہَا بِاِسۡحٰقَ ۙ وَ مِنۡ وَّرَآءِ اِسۡحٰقَ یَعۡقُوۡبَ ﴿۷۱﴾

তার স্ত্রীও নিকটেই দাঁড়িয়েছিল, সে হেসে ফেলল । অত:পর আমি তাকে ইসহাকের জন্মের সুখবর দিলাম এবং ইসহাকের পরে ইয়াকুবেরও ।


قَالَتۡ یٰوَیۡلَتٰۤیءَ اَلِدُ وَ اَنَا عَجُوۡزٌ وَّ هٰذَا بَعۡلِیۡ شَیۡخًا ؕ اِنَّ هٰذَا لَشَیۡءٌ عَجِیۡبٌ ﴿۷۲﴾

সে বলল—কি দুর্ভাগ্য আমার ! আমি সন্তান প্রসব করব ? অথচ আমি বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে এসে উপনীত হয়েছি আর আমার স্বামীও বৃদ্ধ, এ তো ভারী আশ্চর্য কথা !


قَالُوۡۤا اَتَعۡجَبِیۡنَ مِنۡ اَمۡرِ اللّٰہِ رَحۡمَتُ اللّٰہِ وَ بَرَکٰتُہٗ عَلَیۡکُمۡ اَهْلَ الۡبَیۡتِ ؕ اِنَّہٗ حَمِیۡدٌ مَّجِیۡدٌ ﴿۷۳﴾

তারা বলল—তুমি আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে বিস্ময়বোধ করছ ? হে গৃহবাসীরা, তোমাদের উপর আল্লাহর রহমত ও প্রভূত বরকত রয়েছে । নিশ্চয় আল্লাহ প্রশংসিত, মহিমময় ।


فَلَمَّا ذَهَبَ عَنۡ اِبۡرٰهِیۡمَ الرَّوۡعُ وَ جَآءَتۡہُ الۡبُشۡرٰی یُجَادِلُنَا فِیۡ قَوۡمِ لُوۡطٍ ﴿ؕ۷۴﴾

অত:পর যখন ইবরাহীম ( আ )-এর আতঙ্ক দূর হলো এবং তিনি সুসংবাদ প্রাপ্ত হলেন, তখন তিনি আমার সাথে তর্ক শুরু করলেন কওমে লূত সম্পর্কে ।


اِنَّ اِبۡرٰهِیۡمَ لَحَلِیۡمٌ اَوَّاہٌ مُّنِیۡبٌ ﴿۷۵﴾

ইবরাহীম ( আ ) বড়ই ধের্যশীল, কোমল হৃদয়, আল্লাহমুখী সন্দেহ নেই ।


یٰۤـاِبۡرٰهِیۡمُ اَعۡرِضۡ عَنۡ هٰذَا ۚ اِنَّهٗ قَدۡ جَآءَ اَمۡرُ رَبِّکَ ۚ وَ اِنَّهُمۡ اٰتِیۡهِمۡ عَذَابٌ غَیۡرُ مَرۡدُوۡدٍ ﴿۷۶﴾

ইবরাহীম, এহেন ধারণা পরিহার কর ; তোমার পালনকর্তার হুকুম এসে গেছে, এবং তাদের উপর সে আযাব অবশ্যই আপতিত হবে , যা কখনো প্রতিহত হবার নয় ।


وَ لَمَّا جَآءَتۡ رُسُلُنَا لُوۡطًا سِیۡٓءَ بِهِمۡ وَ ضَاقَ بِهِمۡ ذَرۡعًا وَّ قَالَ هٰذَا یَوۡمٌ عَصِیۡبٌ ﴿۷۷﴾

আর যখন আমার প্রেরিত ফেরেশতাগণ লূত ( আ ) এর নিকট উপস্থিত হলো, তখন তাদের আগমনে তিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হলেন, এবং তিনি বলতে লাগলেন—আজ অত্যন্ত কঠিন দিন ।


