3

আলে-ইমরান

আয়াত সংখ্যা 200

0.00

46:54

الٓمَّٓ ۙ﴿۱﴾

আলিফ-লাম-মীম,


ا للهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۙ الْحَیُّ الْقَیُّوْمُ ؕ﴿۲﴾

আল্লাহ, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব সকলের রক্ষণাবেক্ষণকারী।


نَزَّلَ عَلَیْكَ الْکِتٰبَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ وَاَنْزَلَ التَّوْرٰىةَ وَالْاِنْجِیْلَ ۙ﴿۳﴾

তিনি তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন যথাযথভাবে, এর পূর্বে যা এসেছে তার সত্যায়নকারী হিসেবে এবং নাযিল করেছেন তাওরাত ও ইনজীল।


مِنْ قَبْلُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَاَنْزَلَ الْفُرْقَانَ ۬ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا بِٰایٰتِ اللهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِیْدٌ ؕ وَاللهُ عَزِیْزٌ ذُوانْتِقَامٍ ﴿۴﴾

ইতঃপূর্বে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ। আর তিনি ফুরকান নাযিল করেছেন। নিশ্চয় যারা অস্বীকার করে আল্লাহর আয়াতসমূহ, তাদের জন্যই রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধগ্রহণকারী।


اِنَّ اللهَ لَا یَخْفٰی عَلَیْهِ شَیْءٌ فِی الْاَرْضِ وَلَا فِی السَّمَآءِ ؕ﴿۵﴾

আল্লাহ্, নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের কোন কিছুই তাঁর নিকট গোপন থাকে না।


هُوَ الَّذِیْ یُصَوِّرُكُمْ فِی الْاَرْحَامِ کَیْفَ یَشَآءُ ؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَکِیْمُ ﴿۶﴾

তিনিই মাতৃগর্ভে তোমাদেরকে আকৃতি দান করেন যেভাবে তিনি চান। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


هُوَ الَّذِیْۤ اَنْزَلَ عَلَیْكَ الْکِتٰبَ مِنْهُ اٰیٰتٌ مُّحْکَمٰتٌ هُنَّ اُمُّ الْکِتٰبِ وَاُخَرُ مُتَشٰبِهٰتٌ ؕ فَاَمَّا الَّذِیْنَ فیْ قُلُوْبِهِمْ زَیْغٌ فَیَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَآءَ تَاْوِیْلِهٖ ۚ وَ مَا یَعْلَمُ تَاْوِیْلَهٗۤ اِلَّا اللهُ ۘ وَالرّٰسِخُوْنَ فِی الْعِلْمِ یَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهٖ ۙ كُلٌّ مِّنْ عِنْدِ رَبِّنَا ۚ وَمَا یَذَّکَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الْاَلْبَابِ ﴿۷﴾

তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তার মধ্যে আছে মুহকাম আয়াতসমূহ। সেগুলো কিতাবের মূল, আর অন্যগুলো মুতাশাবিহ। ফলে যাদের অন্তরে রয়েছে সত্যবিমুখ প্রবণতা, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ্ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে। আর বিবেক সম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে।


رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوْبَنَا بَعْدَ اِذْ هَدَیْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَّدُنْكَ رَحْمَۃً ۚ اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَّابُ ﴿۸﴾

হে আমাদের রব, আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।


رَبَّنَاۤ اِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِیَوْمٍ لَّا رَیْبَ فِیْهِ ؕ اِنَّ اللهَ لَا یُخْلِفُ الْمِیْعَادَ ۠﴿۹﴾

হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি মানুষকে সমবেত করবেন এমন একদিন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।


اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا لَنْ تُغْنِیَ عَنْهُمْ اَمْوَالُهُمْ وَلَاۤ اَوْلَادُهُمْ مِّنَ اللهِ شَیْئًا ؕ وَاُولٰٓئِكَ هُمْ وَقُوْدُ النَّارِ ﴿ۙ۱۰﴾

নিশ্চয় যারা কুফরী করে, তাদের মাল-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর আযাব থেকে কখনও কোন কাজে আসবে না এবং তারাই আগুনের জ্বালানি।


کَدَاْبِ اٰلِ فِرْعَوْنَ ۙ وَالَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ ؕ کَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَاَخَذَهُمُ اللهُ بِذُنُوْبِهِمْ ؕ وَاللهُ شَدِیْدُ الْعِقَابِ ﴿۱۱﴾

ফির‘আউন সম্প্রদায় ও তাদের পূর্বের লোকদের স্বভাবের ন্যায়, তারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে। ফলে তাদের পাপের কারণে আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও করেছেন। আর আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।


قُلْ لِّلَّذِیْنَ کَفَرُوْا سَتُغْلَبُوْنَ وَتُحْشَرُوْنَ اِلٰی جَهَنَّمَ ؕ وَبِئْسَ الْمِهَادُ ﴿۱۲﴾

তুমি কাফিরদেরকে বল, ‘তোমরা অচিরেই পরাজিত হবে এবং তোমাদেরকে জাহান্নামের দিকে সমবেত করা হবে। আর সেটি কতইনা নিকৃষ্ট আবাসস্থল’!


قَدْ کَانَ لَكُمْ اٰیَۃٌ فِیْ فِئَتَیْنِ الْتَقَتَا ؕ فِئَۃٌ تُقَاتِلُ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ وَاُخْرٰی کَافِرَۃٌ یَّرَوْنَهُمْ مِّثْلَیْهِمْ رَاْیَ الْعَیْنِ ؕ وَاللهُ یُؤَیِّدُ بِنَصْرِهٖ مَنْ یَّشَآءُ ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَعِبْرَۃً لِّاُولِی الْاَبْصَارِ ﴿۱۳﴾

নিশ্চয় তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে দু’টি দলের মধ্যে, যারা পরস্পর মুখোমুখি হয়েছিল। একটি দল লড়াই করছিল আল্লাহর পথে এবং অপর দলটি কাফির। তারা বাহ্যিক দৃষ্টিতে তাদেরকে ওদের দ্বিগুণ দেখছিল। আর আল্লাহ নিজ সাহায্য দ্বারা যাকে চান শক্তিশালী করেন। নিশ্চয় এতে রয়েছে চক্ষুষ্মানদের জন্য শিক্ষা।


زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوٰتِ مِنَ النِّسَآءِ وَالْبَنِیْنَ وَالْقَنَاطِیْرِ الْمُقَنْطَرَةِ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَالْخَیْلِ الْمُسَوَّمَةِ وَالْاَنْعَامِ وَالْحَرْثِ ؕ ذٰلِكَ مَتَاعُ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا ۚ وَاللهُ عِنْدَهٗ حُسْنُ الْمَاٰبِ ﴿۱۴﴾

মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে প্রবৃত্তির ভালবাসা- নারী, সন্তানাদি, রাশি রাশি সোনা-রূপা, চি‎‎হ্নত ঘোড়া, গবাদি পশু ও শস্যক্ষেত। এগুলো দুনিয়ার জীবনের ভোগসামগ্রী। আর আল্লাহ, তাঁর নিকট রয়েছে উত্তম প্রত্যাবর্তনস্থল।


قُلْ اَؤُنَبِّئُكُمْ بِخَیْرٍ مِّنْ ذٰلِكُمْ ؕ لِلَّذِیْنَ اتَّقَوْا عِنْدَ رَبِّهِمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا وَ اَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَۃٌ وَّرِضْوَانٌ مِّنَ اللهِ ؕ وَاللهُ بَصِیْرٌۢ بِالْعِبَادِ ﴿ۚ۱۵﴾

বল, আমি কি তোমাদেরকে এ সব হতেও অতি উত্তম কোন কিছুর সংবাদ দেব? যারা মুত্তাকী তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট এমন বাগান রয়েছে, যার নিম্নে নদী প্রবাহিত, তারা তাতে চিরকাল থাকবে আর রয়েছে পবিত্র সঙ্গী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি, বস্তুতঃ আল্লাহ বান্দাগণের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।


اَلَّذِیْنَ یَقُوْلُوْنَ رَبَّنَاۤ اِنَّنَاۤ اٰمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿ۚ۱۶﴾

যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ঈমান আনলাম। অতএব, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’।


اَلصّٰبِرِیْنَ وَالصّٰدِقِیْنَ وَالْقٰنِتِیْنَ وَالْمُنْفِقِیْنَ وَالْمُسْتَغْفِرِیْنَ بِالْاَسْحَارِ ﴿۱۷﴾

তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী এবং শেষ রাত্রে ক্ষমাপ্রার্থী।


شَهِدَ اللهُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۙ وَالْمَلٰٓئِکَۃُ وَ اُولُوا الْعِلْمِ قَآئِمًۢا بِالْقِسْطِ ؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَکِیْمُ ﴿ؕ۱۸﴾

আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, আর ফেরেশতা ও জ্ঞানীগণও। তিনি ন্যায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


اِنَّ الدِّیْنَ عِنْدَ اللهِ الْاِسْلَامُ ۟ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ اِلَّا مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ الْعِلْمُ بَغْیًۢا بَیْنَهُمْ ؕ وَمَنْ یَّكْفُرْ بِاٰیٰتِ اللهِ فَاِنَّ اللهَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ ﴿۱۹﴾

নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহ্ নিকট একমাত্র দ্বীন। যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে তারা পরস্পর বিদ্বেষবশত তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর মতানৈক্য করেছে । আর কেউ আল্লাহর নিদর্শনকে অস্বীকার করলে আল্লাহ্ তো হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর।


فَاِنْ حَآجُّوْكَ فَقُلْ اَسْلَمْتُ وَجْهِیَ لِلّٰهِ وَمَنِ اتَّبَعَنِ ؕ وَقُلْ لِّلَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ وَالْاُمِّیّٖنَ ءَاَسْلَمْتُمْ ؕ فَاِنْ اَسْلَمُوْا فَقَدِ اهْتَدَوْا ۚ وَ اِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّمَا عَلَیْكَ الْبَلٰغُ ؕ وَاللهُ بَصِیْرٌۢ بِالْعِبَادِ ﴿۠۲۰﴾

যদি তারা তোমার সাথে বিতর্ক করে, তবে তুমি বল, ‘আমি আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম এবং আমার অনুসারীরাও’। আর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে এবং নিরক্ষরদেরকে বল, ‘তোমরা কি ইসলাম গ্রহণ করেছ’? তখন যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে তারা অবশ্যই হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর যদি ফিরে যায়, তাহলে তোমার দায়িত্ব শুধু পৌঁছিয়ে দেয়া। আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।


اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللهِ وَیَقْتُلُوْنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیْرِ حَقٍّ ۙ وَّیَقْتُلُوْنَ الَّذِیْنَ یَاْمُرُوْنَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ ۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍ ﴿۲۱﴾

যারা আল্লাহ্ আয়াত অস্বীকার করে, অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করে এবং মানুষের মধ্যে যারা ন্যায়পরায়ণতার নির্দেশ দেয় তাদেরকে হত্যা করে, তুমি তাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও।


اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فِی الدُّنْیَا وَالْاٰخِرَةِ وَمَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ ﴿۲۲﴾

এদের কৃতকর্মসমূহ ইহকাল ও আখিরাতে ব্যর্থ হবে এবং তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।


اَلَمْ تَرَ اِلَی الَّذِیْنَ اُوْتُوْا نَصِیْبًا مِّنَ الْکِتٰبِ یُدْعَوْنَ اِلٰی کِتٰبِ اللهِ لِیَحْكُمَ بَیْنَهُمْ ثُمَّ یَتَوَلّٰی فَرِیْقٌ مِّنْهُمْ وَهُمْ مُّعْرِضُوْنَ ﴿۲۳﴾

তুমি কি তাদের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করনি যাদেরকে কিতাবের অংশ দেয়া হয়েছিল? তাদেরকে আল্লাহর কিতাবের দিকে আহবান করা হয়েছিল, যাতে এটা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, এরপর তাদের একদল বিমুখতা অবলম্বন করে ফিরে যায়।


ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَیَّامًا مَّعْدُوْدٰتٍ ۪ وَ غَرَّهُمْ فِیْ دِیْنِهِمْ مَّا کَانُوْا یَفْتَرُوْنَ ﴿۲۴﴾

এটা এজন্য যে, তারা বলে, দিন কতক ছাড়া জাহান্নামের আগুন কক্ষনো আমাদেরকে স্পর্শ করবে না এবং তাদের কল্পিত ধারণাসমূহ দ্বীনের ব্যাপারে তাদেরকে ধোঁকায় ফেলে রেখেছে।


فَکَیْفَ اِذَا جَمَعْنٰهُمْ لِیَوْمٍ لَّا رَیْبَ فِیْهِ ۟ وَوُفِّیَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّا کَسَبَتْ وَهُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ ﴿۲۵﴾

সুতরাং কী অবস্থা হবে? যখন আমি তাদেরকে এমন দিনে সমবেত করব, যাতে কোন সন্দেহ নেই। আর প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিদান পূর্ণভাবে দেয়া হবে এবং তাদেরকে যুলম করা হবে না।


قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِی الْمُلْكَ مَنْ تَشَآءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَآءُ ۫ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَآءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَآءُ ؕ بِیَدِكَ الْخَیْرُ ؕ اِنَّكَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۲۶﴾

বল, ‘হে আল্লাহ, রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আর যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন। আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’।


تُوْلِجُ الَّیْلَ فِی النَّهَارِ وَتُوْلِجُ النَّهَارَ فِی الَّیْلِ ۫ وَتُخْرِجُ الْحَیَّ مِنَ الْمَیِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَیِّتَ مِنَ الْحَیِّ ۫ وَتَرْزُقُ مَنْ تَشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ ﴿۲۷﴾

‘আপনি রাতকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করান এবং দিনকে রাতের মধ্যে প্রবেশ করান। আর মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন এবং জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন। আর যাকে চান বিনা হিসাবে রিয্ক দান করেন’।


لَا یَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُوْنَ الْکٰفِرِیْنَ اَوْلِیَآءَ مِنْ دُوْنِ الْمُؤْمِنِیْنَ ۚ وَمَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَلَیْسَ مِنَ اللهِ فِیْ شَیْءٍ اِلَّاۤ اَنْ تَتَّقُوْا مِنْهُمْ تُقٰىۃً ؕ وَ یُحَذِّرُكُمُ اللهُ نَفْسَهٗ ؕ وَ اِلَی اللهِ الْمَصِیْرُ ﴿۲۸﴾

মুমিনরা যেন মুমিনদের ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধু না বানায়। আর যে কেউ এরূপ করবে, আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যদি তাদের পক্ষ থেকে তোমাদের কোন ভয়ের আশঙ্কা থাকে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিজের ব্যাপারে সতর্ক করছেন এবং আল্লাহর নিকটই প্রত্যাবর্তন।


قُلْ اِنْ تُخْفُوْا مَا فِیْ صُدُوْرِكُمْ اَوْ تُبْدُوْهُ یَعْلَمْهُ اللهُ ؕ وَیَعْلَمُ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الْاَرْضِ ؕ وَاللهُ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۲۹﴾

বল, ‘তোমরা যদি তোমাদের অন্তরসমূহে যা আছে তা গোপন কর অথবা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা জানেন। আর আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও যমীনে যা আছে, তাও তিনি জানেন। আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’।


یَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ مِنْ خَیْرٍ مُّحْضَرًا ۚۖۛ وَّمَا عَمِلَتْ مِنْ سُوْٓءٍ ۚۛ تَوَدُّ لَوْ اَنَّ بَیْنَهَا وَبَیْنَهٗۤ اَمَدًۢا بَعِیْدًا ؕ وَیُحَذِّرُكُمُ اللهُ نَفْسَهٗ ؕ وَاللهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ ﴿۠۳۰﴾

যেদিন প্রত্যেকে উপস্থিত পাবে যে ভাল আমল সে করেছে এবং যে মন্দ আমল সে করেছে তা। তখন সে কামনা করবে, যদি মন্দ কাজ ও তার মধ্যে বহুদূর ব্যবধান হত! আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার নিজের ব্যাপারে সাবধান করছেন এবং আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল।


قُلْ اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِیْ یُحْبِبْكُمُ اللهُ وَ یَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ ؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۳۱﴾

তুমি বলঃ যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসেন ও তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করেন; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।


قُلْ اَطِیْعُوا اللهَ وَالرَّسُوْلَ ۚ فَاِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّ اللهَ لَا یُحِبُّ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۳۲﴾

বল, ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর’। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না।


اِنَّ اللهَ اصْطَفٰۤی اٰدَمَ وَنُوْحًا وَّ اٰلَ اِبْرٰهِیْمَ وَ اٰلَ عِمْرٰنَ عَلَی الْعٰلَمِیْنَ ﴿ۙ۳۳﴾

নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম, নূহ ও ইবরাহীমের পরিবারকে এবং ইমরানের পরিবারকে সৃষ্টিজগতের উপর মনোনীত করেছেন।


ذُرِّیَّۃًۢ بَعْضُهَا مِنْۢ بَعْضٍ ؕ وَاللهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿ۚ۳۴﴾

তারা একে অপরের বংশধর। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।


اِذْ قَالَتِ امْرَاَتُ عِمْرٰنَ رَبِّ اِنِّیْ نَذَرْتُ لَكَ مَا فِیْ بَطْنِیْ مُحَرَّرًا فَتَقَبَّلْ مِنِّیْ ۚ اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ ﴿۳۵﴾

যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল, ‘হে আমার রব, আমার গর্ভে যা আছে, নিশ্চয় আমি তা খালেসভাবে আপনার জন্য মানত করলাম। অতএব, আপনি আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ’।


فَلَمَّا وَضَعَتْهَا قَالَتْ رَبِّ اِنِّیْ وَضَعْتُهَاۤ اُنْثٰی ؕ وَاللهُ اَعْلَمُ بِمَا وَضَعَتْ ؕ وَلَیْسَ الذَّکَرُ کَالْاُنْثٰی ۚ وَ اِنِّیْ سَمَّیْتُهَا مَرْیَمَ وَ اِنِّیْۤ اُعِیْذُهَابِكَ وَذُرِّیَّتَهَا مِنَ الشَّیْطٰنِ الرَّجِیْمِ ﴿۳۶﴾

অতঃপর সে যখন তা প্রসব করল, বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি তা প্রসব করেছি কন্যারূপে’। আর আল্লাহই ভাল জানেন সে যা প্রসব করেছে তা সম্পর্কে। ‘আর পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানের মত নয় এবং নিশ্চয় আমি তার নাম রেখেছি মারইয়াম। আর নিশ্চয় আমি তাকে ও তার সন্তানদেরকে বিতাড়িত শয়তান থেকে আপনার আশ্রয় দিচ্ছি’।


فَتَقَبَّلَهَا رَبُّهَا بِقَبُوْلٍ حَسَنٍ وَّاَنْۢبَتَهَا نَبَاتًا حَسَنًا ۙ وَّکَفَّلَهَا زَکَرِیَّا ۚؕ كُلَّمَا دَخَلَ عَلَیْهَا زَکَرِیَّا الْمِحْرَابَ ۙ وَجَدَ عِنْدَهَا رِزْقًا ۚ قَالَ یٰمَرْیَمُ اَنّٰی لَكِ هٰذَا ؕ قَالَتْ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ ﴿۳۷﴾

অতঃপর তার রব তাকে উত্তমভাবে কবুল করলেন এবং তাকে উত্তমভাবে গড়ে তুললেন। আর তাকে যাকারিয়্যার দায়িত্বে দিলেন। যখনই যাকারিয়্যা তার কাছে তার কক্ষে প্রবেশ করত, তখনই তার নিকট খাদ্যসামগ্রী পেত। সে বলত, ‘হে মারইয়াম, কোথা থেকে তোমার জন্য এটি’? সে বলত, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে চান বিনা হিসাবে রিয্ক দান করেন’।


هُنَالِكَ دَعَا زَکَرِیَّا رَبَّهٗ ۚ قَالَ رَبِّ هَبْ لِیْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّكَ سَمِیْعُ الدُّعَآءِ ﴿۳۸﴾

সেখানে যাকারিয়্যা তার রবের কাছে প্রার্থনা করেছিল, সে বলল, ‘হে আমর রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী’।


فَنَادَتْهُ الْمَلٰٓئِکَۃُ وَهُوَ قَآئِمٌ یُّصَلِّیْ فِی الْمِحْرَابِ ۙ اَنَّ اللهَ یُبَشِّرُكَ بِیَحْیٰـی مُصَدِّقًۢا بِکَلِمَۃٍ مِّنَ اللهِ وَسَیِّدًا وَّحَصُوْرًا وَّنَبِیًّا مِّنَ الصّٰلِحِیْنَ ﴿۳۹﴾

অতঃপর ফেরেশতারা তাকে ডেকে বলল, সে যখন কক্ষে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছেন, যে হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে বাণীর সত্যায়নকারী, নেতা ও নারী সম্ভোগমুক্ত এবং নেককারদের মধ্য থেকে একজন নবী’।


قَالَ رَبِّ اَنّٰی یَكُوْنُ لِیْ غُلٰمٌ وَّقَدْ بَلَغَنِیَ الْکِبَرُ وَامْرَاَتِیْ عَاقِرٌ ؕ قَالَ کَذٰلِكَ اللهُ یَفْعَلُ مَا یَشَآءُ ﴿۴۰﴾

সে বলল, ‘হে আমার রব, কীভাবে আমার পুত্র হবে? অথচ আমার তো বার্ধক্য এসে গিয়েছে, আর আমার স্ত্রী বন্ধা’। তিনি বললেন, ‘এভাবেই আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন’।


قَالَ رَبِّ اجْعَلْ لِّیْۤ اٰیَۃً ؕ قَالَ اٰیَتُكَ اَلَّا تُکَلِّمَ النَّاسَ ثَلٰثَةَ اَیَّامٍ اِلَّا رَمْزًا ؕ وَاذْكُرْ رَّبَّكَ کَثِیْرًا وَّسَبِّحْ بِالْعَشِیِّ وَالْاِبْکَارِ ﴿۠۴۱﴾

সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে দেন একটি নিদর্শন’। তিনি বললেন, ‘তোমার নিদর্শন হল, তুমি তিন দিন পর্যন্ত মানুষের সাথে ইশারা ছাড়া কথা বলবে না। আর তোমার রবকে অধিক স্মরণ কর এবং সকাল-সন্ধ্যা তার তাসবীহ পাঠ কর’।


وَ اِذْ قَالَتِ الْمَلٰٓئِکَۃُ یٰمَرْیَمُ اِنَّ اللهَ اصْطَفٰكِ وَطَهَّرَكِ وَاصْطَفٰكِ عَلٰی نِسَآءِ الْعٰلَمِیْنَ ﴿۴۲﴾

আর স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা বলল, ‘হে মারইয়াম, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে মনোনীত করেছেন ও পবিত্র করেছেন এবং নির্বাচিত করেছেন তোমাকে বিশ্বজগতের নারীদের উপর’ ।


یٰمَرْیَمُ اقْنُتِیْ لِرَبِّكِ وَاسْجُدِیْ وَارْکَعِیْ مَعَ الرّٰکِعِیْنَ ﴿۴۳﴾

‘হে মারইয়াম, তোমার রবের জন্য অনুগত হও। আর সিজদা কর এবং রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর’।


ذٰلِكَ مِنْ اَنْۢبَآءِ الْغَیْبِ نُوْحِیْهِ اِلَیْكَ ؕ وَمَا كُنْتَ لَدَیْهِمْ اِذْ یُلْقُوْنَ اَقْلَامَهُمْ اَیُّهُمْ یَكْفُلُ مَرْیَمَ ۪ وَمَا كُنْتَ لَدَیْهِمْ اِذْ یَخْتَصِمُوْنَ ﴿۴۴﴾

এটি গায়েবের সংবাদসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা আমি তোমার প্রতি ওহী পাঠাচ্ছি। আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের দায়িত্ব নেবে? আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা বিতর্ক করছিল ।


اِذْ قَالَتِ الْمَلٰٓئِکَۃُ یٰمَرْیَمُ اِنَّ اللهَ یُبَشِّرُكِ بِکَلِمَۃٍ مِّنْهُ ٭ۖ اسْمُهُ الْمَسِیْحُ عِیْسَی ابْنُ مَرْیَمَ وَجِیْهًا فِی الدُّنْیَا وَالْاٰخِرَةِ وَمِنَ الْمُقَرَّبِیْنَ ﴿ۙ۴۵﴾

স্মরণ কর, যখন ফেরেশতারা বলল, ‘হে মারইয়াম, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে তাঁর পক্ষ থেকে একটি কালেমার সুসংবাদ দিচ্ছেন, যার নাম মসীহ ঈসা ইবনে মারইয়াম, যে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত এবং নৈকট্যপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত’।


وَیُکَلِّمُ النَّاسَ فِی الْمَهْدِ وَکَهْلًا وَّمِنَ الصّٰلِحِیْنَ ﴿۴۶﴾

আর সে মানুষের সাথে কথা বলবে দোলনায় ও পরিণত বয়সে এবং সে নেককারদের অন্তর্ভুক্ত।


قَالَتْ رَبِّ اَنّٰی یَكُوْنُ لِیْ وَلَدٌ وَّلَمْ یَمْسَسْنِیْ بَشَرٌ ؕ قَالَ کَذٰلِكِ اللهُ یَخْلُقُ مَا یَشَآءُ ؕ اِذَا قَضٰٓی اَمْرًا فَاِنَّمَا یَقُوْلُ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ ﴿۴۷﴾

মারইয়াম বলল, ‘হে আমার রব, কিভাবে আমার সন্তান হবে? অথচ কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি’! আল্লাহ বললেন, ‘এভাবেই’ আল্লাহ যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাকে শুধু বলেন, ‘হও’। ফলে তা হয়ে যায়।


