طٰسٓمّٓ ﴿۱﴾
তা-সীন-মীম।
تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ ﴿۲﴾
এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
لَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ اَلَّا یَکُوۡنُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۳﴾
তারা মুমিন হবে না বলে হয়ত তুমি আত্মবিনাশী হয়ে পড়বে।
اِنۡ نَّشَاۡ نُنَزِّلۡ عَلَیۡہِمۡ مِّنَ السَّمَآءِ اٰیَۃً فَظَلَّتۡ اَعۡنَاقُہُمۡ لَہَا خٰضِعِیۡنَ ﴿۴﴾
আমি ইচ্ছা করলে আসমান থেকে তাদের উপর এমন নিদর্শন অবতীর্ণ করতাম ফলে তার প্রতি তাদের ঘাড়গুলো নত হয়ে যেত।
وَ مَا یَاۡتِیۡہِمۡ مِّنۡ ذِکۡرٍ مِّنَ الرَّحۡمٰنِ مُحۡدَثٍ اِلَّا کَانُوۡا عَنۡہُ مُعۡرِضِیۡنَ ﴿۵﴾
আর যখনই তাদের কাছে পরম করুণাময়ের পক্ষ থেকে কোন নতুন উপদেশ আসে তখনই তারা তা থেকে বিমুখ হয়।
فَقَدۡ کَذَّبُوۡا فَسَیَاۡتِیۡہِمۡ اَنۡۢبٰٓؤُا مَا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۶﴾
অতএব অবশ্যই তারা অস্বীকার করেছে। কাজেই তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত, তার সংবাদ অচিরেই তাদের কাছে এসে পড়বে।
اَوَ لَمۡ یَرَوۡا اِلَی الۡاَرۡضِ کَمۡ اَنۡۢبَتۡنَا فِیۡہَا مِنۡ کُلِّ زَوۡجٍ کَرِیۡمٍ ﴿۷﴾
তারা কি যমীনের প্রতি লক্ষ করেনি? আমি তাতে প্রত্যেক প্রকারের বহু উৎকৃষ্ট উদ্ভিদ উদগত করেছি।
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕوَ مَا کَانَ اَکۡثَرُ هُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۸﴾
নিশ্চয় এতে আছে নিদর্শন, আর তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿٪۹﴾
আর নিশ্চয় তোমার রব, তিনি তো মহা পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
وَ اِذۡ نَادٰی رَبُّکَ مُوۡسٰۤی اَنِ ائۡتِ الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۱۰﴾
আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব মূসাকে ডেকে বললেন, ‘তুমি যালিম সম্প্রদায়ের কাছে যাও’।
قَوۡمَ فِرۡعَوۡنَ ؕ اَلَا یَتَّقُوۡنَ ﴿۱۱﴾
‘ফির‘আউনের সম্প্রদায়ের কাছে। তারা কি ভয় করবে না’?
قَالَ رَبِّ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اَنۡ یُّکَذِّبُوۡنِ ﴿ؕ۱۲﴾
মূসা বলল, ‘হে আমার রব, আমি অবশ্যই আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে অস্বীকার করবে’।
وَ یَضِیۡقُ صَدۡرِیۡ وَ لَا یَنۡطَلِقُ لِسَانِیۡ فَاَرۡسِلۡ اِلٰی هٰرُوْنَ ﴿۱۳﴾
‘আর আমার বক্ষ সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। আমার জিহবা চলছে না। সুতরাং আপনি হারুনের প্রতি ওহী পাঠান’।
وَ لَہُمۡ عَلَیَّ ذَنۡۢبٌ فَاَخَافُ اَنۡ یَّقۡتُلُوۡنِ ﴿ۚ۱۴﴾
আর আমার বিরুদ্ধে তাদের কাছে একটি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। ফলে আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করে ফেলবে’।
قَالَ کَلَّا ۚ فَاذۡهَبَا بِاٰیٰتِنَاۤ اِنَّا مَعَکُمۡ مُّسۡتَمِعُوۡنَ ﴿۱۵﴾
আল্লাহ বললেন, ‘কখনো নয়। তোমরা উভয়ে আমার নিদর্শনাদিসহ যাও। অবশ্যই আমি আছি তোমাদের সাথে শ্রবণকারী’।
فَاۡتِیَا فِرۡعَوۡنَ فَقُوۡلَاۤ اِنَّا رَسُوۡلُ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۱۶﴾
‘সুতরাং তোমরা উভয়ে ফির‘আউনের কাছে গিয়ে বল, নিশ্চয় আমরা বিশ্বজগতের রবের রাসূল’।
اَنۡ اَرۡسِلۡ مَعَنَا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿ؕ۱۷﴾
‘যাতে তুমি বনী ইসরাঈলকে আমাদের সাথে পাঠাও’।
قَالَ اَلَمۡ نُرَبِّکَ فِیۡنَا وَلِیۡدًا وَّ لَبِثۡتَ فِیۡنَا مِنۡ عُمُرِکَ سِنِیۡنَ ﴿ۙ۱۸﴾
ফির‘আউন বলল, ‘আমরা কি তোমাকে শৈশবে আমাদের মাঝে লালন পালন করিনি? আর তুমি তোমার জীবনের অনেক বছর আমাদের মধ্যে অবস্থান করেছ’।
وَ فَعَلۡتَ فَعۡلَتَکَ الَّتِیۡ فَعَلۡتَ وَ اَنۡتَ مِنَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۹﴾
‘আর তুমি তোমার কর্ম যা করার তা করেছ এবং তুমি অকৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত’।
قَالَ فَعَلۡتُہَاۤ اِذًا وَّ اَنَا مِنَ الضَّآلِّیۡنَ ﴿ؕ۲۰﴾
মূসা বলল, ‘আমি এটি তখন করেছিলাম, যখন আমি ছিলাম বিভ্রান্ত’।
فَفَرَرۡتُ مِنۡکُمۡ لَمَّا خِفۡتُکُمۡ فَوَهَبَ لِیۡ رَبِّیۡ حُکۡمًا وَّ جَعَلَنِیۡ مِنَ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۲۱﴾
‘অতঃপর যখন আমি তোমাদেরকে ভয় করলাম, তখন আমি তোমাদের থেকে পালিয়ে গেলাম। তারপর আমার রব আমাকে প্রজ্ঞা দান করলেন এবং আমাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করলেন’।
وَ تِلۡکَ نِعۡمَۃٌ تَمُنُّہَا عَلَیَّ اَنۡ عَبَّدۡتَّ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿ؕ۲۲﴾
‘আর এই তো সে অনুগ্রহ যার খোঁটা তুমি আমাকে দিচ্ছ যে, তুমি বনী ইসরাঈলকে দাস বানিয়ে রেখেছ’।
قَالَ فِرۡعَوۡنُ وَ مَا رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ؕ۲۳﴾
ফির‘আউন বলল, ‘সৃষ্টিকুলের রব কে?’