وَ جَآءَهٗ قَوۡمُهٗ یُهۡرَعُوۡنَ اِلَیۡهِ ؕ وَ مِنۡ قَبۡلُ کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ السَّیِّاٰتِ ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ هٰۤؤُلَآءِ بَنَاتِیۡ هُنَّ اَطۡهَرُ لَکُمۡ فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ لَا تُخۡزُوۡنِ فِیۡ ضَیۡفِیۡ ؕ اَلَـیۡسَ مِنۡکُمۡ رَجُلٌ رَّشِیۡدٌ ﴿۷۸﴾

আর তার কওমের লোকেরা স্বত:স্ফুর্তভাবে তার ( গৃহ ) পানে ছুটে আসতে লাগল । পূর্ব থেকেই তারা কুকর্মে তৎপর ছিল । লূত ( আ ) বললেন—’হে আমার কওম, এ আমার কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতমা । সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, এবং অতিথিদের ব্যাপারে আমাকে লজ্জিত করো না । তোমাদের মধ্যে কি কোন ভাল মানুষ নেই ?


قَالُوۡا لَقَدۡ عَلِمۡتَ مَا لَنَا فِیۡ بَنٰتِکَ مِنۡ حَقٍّ ۚ وَ اِنَّکَ لَتَعۡلَمُ مَا نُرِیۡدُ ﴿۷۹﴾

তারা বলল—তুমি তো জানই, তোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই । আর আমরা কি চাই, তাও তুমি অবশ্যই জান ।


قَالَ لَوۡ اَنَّ لِیۡ بِکُمۡ قُوَّۃً اَوۡ اٰوِیۡۤ اِلٰی رُکۡنٍ شَدِیۡدٍ ﴿۸۰﴾

লূত ( আ ) বললেন—হায়, তোমাদের বিরুদ্ধে যদি আমার শক্তি থাকত অথবা আমি কোন সুদৃঢ় আশ্রয় গ্রহণ করতে সক্ষম হতাম ।


قَالُوۡا یٰلُوۡطُ اِنَّا رُسُلُ رَبِّکَ لَنۡ یَّصِلُوۡۤا اِلَیۡکَ فَاَسۡرِ بِاَهْلِکَ بِقِطۡعٍ مِّنَ الَّیۡلِ وَ لَا یَلۡتَفِتۡ مِنۡکُمۡ اَحَدٌ اِلَّا امۡرَاَتَکَ ؕ اِنَّہٗ مُصِیۡبُہَا مَاۤ اَصَابَہُمۡ ؕ اِنَّ مَوۡعِدَهُمُ الصُّبۡحُ ؕ اَلَـیۡسَ الصُّبۡحُ بِقَرِیۡبٍ ﴿۸۱﴾

মেহমান ফেরেশতাগণ বলল—হে লুত ( আ ), আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা ! এরা কখনো তোমার দিকে পৌঁছতে পারবে না । ব্যস, তুমি কিছুটা রাত থাকতে থাকতে নিজের লোকজন নিয়ে বাইরে চলে যাও ! আর তোমাদের কেউ যেন পিছনে ফিরে না থাকায় । কিন্তু তোমার স্ত্রী , নিশ্চয় তার উপরও ওটা আপতিত হবে, যা ওদের উপর আপতিত হবে । ভোর বেলাই তাদের প্রতিশ্রুতির সময়, ভোর কি খুব কাছে নয় ?


فَلَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا جَعَلۡنَا عَالِیَہَا سَافِلَہَا وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡہَا حِجَارَۃً مِّنۡ سِجِّیۡلٍ ۬ۙ مَّنۡضُوۡدٍ ﴿ۙ۸۲﴾

তারপর আমার নির্দেশ যখন এসে গেল, তখন আমি সেই জনপদকে উপর নীচ করে উল্টে দিলাম, আর তাদের উপর স্তরে স্তরে পাকানো মাটির প্রস্তর বর্ষণ করলাম।


مُّسَوَّمَۃً عِنۡدَ رَبِّکَ ؕ وَ مَا هِیَ مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ بِبَعِیۡدٍ ﴿٪۸۳﴾

যার প্রতিটি তোমার পালনকর্তার নিকট চিহিৃত ছিল । আর তা পাপিষ্ঠদের থেকে খুব দূরেও নয় !