وَیُعَلِّمُهُ الْکِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَالتَّوْرٰىةَ وَالْاِنْجِیْلَ ﴿ۚ۴۸﴾

আর তিনি তাকে কিতাব, হিকমাত, তাওরাত ও ইঞ্জিল শিক্ষা দেবেন।


وَرَسُوْلًا اِلٰی بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ ۬ۙ اَنِّیْ قَدْ جِئْتُكُمْ بِاٰیَۃٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ ۙ اَنِّیْۤ اَخْلُقُ لَكُمْ مِّنَ الطِّیْنِ کَهَیْـَٔةِ الطَّیْرِ فَاَنْفُخُ فِیْهِ فَیَكُوْنُ طَیْرًۢا بِاِذْنِ اللهِ ۚ وَاُبْرِیُٔ الْاَكْمَهَ وَالْاَبْرَصَ وَاُحْیِ الْمَوْتٰی بِاِذْنِ اللهِ ۚ وَاُنَبِّئُكُمْ بِمَا تَاْكُلُوْنَ وَمَا تَدَّخِرُوْنَ ۙ فِیْ بُیُوْتِكُمْ ۙ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَۃً لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿ۚ۴۹﴾

আর বনী ইসরাঈলদের রাসূল বানাবেন (সে বলবে) ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে এসেছি যে, অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য কাদামাটি দিয়ে পাখির আকৃতি বানাব, অতঃপর আমি তাতে ফুঁক দেব। ফলে আল্লাহর হুকুমে সেটি পাখি হয়ে যাবে। আর আমি আল্লাহর হুকুমে জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রুগীকে সুস্থ করব এবং মৃতকে জীবিত করব। আর তোমরা যা আহার কর এবং তোমাদের ঘরে যা জমা করে রাখ তা আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব। নিশ্চয় এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে, যদি তোমরা মুমিন হও’।


وَمُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوْرٰىةِ وَلِاُحِلَّ لَكُمْ بَعْضَ الَّذِیْ حُرِّمَ عَلَیْكُمْ وَجِئْتُكُمْ بِاٰیَۃٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ ۟ فَاتَّقُوا اللهَ وَاَطِیْعُوْنِ ﴿۵۰﴾

‘আর আমার সামনে পূর্ববর্তী কিতাব তাওরাতের যা রয়েছে তার সত্যায়নকারীরূপে এবং তোমাদের উপর যা হারাম করা হয়েছিল তার কিছু তোমাদের জন্য হালাল করতে এবং আমি তোমাদের নিকট এসেছি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে। অতএব, তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আমার আনুগত্য কর’।


اِنَّ اللهَ رَبِّیْ وَرَبُّكُمْ فَاعْبُدُوْهُ ؕ هٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِیْمٌ ﴿۵۱﴾

‘নিশ্চয় আল্লাহ আমার রব ও তোমাদের রব। অতএব তোমরা তাঁর ইবাদাত কর। এটি সরল পথ’।


فَلَمَّاۤ اَحَسَّ عِیْسٰی مِنْهُمُ الْكُفْرَ قَالَ مَنْ اَنْصَارِیْۤ اِلَی اللهِ ؕ قَالَ الْحَوَارِیُّوْنَ نَحْنُ اَنْصَارُ اللهِ ۚ اٰمَنَّا بِاللهِ ۚ وَاشْهَدْ بِاَنَّا مُسْلِمُوْنَ ﴿۵۲﴾

অতঃপর যখন ঈসা তাদের পক্ষ হতে কুফরী উপলব্ধি করল, তখন বলল, ‘কে আল্লাহর জন্য আমার সাহায্যকারী হবে’? হাওয়ারীগণ বলল, ‘আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। আর তুমি সাক্ষী থাক যে, নিশ্চয় আমরা মুসলিম’।


رَبَّنَاۤ اٰمَنَّا بِمَاۤ اَنْزَلْتَ وَاتَّبَعْنَا الرَّسُوْلَ فَاكْتُبْنَا مَعَ الشّٰهِدِیْنَ ﴿۵۳﴾

হে আমাদের রব, আপনি যা নাযিল করেছেন তার প্রতি আমরা ঈমান এনেছি এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করেছি। অতএব, আমাদেরকে সাক্ষ্যদাতাদের তালিকাভুক্ত করুন’।


وَمَکَرُوْا وَمَکَرَ اللهُ ؕ وَاللهُ خَیْرُ الْمٰکِرِیْنَ ﴿۠۵۴﴾

আর তারা কুটকৌশল করেছে এবং আল্লাহ কৌশল করেছেন। আর আল্লাহ উত্তম কৌশলকারী।


اِذْ قَالَ اللهُ یٰعِیْسٰۤی اِنِّیْ مُتَوَفِّیْكَ وَرَافِعُكَ اِلَیَّ وَمُطَهِّرُكَ مِنَ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا وَجَاعِلُ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْكَ فَوْقَ الَّذِیْنَ کَفَرُوْۤا اِلٰی یَوْمِ الْقِیٰمَةِ ۚ ثُمَّ اِلَیَّ مَرْجِعُكُمْ فَاَحْكُمُ بَیْنَكُمْ فِیْمَا كُنْتُمْ فِیْهِ تَخْتَلِفُوْنَ ﴿۵۵﴾

স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বললেন, ‘হে ঈসা, নিশ্চয় আমি তোমাকে পরিগ্রহণ করব, তোমাকে আমার দিকে উঠিয়ে নেব এবং কাফিরদের থেকে তোমাকে পবিত্র করব। আর যারা তোমার আনুগত্য করেছে তাদেরকে কিয়ামত পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের উপরে প্রাধান্য দেব। অতঃপর আমার নিকটই তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে। তখন আমি তোমাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেব, যে ব্যাপারে তোমরা মতবিরোধ করতে’ ।


فَاَمَّا الَّذِیْنَ کَفَرُوْا فَاُعَذِّبُهُمْ عَذَابًا شَدِیْدًا فِی الدُّنْیَا وَالْاٰخِرَةِ وَمَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ ﴿۵۶﴾

অতঃপর যারা কুফরী করেছে, আমি তাদেরকে কঠিন আযাব দেব দুনিয়া ও আখিরাতে, আর তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।


وَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فَیُوَفِّیْهِمْ اُجُوْرَهُمْ ؕ وَاللهُ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیْنَ ﴿۵۷﴾

আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তিনি তাদেরকে পরিপূর্ণ প্রতিদান দেবেন। আর আল্লাহ যালিমদেরকে ভালবাসেন না।


ذٰلِكَ نَتْلُوْهُ عَلَیْكَ مِنَ الْاٰیٰتِ وَالذِّكْرِ الْحَکِیْمِ ﴿۵۸﴾

এসব আমি তোমাকে পড়ে শুনাচ্ছি আয়াতসমষ্টি ও জ্ঞানগর্ভ বাণী হতে।


اِنَّ مَثَلَ عِیْسٰی عِنْدَ اللهِ کَمَثَلِ اٰدَمَ ؕ خَلَقَهٗ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ ﴿۵۹﴾

নিশ্চয় আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের মত, তিনি তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাকে বললেন, ‘হও’, ফলে সে হয়ে গেল।


اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُنْ مِّنَ الْمُمْتَرِیْنَ ﴿۶۰﴾

এ বাস্তব ঘটনা তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতেই, সুতরাং তুমি সংশয়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।


فَمَنْ حَآجَّكَ فِیْهِ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ اَبْنَآءَنَا وَاَبْنَآءَكُمْ وَ نِسَآءَنَا وَ نِسَآءَكُمْ وَاَنْفُسَنَا وَاَنْفُسَكُمْ ۟ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَّعْنَتَ اللهِ عَلَی الْکٰذِبِیْنَ ﴿۶۱﴾

অতঃপর তোমার নিকট জ্ঞান আসার পর যে তোমার সাথে এ বিষয়ে ঝগড়া করে, তবে তুমি তাকে বল, এস আমরা ডেকে নেই আমাদের সন্তানদেরকে ও তোমাদের সন্তানদেরকে। আর আমাদের নারীদেরকে ও তোমাদের নারীদেরকে এবং আমাদের নিজদেরকে ও তোমাদের নিজদেরকে, তারপর আমরা বিনীত প্রার্থনা করি, মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লানত করি।


اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الْقَصَصُ الْحَقُّ ۚ وَمَا مِنْ اِلٰهٍ اِلَّا اللهُ ؕ وَ اِنَّ اللهَ لَهُوَ الْعَزِیْزُ الْحَکِیْمُ ﴿۶۲﴾

নিশ্চয়ই এটা প্রকৃত ঘটনা। আল্লাহ ছাড়া অন্য সত্য ইলাহ নেই। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।


فَاِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّ اللهَ عَلِیْمٌۢ بِالْمُفْسِدِیْنَ ﴿۠۶۳﴾

অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ দুস্কার্যকারীদের জ্ঞাত আছেন।


قُلْ یٰۤاَهْلَ الْکِتٰبِ تَعَالَوْا اِلٰی کَلِمَۃٍ سَوَآءٍۢ بَیْنَنَا وَبَیْنَكُمْ اَلَّا نَعْبُدَ اِلَّا اللهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهٖ شَیْئًا وَّلَا یَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا اَرْبَابًا مِّنْ دُوْنِ اللهِ ؕ فَاِنْ تَوَلَّوْا فَقُوْلُوا اشْهَدُوْا بِاَنَّا مُسْلِمُوْنَ ﴿۶۴﴾

বল, ‘হে আহলে কিতাব! এমন এক কথার দিকে আসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, তা এই যে, আমরা আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো ইবাদাত করব না এবং কোন কিছুকে তাঁর শরীক করব না এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমাদের মধ্যে কেউ কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ করব না। তারপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলে দাও, তোমরা এ বিষয়ে সাক্ষী থাক যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী।


یٰۤاَهۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّوۡنَ فِیۡۤ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ مَاۤ اُنۡزِلَتِ التَّوۡرٰىۃُ وَ الۡاِنۡجِیۡلُ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۵﴾

হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন ইবরাহীম সম্পর্কে তর্ক করছ? তাওরাত এবং ইঞ্জিল তো তারপরেই অবতীর্ণ হয়েছে, তোমরা কি তাও বুঝ না?


هٰۤاَنْتُمْ هٰۤؤُلَآءِ حَاجَجْتُمْ فِیْمَا لَكُمْ بِهٖ عِلمٌ فَلِمَ تُحَآجُّوْنَ فِیْمَا لَیْسَ لَكُمْ بِهٖ عِلْمٌ ؕ وَاللهُ یَعْلَمُ وَاَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ ﴿۶۶﴾

বস্তুতঃ তোমরাই এমন লোক যে, যে সম্পর্কে তোমাদের কিছু জ্ঞান আছে, সে বিষয়ে তো বিতর্ক করেছ, তোমরা এমন বিষয়ে কেন বিতর্ক করছ যে বিষয়ে তোমাদের কোনই জ্ঞান নেই? বস্তুতঃ আল্লাহ্ই জ্ঞাত আছেন, তোমরা জ্ঞাত নও।


مَاکَانَ اِبْرٰهِیْمُ یَهُوْدِیًّا وَّلَا نَصْرَانِیًّا وَّلٰکِنْ کَانَ حَنِیْفًا مُّسْلِمًا ؕ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ ﴿۶۷﴾

ইবরাহীম ইয়াহুদী ছিল না এবং খৃষ্টানও ছিল না, বরং সে সুদৃঢ় মুসলিম ছিল এবং সে মুশরিকদের (অংশীবাদী) অন্তর্ভুক্ত ছিল না।


اِنَّ اَوْلَی النَّاسِ بِاِبْرٰهِیْمَ لَلَّذِیْنَ اتَّبَعُوْهُ وَهٰذَا النَّبِیُّ وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا ؕ وَاللهُ وَلِیُّ الْمُؤْمِنِیْنَ ﴿۶۸﴾

নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ইবরাহীমের সবচেয়ে নিকটবর্তী তারা, যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নবী ও মুমিনগণ। আর আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক।


وَدَّتْ طَّآئِفَۃٌ مِّنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ لَوْ یُضِلُّوْنَكُمْ ؕ وَمَا یُضِلُّوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَمَا یَشْعُرُوْنَ ﴿۶۹﴾

কিতাবধারীদের একদল চায় যাতে তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করতে পারে, অথচ তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকেও পথভ্রষ্ট করে না, কিন্তু তারা উপলব্ধি করতে পারে না।


یٰۤاَهْلَ الْکِتٰبِ لِمَ تَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللهِ وَاَنْتُمْ تَشْهَدُوْنَ ﴿۷۰﴾

হে আহলে কিতাব! কেন তোমরা আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করছ, অথচ তোমরা নিজেরাই তার সাক্ষী?


یٰۤاَهْلَ الْکِتٰبِ لِمَ تَلْبِسُوْنَ الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوْنَ الْحَقَّ وَاَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ﴿۠۷۱﴾

হে আহলে কিতাব! তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে কেন গোলাচ্ছ? এবং জেনে শুনে কেন সত্য গোপন করছ?