قَالَ رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا بَیۡنَہُمَا ؕ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّوۡقِنِیۡنَ ﴿۲۴﴾
মূসা বলল, ‘আসমানসমূহ ও যমীন এবং এতদোভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর রব, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হয়ে থাক।’
قَالَ لِمَنۡ حَوۡلَہٗۤ اَلَا تَسۡتَمِعُوۡنَ ﴿۲۵﴾
ফির‘আউন তার আশেপাশে যারা ছিল তাদেরকে বলল, ‘তোমরা কি মনোযোগসহ শুনছ না’?
قَالَ رَبُّکُمۡ وَ رَبُّ اٰبَآئِکُمُ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۲۶﴾
মূসা বলল, ‘তিনি তোমাদের রব এবং তোমাদের পিতৃপুরুষদেরও রব’।
قَالَ اِنَّ رَسُوۡلَکُمُ الَّذِیۡۤ اُرۡسِلَ اِلَیۡکُمۡ لَمَجۡنُوۡنٌ ﴿۲۷﴾
ফির‘আউন বলল, ‘তোমাদের কাছে প্রেরিত তোমাদের এই রাসূল নিশ্চয়ই পাগল’।
قَالَ رَبُّ الۡمَشۡرِقِ وَ الۡمَغۡرِبِ وَ مَا بَیۡنَہُمَا ؕ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۲۸﴾
মূসা বলল, ‘তিনি পূর্ব ও পশ্চিম এবং এতদোভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছুর রব, যদি তোমরা বুঝে থাক’।
قَالَ لَئِنِ اتَّخَذۡتَ اِلٰـہًا غَیۡرِیۡ لَاَجۡعَلَنَّکَ مِنَ الۡمَسۡجُوۡنِیۡنَ ﴿۲۹﴾
ফির‘আউন বলল, ‘যদি তুমি আমাকে ছাড়া কাউকে ইলাহরূপে গ্রহণ কর, তাহলে অবশ্যই আমি তোমাকে কয়েদীদের অন্তর্ভুক্ত করব’।
قَالَ اَوَ لَوۡ جِئۡتُکَ بِشَیۡءٍ مُّبِیۡنٍ ﴿ۚ۳۰﴾
মূসা বলল, ‘যদি আমি তোমার কাছে স্পষ্ট কোন বিষয় নিয়ে আসি, তবুও’?
قَالَ فَاۡتِ بِہٖۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۳۱﴾
ফির‘আউন বলল, ‘তুমি সত্যবাদী হয়ে থাকলে তা নিয়ে এসো’।
فَاَلۡقٰی عَصَاہُ فَاِذَا هِیَ ثُعۡبَانٌ مُّبِیۡنٌ ﴿ۚۖ۳۲﴾
অতঃপর সে তার লাঠি ফেলে দিল, ফলে তৎক্ষণাৎ তা একটি স্পষ্ট অজগর হয়ে গেল।
وَّ نَزَعَ یَدَہٗ فَاِذَا هِیَ بَیۡضَآءُ لِلنّٰظِرِیۡنَ ﴿٪۳۳﴾
আর সে তার হাত বের করল, ফলে তা তৎক্ষণাৎ দর্শকদের সামনে উজ্জ্বল-সাদা হয়ে দেখা দিল।
قَالَ لِلۡمَلَاِ حَوۡلَہٗۤ اِنَّ هٰذَا لَسٰحِرٌ عَلِیۡمٌ ﴿۫۳۴﴾
ফির‘আউন তার আশপাশের পারিষদদের উদ্দেশ্যে বলল, ‘এ তো এক বিজ্ঞ যাদুকর।’
یُّرِیۡدُ اَنۡ یُّخۡرِجَکُمۡ مِّنۡ اَرۡضِکُمۡ بِسِحۡرِہٖ ٭ۖ فَمَا ذَا تَاۡمُرُوۡنَ ﴿۳۵﴾
‘সে তোমাদেরকে তার যাদুর মাধ্যমে তোমাদের দেশ থেকে বের করতে চায়। অতএব, তোমরা আমাকে কী পরামর্শ দাও?’
قَالُوۡۤا اَرۡجِہۡ وَ اَخَاہُ وَ ابۡعَثۡ فِی الۡمَدَآئِنِ حٰشِرِیۡنَ ﴿ۙ۳۶﴾
তারা বলল, ‘তাকে ও তার ভাইকে কিছু সময়ের জন্য অবকাশ দাও, আর সংগ্রহকারীদেরকে নগরে-নগরে পাঠিয়ে দাও।’
یَاۡتُوۡکَ بِکُلِّ سَحَّارٍ عَلِیۡمٍ ﴿۳۷﴾
‘তারা তোমার নিকট প্রত্যেক বিজ্ঞ যাদুকরকে নিয়ে আসুক’।
فَجُمِعَ السَّحَرَۃُ لِمِیۡقَاتِ یَوۡمٍ مَّعۡلُوۡمٍ ﴿ۙ۳۸﴾
অতঃপর এক নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে যাদুকরদের একত্র করা হল।
وَّ قِیۡلَ لِلنَّاسِ هَلۡ اَنۡتُمۡ مُّجۡتَمِعُوۡنَ ﴿ۙ۳۹﴾
আর লোকদের বলা হল, ‘তোমরা কি সমবেত হবে?’
لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ السَّحَرَۃَ اِنۡ کَانُوۡا هُمُ الۡغٰلِبِیۡنَ ﴿۴۰﴾
‘যাতে আমরা যাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি, যদি তারা বিজয়ী হয়’।
فَلَمَّا جَآءَ السَّحَرَۃُ قَالُوۡا لِفِرۡعَوۡنَ اَئِنَّ لَنَا لَاَجۡرًا اِنۡ کُنَّا نَحۡنُ الۡغٰلِبِیۡنَ ﴿۴۱﴾
অতঃপর যখন যাদুকররা আসল,তারা ফির‘আউনকে বলল,‘যদি আমরাই বিজয়ী হই, তবে আমাদের জন্য কি সত্যিই পুরস্কার আছে?’