وَ اِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاهُمۡ شُعَیۡبًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ وَ لَا تَنۡقُصُوا الۡمِکۡیَالَ وَ الۡمِیۡزَانَ اِنِّیۡۤ اَرٰىکُمۡ بِخَیۡرٍ وَّ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ مُّحِیۡطٍ ﴿۸۴﴾

আর মাদয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শুয়াইব ( আ ) কে প্রেরণ করেছি । তিনি বললেন—হে আমার কওম ! আল্লাহর বন্দেগী কর, তিনি ছাড়া আমাদের কোন মাবুদ নেই আর পরিমাপে ও ওজনে কম দিও না, আজ আমি তোমাদেরকে ভাল অবস্থায়ই দেখছি । কিন্তু আমি তোমাদের উপর এমন একদিনের আযাবের আশঙ্কা করছি যেদিনটি পরিবেষ্টনকারী ।


وَ یٰقَوۡمِ اَوۡفُوا الۡمِکۡیَالَ وَ الۡمِیۡزَانَ بِالۡقِسۡطِ وَ لَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَهُمۡ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ﴿۸۵﴾

আর হে আমার জাতি, ন্যায়নিষ্ঠার সাথে ঠিকভাবে পরিমাপ কর ও ওজন দাও এবং লোকদের জিনিসপত্রে কোনরুপ ক্ষতি করো না, আর পৃথিবীতে ফাসাদ করে বেড়াবে না


بَقِیَّتُ اللّٰہِ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ۬ۚ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡکُمۡ بِحَفِیۡظٍ ﴿۸۶﴾

আল্লাহ প্রদত্ত উবৃত্ত তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা ঈমানদার হও, আর আমি তো তোমাদের উপর সদা পর্যবেক্ষণকারী নই ।


قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ اَصَلٰوتُکَ تَاۡمُرُکَ اَنۡ نَّتۡرُکَ مَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَاۤ اَوۡ اَنۡ نَّفۡعَلَ فِیۡۤ اَمۡوَالِنَا مَا نَشٰٓؤُاؕ اِنَّکَ لَاَنۡتَ الۡحَلِیۡمُ الرَّشِیۡدُ ﴿۸۷﴾

তারা বলল—হে শুয়াইব আপনার নামায কি আপনাকে এটাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐ উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত ? অথবা আমাদের ধন-সম্পদ ইচ্ছমত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব ? আপনি তো একজন খাসা মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক ।


قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کُنۡتُ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ رَزَقَنِیۡ مِنۡہُ رِزۡقًا حَسَنًا ؕ وَ مَاۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اُخَالِفَکُمۡ اِلٰی مَاۤ اَنۡہٰکُمۡ عَنۡہُ ؕ اِنۡ اُرِیۡدُ اِلَّا الۡاِصۡلَاحَ مَا اسۡتَطَعۡتُ ؕ وَ مَا تَوۡفِیۡقِیۡۤ اِلَّا بِاللّٰہِ ؕعَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ وَ اِلَیۡہِ اُنِیۡبُ ﴿۸۸﴾