وَقَالَتْ طَّآئِفَۃٌ مِّنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ اٰمِنُوْا بِالَّذِیْۤ اُنْزِلَ عَلَی الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَجْهَ النَّهَارِ وَاكْفُرُوْۤا اٰخِرَهٗ لَعَلَّهُمْ یَرْجِعُوْنَ ﴿ۚۖ۷۲﴾

আর আহলে কিতাবের মধ্যে একদল এটাই বলে যে, বিশ্বাস স্থাপনকারীদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তৎপ্রতি পূর্বাহ্নে বিশ্বাস স্থাপন কর এবং অপরাহ্নে তা অস্বীকার কর, তাহলে তারা ফিরে যাবে।


وَلَا تُؤْمِنُوْۤا اِلَّا لِمَنْ تَبِعَ دِیْنَكُمْ ؕ قُلْ اِنَّ الْهُدٰی هُدَی اللهِ ۙ اَنْ یُّؤْتٰۤی اَحَدٌ مِّثْلَ مَاۤ اُوْتِیْتُمْ اَوْ یُحَآجُّوْكُمْ عِنْدَ رَبِّكُمْ ؕ قُلْ اِنَّ الْفَضْلَ بِیَدِ اللهِ ۚ یُؤْتِیْهِ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ ﴿ۚۙ۷۳﴾

আর তোমরা কেবল তাদেরকে বিশ্বাস কর, যারা তোমাদের দীনের অনুসরণ করে। বল, নিশ্চয় আল্লাহর হিদায়াতই হিদায়াত। এটা এ জন্য যে, কোন ব্যক্তিকে দেয়া হবে যেরূপ তোমাদেরকে দেয়া হয়েছে। অথবা তারা তোমাদের রবের নিকট তোমাদের সাথে বিতর্ক করবে। বল, নিশ্চয় অনুগ্রহ আল্লাহর হাতে, তিনি যাকে চান, তা দান করেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।


یَّخْتَصُّ بِرَحْمَتِهٖ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِیْمِ ﴿۷۴﴾

তিনি যার প্রতি ইচ্ছা করেন স্বীয় করুনা নির্দিষ্ট করেন এবং আল্লাহ মহান, অনুগ্রহশীল।


وَمِنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ مَنْ اِنْ تَاْمَنْهُ بِقِنْطَارٍ یُّؤَدِّهٖۤ اِلَیْكَ ۚ وَمِنْهُمْ مَّنْ اِنْ تَاْمَنْهُ بِدِیْنَارٍ لَّا یُؤَدِّهٖۤ اِلَیْكَ اِلَّا مَا دُمْتَ عَلَیْهِ قَآئِمًا ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْا لَیْسَ عَلَیْنَا فِی الْاُمِّیّٖنَ سَبِیْلٌ ۚ وَیَقُوْلُوْنَ عَلَی اللهِ الْکَذِبَ وَهُمْ یَعْلَمُوْنَ ﴿۷۵﴾

আর কিতাবীদের মধ্যে এমন ব্যক্তি আছে, যদি তার নিকট তুমি অঢেল সম্পদ আমানত রাখ, তবুও সে তা তোমার নিকট আদায় করে দেবে এবং তাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও আছে, যদি তুমি তার নিকট এক দীনার আমানত রাখ, তবে সর্বোচ্চ তাগাদা ছাড়া সে তা তোমাকে ফেরত দেবে না। এটি এ কারণে যে, তারা বলে, ‘উম্মীদের ব্যাপারে আমাদের উপর কোন পাপ নেই’। আর তারা জেনে-শুনে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা বলে।


بَلٰی مَنْ اَوْفٰی بِعَهْدِهٖ وَاتَّقٰی فَاِنَّ اللهَ یُحِبُّ الْمُتَّقِیْنَ ﴿۷۶﴾

হ্যাঁ, অবশ্যই যে নিজ প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।


اِنَّ الَّذِیْنَ یَشْتَرُوْنَ بِعَهْدِ اللهِ وَاَیْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِیْلًا اُولٰٓئِكَ لَا خَلَاقَ لَهُمْ فِی الْاٰخِرَةِ وَلَا یُکَلِّمُهُمُ اللهُ وَلَا یَنْظُرُ اِلَیْهِمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَلَا یُزَکِّیْهِمْ ۪ وَلَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ ﴿۷۷﴾

নিশ্চয় যারা আল্লাহর অঙ্গীকার ও তাদের শপথের বিনিময়ে খরিদ করে তুচ্ছ মূল্য, পরকালে এদের জন্য কোন অংশ নেই। আর আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং কিয়ামতের দিন তাদের দিকে তাকাবেন না, আর তাদেরকে পবিত্রও করবেন না এবং তাদের জন্যই রয়েছে মর্মন্তুদ আযাব।


وَ اِنَّ مِنْهُمْ لَفَرِیْقًا یَّلْوٗنَ اَلْسِنَتَهُمْ بِالْکِتٰبِ لِتَحْسَبُوْهُ مِنَ الْکِتٰبِ وَمَا هُوَ مِنَ الْکِتٰبِ ۚ وَیَقُوْلُوْنَ هُوَ مِنْ عِنْدِ اللهِ وَمَا هُوَ مِنْ عِنْدِ اللهِ ۚ وَیَقُوْلُوْنَ عَلَی اللهِ الْکَذِبَ وَهُمْ یَعْلَمُوْنَ ﴿۷۸﴾

তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা নিজদের জিহ্বা বিকৃত করে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা সেটা কিতাবের অংশ মনে কর, অথচ সেটি কিতাবের অংশ নয়। তারা বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, অথচ তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা বলে, অথচ তারা জানে।


مَا کَانَ لِبَشَرٍ اَنْ یُّؤْتِیَهُ اللهُ الْکِتٰبَ وَالْحُكْمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ یَقُوْلَ لِلنَّاسِ كُوْنُوْا عِبَادًا لِّیْ مِنْ دُوْنِ اللهِ وَلٰکِنْ كُوْنُوْا رَبّٰنِیّٖنَ بِمَا كُنْتُمْ تُعَلِّمُوْنَ الْکِتٰبَ وَبِمَا كُنْتُمْ تَدْرُسُوْنَ ﴿ۙ۷۹﴾

কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও। বরং সে বলবে, তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে


وَلَا یَاْمُرَكُمْ اَنْ تَتَّخِذُوا الْمَلٰٓئِکَةَ وَالنَّبِیّٖنَ اَرْبَابًا ؕ اَیَاْمُرُكُمْ بِالْكُفْرِ بَعْدَ اِذْ اَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ ﴿۠۸۰﴾

সে ব্যক্তি তোমাদেরকে বলবে না যে, তোমরা ফেরেশতাদেরকে এবং নাবীদেরকে মা’বূদরূপে গ্রহণ কর, তোমরা মুসলিম হওয়ার পরও কি সে তোমাদেরকে কুফরীর নির্দেশ দিতে পারে?


وَ اِذْ اَخَذَ اللهُ مِیْثَاقَ النَّبِیّٖنَ لَمَاۤ اٰتَیْتُكُمْ مِّنْ کِتٰبٍ وَّحِكْمَۃٍ ثُمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ ؕ قَالَ ءَاَقْرَرْتُمْ وَاَخَذْتُمْ عَلٰی ذٰلِكُمْ اِصْرِیْ ؕ قَالُوْۤا اَقْرَرْنَا ؕ قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِیْنَ ﴿۸۱﴾

আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছেন- আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমাত দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের সাথে যা আছে তা সত্যায়নকারীরূপে একজন রাসূল তোমাদের কাছে আসবে- তখন অবশ্যই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করেছ এবং এর উপর আমার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ’? তারা বলল, ‘আমরা স্বীকার করলাম’। আল্লাহ বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম’।


فَمَنْ تَوَلّٰی بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ ﴿۸۲﴾

সুতরাং এরপর যারা ফিরে যাবে, তারা তো ফাসিক।


اَفَغَیْرَ دِیْنِ اللهِ یَبْغُوْنَ وَلَهٗۤ اَسْلَمَ مَنْ فِی السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ طَوْعًا وَّکَرْهًا وَّ اِلَیْهِ یُرْجَعُوْنَ ﴿۸۳﴾

এরা কি আল্লাহর দ্বীন ছাড়া অন্য দ্বীনের সন্ধান করছে? অথচ আসমান ও যমীনে যা আছে সবই ইচ্ছেয় ও অনিচ্ছেয় তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাঁরই দিকে সকলের প্রত্যাবর্তন।


قُلْ اٰمَنَّا بِاللهِ وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلٰۤی اِبْرٰهِیْمَ وَاِسْمٰعِیْلَ وَاِسْحٰقَ وَیَعْقُوْبَ وَالْاَسْبَاطِ وَمَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰی وَعِیْسٰی وَالنَّبِیُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ ۪ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ ۫ وَنَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ ﴿۸۴﴾

বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর, আর যা নাযিল হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর। আর যা দেয়া হয়েছে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে তাদের রবের পক্ষ থেকে, আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আমরা তারই প্রতি আত্মসমর্পণকারী’।


وَمَنْ یَّبْتَغِ غَیْرَ الْاِسْلَامِ دِیْنًا فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْهُ ۚ وَهُوَ فِی الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ ﴿۸۵﴾

আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইবে কক্ষনো তার সেই দ্বীন কবূল করা হবে না এবং আখেরাতে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।


کَیْفَ یَهْدِی اللهُ قَوْمًا کَفَرُوْا بَعْدَ اِیْمَانِهِمْ وَشَهِدُوْۤا اَنَّ الرَّسُوْلَ حَقٌّ وَّجَآءَهُمُ الْبَیِّنٰتُ ؕ وَاللهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ ﴿۸۶﴾

কেমন করে আল্লাহ সে কওমকে হিদায়াত দেবেন, যারা ঈমান আনার পর কুফরী করেছে, আর তারা সাক্ষ্য দিয়েছে যে, নিশ্চয় রাসূল সত্য এবং তাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। আর আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত দেন না।


اُولٰٓئِكَ جَزَآؤُهُمْ اَنَّ عَلَیْهِمْ لَعْنَةَ اللهِ وَالْمَلٰٓئِکَةِ وَالنَّاسِ اَجْمَعِیْنَ ﴿ۙ۸۷﴾

এরাই তারা যাদের প্রতিফল এই যে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফেরেশতাদের এবং সমুদয় মানবের অভিসম্পাত।


خٰلِدِیْنَ فِیْهَا ۚ لَا یُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ یُنْظَرُوْنَ ﴿ۙ۸۸﴾

তারা তাতে স্থায়ী হবে, তাদের থেকে আযাব শিথিল করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না।


اِلَّا الَّذِیْنَ تَابُوْا مِنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ وَاَصْلَحُوْا ۟ فَاِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۸۹﴾

কিন্তু এরপর যারা তাওবাহ করে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করে তারা ব্যতীত। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু।


اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا بَعْدَ اِیْمَانِهِمْ ثُمَّ ازْدَادُوْا كُفْرًا لَّنْ تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْ ۚ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الضَّآلُّوْنَ ﴿۹۰﴾

নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনার পর কুফরী করল, অতঃপর তাদের কুফরী বেড়েই চলল, তাদের তাওবাহ কক্ষনো কবুল করা হবে না এবং এ লোকেরাই পথভ্রষ্ট।


اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا وَمَاتُوْا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَنْ یُّقْبَلَ مِنْ اَحَدِهِمْ مِّلْءُ الْاَرْضِ ذَهَبًا وَّلَوِافْتَدٰی بِهٖ ؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ وَّمَا لَهُمْ مِّنْ نّٰصِرِیْنَ ﴿۠۹۱﴾

নিশ্চয়ই যারা কুফরী করে এবং সেই কাফির অবস্থায়ই মারা যায়, তাদের কেউ পৃথিবী-ভরা স্বর্ণও বিনিময় স্বরূপ প্রদান করতে চাইলে তা তার কাছ থেকে কখনো গ্রহণ করা হবে না। এরাই তারা যাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে এবং তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।


لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتّٰی تُنْفِقُوْا مِمَّا تُحِبُّوْنَ ۬ؕ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ شَیْءٍ فَاِنَّ اللهَ بِهٖ عَلِیْمٌ ﴿۹۲﴾

তোমরা কখনো সওয়াব অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না ব্যয় করবে তা থেকে, যা তোমরা ভালবাস। আর যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।


كُلُّ الطَّعَامِ کَانَ حِلًّا لِّبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اِلَّا مَا حَرَّمَ اِسْرَآءِیْلُ عَلٰی نَفْسِهٖ مِنْ قَبْلِ اَنْ تُنَزَّلَ التَّوْرٰىۃُ ؕ قُلْ فَاْتُوْا بِالتَّوْرٰىةِ فَاتْلُوْهَاۤ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴿۹۳﴾

সকল খাবার বনী ইসরাঈলের জন্য হালাল ছিল। তবে ইসরাঈল তার নিজের উপর যা হারাম করেছিল তাওরাত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে। বল, ‘তাহলে তোমরা তাওরাত নিয়ে আস, অতঃপর তা তিলাওয়াত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।