قَالَ نَعَمۡ وَ اِنَّکُمۡ اِذًا لَّمِنَ الۡمُقَرَّبِیۡنَ ﴿۴۲﴾
সে বলল, ‘হ্যাঁ এবং নিশ্চয় তোমরা তখন আমার ঘনিষ্টজনদের অন্তর্ভুক্ত হবে’।
قَالَ لَہُمۡ مُّوۡسٰۤی اَلۡقُوۡا مَاۤ اَنۡتُمۡ مُّلۡقُوۡنَ ﴿۴۳﴾
মূসা তাদের বলল, ‘তোমরা যা নিক্ষেপ করার তা নিক্ষেপ কর’।
فَاَلۡقَوۡا حِبَالَہُمۡ وَ عِصِیَّہُمۡ وَ قَالُوۡا بِعِزَّۃِ فِرۡعَوۡنَ اِنَّا لَنَحۡنُ الۡغٰلِبُوۡنَ ﴿۴۴﴾
অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ‘ফির‘আউনের মর্যাদার কসম! অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব।’
فَاَلۡقٰی مُوۡسٰی عَصَاہُ فَاِذَا هِیَ تَلۡقَفُ مَا یَاۡفِکُوۡنَ ﴿ۚۖ۴۵﴾
তারপর মূসা তার লাঠি ফেলল, ফলে তৎক্ষণাৎ তা তাদের মিথ্যা প্রদর্শনীগুলো গ্রাস করে ফেলল।
فَاُلۡقِیَ السَّحَرَۃُ سٰجِدِیۡنَ ﴿ۙ۴۶﴾
ফলে যাদুকররা সিজদাবনত হয়ে পড়ল।
قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۴۷﴾
তারা বলল, ‘আমরা ঈমান আনলাম সকল সৃষ্টির রবের প্রতি’।
رَبِّ مُوۡسٰی وَ هٰرُوۡنَ ﴿۴۸﴾
‘মূসা ও হারুনের রব’।
قَالَ اٰمَنۡتُمۡ لَہٗ قَبۡلَ اَنۡ اٰذَنَ لَکُمۡ ۚ اِنَّہٗ لَکَبِیۡرُکُمُ الَّذِیۡ عَلَّمَکُمُ السِّحۡرَ ۚ فَلَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۬ؕ لَاُقَطِّعَنَّ اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ وَّ لَاُوصَلِّبَنَّکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿ۚ۴۹﴾
ফির‘আউন বলল, ‘আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনলে? নিশ্চয় সে তোমাদের গুরু যে তোমাদের যাদু শিক্ষা দিয়েছে। অতএব অচিরেই তোমরা জানতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাতসমূহ ও তোমাদের পাসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে ফেলব এবং অবশ্যই তোমাদের সকলকে শূলিবিদ্ধ করব’।
قَالُوۡا لَا ضَیۡرَ ۫ اِنَّاۤ اِلٰی رَبِّنَا مُنۡقَلِبُوۡنَ ﴿ۚ۵۰﴾
তারা বলল, ‘কোন ক্ষতি নেই তাতে। অবশ্যই আমরা তো আমাদের রবের দিকেই ফিরে যাব।’
اِنَّا نَطۡمَعُ اَنۡ یَّغۡفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطٰیٰنَاۤ اَنۡ کُنَّاۤ اَوَّلَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿ؕ٪۵۱﴾
‘আমরা আশা করি যে, আমাদের রব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেবেন, কারণ আমরা মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’
وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی اَنۡ اَسۡرِ بِعِبَادِیۡۤ اِنَّکُمۡ مُّتَّبَعُوۡنَ ﴿۵۲﴾
আর আমি মূসার প্রতি এ মর্মে ওহী পাঠিয়েছিলাম যে, ‘আমার বান্দাদের নিয়ে রাত্রিকালে যাত্রা শুরু কর, নিশ্চয়ই তোমাদের পিছু নেয়া হবে।’
فَاَرۡسَلَ فِرۡعَوۡنُ فِی الۡمَدَآئِنِ حٰشِرِیۡنَ ﴿ۚ۵۳﴾
অতঃপর ফির‘আউন নগরে- নগরে একত্রকারীদেরকে পাঠাল।
اِنَّ هٰۤؤُلَآءِ لَشِرۡ ذِمَۃٌ قَلِیۡلُوۡنَ ﴿ۙ۵۴﴾
‘নিশ্চয়ই এরা তো ক্ষুদ্র একটি দল।’
وَ اِنَّہُمۡ لَنَا لَغَآئِظُوۡنَ ﴿ۙ۵۵﴾
তারা আমাদেরকে অবশ্যই ক্রোধান্বিত করেছে।
وَ اِنَّا لَجَمِیۡعٌ حٰذِرُوۡنَ ﴿ؕ۵۶﴾
‘আর আমরা সবাই তো যথেষ্ট সতর্ক।’
فَاَخۡرَجۡنٰہُمۡ مِّنۡ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوۡنٍ ﴿ۙ۵۷﴾
তারপর আমি তাদেরকে উদ্যানমালা ও ঝর্ণাধারাসমূহ থেকে বের করে আনলাম।
وَّ کُنُوۡزٍ وَّ مَقَامٍ کَرِیۡمٍ ﴿ۙ۵۸﴾
আর ধনভান্ডার ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান থেকে।
کَذٰلِکَ ؕ وَ اَوۡرَثۡنٰہَا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿ؕ۵۹﴾
এরূপই এবং আমি বনী ইসরাঈলকে এসবের ওয়ারিস বানিয়েছিলাম।
فَاَتۡبَعُوۡهُمۡ مُّشۡرِقِیۡنَ ﴿۶۰﴾
তারপর তারা সূর্যোদয়ের প্রাক্কালে তাদের পিছু নিল।
فَلَمَّا تَرَآءَ الۡجَمۡعٰنِ قَالَ اَصۡحٰبُ مُوۡسٰۤی اِنَّا لَمُدۡرَکُوۡنَ ﴿ۚ۶۱﴾
অতঃপর যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সাথীরা বলল, অবশ্যই ‘আমরা ধরা পড়ে গেলাম!’
قَالَ کَلَّا ۚ اِنَّ مَعِیَ رَبِّیۡ سَیَہۡدِیۡنِ ﴿۶۲﴾
মূসা বলল, ‘কখনো নয়; আমার সাথে আমার রব রয়েছেন। নিশ্চয় অচিরেই তিনি আমাকে পথনির্দেশ দেবেন’।
فَاَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی اَنِ اضۡرِبۡ بِّعَصَاکَ الۡبَحۡرَ ؕ فَانۡفَلَقَ فَکَانَ کُلُّ فِرۡقٍ کَالطَّوۡدِ الۡعَظِیۡمِ ﴿ۚ۶۳﴾
অতঃপর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম, ‘তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত কর।’ ফলে তা বিভক্ত হয়ে গেল। তারপর প্রত্যেক ভাগ বিশাল পাহাড়সদৃশ হয়ে গেল।
وَ اَزۡلَفۡنَا ثَمَّ الۡاٰخَرِیۡنَ ﴿ۚ۶۴﴾
আর আমি অপর দলটিকে সেই জায়গায় নিকটবর্তী করলাম,
وَ اَنۡجَیۡنَا مُوۡسٰی وَ مَنۡ مَّعَہٗۤ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿ۚ۶۵﴾
আর আমি মূসা ও তার সাথে যারা ছিল সকলকে উদ্ধার করলাম,
ثُمَّ اَغۡرَقۡنَا الۡاٰخَرِیۡنَ ﴿ؕ۶۶﴾
তারপর অপর দলটিকে ডুবিয়ে দিলাম।
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۶۷﴾
নিশ্চয় এর মধ্যে রয়েছে নিদর্শন। আর তাদের অধিকাংশই মুমিন নয়।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿٪۶۸﴾
আর নিশ্চয় তোমার রব তো মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ اِبۡرٰهِیۡمَ ﴿ۘ۶۹﴾
আর তুমি তাদের নিকট ইবরাহীমের ঘটনা বর্ণনা কর,
اِذۡ قَالَ لِاَبِیۡہِ وَ قَوۡمِہٖ مَا تَعۡبُدُوۡنَ ﴿۷۰﴾
যখন সে তার পিতা ও তার কওমকে বলেছিল, ‘তোমরা কিসের ইবাদাত কর?’