শুয়াইব ( আ ) বললেন—হে দেশবাসী, তোমরা কি মনে কর ! আমি যদি আমার পরওয়ারদিগারের পক্ষ হতে সুস্পষ্ট দলীলের উপর কায়েম থাকি আর তিনি যদি নিজের তরফ হতে আমাকে উত্তম রিযিক দান করে থাকেন, ( তবে কি আমি তাঁর হুকুম অমান্য করতে পারি ? ) আর আমি চাই না যে, তোমাদেরকে যা ছাড়াতে চাই পরে নিজেই সে কাজে লিপ্ত হব, আমি তো যথাসাধ্য শোধরাতে চাই । আল্লাহর মদদ দ্বারাই কিন্তু কাজ হয়ে থাকে, আমি তাঁর উপরই নির্ভর করি এবং তাঁরই প্রতি ফিরে যাই ।


وَ یٰقَوۡمِ لَا یَجۡرِمَنَّکُمۡ شِقَاقِیۡۤ اَنۡ یُّصِیۡبَکُمۡ مِّثۡلُ مَاۤ اَصَابَ قَوۡمَ نُوۡحٍ اَوۡ قَوۡمَ هُوۡدٍ اَوۡ قَوۡمَ صٰلِحٍ ؕ وَ مَا قَوۡمُ لُوۡطٍ مِّنۡکُمۡ بِبَعِیۡدٍ ﴿۸۹﴾

আর হে আমার জাতি ! আমার সাথে জিদ করে তোমরা নূহ বা হুদ অথবা সালিহ ( আ )-এর কওমের মত নিজেদের উপর আযাব ডেকে আনবে না । আর লূতের জাতি তো তোমাদের থেকে খুব দূরে নয় ।


وَ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّکُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡہِ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ رَحِیۡمٌ وَّدُوۡدٌ ﴿۹۰﴾

আর তোমাদের পালনকর্তার কাছে মার্জনা চাও এবং তাঁরই পানে ফিরে এসো । নিশ্চয়ই আমার পরওয়ারদিগার খুবই মেহেরবান অতি স্নেহময় ।


قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ مَا نَفۡقَہُ کَثِیۡرًا مِّمَّا تَقُوۡلُ وَ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡنَا ضَعِیۡفًا ۚ وَ لَوۡ لَا رَهْطُکَ لَرَجَمۡنٰکَ ۫ وَ مَاۤ اَنۡتَ عَلَیۡنَا بِعَزِیۡزٍ ﴿۹۱﴾

তারা বলল, হে শুয়াইব, আপনি যা বলেছেন তার অনেক কথাই আমরা বুঝি নি, আমরা তো আপনাকে আমাদের মধ্যে দুর্বল ব্যক্তিরুপে মনে করি । আপনার ভাই-বন্ধুরা না থাকলে আমরা আপনাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতাম । আমাদের দৃষ্টিতে আপনি কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি নন ।


قَالَ یٰقَوۡمِ اَرَهْطِیۡۤ اَعَزُّ عَلَیۡکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ ؕ وَ اتَّخَذۡتُمُوۡہُ وَرَآءَکُمۡ ظِہۡرِیًّا ؕ اِنَّ رَبِّیۡ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ مُحِیۡطٌ ﴿۹۲﴾

শুয়াইব ( আ ) বললেন—হে আমার জাতি, আমার ভাই-বন্ধরা কি তোমাদের কাছে আল্লাহর চেয়ে প্রভাবশালী ? আর তোমরা তাকে বিস্মৃত হয়ে পেছনে ফেলে রেখেছ, নিশ্চয় তোমাদের কার্যকলাপ আমার পালনকর্তার আয়ত্তে রয়েছে ।


وَ یٰقَوۡمِ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ اِنِّیۡ عَامِلٌ ؕ سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ یَّاۡتِیۡہِ عَذَابٌ یُّخۡزِیۡہِ وَ مَنۡ هُوَ کَاذِبٌ ؕ وَ ارۡتَقِبُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ رَقِیۡبٌ ﴿۹۳﴾

আর হে আমার জাতি, তোমরা নিজ স্থানে কাজ করে যাও, আমিও কাজ করছি, অচিরেই জানতে পারবে কার উপর অপমানকর আযাব আসে আর কে মিথ্যাবাদী ! আর তোমরাও অপেক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে আপেক্ষায় রইলাম ।