فَمَنِ افْتَرٰی عَلَی اللهِ الْکَذِبَ مِنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ ﴿؃۹۴﴾

তার পরও যারা আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা সৃষ্টি করে তারাই জালিম।


قُلْ صَدَقَ اللهُ ۟ فَاتَّبِعُوْا مِلَّةَ اِبْرٰهِیْمَ حَنِیْفًا ؕ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ ﴿۹۵﴾

বল, ‘আল্লাহ সত্য বলেছেন। সুতরাং তোমরা ইবরাহীমের মিল্লাতের অনুসরণ কর একনিষ্ঠভাবে। আর সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না’।


اِنَّ اَوَّلَ بَیْتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِیْ بِبَکَّةَ مُبٰرَكًا وَّهُدًی لِّلْعٰلَمِیْنَ ﴿ۚ۹۶﴾

নিশ্চয় প্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য স্থাপন করা হয়েছে, তা মক্কায়। যা বরকতময় ও হিদায়াত বিশ্ববাসীর জন্য।


فِیْهِ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ مَّقَامُ اِبْرٰهِیْمَ ۬ۚ وَمَنْ دَخَلَهٗ کَانَ اٰمِنًا ؕ وَلِلّٰهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا ؕ وَمَنْ کَفَرَ فَاِنَّ اللهَ غَنِیٌّ عَنِ الْعٰلَمِیْنَ ﴿۹۷﴾

তাতে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী রয়েছে (যেমন) মাক্বামে ইবরাহীম(ইবরাহীমের দাঁড়ানোর জায়গা)। যে কেউ তাতে প্রবেশ করবে নিরাপদ হবে। আল্লাহর জন্য উক্ত ঘরের হাজ্জ করা লোকেদের উপর আবশ্যক যার সে পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য আছে এবং যে ব্যক্তি অস্বীকার করবে, (সে জেনে রাখুক) নিঃসন্দেহে আল্লাহ বিশ্ব জাহানের মুখাপেক্ষী নন।


قُلْ یٰۤاَهْلَ الْکِتٰبِ لِمَ تَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللهِ ٭ۖ وَاللهُ شَهِیْدٌ عَلٰی مَا تَعْمَلُوْنَ ﴿۹۸﴾

বল, ‘হে আহলে কিতাব, তোমরা কেন আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করছ ? আর আল্লাহ তোমরা যা করছ সে ব্যাপারে সাক্ষী।


قُلْ یٰۤاَهْلَ الْکِتٰبِ لِمَ تَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِیْلِ اللهِ مَنْ اٰمَنَ تَبْغُوْنَهَا عِوَجًا وَّ اَنْتُمْ شُهَدَآءُ ؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ ﴿۹۹﴾

বল, হে কিতাবধারীগণ! যে ব্যক্তি ঈমান এনেছে তাকে কেন আল্লাহর পথে বাধা দিচ্ছ, ওকে বক্র করার পথ খুঁজছ, অথচ তোমরাই (এ পথের সত্যতার) সাক্ষী? এমতাবস্থায় আল্লাহ তোমাদের কার্যাবলী সম্বন্ধে বে-খবর নন।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ تُطِیْعُوْا فَرِیْقًا مِّنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ یَرُدُّوْكُمْ بَعْدَ اِیْمَانِكُمْ کٰفِرِیْنَ ﴿۱۰۰﴾

হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি কিতাবীদের মধ্য হতে কোন দলের কথা মেনে নাও, তবে তারা তোমাদের ঈমান আনার পর আবার তোমাদেরকে কাফির বানিয়ে ছাড়বে।


وَکَیْفَ تَكْفُرُوْنَ وَاَنْتُمْ تُتْلٰی عَلَیْكُمْ اٰیٰتُ اللهِ وَفِیْكُمْ رَسُوْلُهٗ ؕ وَمَنْ یَّعْتَصِمْ بِاللهِ فَقَدْ هُدِیَ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ ﴿۱۰۱﴾

আর কিভাবে তোমরা কুফরী কর, অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হচ্ছে এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছে তাঁর রাসূল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে তাকে অবশ্যই সরল পথের দিশা দেয়া হবে।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ حَقَّ تُقٰتِهٖ وَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ ﴿۱۰۲﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান হওয়া ছাড়া মারা যেও না।


وَاعْتَصِمُوْا بِحَبْلِ اللهِ جَمِیْعًا وَّلَا تَفَرَّقُوْا ۪ وَاذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللهِ عَلَیْكُمْ اِذْ كُنْتُمْ اَعْدَآءً فَاَلَّفَ بَیْنَ قُلُوْبِكُمْ فَاَصْبَحْتُمْ بِنِعْمَتِهٖۤ اِخْوَانًا ۚ وَكُنْتُمْ عَلٰی شَفَا حُفْرَۃٍ مِّنَ النَّارِ فَاَنْقَذَكُمْ مِّنْهَا ؕ کَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمْ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ ﴿۱۰۳﴾

আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেল। আর তোমরা ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বয়ান করেন, যাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।


وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّۃٌ یَّدْعُوْنَ اِلَی الْخَیْرِ وَیَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَیَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْکَرِ ؕ وَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ ﴿۱۰۴﴾

তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা চাই, যারা (মানুষকে) কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎকাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজে বাধা দেবে। এরূপ লোকই সফলতা লাভকারী।


وَلَا تَكُوْنُوْا کَالَّذِیْنَ تَفَرَّقُوْا وَاخْتَلَفُوْا مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَ هُمُ الْبَیِّنٰتُ ؕ وَ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌ ﴿۱۰۵﴾

এবং তোমরা সেই সকল লোকের (অর্থাৎ ইয়াহুদী ও নাসারার) মত হয়ো না, যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী আসার পরও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল ও আপসে মতভেদ সৃষ্টি করেছিল। এরূপ লোকদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।


یَّوْمَ تَبْیَضُّ وُجُوْهٌ وَّ تَسْوَدُّ وُجُوْهٌ ۚ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اسْوَدَّتْ وُجُوْهُهُمْ ۟ اَكَفَرْتُمْ بَعْدَ اِیْمَانِكُمْ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ ﴿۱۰۶﴾

সেদিন কতক চেহারা সাদা হবে এবং কতক চেহারা হবে কালো। আর যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা আযাব আস্বাদন কর। কারণ তোমরা কুফরী করতে’।


وَ اَمَّا الَّذِیْنَ ابْیَضَّتْ وُجُوْهُهُمْ فَفِیْ رَحْمَةِ اللهِ ؕ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۱۰۷﴾

যাদের মুখ উজ্জ্বল হবে, তারা আল্লাহর রহমতের মধ্যে থাকবে, তারা তাতে চিরকাল থাকবে।


تِلْكَ اٰیٰتُ اللهِ نَتْلُوْهَا عَلَیْكَ بِالْحَقِّ ؕ وَمَا اللهُ یُرِیْدُ ظُلْمًا لِّلْعٰلَمِیْنَ ﴿۱۰۸﴾

এসব আল্লাহর আয়াত, যা ঠিকভাবে আমি তোমাকে পড়ে শুনাচ্ছি এবং আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতি যুলম করতে চান না।


وَلِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الْاَرْضِ ؕ وَ اِلَی اللهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ ﴿۱۰۹﴾

আর আসমানসমূহ ও যমীনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহর দিকেই যাবতীয় কর্মকান্ড প্রত্যাবর্তিত হবে।


كُنْتُمْ خَیْرَ اُمَّۃٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْکَرِ وَتُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ ؕ وَلَوْ اٰمَنَ اَهْلُ الْکِتٰبِ لَکَانَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُوْنَ وَاَكْثَرُهُمُ الْفٰسِقُوْنَ ﴿۱۱۰﴾

তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত,যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করবে। আর যদি আহলে কিতাব ঈমান আনত, তবে অবশ্যই তা তাদের জন্য কল্যাণকর হত। তাদের কতক ঈমানদার। তাদের অধিকাংশই ফাসিক।


لَنْ یَّضُرُّوْكُمْ اِلَّاۤ اَذًی ؕ وَ اِنْ یُّقَاتِلُوْكُمْ یُوَلُّوْكُمُ الْاَدْبَارَ ۟ ثُمَّ لَا یُنْصَرُوْنَ ﴿۱۱۱﴾

সামান্য কষ্ট দেয়া ব্যতীত তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আর যদি তোমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তবে তোমাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, অতঃপর তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।


ضُرِبَتْ عَلَیْهِمُ الذِّلَّۃُ اَیْنَ مَا ثُقِفُوْۤا اِلَّا بِحَبْلٍ مِّنَ اللهِ وَحَبْلٍ مِّنَ النَّاسِ وَبَآءُوْ بِغَضَبٍ مِّنَ اللهِ وَضُرِبَتْ عَلَیْهِمُ الْمَسْکَنَۃُ ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ کَانُوْا یَكْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللهِ وَیَقْتُلُوْنَ الْاَنْۢبِیَآءَ بِغَیْرِ حَقٍّ ؕ ذٰلِكَ بِمَا عَصَوْا وَّکَانُوْا یَعْتَدُوْنَ ﴿۱۱۲﴾٭

তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের উপর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে লাঞ্ছনা, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন প্রতিশ্রুতি এবং মানুষের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি থাকলে আলাদা কথা। আর তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে গযব নিয়ে ফিরে এসেছে। আর তাদের উপর দারিদ্র্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তা এ কারণে যে, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করত এবং নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। তা এ জন্য যে, তারা নাফরমানী করেছে, আর তারা সীমালঙ্ঘন করত।


لَیْسُوْا سَوَآءً ؕ مِنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ اُمَّۃٌ قَآئِمَۃٌ یَّتْلُوْنَ اٰیٰتِ اللهِ اٰنَآءَ الَّیْلِ وَهُمْ یَسْجُدُوْنَ ﴿۱۱۳﴾

তারা সবাই সমান নয়। আহলে কিতাবদের কত লোক এমনও আছে যারা দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে, তারা রাত্রিকালে আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে থাকে এবং তারা সেজদাহ করে থাকে।


یُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَ الْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ یَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَ یَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْکَرِ وَ یُسَارِعُوْنَ فِی الْخَیْرٰتِ ؕ وَ اُولٰٓئِكَ مِنَ الصّٰلِحِیْنَ ﴿۱۱۴﴾

তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত হয় এবং তারা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত।


وَمَا یَفْعَلُوْا مِنْ خَیْرٍ فَلَنْ یُّكْفَرُوْهُ ؕ وَاللهُ عَلِیْمٌۢ بِالْمُتَّقِیْنَ ﴿۱۱۵﴾

আর তারা যে ভাল কাজ করে, তা কখনো অস্বীকার করা হবে না। আর আল্লাহ মুত্তাকীদের সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত।


اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا لَنْ تُغْنِیَ عَنْهُمْ اَمْوَالُهُمْ وَلَاۤ اَوْلَادُهُمْ مِّنَ اللهِ شَیْـًٔا ؕ وَاُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۱۱۶﴾

যারা কুফরী করে, আল্লাহর নিকটে তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কখনো কোন কাজে আসবে না এবং তারা হচ্ছে অগ্নির অধিবাসী, তারা তাতে চিরকাল থাকবে।


مَثَلُ مَا یُنْفِقُوْنَ فِیْ هٰذِهِ الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا کَمَثَلِ رِیْحٍ فِیْهَا صِرٌّ اَصَابَتْ حَرْثَ قَوْمٍ ظَلَمُوْۤا اَنْفُسَهُمْ فَاَهْلَکَتْهُ ؕ وَمَا ظَلَمَهُمُ اللهُ وَلٰکِنْ اَنْفُسَهُمْ یَظْلِمُوْنَ ﴿۱۱۷﴾

তারা দুনিয়ার জীবনে যা ব্যয় করে, তার উপমা সেই বাতাসের ন্যায়, যাতে রয়েছে প্রচন্ড ঠান্ডা, যা পৌঁছে এমন কওমের শস্যক্ষেতে, যারা নিজদের উপর যুলম করেছিল। অতঃপর তা শস্যক্ষেতকে ধ্বংস করে দেয়। আর আল্লাহ তাদের উপর যুলম করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজদের উপর যুলম করে।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْا بِطَانَۃً مِّنْ دُوْنِكُمْ لَا یَاْلُوْنَكُمْ خَبَالًا ؕ وَدُّوْا مَاعَنِتُّمْ ۚ قَدْ بَدَتِ الْبَغْضَآءُ مِنْ اَفْوَاهِهِمْ ۚۖ وَمَا تُخْفِیْ صُدُوْرُهُمْ اَكْبَرُ ؕ قَدْ بَیَّنَّا لَكُمُ الْاٰیٰتِ اِنْ كُنْتُمْ تَعْقِلُوْنَ ﴿۱۱۸﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে তা অধিক ভয়াবহ। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে।