قَالُوۡا نَعۡبُدُ اَصۡنَامًا فَنَظَلُّ لَہَا عٰکِفِیۡنَ ﴿۷۱﴾
তারা বলল, ‘আমরা মূর্তির পূজা করি। অতঃপর এগুলোর পূজায় আমরা নিষ্ঠার সাথে রত থাকি’।
قَالَ هَلۡ یَسۡمَعُوۡنَکُمۡ اِذۡ تَدۡعُوۡنَ ﴿ۙ۷۲﴾
সে বলল, ‘যখন তোমরা ডাক তখন তারা কি তোমাদের সে ডাক শুনতে পায়?’
اَوۡ یَنۡفَعُوۡنَکُمۡ اَوۡ یَضُرُّوۡنَ ﴿۷۳﴾
‘অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে’?
قَالُوۡا بَلۡ وَجَدۡنَاۤ اٰبَآءَنَا کَذٰلِکَ یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۷۴﴾
তারা বলল, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের পেয়েছি, তারা এরূপই করত’।
قَالَ اَفَرَءَیۡتُمۡ مَّا کُنۡتُمۡ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿ۙ۷۵﴾
ইবরাহীম বলল, ‘তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছ, তোমরা যাদের পূজা কর’।
اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمُ الۡاَقۡدَمُوۡنَ ﴿۫ۖ۷۶﴾
‘তোমরা এবং তোমাদের অতীত পিতৃপুরুষেরা?’
فَاِنَّہُمۡ عَدُوٌّ لِّیۡۤ اِلَّا رَبَّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۷۷﴾
‘সকল সৃষ্টির রব ছাড়া অবশ্যই তারা আমার শত্রু’।
الَّذِیۡ خَلَقَنِیۡ فَہُوَ یَہۡدِیۡنِ ﴿ۙ۷۸﴾
‘যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনিই আমাকে হিদায়াত দিয়েছেন।’
وَ الَّذِیۡ هُوَ یُطۡعِمُنِیۡ وَ یَسۡقِیۡنِ ﴿ۙ۷۹﴾
‘আর যিনি আমাকে খাওয়ান এবং পান করান’।
وَ اِذَا مَرِضۡتُ فَہُوَ یَشۡفِیۡنِ ﴿۪ۙ۸۰﴾
‘আর যখন আমি অসুস্থ হই, তখন যিনি আমাকে আরোগ্য করেন’।
وَ الَّذِیۡ یُمِیۡتُنِیۡ ثُمَّ یُحۡیِیۡنِ ﴿ۙ۸۱﴾
‘আর যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন তারপর আমাকে জীবিত করবেন’।
وَ الَّذِیۡۤ اَطۡمَعُ اَنۡ یَّغۡفِرَ لِیۡ خَطِیۡٓئَتِیۡ یَوۡمَ الدِّیۡنِ ﴿ؕ۸۲﴾
‘আর যিনি আশা করি, বিচার দিবসে আমার ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দেবেন’।
رَبِّ هَبۡ لِیۡ حُکۡمًا وَّ اَلۡحِقۡنِیۡ بِالصّٰلِحِیۡنَ ﴿ۙ۸۳﴾
‘হে আমার রব, আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের সাথে শামিল করে দিন’।
وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ لِسَانَ صِدۡقٍ فِی الۡاٰخِرِیۡنَ ﴿ۙ۸۴﴾
‘এবং পরবর্তীদের মধ্যে আমার সুনাম-সুখ্যাতি অব্যাহত রাখুন’,
وَ اجۡعَلۡنِیۡ مِنۡ وَّرَثَۃِ جَنَّۃِ النَّعِیۡمِ ﴿ۙ۸۵﴾
‘আর আপনি আমাকে সুখময় জান্নাতের ওয়ারিসদের অন্তর্ভুক্ত করুন’।
وَ اغۡفِرۡ لِاَبِیۡۤ اِنَّہٗ کَانَ مِنَ الضَّآلِّیۡنَ ﴿ۙ۸۶﴾
‘আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত ছিল’।
وَ لَا تُخۡزِنِیۡ یَوۡمَ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿ۙ۸۷﴾
‘আর যেদিন পুনরুত্থিত করা হবে সেদিন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না’।
یَوۡمَ لَا یَنۡفَعُ مَالٌ وَّ لَا بَنُوۡنَ ﴿ۙ۸۸﴾
‘যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন উপকারে আসবে না’।
اِلَّا مَنۡ اَتَی اللّٰہَ بِقَلۡبٍ سَلِیۡمٍ ﴿ؕ۸۹﴾
‘তবে যে আল্লাহর কাছে আসবে সুস্থ অন্তরে’।
وَ اُزۡلِفَتِ الۡجَنَّۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿ۙ۹۰﴾
আর মুত্তাকীদের জন্য জান্নাত নিকটবর্তী করা হবে,
وَ بُرِّزَتِ الۡجَحِیۡمُ لِلۡغٰوِیۡنَ ﴿ۙ۹۱﴾
এবং পথভ্রষ্টকারীদের জন্য জাহান্নাম উন্মোচিত করা হবে।
وَ قِیۡلَ لَہُمۡ اَیۡنَمَا کُنۡتُمۡ تَعۡبُدُوۡنَ ﴿ۙ۹۲﴾
আর তাদেরকে বলা হবে, ‘তারা কোথায় যাদের তোমরা ইবাদাত করতে’?
مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ هَلۡ یَنۡصُرُوۡنَکُمۡ اَوۡ یَنۡتَصِرُوۡنَ ﴿ؕ۹۳﴾
আল্লাহ ছাড়া? তারা কি তোমাদেরকে সাহায্য করছে, না নিজেদের সাহায্য করতে পারছে?