وَ لَمَّا جَآءَ اَمۡرُنَا نَجَّیۡنَا شُعَیۡبًا وَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ اَخَذَتِ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوا الصَّیۡحَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دِیَارِهِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۙ۹۴﴾

আর আমার হুকুম যখন এল, আমি শুয়াইব ( আ ) ও তার সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে রক্ষা করি, আর পাপিষ্ঠদের উপর বিকট গর্জন পতিত হল । ফলে ভোর না হতেই তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে পড়ে রইল ।


کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ؕ اَلَا بُعۡدًا لِّمَدۡیَنَ کَمَا بَعِدَتۡ ثَمُوۡدُ ﴿٪۹۵﴾

যেন তারা সেখানে কখনো বসবাসই করে নি । জেনে রাখ, সামুদের প্রতি অভিসম্পাতের মত মাদইয়ানবাসীর উপরেও অভিসম্পাত ।


وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مُوۡسٰی بِاٰیٰتِنَا وَ سُلۡطٰنٍ مُّبِیۡنٍ ﴿ۙ۹۶﴾

আর আমি মূসা ( আ ) -কে প্রেরণ করি আমার নিদর্শনাদি ও সুস্পষ্ট সনদসহ;


اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ فَاتَّبَعُوۡۤا اَمۡرَ فِرۡعَوۡنَ ۚ وَ مَاۤ اَمۡرُ فِرۡعَوۡنَ بِرَشِیۡدٍ ﴿۹۷﴾

ফিরাউন ও তার পারিষদবর্গের কাছে; তবুও তারা ফিরাউনের হুকুমে চলতে থাকে, অথচ ফিরাউনের কোন কথা ন্যায়সঙ্গত ছিল না ।


یَقۡدُمُ قَوۡمَہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ فَاَوۡرَدَهُمُ النَّارَ ؕ وَ بِئۡسَ الۡوِرۡدُ الۡمَوۡرُوۡدُ ﴿۹۸﴾

কিয়ামতের দিন সে তার জাতির লোকদের আগে আগে থাকবে এবং তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে পৌঁছে দেবে, আর সেটা অতীব নিকৃষ্ট স্থান, যেখানে তারা পৌঁছেছে ।


وَ اُتۡبِعُوۡا فِیۡ هٰذِهٖ لَعۡنَۃً وَّ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ بِئۡسَ الرِّفۡدُ الۡمَرۡفُوۡدُ ﴿۹۹﴾

আর এ জগতেও তাদের পিছনে লানত রয়েছে এবং কিয়ামতের দিনেও; অত্যন্ত জঘন্য প্রতিফল, যা তারা পেয়েছে ।


ذٰلِکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡقُرٰی نَقُصُّہٗ عَلَیۡکَ مِنۡہَا قَآئِمٌ وَّ حَصِیۡدٌ ﴿۱۰۰﴾

এ হচ্ছে কয়েকটি জনপদের সামান্য ইতিবৃত্ত, যা আমি আপনাকে শোনাচ্ছি । তন্মাধ্যে কোন কোনটি এখনও বর্তমান আছে আর কোন কোনটির শিকড় কেটে দেওয়া হয়েছে ।


وَ مَا ظَلَمۡنٰہُمۡ وَ لٰکِنۡ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَمَاۤ اَغۡنَتۡ عَنۡہُمۡ اٰلِہَتُہُمُ الَّتِیۡ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ لَّمَّا جَآءَ اَمۡرُ رَبِّکَ ؕ وَ مَا زَادُوۡهُمۡ غَیۡرَ تَتۡبِیۡبٍ ﴿۱۰۱﴾

আমি কিন্তু তাদের প্রতি জুলুম করিনি বরং তারা নিজেরাই নিজের উপর অবিচার করেছে । ফলে আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা যেসব মাবুদকে ডাকতো আপনার পালনকর্তার হুকুম যখন এসে পড়ল, তখন কেউ কোন কাজে আসল না । তারা শুধু বিপর্যয়ই বৃদ্ধি করল ।