هٰۤاَنْتُمْ اُولَآءِ تُحِبُّوْنَهُمْ وَلَا یُحِبُّوْنَكُمْ وَتُؤْمِنُوْنَ بِالْکِتٰبِ كُلِّهٖ ۚ وَ اِذَا لَقُوْكُمْ قَالُوْۤا اٰمَنَّا ۚ٭ۖ وَ اِذَا خَلَوْا عَضُّوْا عَلَیْكُمُ الْاَنَامِلَ مِنَ الْغَیْظِ ؕ قُلْ مُوْتُوْا بِغَیْظِكُمْ ؕ اِنَّ اللهَ عَلِیْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ ﴿۱۱۹﴾

শোন, তোমরাই তো তাদেরকে ভালবাস এবং তারা তোমাদেরকে ভালবাসে না। অথচ তোমরা সব কিতাবের প্রতি ঈমান রাখ। আর যখন তারা তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’। আর যখন তারা একান্তে মিলিত হয়, তোমাদের উপর রাগে আঙ্গুল কামড়ায়। বল, ‘তোমরা তোমাদের রাগ নিয়ে মর’! নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরের গোপন বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত।


اِنْ تَمْسَسْكُمْ حَسَنَۃٌ تَسُؤْهُمْ ۫ وَ اِنْ تُصِبْكُمْ سَیِّئَۃٌ یَّفْرَحُوْا بِهَا ؕ وَ اِنْ تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوْا لَا یَضُرُّكُمْ کَیْدُهُمْ شَیْـًٔا ؕ اِنَّ اللهَ بِمَا یَعْمَلُوْنَ مُحِیْطٌ ﴿۱۲۰﴾

যদি তোমাদেরকে কোন কল্যাণ স্পর্শ করে, তখন তাদের কষ্ট হয়। আর যদি তোমাদেরকে মন্দ স্পর্শ করে, তখন তারা তাতে খুশি হয়। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তাহলে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কিছু ক্ষতি করবে না। নিশ্চয় আল্লাহ তারা যা করে, তা পরিবেষ্টনকারী।


وَ اِذْ غَدَوْتَ مِنْ اَهْلِكَ تُبَوِّیُٔ الْمُؤْمِنِیْنَ مَقَاعِدَ لِلْقِتَالِ ؕ وَاللهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿۱۲۱﴾

আর স্মরণ কর, যখন তুমি তোমার পরিবার পরিজন থেকে সকাল বেলায় বের হয়ে মুমিনদেরকে লড়াইয়ের স্থানসমূহে বিন্যস্ত করেছিলে; আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।


اِذْ هَمَّتْ طَّآئِفَتٰنِ مِنْكُمْ اَنْ تَفْشَلَا ۙ وَاللهُ وَلِیُّهُمَا ؕ وَعَلَی اللهِ فَلْیَتَوَکَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ ﴿۱۲۲﴾

যখন তোমাদের মধ্য থেকে দু’দল পিছু হটার ইচ্ছা করল, অথচ আল্লাহ তাদের উভয়ের অভিভাবক। আর আল্লাহর উপরই যেন মুমিনগণ তাওয়াক্কুল করে।


وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ اللهُ بِبَدْرٍ وَّاَنْتُمْ اَذِلَّۃٌ ۚ فَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ ﴿۱۲۳﴾

আর অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে বদরে সাহায্য করেছেন অথচ তোমরা ছিলে হীনবল। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আশা করা যায়, তোমরা শোকরগুজার হবে।


اِذْ تَقُوْلُ لِلْمُؤْمِنِیْنَ اَلَنْ یَّكْفِیَكُمْ اَنْ یُّمِدَّكُمْ رَبُّكُمْ بِثَلٰثَةِ اٰلٰفٍ مِّنَ الْمَلٰٓئِکَةِ مُنْزَلِیْنَ ﴿۱۲۴﴾

স্মরণ কর, যখন তুমি মুমিনদেরকে বলছিলে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’?


بَلٰۤی ۙ اِنْ تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوْا وَیَاْتُوْكُمْ مِّنْ فَوْرِهِمْ هٰذَا یُمْدِدْكُمْ رَبُّكُمْ بِخَمْسَةِ اٰلٰفٍ مِّنَ الْمَلٰٓئِکَةِ مُسَوِّمِیْنَ ﴿۱۲۵﴾

হ্যাঁ, যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, আর তারা হঠাৎ তোমাদের মুখোমুখি এসে যায়, তবে তোমাদের রব পাঁচ হাজার চি‎‎হ্নত ফেরেশতা দ্বারা তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।


وَمَا جَعَلَهُ اللهُ اِلَّا بُشْرٰی لَكُمْ وَلِتَطْمَئِنَّ قُلُوْبُكُمْ بِهٖ ؕ وَمَا النَّصْرُ اِلَّا مِنْ عِنْدِ اللهِ الْعَزِیْزِ الْحَکِیْمِ ﴿۱۲۶﴾

আর আল্লাহ তোমাদের জন্য তা কেবল সুসংবাদস্বরূপ নির্ধারণ করেছেন এবং যাতে তোমাদের অন্তরসমূহ এর দ্বারা প্রশান্ত হয়। আর সাহায্য কেবল পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর পক্ষ থেকে।


لِیَقْطَعَ طَرَفًا مِّنَ الَّذِیْنَ کَفَرُوْۤا اَوْ یَكْبِتَهُمْ فَیَنْقَلِبُوْا خَآئِبِیْنَ ﴿۱۲۷﴾

যাতে তিনি কাফিরদের একটি অংশকে নিশ্চি‎হ্ন করেন অথবা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন। ফলে তারা নিরাশ হয়ে ফিরে যাবে।


لَیْسَ لَكَ مِنَ الْاَمْرِ شَیْءٌ اَوْ یَتُوْبَ عَلَیْهِمْ اَوْ یُعَذِّبَهُمْ فَاِنَّهُمْ ظٰلِمُوْنَ ﴿۱۲۸﴾

এ বিষয়ে তোমার কোন অধিকার নেই- হয়তো তিনি তাদেরকে ক্ষমা করবেন অথবা তিনি তাদেরকে আযাব দেবেন। কারণ নিশ্চয় তারা যালিম।


وَلِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الْاَرْضِ ؕ یَغْفِرُ لِمَنْ یَّشَآءُ وَیُعَذِّبُ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۱۲۹﴾

আকাশসমূহে ও যমীনে যা কিছুই আছে সেসব আল্লাহরই, তিনি যাকে ইচ্ছে ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছে শাস্তি প্রদান করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَاْكُلُوا الرِّبٰۤوا اَضْعَافًا مُّضٰعَفَۃً ۪ وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ﴿۱۳۰﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা সুদ খাবে না বহুগুণ বৃদ্ধি করে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফল হও।


وَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِیْۤ اُعِدَّتْ لِلْکٰفِرِیْنَ ﴿۱۳۱﴾

আর তোমরা আগুনকে ভয় কর, যা কাফিরদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।


وَاَطِیْعُوا اللهَ وَالرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ ﴿۱۳۲﴾

আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রাসূলের, যাতে তোমাদেরকে দয়া করা হয়।


وَسَارِعُوْۤا اِلٰی مَغْفِرَۃٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَجَنَّۃٍ عَرْضُهَا السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ ۙ اُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِیْنَ ﴿۱۳۳﴾

আর তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতের দিকে, যার পরিধি আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।


الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ فِی السَّرَّآءِ وَالضَّرَّآءِ وَالْکٰظِمِیْنَ الْغَیْظَ وَالْعَافِیْنَ عَنِ النَّاسِ ؕ وَاللهُ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَ ﴿۱۳۴﴾

যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন।


وَالَّذِیْنَ اِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَۃً اَوْ ظَلَمُوْا اَنْفُسَهُمْ ذَکَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفَرُوْا لِذُنُوْبِهِمْ ۪ وَمَنْ یَّغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اللهُ ۪۟ وَلَمْ یُصِرُّوْا عَلٰی مَا فَعَلُوْا وَهُمْ یَعْلَمُوْنَ ﴿۱۳۵﴾

আর যারা কোন অশ্লীল কাজ করলে অথবা নিজদের প্রতি যুলম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে, অতঃপর তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চায়। আর আল্লাহ ছাড়া কে গুনাহ ক্ষমা করবে ? আর তারা যা করেছে, জেনে শুনে তা তারা বার বার করে না।


اُولٰٓئِكَ جَزَآؤُهُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ مِّنۡ رَّبِّهِمۡ وَ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡهَا ؕ وَ نِعۡمَ اَجۡرُ الۡعٰمِلِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾ؕ

এরাই তারা, যাদের প্রতিদান তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতসমূহ যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর আমলকারীদের প্রতিদান কতই না উত্তম!


قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِكُمْ سُنَنٌ ۙ فَسِیْرُوْا فِی الْاَرْضِ فَانْظُرُوْا کَیْفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الْمُکَذِّبِیْنَ ﴿۱۳۷﴾

অবশ্যই তোমাদের পূর্বে অনেক রীতি-নীতি অতিবাহিত হয়েছে, অতএব তোমরা যমীনে ভ্রমণ কর, দেখ অস্বীকারকারীদের পরিণতি কিরূপ হয়েছিল।


هٰذَا بَیَانٌ لِّلنَّاسِ وَهُدًی وَّمَوْعِظَۃٌ لِّلْمُتَّقِیْنَ ﴿۱۳۸﴾

এটা মানুষের জন্য স্পষ্ট বর্ণনা ও হিদায়াত এবং উপদেশ মুত্তাকীদের জন্য।


وَلَا تَهِنُوْا وَلَا تَحْزَنُوْا وَاَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿۱۳۹﴾

আর তোমরা দুর্বল হয়ো না এবং দুঃখিত হয়ো না, আর তোমরাই বিজয়ী যদি মুমিন হয়ে থাক।


اِنْ یَّمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُهٗ ؕ وَتِلْكَ الْاَیَّامُ نُدَاوِلُهَا بَیْنَ النَّاسِ ۚ وَلِیَعْلَمَ اللهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَیَتَّخِذَ مِنْكُمْ شُهَدَآءَ ؕ وَاللهُ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیْنَ ﴿۱۴۰﴾ۙ

যদি তোমাদেরকে আঘাত স্পর্শ করে, অনুরূপ আঘাত তো অপর পক্ষকেও স্পর্শ করেছিল। (জয়-পরাজয়ের) এ দিনগুলোকে আমি মানুষের মধ্যে আবর্তিত করে থাকি যাতে আল্লাহ মু’মিনদেরকে চিনে নিতে পারেন এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে শহীদ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন, বস্তুতঃ আল্লাহ যালিমদেরকে ভালবাসেন না।


وَ لِیُمَحِّصَ اللهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ یَمْحَقَ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۱۴۱﴾

আর যাতে আল্লাহ পরিশুদ্ধ করেন ঈমানদারদেরকে এবং ধ্বংস করে দেন কাফিরদেরকে।


اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا یَعْلَمِ اللهُ الَّذِیْنَ جٰهَدُوْا مِنْكُمْ وَیَعْلَمَ الصّٰبِرِیْنَ ﴿۱۴۲﴾

তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনো জানেননি তাদেরকে যারা তোমাদের মধ্য থেকে জিহাদ করেছে এবং জানেননি ধৈর্যশীলদেরকে।


وَلَقَدْ كُنْتُمْ تَمَنَّوْنَ الْمَوْتَ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَلْقَوْهُ ۪ فَقَدْ رَاَیْتُمُوْهُ وَاَنْتُمْ تَنْظُرُوْنَ ﴿۱۴۳﴾۠

আর তোমরা অবশ্যই মৃত্যু কামনা করতে, তার সাথে সাক্ষাতের পূর্বে। অতএব তোমরা তো তা দেখেছই এমতাবস্থায় যে, তোমরা তাকাচ্ছিলে ।


وَمَا مُحَمَّدٌ اِلَّا رَسُوْلٌ ۚ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِ الرُّسُلُ ؕ اَفَا۠ئِنْ مَّاتَ اَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلٰۤی اَعْقَابِكُمْ ؕ وَمَنْ یَّنْقَلِبْ عَلٰی عَقِبَیْهِ فَلَنْ یَّضُرَّ اللهَ شَیْئًا ؕ وَسَیَجْزِی اللهُ الشّٰکِرِیْنَ ﴿۱۴۴﴾

আর মুহাম্মাদ কেবল একজন রাসূল। তার পূর্বে নিশ্চয় অনেক রাসূল বিগত হয়েছে। যদি সে মারা যায় অথবা তাকে হত্যা করা হয়, তবে তোমরা কি তোমাদের পেছনে ফিরে যাবে ? আর যে ব্যক্তি পেছনে ফিরে যায়, সে কখনো আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারে না। আর আল্লাহ অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেবেন। 


وَمَا کَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تَمُوْتَ اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ کِتٰبًا مُّؤَجَّلًا ؕ وَمَنْ یُّرِدْ ثَوَابَ الدُّنْیَا نُؤْتِهٖ مِنْهَا ۚ وَمَنْ یُّرِدْ ثَوَابَ الْاٰخِرَةِ نُؤْتِهٖ مِنْهَا ؕ وَسَنَجْزِی الشّٰکِرِیْنَ ﴿۱۴۵﴾