فَکُبۡکِبُوۡا فِیۡہَا هُمۡ وَ الۡغَاوٗنَ ﴿ۙ۹۴﴾
অতঃপর তাদেরকে এবং পথভ্রষ্টকারীদেরকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে,
وَ جُنُوۡدُ اِبۡلِیۡسَ اَجۡمَعُوۡنَ ﴿ؕ۹۵﴾
আর ইবলীসের সকল সৈন্যবাহিনীকে।
قَالُوۡا وَ هُمۡ فِیۡہَا یَخۡتَصِمُوۡنَ ﴿ۙ۹۶﴾
সেখানে পরস্পর ঝগড়া করতে গিয়ে তারা বলবে,
تَاللّٰہِ اِنۡ کُنَّا لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿ۙ۹۷﴾
আল্লাহর কসম! আমরা তো সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত ছিলাম',
اِذۡ نُسَوِّیۡکُمۡ بِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۹۸﴾
‘যখন আমরা তোমাদেরকে সকল সৃষ্টির রবের সমকক্ষ বানাতাম’।
وَ مَاۤ اَضَلَّنَاۤ اِلَّا الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۹۹﴾
‘আর অপরাধীরাই শুধু আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল’;
فَمَا لَنَا مِنۡ شَافِعِیۡنَ ﴿۱۰۰﴾ۙ
‘অতএব, আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই’।
وَ لَا صَدِیۡقٍ حَمِیۡمٍ ﴿۱۰۱﴾
‘এবং কোন অন্তরঙ্গ বন্ধুও নেই’।
فَلَوۡ اَنَّ لَنَا کَرَّۃً فَنَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾
‘হায়, আমাদের যদি আরেকটি সুযোগ হত, তবে আমরা মুমিনদের অর্ন্তভুক্ত হতাম’।
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾
নিশ্চয় এতে রয়েছে নিদর্শন, আর তাদের অধিকাংশ মুমিন নয়।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۰۴﴾٪
আর নিশ্চয় তোমার রব, তিনি তো মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
کَذَّبَتۡ قَوۡمُ نُوۡحِۣ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۱۰۵﴾ۚۖ
নূহ-এর কওম রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল।
اِذۡ قَالَ لَہُمۡ اَخُوۡهُمۡ نُوۡحٌ اَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۰۶﴾ۚ
যখন তাদের ভাই নূহ তাদেরকে বলেছিল, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না’?
اِنِّیۡ لَکُمۡ رَسُوۡلٌ اَمِیۡنٌ ﴿۱۰۷﴾ۙ
‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রাসূল’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۰۸﴾ۚ
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
وَ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ۚ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلٰی رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۹﴾ۚ
‘আর এর উপর আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান শুধু সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۱۰﴾ؕ
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
قَالُوۡۤا اَنُؤۡمِنُ لَکَ وَ اتَّبَعَکَ الۡاَرۡذَلُوۡنَ ﴿۱۱۱﴾ؕ
‘তারা বলল, ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব, অথচ নিম্নশ্রেণীর লোকেরা তোমাকে অনুসরণ করছে’?
قَالَ وَ مَا عِلۡمِیۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۱۲﴾ۚ
নূহ বলল, ‘তারা কি করে তা জানা আমার কী প্রয়োজন’?
اِنۡ حِسَابُہُمۡ اِلَّا عَلٰی رَبِّیۡ لَوۡ تَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾ۚ
‘তাদের হিসাব গ্রহণ তো কেবল আমার রবের দায়িত্বে, যদি তোমরা জানতে’।
وَ مَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾ۚ
‘আর আমি তো মুমিনদেরকে তাড়িয়ে দেয়ার নই’।
اِنۡ اَنَا اِلَّا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۱۵﴾ؕ
‘আমি তো কেবল সুস্পষ্ট সতর্ককারী’।
قَالُوۡا لَئِنۡ لَّمۡ تَنۡتَہِ یٰنُوۡحُ لَتَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمَرۡجُوۡمِیۡنَ ﴿۱۱۶﴾ؕ
তারা বলল, ‘হে নূহ, তুমি যদি বিরত না হও তবে অবশ্যই তুমি প্রস্তরাঘাতে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত হবে’।
قَالَ رَبِّ اِنَّ قَوۡمِیۡ کَذَّبُوۡنِ ﴿۱۱۷﴾ۚۖ
নূহ বলল, ‘হে আমার রব, আমার কওম আমাকে অস্বীকার করেছে’;
فَافۡتَحۡ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَہُمۡ فَتۡحًا وَّ نَجِّنِیۡ وَ مَنۡ مَّعِیَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۱۸﴾
‘সুতরাং আপনি আমার ও তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দিন আর আমাকে ও আমার সাথে যেসব মুমিন, আছে তাদেরকে রক্ষা করুন’।
فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ مَنۡ مَّعَہٗ فِی الۡفُلۡکِ الۡمَشۡحُوۡنِ ﴿۱۱۹﴾ۚ
অতঃপর আমি তাকে এবং তার সাথে যারা বোঝাই নৌকায় ছিল তাদেরকে নাজাত দিলাম।
ثُمَّ اَغۡرَقۡنَا بَعۡدُ الۡبٰقِیۡنَ ﴿۱۲۰﴾ؕ
তারপর বাকীদের ডুবিয়ে দিলাম।
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۲۱﴾
নিশ্চয় এতে রয়েছে নিদর্শন, আর তাদের বেশীর ভাগ মুমিন ছিল না।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۲۲﴾٪
আর নিশ্চয় তোমার রব, তিনি তো মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
کَذَّبَتۡ عَادُۨ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۱۲۳﴾ۚۖ
‘আদ জাতি রাসূলগণকে অস্বীকার করেছিল,
اِذۡ قَالَ لَہُمۡ اَخُوۡهُمۡ هُوۡدٌ اَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۲۴﴾ۚ
যখন তাদের ভাই হূদ তাদেরকে বলেছিল, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না’?
اِنِّیۡ لَکُمۡ رَسُوۡلٌ اَمِیۡنٌ ﴿۱۲۵﴾ۙ
‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রাসূল’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۲۶﴾ۚ
‘সুতরাং আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
وَ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ۚ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلٰی رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۲۷﴾ؕ
‘আর এর উপর আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’।
اَتَبۡنُوۡنَ بِکُلِّ رِیۡعٍ اٰیَۃً تَعۡبَثُوۡنَ ﴿۱۲۸﴾
‘তোমরা কি প্রতিটি উঁচু স্থানে বেহুদা স্তম্ভ নির্মাণ করছ’?