وَ کَذٰلِکَ اَخۡذُ رَبِّکَ اِذَاۤ اَخَذَ الۡقُرٰی وَ هِیَ ظَالِمَۃٌ ؕ اِنَّ اَخۡذَہٗۤ اَلِیۡمٌ شَدِیۡدٌ ﴿۱۰۲﴾

আর তোমার পরওয়ারদিগার যখন কোন পাপপূর্ণ জনপদকে ধরেন, তখন এমনিভাবেই ধরে থাকেন । নিশ্চয় তাঁর পাকড়াও খুবই মারাত্মক, বড়ই কঠোর ।


اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً لِّمَنۡ خَافَ عَذَابَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ ذٰلِکَ یَوۡمٌ مَّجۡمُوۡعٌ ۙ لَّہُ النَّاسُ وَ ذٰلِکَ یَوۡمٌ مَّشۡہُوۡدٌ ﴿۱۰۳﴾

নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন প্রতিটি মানুষের জন্য, যে আখিরাতের আযাবকে ভয় করে । তা এমন একদিন, যে দিন সব মানুষই সমবেত হবে, সেদিনটি যে হাজিরের দিন ।


وَ مَا نُؤَخِّرُہٗۤ اِلَّا لِاَجَلٍ مَّعۡدُوۡدٍ ﴿۱۰۴﴾ؕ

আর আমি যে তা বিলম্বিত করি, তা শুধু একটি ওয়াদার কারণে যা নির্ধারিত রয়েছে ।


یَوۡمَ یَاۡتِ لَا تَکَلَّمُ نَفۡسٌ اِلَّا بِاِذۡنِہٖ ۚ فَمِنۡہُمۡ شَقِیٌّ وَّ سَعِیۡدٌ ﴿۱۰۵﴾

যেদিন তা আসবে সেদিন আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ কোন কথা বলতে পারবে না । অত:পর কিছু লোক হবে হতভাগা, আর কিছু লোক সৌভাগ্যবান ।


فَاَمَّا الَّذِیۡنَ شَقُوۡا فَفِی النَّارِ لَہُمۡ فِیۡہَا زَفِیۡرٌ وَّ شَہِیۡقٌ ﴿۱۰۶﴾ۙ

অতএব যারা হতভাগ্য তারা দোযখে যাবে, সেখানে তারা আর্তনাদ ও চিৎকার করতে থাকবে ।


خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّکَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ فَعَّالٌ لِّمَا یُرِیۡدُ ﴿۱۰۷﴾

তারা সেখানে চিরকাল থাকবে; যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে । তবে তোমার প্রতিপালক অন্য কিছু ইচ্ছা করলে ভিন্ন কথা । নিশ্চয় তোমার পরওয়ারদিগার যা ইচ্ছা করতে পারেন ।


وَ اَمَّا الَّذِیۡنَ سُعِدُوۡا فَفِی الۡجَنَّۃِ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّکَ ؕ عَطَآءً غَیۡرَ مَجۡذُوۡذٍ ﴿۱۰۸﴾

আর যারা সৌভাগ্যবান তারা বেহেশতের মাঝে, সেখানেই চিরদিন থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে । তবে তোমার প্রভু অন্য কিছু ইচ্ছা করলে ভিন্ন কথা । এ দানের ধারাবাহিকতা কখনো ছিন্ন হওয়ার নয় ।


فَلَا تَکُ فِیۡ مِرۡیَۃٍ مِّمَّا یَعۡبُدُ هٰۤؤُلَآءِ ؕ مَا یَعۡبُدُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُهُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ وَ اِنَّا لَمُوَفُّوۡهُمۡ نَصِیۡبَهُمۡ غَیۡرَ مَنۡقُوۡصٍ ﴿۱۰۹﴾