আর কোন প্রাণী আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মারা যায় না, তা নির্দিষ্টভাবে লিখিত আছে। আর যে দুনিয়ার প্রতিদান চায়, আমি তা থেকে তাকে দিয়ে দেই, আর যে আখিরাতের বিনিময় চায়, আমি তা থেকে তাকেও দেই এবং আমি অচিরেই কৃতজ্ঞদের প্রতিদান দেব।


وَکَاَیِّنْ مِّنْ نَّبِیٍّ قٰتَلَ ۙ مَعَهٗ رِبِّیُّوْنَ کَثِیْرٌ ۚ فَمَا وَهَنُوْا لِمَاۤ اَصَابَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ وَمَا ضَعُفُوْا وَمَا اسْتَکَانُوْا ؕ وَاللهُ یُحِبُّ الصّٰبِرِیْنَ ﴿۱۴۶﴾

আর কত নবী ছিল, যার সাথে থেকে অনেক আল্লাহওয়ালা লড়াই করেছে। তবে আল্লাহর পথে তাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তার জন্য তারা হতোদ্যম হয়নি। আর তারা দুর্বল হয়নি এবং তারা নত হয়নি। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদেরকে ভালবাসেন।


وَمَا کَانَ قَوْلَهُمْ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوْا رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَ اِسْرَافَنَا فِیْۤ اَمْرِنَا وَثَبِّتْ اَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَی الْقَوْمِ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۱۴۷﴾

আর তাদের কথা শুধু এই ছিল যে, তারা বলল, ‘হে আমাদের রব, আমাদের পাপ ও আমাদের কর্মে সীমালঙ্ঘন ক্ষমা করুন, এবং অবিচল রাখুন আমাদের পা সমূহকে, আর কাফির কওমের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন’।


فَاٰتٰىهُمُ اللهُ ثَوَابَ الدُّنْیَا وَحُسْنَ ثَوَابِ الْاٰخِرَةِ ؕ وَاللهُ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَ ﴿۱۴۸﴾۠

অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে দিলেন দুনিয়ার প্রতিদান এবং আখিরাতের উত্তম সওয়াব। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ تُطِیْعُوا الَّذِیْنَ کَفَرُوْا یَرُدُّوْكُمْ عَلٰۤی اَعْقَابِكُمْ فَتَنْقَلِبُوْا خٰسِرِیْنَ ﴿۱۴۹﴾

হে মুমিনগণ, যদি তোমরা কাফিরদের আনুগত্য কর, তারা তোমাদেরকে তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। ফলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফিরে যাবে।


بَلِ اللهُ مَوْلٰىكُمْ ۚ وَهُوَ خَیْرُ النّٰصِرِیْنَ ﴿۱۵۰﴾

বরং আল্লাহ তোমাদের অভিভাবক এবং তিনি উত্তম সাহায্যকারী।


سَنُلْقِیْ فِیْ قُلُوْبِ الَّذِیْنَ کَفَرُوا الرُّعْبَ بِمَاۤ اَشْرَكُوْا بِاللهِ مَا لَمْ یُنَزِّلْ بِهٖ سُلْطٰنًا ۚ وَمَاْوٰىهُمُ النَّارُ ؕ وَبِئْسَ مَثْوَی الظّٰلِمِیْنَ ﴿۱۵۱﴾

অচিরেই আমি কাফিরদের অন্তরসমূহে আতঙ্ক ঢেলে দেব। কারণ তারা আল্লাহর সাথে শরীক করেছে, যে সম্পর্কে আল্লাহ কোন প্রমাণ নাযিল করেননি। আর তাদের আশ্রয়স্থল হল আগুন এবং যালিমদের ঠিকানা কতই না নিকৃষ্ট!


وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللهُ وَعْدَهٗۤ اِذْ تَحُسُّوْنَهُمْ بِاِذْنِهٖ ۚ حَتّٰۤی اِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِی الْاَمْرِ وَعَصَیْتُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَاۤ اَرٰىكُمْ مَّا تُحِبُّوْنَ ؕ مِنْكُمْ مَّنْ یُّرِیْدُ الدُّنْیَا وَمِنْكُمْ مَّنْ یُّرِیْدُ الْاٰخِرَةَ ۚ ثُمَّ صَرَفَكُمْ عَنْهُمْ لِیَبْتَلِیَكُمْ ۚ وَلَقَدْ عَفَا عَنْكُمْ ۚ وَاللهُ ذُوْفَضْلٍ عَلَی الْمُؤْمِنِیْنَ ﴿۱۵۲﴾

আর আল্লাহ তোমাদের কাছে তাঁর ওয়াদা সত্যে পরিণত করেন, যখন তোমরা তাদেরকে হত্যা করছিলে তাঁর নির্দেশে। অবশেষে যখন তোমরা দুর্বল হয়ে গেলে এবং নির্দেশ সম্পর্কে বিবাদ করলে আর তোমরা অবাধ্য হলে তোমরা যা ভালবাসতে তা তোমাদেরকে দেখানোর পর। তোমাদের মধ্যে কেউ দুনিয়া চায় আর কেউ চায় আখিরাত। তারপর আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের থেকে ফিরিয়ে দিলেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। আর অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহশীল।


اِذْ تُصْعِدُوْنَ وَلَا تَلْوٗنَ عَلٰۤی اَحَدٍ وَّ الرَّسُوْلُ یَدْعُوْكُمْ فِیْۤ اُخْرٰىكُمْ فَاَثَابَكُمْ غَمًّۢا بِغَمٍّ لِّکَیْلَا تَحْزَنُوْا عَلٰی مَا فَاتَكُمْ وَلَا مَاۤ اَصَابَكُمْ ؕ وَاللهُ خَبِیْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ ﴿۱۵۳﴾

স্মরণ কর, যখন তোমরা উপরে উঠছিলে এবং কারো দিকে ফিরে দেখছিলে না, আর রাসূল তোমাদেরকে ডাকছিল তোমাদের পেছন থেকে। ফলে তিনি তোমাদেরকে দুশ্চিন্তার পর দুশ্চিন্তা দিয়েছিলেন, যাতে তোমাদের যা হারিয়ে গিয়েছে এবং তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তার জন্য দুঃখ না কর। আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত।


ثُمَّ اَنْزَلَ عَلَیْكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ الْغَمِّ اَمَنَۃً نُّعَاسًا یَّغْشٰی طَآئِفَۃً مِّنْكُمْ ۙ وَطَآئِفَۃٌ قَدْ اَهَمَّتْهُمْ اَنْفُسُهُمْ یَظُنُّوْنَ بِاللهِ غَیْرَ الْحَقِّ ظَنَّ الْجَاهِلِیَّةِ ؕ یَقُوْلُوْنَ هَلْ لَّنَا مِنَ الْاَمْرِ مِنْ شَیْءٍ ؕ قُلْ اِنَّ الْاَمْرَ كُلَّهٗ لِلّٰهِ ؕ یُخْفُوْنَ فِیْۤ اَنْفُسِهِمْ مَّا لَا یُبْدُوْنَ لَكَ ؕ یَقُوْلُوْنَ لَوْکَانَ لَنَا مِنَ الْاَمْرِ شَیْءٌ مَّا قُتِلْنَا هٰهُنَا ؕ قُلْ لَّوْ كُنْتُمْ فِیْ بُیُوْتِكُمْ لَبَرَزَ الَّذِیْنَ كُتِبَ عَلَیْهِمُ الْقَتْلُ اِلٰی مَضَاجِعِهِمْ ۚ وَلِیَبْتَلِیَ اللهُ مَا فِیْ صُدُوْرِكُمْ وَلِیُمَحِّصَ مَا فِیْ قُلُوْبِكُمْ ؕ وَاللهُ عَلِیْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ ﴿۱۵۴﴾

তারপর তিনি তোমাদের উপর দুশ্চিন্তার পর নাযিল করলেন প্রশান্ত তন্দ্রা, যা তোমাদের মধ্য থেকে একদলকে ঢেকে ফেলেছিল, আর অপরদল নিজরাই নিজদেরকে চিন্তাগ্রস্ত করেছিল। তারা আল্লাহ সম্পর্কে জাহিলী ধারণার ন্যায় অসত্য ধারণা পোষণ করছিল। তারা বলছিল, ‘আমাদের কি কোন বিষয়ে অধিকার আছে’? বল, ‘নিশ্চয় সব বিষয় আল্লাহর’। তারা তাদের অন্তরে লুকিয়ে রাখে এমন বিষয় যা তোমার কাছে প্রকাশ করে না। তারা বলে, ‘যদি কোন বিষয়ে আমাদের অধিকার থাকত, তাহলে আমাদেরকে এখানে হত্যা করা হত না’। বল, ‘তোমরা যদি তোমাদের ঘরে থাকতে তাহলেও যাদের ব্যাপারে নিহত হওয়া অবধারিত রয়েছে, অবশ্যই তারা তাদের নিহত হওয়ার স্থলের দিকে বের হয়ে যেত। আর যাতে তোমাদের মনে যা আছে আল্লাহ তা পরীক্ষা করেন এবং তোমাদের অন্তরসমূহে যা আছে তা পরিষ্কার করেন। আর আল্লাহ তোমাদের অন্তরের বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত’।


اِنَّ الَّذِیْنَ تَوَلَّوْا مِنْكُمْ یَوْمَ الْتَقَی الْجَمْعٰنِ ۙ اِنَّمَا اسْتَزَلَّهُمُ الشَّیْطٰنُ بِبَعْضِ مَا کَسَبُوْا ۚ وَلَقَدْ عَفَا اللهُ عَنْهُمْ ؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ حَلِیْمٌ ﴿۱۵۵﴾۠

নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্য থেকে যারা পিছু হটে গিয়েছিল সেদিন, যেদিন দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল, শয়তানই তাদের কিছু কৃতকর্মের ফলে তাদেরকে পদস্খলিত করেছিল। আর অবশ্যই আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেছেন। নিশ্চয় আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, সহনশীল


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَكُوْنُوْا کَالَّذِیْنَ کَفَرُوْا وَقَالُوْا لِاِخْوَانِهِمْ اِذَا ضَرَبُوْا فِی الْاَرْضِ اَوْ کَانُوْا غُزًّی لَّوْ کَانُوْا عِنْدَنَا مَامَاتُوْا وَمَا قُتِلُوْا ۚ لِیَجْعَلَ اللهُ ذٰلِكَ حَسْرَۃً فِیْ قُلُوْبِهِمْ ؕ وَاللهُ یُحْیٖ وَیُمِیْتُ ؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ ﴿۱۵۶﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কুফরী করেছে এবং তাদের ভাইদেরকে বলেছে- যখন তারা যমীনে সফরে বের হয়েছিল অথবা তারা ছিল যোদ্ধা (অতঃপর নিহত হয়েছিল)-‘যদি তারা আমাদের কাছে থাকত, তবে তারা মারা যেত না এবং তাদেরকে হত্যা করা হত না’। যাতে আল্লাহ তা তাদের অন্তরে আক্ষেপে পরিণত করেন এবং আল্লাহ জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।


وَلَئِنْ قُتِلْتُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَوْ مُتُّمْ لَمَغْفِرَۃٌ مِّنَ اللهِ وَرَحْمَۃٌ خَیْرٌ مِّمَّا یَجْمَعُوْنَ ﴿۱۵۷﴾

আর তোমাদেরকে যদি আল্লাহর রাস্তায় হত্যা করা হয় অথবা তোমরা মারা যাও, তাহলে অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও দয়া তারা যা জমা করে তা থেকে উত্তম।


وَلَئِنْ مُّتُّمْ اَوْ قُتِلْتُمْ لَاِالَی اللهِ تُحْشَرُوْنَ ﴿۱۵۸﴾

আর যদি তোমরা মারা যাও অথবা তোমাদেরকে হত্যা করা হয়, তবে তোমাদেরকে আল্লাহর নিকটই সমবেত করা হবে।


فَبِمَا رَحْمَۃٍ مِّنَ اللهِ لِنْتَ لَهُمْ ۚ وَلَوْ كُنْتَ فَظًّا غَلِیْظَ الْقَلْبِ لَانْفَضُّوْا مِنْ حَوْلِكَ فَاعْفُ عَنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمْ وَشَاوِرْهُمْ فِی الْاَمْرِ ۚ فَاِذَا عَزَمْتَ فَتَوَکَّلْ عَلَی اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ یُحِبُّ الْمُتَوَکِّلِیْنَ ﴿۱۵۹﴾

অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে। আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। সুতরাং তাদেরকে ক্ষমা কর এবং তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর কাজে-কর্মে তাদের সাথে পরার্মশ কর। অতঃপর যখন সংকল্প করবে তখন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করবে। নিশ্চয় আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদেরকে ভালবাসেন।


اِنْ یَّنْصُرْكُمُ اللهُ فَلَا غَالِبَ لَكُمْ ۚ وَ اِنْ یَّخْذُلْكُمْ فَمَنْ ذَا الَّذِیْ یَنْصُرُكُمْ مِّنْۢ بَعْدِهٖ ؕ وَعَلَی اللهِ فَلْیَتَوَکَّلِ الْمُؤْمِنُوْنَ ﴿۱۶۰﴾

যদি আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করেন তবে তোমাদের উপর বিজয়ী কেউ নেই। আর যদি তিনি তোমাদেরকে লাঞ্ছিত করেন তবে কে এমন আছে যে, তোমাদেরকে এর পরে সাহায্য করবে? আর আল্লাহর উপরই যেন মুমিনগণ তাওয়াক্কুল করে।


وَمَا کَانَ لِنَبِیٍّ اَنْ یَّغُلَّ ؕ وَمَنْ یَّغْلُلْ یَاْتِ بِمَا غَلَّ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ۚ ثُمَّ تُوَفّٰی كُلُّ نَفْسٍ مَّا کَسَبَتْ وَهُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ ﴿۱۶۱﴾

আর কোন নবীর জন্য উচিত নয় যে, সে খিয়ানত করবে। আর যে খিয়ানত করবে, কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে তা নিয়ে যা সে খিয়ানত করেছে। অতঃপর প্রত্যেক ব্যক্তিকে পুরোপুরি দেয়া হবে যা সে উপার্জন করেছে এবং তাদেরকে যুলম করা হবে না।


اَفَمَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَ اللهِ کَمَنْۢ بَآءَ بِسَخَطٍ مِّنَ اللهِ وَمَاْوٰىهُ جَهَنَّمُ ؕ وَبِئْسَ الْمَصِیْرُ ﴿۱۶۲﴾

যে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছে সে কি তার মত যে আল্লাহর ক্রোধ নিয়ে ফিরে এসেছে ? আর তার আশ্রয়স্থল জাহান্নাম এবং তা কতই না মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল!