وَ تَتَّخِذُوۡنَ مَصَانِعَ لَعَلَّکُمۡ تَخۡلُدُوۡنَ ﴿۱۲۹﴾ۚ
‘আর তোমরা সুদৃঢ় প্রাসাদ নির্মাণ করছ, যেন তোমরা স্থায়ী হবে’।
وَ اِذَا بَطَشۡتُمۡ بَطَشۡتُمۡ جَبَّارِیۡنَ ﴿۱۳۰﴾ۚ
‘আর তোমরা যখন কাউকে পাকড়াও কর, পাকড়াও কর স্বেচ্ছাচারী হয়ে’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۳۱﴾ۚ
‘সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে অনুসরণ কর’।
وَ اتَّقُوا الَّذِیۡۤ اَمَدَّکُمۡ بِمَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳۲﴾ۚ
আর তাঁকে ভয় কর যিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন এমন কিছু দিয়ে, যা তোমরা জান'।
اَمَدَّکُمۡ بِاَنۡعَامٍ وَّ بَنِیۡنَ ﴿۱۳۳﴾ۚۙ
‘তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন চতুষ্পদ জন্তু ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা’,
وَ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوۡنٍ ﴿۱۳۴﴾ۚ
‘আর উদ্যান ও ঝর্ণা দ্বারা’।
اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۳۵﴾ؕ
‘নিশ্চয় আমি তোমাদের উপর এক মহাদিবসের আযাবের ভয় করছি’।
قَالُوۡا سَوَآءٌ عَلَیۡنَاۤ اَوَ عَظۡتَ اَمۡ لَمۡ تَکُنۡ مِّنَ الۡوٰعِظِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾ۙ
তারা বলল, ‘তুমি আমাদের উপদেশ দাও অথবা না দাও, উভয়ই আমাদের জন্য সমান’।
اِنۡ هٰذَاۤ اِلَّا خُلُقُ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۱۳۷﴾ۙ
‘এটি তো পূর্ববর্তীদেরই চরিত্র,।
وَ مَا نَحۡنُ بِمُعَذَّبِیۡنَ ﴿۱۳۸﴾ۚ
‘আর আমরা আযাবপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হব না’।
فَکَذَّبُوۡہُ فَاَهْلَکۡنٰہُمۡ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۳۹﴾
অতঃপর তারা তাকে অস্বীকার করল, ফলে তাদেরকে আমি ধ্বংস করে দিলাম; নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে। আর তাদের অধিকাংশ মুমিন ছিল না।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۴۰﴾٪
আর নিশ্চয় তোমার রব তিনি মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
کَذَّبَتۡ ثَمُوۡدُ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۱۴۱﴾ۚۖ
সামূদ জাতি রাসুলদেরকে অস্বীকার করেছিল,
اِذۡ قَالَ لَہُمۡ اَخُوۡهُمۡ صٰلِحٌ اَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۴۲﴾ۚ
যখন তাদের ভাই সালিহ তাদেরকে বলেছিল, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না’?
اِنِّیۡ لَکُمۡ رَسُوۡلٌ اَمِیۡنٌ ﴿۱۴۳﴾ۙ
‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল’;
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۴۴﴾ۚ
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
وَ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ۚ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلٰی رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۴۵﴾ؕ
‘আর এর উপর আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’।
اَتُتْرَكُوْنَ فِیۡ مَا هٰهُنَاۤ اٰمِنِیۡنَ ﴿۱۴۶﴾ۙ
‘তোমাদেরকে কি এখানে যা আছে তাতে নিরাপদে ছেড়ে দেয়া হবে’?
فِیۡ جَنّٰتٍ وَّ عُیُوۡنٍ ﴿۱۴۷﴾ۙ
‘উদ্যান ও ঝর্ণায়’,
وَّ زُرُوۡعٍ وَّ نَخۡلٍ طَلۡعُہَا هَضِیۡمٌ ﴿۱۴۸﴾ۚ
‘আর ক্ষেত-খামার ও কোমল শীষবিশিষ্ট খেজুর বাগানে’?
وَ تَنۡحِتُوۡنَ مِنَ الۡجِبَالِ بُیُوۡتًا فٰرِہِیۡنَ ﴿۱۴۹﴾ۚ
‘আর তোমরা নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে বাড়ী নির্মাণ করছ’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۵۰﴾ۚ
‘সুতরাং আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
وَ لَا تُطِیۡعُوۡۤا اَمۡرَ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۱۵۱﴾ۙ
‘এবং সীমালংঘনকারীদের নির্দেশের আনুগত্য করো না’-
الَّذِیۡنَ یُفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا یُصۡلِحُوۡنَ ﴿۱۵۲﴾
‘যারা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করে না’।
قَالُوۡۤا اِنَّمَاۤ اَنۡتَ مِنَ الۡمُسَحَّرِیۡنَ ﴿۱۵۳﴾ۚ
তারা বলল, ‘তুমিতো যাদুগ্রস্তদের একজন।
مَاۤ اَنۡتَ اِلَّا بَشَرٌ مِّثۡلُنَا ۚۖ فَاۡتِ بِاٰیَۃٍ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۱۵۴﴾
‘তুমি তো কেবল আমাদের মত মানুষ, সুতরাং তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে কোন নিদর্শন নিয়ে এসো’।
قَالَ هٰذِهٖ نَاقَۃٌ لَّهَا شِرۡبٌ وَّ لَکُمۡ شِرۡبُ یَوۡمٍ مَّعۡلُوۡمٍ ﴿۱۵۵﴾ۚ
সালিহ বলল, ‘এটি একটি উষ্ট্রী; তার জন্য পানি পানের পালা একদিন আর তোমাদের পানি পানের পালা আরেক নির্দিষ্ট দিনে’।
وَ لَا تَمَسُّوۡهَا بِسُوۡٓءٍ فَیَاۡخُذَکُمۡ عَذَابُ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۵۶﴾
‘আর তোমরা তাকে কোন অনিষ্ট কিছু করো না; যদি কর তবে এক মহাদিবসের আযাব তোমাদেরকে পেয়ে বসবে’।
فَعَقَرُوۡهَا فَاَصۡبَحُوۡا نٰدِمِیۡنَ ﴿۱۵۷﴾ۙ
অতঃপর তারা সেটি জবেহ করল; ফলে তারা অনুতপ্ত হল।
فَاَخَذَهُمُ الۡعَذَابُ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۵۸﴾
অতএব আযাব তাদেরকে পাকড়াও করল, নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে, আর তাদের অধিকাংশ মুমিন ছিল না।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۵۹﴾٪
আর নিশ্চয় তোমার রব, তিনি তো মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু্।
کَذَّبَتۡ قَوۡمُ لُوۡطِ نِ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۱۶۰﴾ۚۖ
লূতের সম্প্রদায় রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল।
اِذۡ قَالَ لَہُمۡ اَخُوۡهُمۡ لُوۡطٌ اَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۶۱﴾ۚ
যখন তাদেরকে তাদের ভাই লূত বলেছিল, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না’?
اِنِّیۡ لَکُمۡ رَسُوۡلٌ اَمِیۡنٌ ﴿۱۶۲﴾ۙ
‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۶۳﴾ۚ
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
وَ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ۚ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلٰی رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۶۴﴾ؕ
‘আর আমি এর উপর তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’।
اَتَاۡتُوۡنَ الذُّکۡرَانَ مِنَ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۶۵﴾ۙ
‘সৃষ্টিকুলের মধ্যে তোমরা কি কেবল পুরুষদের সাথে উপগত হও’?