অতএব , তারা যেসবের উপাসনা করে তুমি সে ব্যাপারে কোনরুপ ধোঁকায় পড়বে না । তাদের পূর্ববর্তী বাপদাদারা যেমন পূজা উপাসনা করত, এরাও তেমন করছে । আর নিশ্চয় আমি তাদেরকে আযাবের ভাগ কিছুমাত্র কম না করেই পুরোপুরি দান করবো ।


وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ فَاخۡتُلِفَ فِیۡہِ ؕ وَ لَوۡ لَا کَلِمَۃٌ سَبَقَتۡ مِنۡ رَّبِّکَ لَقُضِیَ بَیۡنَہُمۡ ؕ وَ اِنَّہُمۡ لَفِیۡ شَکٍّ مِّنۡہُ مُرِیۡبٍ ﴿۱۱۰﴾

আর আমি মূসা ( আ ) -কে অবশ্যই কিতাব দিয়েছিলাম অত:পর তাতে বিরোধ সৃষ্টি হলো; বলা বাহুল্য তোমার পালনকর্তার পক্ষে হতে, একটি কথা যদি আগেই বলা না হতো, তাহলে তাদের মধ্যে চুড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যেত । তারা এ ব্যাপারে এমনই সন্দেহপ্রবণ যে কিছুতেই নিশ্চিত হতে পারছে না ।


وَ اِنَّ کُلًّا لَّمَّا لَیُوَفِّیَنَّہُمۡ رَبُّکَ اَعۡمَالَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ خَبِیۡرٌ ﴿۱۱۱﴾

আর যত লোকই হোক না কেন, যখন সময় হবে, তোমার প্রভু তাদের সকলেই আমাদের প্রতিদান পুরোপুরি দান করবেন । নিশ্চয় তিনি তাদের যাবতীয় কার্যকলাপের খবর রাখেন ।


فَاسۡتَقِمۡ کَمَاۤ اُمِرۡتَ وَ مَنۡ تَابَ مَعَکَ وَ لَا تَطۡغَوۡا ؕ اِنَّہٗ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ ﴿۱۱۲﴾

অতএব, তুমি এবং তোমার সাথে যারা তওবা করেছ সবাই সোজা পথে চলে যাও—যেমন তোমার হুকুম দেওয়া হয়েছে এবং সীমা লংঘন করবে না, তোমরা যা কিছু করছ নিশ্চয় তিনি তার প্রতি দৃষ্টি রাখেন ।


وَ لَا تَرۡکَنُوۡۤا اِلَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا فَتَمَسَّکُمُ النَّارُ ۙ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مِنۡ اَوۡلِیَآءَ ثُمَّ لَا تُنۡصَرُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾

আর পাপিষ্ঠদের প্রতি ঝুঁকবে না । নতুবা তোমাদেরকেও আগুনে ধরবে । আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন বন্ধু নেই । অতএব কোথাও সাহায্য পাবে না ।


وَ اَقِمِ الصَّلٰوۃَ طَرَفَیِ النَّہَارِ وَ زُلَفًا مِّنَ الَّیۡلِ ؕ اِنَّ الۡحَسَنٰتِ یُذۡهِبۡنَ السَّیِّاٰتِ ؕ ذٰلِکَ ذِکۡرٰی لِلذّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾ۚ

আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতেরও প্রান্তভাগে; পুণ্য কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটা এক মহা স্মারক ।


وَ اصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۱۵﴾

আর ধের্য ধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ পুণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না ।


فَلَوۡ لَا کَانَ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ اُولُوۡا بَقِیَّۃٍ یَّنۡہَوۡنَ عَنِ الۡفَسَادِ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّنۡ اَنۡجَیۡنَا مِنۡہُمۡ ۚ وَ اتَّبَعَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مَاۤ اُتۡرِفُوۡا فِیۡہِ وَ کَانُوۡا مُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۱۶﴾