وَ تَذَرُوۡنَ مَا خَلَقَ لَکُمۡ رَبُّکُمۡ مِّنۡ اَزۡوَاجِکُمۡ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ عٰدُوۡنَ ﴿۱۶۶﴾
‘আর তোমাদের রব তোমাদের জন্য যে স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে তোমরা ত্যাগ কর, বরং তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়’।
قَالُوۡا لَئِنۡ لَّمۡ تَنۡتَہِ یٰلُوۡطُ لَتَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُخۡرَجِیۡنَ ﴿۱۶۷﴾
তারা বলল, ‘হে লূত, তুমি যদি বিরত না হও, তাহলে তুমি অবশ্যই বহিস্কৃতদের অন্তর্ভুক্ত হবে’।
قَالَ اِنِّیۡ لِعَمَلِکُمۡ مِّنَ الۡقَالِیۡنَ ﴿۱۶۸﴾ؕ
লূত বলল, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের কাজকে ঘৃণা করি’।
رَبِّ نَجِّنِیۡ وَ اَهْلِیۡ مِمَّا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۶۹﴾
‘হে আমার রব, তারা যা করছে, তা থেকে আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনকে তুমি রক্ষা কর’।
فَنَجَّیۡنٰہُ وَ اَهْلَہٗۤ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۷۰﴾ۙ
অতঃপর আমি তাকে ও তার পরিবার-পরিজন সবাইকে রক্ষা করলাম।
اِلَّا عَجُوۡزًا فِی الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۱۷۱﴾ۚ
পেছনে অবস্থানকারিণী এক বৃদ্ধা ছাড়া।
ثُمَّ دَمَّرۡنَا الۡاٰخَرِیۡنَ ﴿۱۷۲﴾ۚ
তারপর অন্যদেরকে আমি ধ্বংস করে দিলাম।
وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ مَّطَرًا ۚ فَسَآءَ مَطَرُ الۡمُنۡذَرِیۡنَ ﴿۱۷۳﴾
আর আমি তাদের উপর শিলাবৃষ্টি বর্ষণ করলাম। সুতরাং সেই বৃষ্টি ভয় প্রদর্শিতদের জন্য কতইনা মন্দ ছিল!
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۷۴﴾
নিশ্চয় এতে এক নিদর্শন রয়েছে। আর তাদের অধিকাংশই মুমিন ছিল না।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۷۵﴾٪
আর নিশ্চয় তোমার রব, তিনি তো মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
کَذَّبَ اَصۡحٰبُ لۡـَٔـیۡکَۃِ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۱۷۶﴾ۚۖ
আইকার অধিবাসীরা রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল।
اِذۡ قَالَ لَہُمۡ شُعَیۡبٌ اَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۷۷﴾ۚ
যখন শু‘আইব তাদেরকে বলল, ‘তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না’?
اِنِّیۡ لَکُمۡ رَسُوۡلٌ اَمِیۡنٌ ﴿۱۷۸﴾ۙ
‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল’।
فَاتَّقُوا اللّٰہَ وَ اَطِیۡعُوۡنِ ﴿۱۷۹﴾ۚ
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।
وَ مَاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ۚ اِنۡ اَجۡرِیَ اِلَّا عَلٰی رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۸۰﴾ؕ
‘আর আমি এর উপর তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’।
اَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَ لَا تَکُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُخۡسِرِیۡنَ ﴿۱۸۱﴾ۚ
‘মাপ পূর্ণ করে দাও এবং যারা মাপে ঘাটতি করে, তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’।
وَ زِنُوۡا بِالۡقِسۡطَاسِ الۡمُسۡتَقِیۡمِ ﴿۱۸۲﴾ۚ
‘আর সঠিক দাঁড়ি পাল্লায় ওজন কর’।
وَ لَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَهُمۡ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ﴿۱۸۳﴾ۚ
আর লোকদেরকে তাদের প্রাপ্যবস্তু কম দিও না এবং যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করো না'।
وَ اتَّقُوا الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ وَ الۡجِبِلَّۃَ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۱۸۴﴾ؕ
‘যিনি তোমাদেরকে ও পূর্ববর্তী প্রজন্মসমূহকে সৃষ্টি করেছেন, তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর’।
قَالُوۡۤا اِنَّمَاۤ اَنۡتَ مِنَ الۡمُسَحَّرِیۡنَ ﴿۱۸۵﴾ۙ
তারা বলল, ‘তুমি তো কেবল যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত’।
وَ مَاۤ اَنۡتَ اِلَّا بَشَرٌ مِّثۡلُنَا وَ اِنۡ نَّظُنُّکَ لَمِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۱۸۶﴾ۚ
‘তুমি কেবল আমাদের মত একজন মানুষ। আর আমরা তোমাকে অবশ্যই মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করি’।
فَاَسۡقِطۡ عَلَیۡنَا کِسَفًا مِّنَ السَّمَآءِ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۱۸۷﴾ؕ
‘অতএব, তুমি যদি সত্যবাদী হও, তবে আসমান থেকে এক টুকরো আমাদের উপর ফেলে দাও’।
قَالَ رَبِّیۡۤ اَعۡلَمُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۸۸﴾
সে বলল, ‘তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আমার রব অধিক জ্ঞাত’।
فَکَذَّبُوۡہُ فَاَخَذَهُمۡ عَذَابُ یَوۡمِ الظُّلَّۃِ ؕ اِنَّہٗ کَانَ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۸۹﴾
অতঃপর তারা তাকে অস্বীকার করল। ফলে তাদেরকে এক মেঘাচ্ছন্ন দিবসের আযাব পাকড়াও করল। অবশ্যই তা ছিল এক মহা দিবসের আযাব।
اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیَۃً ؕ وَ مَا کَانَ اَکۡثَرُهُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۹۰﴾
নিশ্চয় এতে অনেক নিদর্শন রয়েছে। আর তাদের অধিকাংশই মুমিন ছিল না।
وَ اِنَّ رَبَّکَ لَہُوَ الۡعَزِیۡزُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۹۱﴾٪
আর নিশ্চয় তোমার রব তিনি তো মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
وَ اِنَّہٗ لَتَنۡزِیۡلُ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۹۲﴾ؕ
আর নিশ্চয় এ কুরআন সৃষ্টিকুলের রবেরই নাযিলকৃত।
نَزَلَ بِہِ الرُّوۡحُ الۡاَمِیۡنُ ﴿۱۹۳﴾ۙ
বিশ্বস্ত আত্মা* এটা নিয়ে অবতরণ করেছে।
عَلٰی قَلۡبِکَ لِتَکُوۡنَ مِنَ الۡمُنۡذِرِیۡنَ ﴿۱۹۴﴾
তোমার হৃদয়ে, যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
بِلِسَانٍ عَرَبِیٍّ مُّبِیۡنٍ ﴿۱۹۵﴾ؕ
সুস্পষ্ট আরবী ভাষায়।
وَ اِنَّہٗ لَفِیۡ زُبُرِ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۱۹۶﴾
আর অবশ্যই তা রয়েছে পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে।
اَوَ لَمۡ یَکُنۡ لَّہُمۡ اٰیَۃً اَنۡ یَّعۡلَمَہٗ عُلَمٰٓؤُا بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿۱۹۷﴾ؕ
এটা কি তাদের জন্য একটি নিদর্শন নয় যে, বনী ইসরাঈলের পন্ডিতগণ তা জানে?
وَ لَوۡ نَزَّلۡنٰہُ عَلٰی بَعۡضِ الۡاَعۡجَمِیۡنَ ﴿۱۹۸﴾ۙ
আর আমি যদি এটাকে কোন অনারবের প্রতি নাযিল করতাম।
فَقَرَاَہٗ عَلَیۡہِمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۹۹﴾ؕ
অতঃপর সে তা তাদের নিকট পাঠ করত। তবুও তারা এতে মুমিন হত না।
کَذٰلِکَ سَلَکۡنٰہُ فِیۡ قُلُوۡبِ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۲۰۰﴾ؕ
এভাবেই আমি বিষয়টি অপরাধীদের অন্তরে সঞ্চার করেছি।
لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ حَتّٰی یَرَوُا الۡعَذَابَ الۡاَلِیۡمَ ﴿۲۰۱﴾ۙ
যতক্ষণ না তারা যন্ত্রণাদায়ক আযাব প্রত্যক্ষ করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা এতে ঈমান আনবে না।
فَیَاۡتِیَہُمۡ بَغۡتَۃً وَّ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۲۰۲﴾ۙ
সুতরাং তা আকস্মিকভাবে তাদের নিকট এসে পড়বে, অথচ তারা উপলদ্ধি করতে পারবে না।
فَیَقُوۡلُوۡا هَلۡ نَحۡنُ مُنۡظَرُوۡنَ ﴿۲۰۳﴾ؕ
তখন তারা বলবে, ‘আমাদেরকে কি অবকাশ দেয়া হবে?’
اَفَبِعَذَابِنَا یَسۡتَعۡجِلُوۡنَ ﴿۲۰۴﴾
তাহলে কি তারা আমার আযাব ত্বরান্বিত করতে চায়?
اَفَرَءَیۡتَ اِنۡ مَّتَّعۡنٰہُمۡ سِنِیۡنَ ﴿۲۰۵﴾ۙ
তুমি কি লক্ষ্য করেছ, আমি যদি তাদেরকে দীর্ঘকাল ভোগ-বিলাসের সুযোগ দিতাম।
ثُمَّ جَآءَهُمۡ مَّا کَانُوۡا یُوۡعَدُوۡنَ ﴿۲۰۶﴾ۙ
অতঃপর তাদেরকে যে বিষয়ে ওয়াদা করা হয়েছে, তা তাদের নিকট এসে পড়ত,
مَاۤ اَغۡنٰی عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یُمَتَّعُوۡنَ ﴿۲۰۷﴾ؕ
তখন যা তাদের ভোগ-বিলাসের জন্য দেয়া হয়েছিল, তা তাদের কোনই কাজে আসত না।
وَ مَاۤ اَهْلَکۡنَا مِنۡ قَرۡیَۃٍ اِلَّا لَہَا مُنۡذِرُوۡنَ ﴿۲۰۸﴾٭ۖۛ
আর আমি এমন কোন জনপদকে ধ্বংস করিনি, যাতে কোন সতর্ককারী আসেনি।
ذِکۡرٰی ۟ۛ وَ مَا کُنَّا ظٰلِمِیۡنَ ﴿۲۰۹﴾
এটা উপদেশস্বরূপ; আর আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।
وَ مَا تَنَزَّلَتۡ بِہِ الشَّیٰطِیۡنُ ﴿۲۱۰﴾
আর শয়তানরা তা নিয়ে অবতরণ করেনি।
وَ مَا یَنۡۢبَغِیۡ لَہُمۡ وَ مَا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ ﴿۲۱۱﴾ؕ
আর এটা তাদের জন্য উচিৎ নয় এবং তারা এর ক্ষমতাও রাখে না।
اِنَّہُمۡ عَنِ السَّمۡعِ لَمَعۡزُوۡلُوۡنَ ﴿۲۱۲﴾ؕ
নিশ্চয়ই তাদেরকে এর শ্রবণ থেকে আড়ালে রাখা হয়েছে।
فَلَا تَدۡعُ مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ فَتَکُوۡنَ مِنَ الۡمُعَذَّبِیۡنَ ﴿۲۱۳﴾ۚ
অতএব, তুমি আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তাহলে তুমি আযাবপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
وَ اَنۡذِرۡ عَشِیۡرَتَکَ الۡاَقۡرَبِیۡنَ ﴿۲۱۴﴾ۙ
আর তুমি তোমার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক কর।
وَ اخۡفِضۡ جَنَاحَکَ لِمَنِ اتَّبَعَکَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲۱۵﴾ۚ
আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তুমি তোমার বাহুকে অবনত কর।
فَاِنۡ عَصَوۡکَ فَقُلۡ اِنِّیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۲۱۶﴾ۚ
তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, ‘তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত’।
وَ تَوَکَّلۡ عَلَی الۡعَزِیۡزِ الرَّحِیۡمِ ﴿۲۱۷﴾ۙ
‘আর তুমি মহাপরাক্রমশালী পরম দয়ালুর উপর তাওয়াক্কুল কর,
الَّذِیۡ یَرٰىکَ حِیۡنَ تَقُوۡمُ ﴿۲۱۸﴾ۙ
‘যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও’
وَ تَقَلُّبَکَ فِی السّٰجِدِیۡنَ ﴿۲۱۹﴾
‘এবং সিজদাকারীদের মধ্যে তোমার উঠাবসা’।
اِنَّہٗ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۲۲۰﴾
‘নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী’।
هَلۡ اُنَبِّئُکُمۡ عَلٰی مَنۡ تَنَزَّلُ الشَّیٰطِیۡنُ ﴿۲۲۱﴾ؕ
‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দেব, কার নিকট শয়তানরা অবতীর্ণ হয়’?
تَنَزَّلُ عَلٰی کُلِّ اَفَّاکٍ اَثِیۡمٍ ﴿۲۲۲﴾ۙ
তারা অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক চরম মিথ্যাবাদী ও পাপীর নিকট।
یُّلۡقُوۡنَ السَّمۡعَ وَ اَکۡثَرُهُمۡ کٰذِبُوۡنَ ﴿۲۲۳﴾ؕ
তারা কান পেতে থাকে এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
وَ الشُّعَرَآءُ یَتَّبِعُہُمُ الۡغَاوٗنَ ﴿۲۲۴﴾ؕ
আর বিভ্রান্তরাই কবিদের অনুসরণ করে।
اَلَمۡ تَرَ اَنَّہُمۡ فِیۡ کُلِّ وَادٍ یَّہِیۡمُوۡنَ ﴿۲۲۵﴾ۙ
তুমি কি লক্ষ্য করো নি যে, তারা প্রত্যেক উপত্যকায় উদভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়?
وَ اَنَّہُمۡ یَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۲۲۶﴾ۙ
আর নিশ্চয় তারা এমন কথা বলে, যা তারা করে না।
اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ ذَکَرُوا اللّٰہَ کَثِیۡرًا وَّ انۡتَصَرُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا ظُلِمُوۡا ؕ وَ سَیَعۡلَمُ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اَیَّ مُنۡقَلَبٍ یَّنۡقَلِبُوۡنَ ﴿۲۲۷﴾
তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, আর আল্লাহকে অনেক স্মরণ করেছে। আর তারা নির্যাতিত হওয়ার পর প্রতিশোধ নেয়। আর যালিমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কোন্ প্রত্যাবর্তন স্থলে তারা প্রত্যাবর্তন করবে।