কাজেই, তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিগুলোর মধ্যে এমন সৎকর্মশীল কেন রইল না, যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে বাধা দিত; তবে মুষ্টিমেয় লোক ছিল যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রক্ষা করেছি । আর পাপিষ্ঠরা তো ভোগবিলাসে মত্ত ছিল—যার সামগ্রী তাদেরকে যথেষ্ট দেওয়া হয়েছিল । আসলে তারা ছিল মহা অপরাধী ।


وَ مَا کَانَ رَبُّکَ لِیُہۡلِکَ الۡقُرٰی بِظُلۡمٍ وَّ اَهْلُہَا مُصۡلِحُوۡنَ ﴿۱۱۷﴾

আর তোমার পালনকর্তা এমন নন যে, জনবসতিগুলোকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দিবেন, সেখানকার লোকেরা সৎকর্মলীল হওয়া সত্ত্বেও ।


وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ لَجَعَلَ النَّاسَ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً وَّ لَا یَزَالُوۡنَ مُخۡتَلِفِیۡنَ ﴿۱۱۸﴾ۙ

আর তোমার পালনকর্তা যদি ইচ্ছা করতেন, তবে অবশ্যই সব মানুষকে একই পথের পথিক করে দিতে পারতেন । তোমার পালনকর্তা যাদের উপর রহমত করেছেন, তারা বাদে সবাই চিরদিন মতভেদ করতেই থাকবে, এবং এজন্যই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন্ ।


اِلَّا مَنۡ رَّحِمَ رَبُّکَ ؕ وَ لِذٰلِکَ خَلَقَہُمۡ ؕ وَ تَمَّتۡ کَلِمَۃُ رَبِّکَ لَاَمۡلَـَٔنَّ جَہَنَّمَ مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾

আর তোমার আল্লাহর কথাই পূর্ণ হলো যে, অবশ্যই আমি জাহান্নামকে জিন ও মানুষ দ্বারা একযোগে ভর্তি করব ।


وَ کُلًّا نَّقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الرُّسُلِ مَا نُثَبِّتُ بِهٖ فُؤَادَکَ ۚ وَ جَآءَکَ فِیۡ هٰذِهِ الۡحَقُّ وَ مَوۡعِظَۃٌ وَّ ذِکۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۲۰﴾

আর আমি রাসূলগণের সবকিছু বৃত্তান্তই তোমাকে বলছি, যা দ্বারা তোমার অন্তরকে মজবুত করছি । আর এভাবে তোমার নিকট মহাসত্য এবং ঈমানদারদের জন্য নসীহত ও স্মরণীয় বিষয়বস্তু এসেছে ।


وَ قُلۡ لِّلَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ ؕ اِنَّا عٰمِلُوۡنَ ﴿۱۲۱﴾ۙ

আর যারা ঈমান আনে না, তাদের বলে দাও যে তোমরা নিজ নিজ অবস্থায় কাজ করে যাও, আমরাও কাজ করে যাই ।


وَ انۡتَظِرُوۡا ۚ اِنَّا مُنۡتَظِرُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾

এবং তোমরাও অপেক্ষা করতে থাক, আমরাও অপেক্ষায় রইলাম ।


وَ لِلّٰہِ غَیۡبُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ اِلَیۡہِ یُرۡجَعُ الۡاَمۡرُ کُلُّہٗ فَاعۡبُدۡہُ وَ تَوَکَّلۡ عَلَیۡہِ ؕ وَ مَا رَبُّکَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۳﴾

আর আল্লাহর কাছেই আছে আসমান ও যমীনের গোপন তথ্য; আর সকল কাজেই প্রত্যাবর্তন তারই দিকে; অতএব, তাঁরই বন্দেগী কর এবং তাঁরই উপরে ভরসা রাখ, আর তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালক কিন্তু বে-খবর নন ।