هُمْ دَرَجٰتٌ عِنْدَ اللهِ ؕ وَاللهُ بَصِیْرٌۢ بِمَا یَعْمَلُوْنَ ﴿۱۶۳﴾

তারা আল্লাহর নিকট বিভিন্ন মর্যাদার। আর তারা যা করে, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।


لَقَدْ مَنَّ اللهُ عَلَی الْمُؤْمِنِیْنَ اِذْ بَعَثَ فِیْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْ اَنْفُسِهِمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِهٖ وَیُزَکِّیْهِمْ وَیُعَلِّمُهُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ ۚ وَ اِنْ کَانُوْا مِنْ قَبْلُ لَفِیْ ضَلٰلٍ مُّبِیْنٍ ﴿۱۶۴﴾

অবশ্যই আল্লাহ মুমিনদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য থেকে তাদের প্রতি একজন রাসূল পাঠিয়েছেন, যে তাদের কাছে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করে আর তাদেরকে কিতাব ও হিকমাত শিক্ষা দেয়। যদিও তারা ইতঃপূর্বে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে ছিল।


اَوَلَمَّاۤ اَصَابَتْكُمْ مُّصِیْبَۃٌ قَدْ اَصَبْتُمْ مِّثْلَیْهَا ۙ قُلْتُمْ اَنّٰی هٰذَا ؕ قُلْ هُوَ مِنْ عِنْدِ اَنْفُسِكُمْ ؕ اِنَّ اللهَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۱۶۵﴾

আর যখন তোমাদের উপর বিপদ এল, (অথচ) তোমরা তো এর দ্বিগুণ বিপদে আক্রান্ত হলে (বদর যুদ্ধে)। তোমরা বলেছিলে এটা কোত্থেকে? বল, ‘তা তোমাদের নিজদের থেকে’। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।


وَمَاۤ اَصَابَكُمْ یَوْمَ الْتَقَی الْجَمْعٰنِ فَبِاِذْنِ اللهِ وَلِیَعْلَمَ الْمُؤْمِنِیْنَ ﴿۱۶۶﴾ۙ

আর তোমাদের উপর যে বিপদ এসেছিল দুই দল মুখোমুখি হওয়ার দিন তা আল্লাহর অনুমতিক্রমে এবং যাতে তিনি মুমিনদেরকে জেনে নেন।


وَلِیَعْلَمَ الَّذِیْنَ نَافَقُوْا ۚۖ وَقِیْلَ لَهُمْ تَعَالَوْا قَاتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَوِادْفَعُوْا ؕ قَالُوْا لَوْ نَعْلَمُ قِتَالًا لَّا اتَّبَعْنٰكُمْ ؕ هُمْ لِلْكُفْرِ یَوْمَئِذٍ اَقْرَبُ مِنْهُمْ لِلْاِیْمَانِ ۚ یَقُوْلُوْنَ بِاَفْوَاهِهِمْ مَّا لَیْسَ فِیْ قُلُوْبِهِمْ ؕ وَاللهُ اَعْلَمُ بِمَا یَكْتُمُوْنَ ﴿۱۶۷﴾ۚ

আর যাতে তিনি জেনে নেন মুনাফিকদেরকে। আর তাদেরকে বলা হয়েছিল, ‘এসো, আল্লাহর পথে লড়াই কর অথবা প্রতিরোধ কর’। তারা বলেছিল, ‘যদি আমরা লড়াই হবে জানতাম তবে অবশ্যই তোমাদেরকে অনুসরণ করতাম’। সেদিন তারা কুফরীর বেশি কাছাকাছি ছিল তাদের ঈমানের তুলনায়। তারা তাদের মুখে বলে, যা তাদের অন্তরসমূহে নেই। আর তারা যা গোপন করে সে সম্পর্কে আল্লাহ অধিক অবগত।


اَلَّذِیْنَ قَالُوْا لِاِخْوَانِهِمْ وَقَعَدُوْا لَوْ اَطَاعُوْنَا مَا قُتِلُوْا ؕ قُلْ فَادْرَءُوْا عَنْ اَنْفُسِكُمُ الْمَوْتَ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴿۱۶۸﴾

যারা তাদের ভাইদেরকে বলেছিল এবং বসেছিল, ‘যদি তারা আমাদের অনুকরণ করত, তারা নিহত হত না’। বল, ‘তাহলে তোমরা তোমাদের নিজ থেকে মৃত্যুকে দূরে সরাও যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।


وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ قُتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَمْوَاتًا ؕ بَلْ اَحْیَآءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ یُرْزَقُوْنَ ﴿۱۶۹﴾ۙ

আর যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, তাদেরকে তুমি মৃত মনে করো না, বরং তারা তাদের রবের নিকট জীবিত। তাদেরকে রিয্ক দেয়া হয়।


فَرِحِیْنَ بِمَاۤ اٰتٰهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ ۙ وَیَسْتَبْشِرُوْنَ بِالَّذِیْنَ لَمْ یَلْحَقُوْا بِهِمْ مِّنْ خَلْفِهِمْ ۙ اَلَّا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۱۷۰﴾ۘ

আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে। আর আসমানসমূহ ও যমীনের উত্তরাধিকার আল্লাহরই জন্য। আর তোমরা যা আমল কর সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত।


یَسْتَبْشِرُوْنَ بِنِعْمَۃٍ مِّنَ اللهِ وَفَضْلٍ ۙ وَّاَنَّ اللهَ لَا یُضِیْعُ اَجْرَ الْمُؤْمِنِیْنَ ﴿۱۷۱﴾ۚۛ۠

তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে নিআমত ও অনুগ্রহ লাভে খুশি হয়। আর নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের প্রতিদান নষ্ট করেন না।


اَلَّذِیْنَ اسْتَجَابُوْا لِلّٰهِ وَالرَّسُوْلِ مِنْۢ بَعْدِ مَاۤ اَصَابَهُمُ الْقَرْحُ ؕۛ لِلَّذِیْنَ اَحْسَنُوْا مِنْهُمْ وَاتَّقَوْا اَجْرٌ عَظِیْمٌ ﴿۱۷۲﴾ۚ

যারা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়েছে যখমপ্রাপ্ত হওয়ার পরও, তাদের মধ্য থেকে যারা সৎকর্ম করেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।


اَلَّذِیْنَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوْا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ اِیْمَانًا ٭ۖ وَّقَالُوْا حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَکِیْلُ ﴿۱۷۳﴾

যাদেরকে মানুষেরা বলেছিল যে, ‘নিশ্চয় লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে সমবেত হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে ভয় কর’। কিন্তু তা তাদের ঈমান বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং তারা বলেছিল, ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক’!


فَانْقَلَبُوْا بِنِعْمَۃٍ مِّنَ اللهِ وَفَضْلٍ لَّمْ یَمْسَسْهُمْ سُوْءٌ ۙ وَّ اتَّبَعُوْا رِضْوَانَ اللهِ ؕ وَاللهُ ذُوْفَضْلٍ عَظِیْمٍ ﴿۱۷۴﴾

অতঃপর তারা ফিরে এসেছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিআমত ও অনুগ্রহসহ। কোন মন্দ তাদেরকে স্পর্শ করেনি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল। আর আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।


اِنَّمَا ذٰلِكُمُ الشَّیْطٰنُ یُخَوِّفُ اَوْلِیَآءَهٗ ۪ فَلَا تَخَافُوْهُمْ وَخَافُوْنِ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿۱۷۵﴾

সে তো শয়তান। সে তোমাদেরকে তার বন্ধুদের ভয় দেখায়। তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর, যদি তোমরা মুমিন হও।


وَلَا یَحْزُنْكَ الَّذِیْنَ یُسَارِعُوْنَ فِی الْكُفْرِ ۚ اِنَّهُمْ لَنْ یَّضُرُّوا اللهَ شَیْئًا ؕ یُرِیْدُ اللهُ اَلَّا یَجْعَلَ لَهُمْ حَظًّا فِی الْاٰخِرَةِ ۚ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌ ﴿۱۷۶﴾

যারা কুফরীতে দ্রুত ধাবিত হয় তারা যেন তোমাকে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত না করে, নিশ্চয় তারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ চান যে, তাদের জন্য আখিরাতে কোন অংশ রাখবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব।


اِنَّ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الْكُفْرَ بِالْاِیْمَانِ لَنْ یَّضُرُّوا اللهَ شَیْئًا ۚ وَلَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ ﴿۱۷۷﴾

নিশ্চয় যারা ঈমানের বিনিময়ে কুফরী ক্রয় করেছে, তারা কখনোই আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।


وَلَا یَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْۤا اَنَّمَا نُمْلِیْ لَهُمْ خَیْرٌ لِّاَنْفُسِهِمْ ؕ اِنَّمَا نُمْلِیْ لَهُمْ لِیَزْدَادُوْۤا اِثْمًا ۚ وَلَهُمُ عَذَابٌ مُّهِیْنٌ ﴿۱۷۸﴾

আর যারা কুফরী করেছে তারা যেন মনে না করে যে, আমি তাদের জন্য যে অবকাশ দেই, তা তাদের নিজদের জন্য উত্তম। আমি তো তাদেরকে অবকাশ দেই যাতে তারা পাপ বৃদ্ধি করে। আর তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক আযাব।


مَا کَانَ اللهُ لِیَذَرَ الْمُؤْمِنِیْنَ عَلٰی مَاۤ اَنْتُمْ عَلَیْهِ حَتّٰی یَمِیْزَ الْخَبِیْثَ مِنَ الطَّیِّبِ ؕ وَمَا کَانَ اللهُ لِیُطْلِعَكُمْ عَلَی الْغَیْبِ وَلٰکِنَّ اللهَ یَجْتَبِیْ مِنْ رُّسُلِهٖ مَنْ یَّشَآءُ ۪ فَاٰمِنُوْا بِاللهِ وَرُسُلِهٖ ۚ وَ اِنْ تُؤْمِنُوْا وَتَتَّقُوْا فَلَكُمْ اَجْرٌ عَظِیْمٌ ﴿۱۷۹﴾

আল্লাহ এমন নন যে, তিনি মুমিনদেরকে (এমন অবস্থায়) ছেড়ে দেবেন যার উপর তোমরা আছ। যতক্ষণ না তিনি পৃথক করবেন অপবিত্রকে পবিত্র থেকে। আর আল্লাহ এমন নন যে, তিনি তোমাদেরকে গায়েব সম্পর্কে জানাবেন। তবে আল্লাহ তাঁর রাসূলদের মধ্য থেকে যাকে চান বেছে নেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন। আর যদি তোমরা ঈমান আন এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে তোমাদের জন্য রয়েছে মহাপ্রতিদান।


وَلَا یَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ یَبْخَلُوْنَ بِمَاۤ اٰتٰهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَیْرًا لَّهُمْ ؕ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ ؕ سَیُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٖ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ وَلِلّٰهِ مِیْرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ ﴿۱۸۰﴾۠

আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে। আর আসমানসমূহ ও যমীনের উত্তরাধিকার আল্লাহরই জন্য। আর তোমরা যা আমল কর সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত।


لَقَدْ سَمِعَ اللهُ قَوْلَ الَّذِیْنَ قَالُوْۤا اِنَّ اللهَ فَقِیْرٌ وَّنَحْنُ اَغْنِیَآءُ ۘ سَنَكْتُبُ مَا قَالُوْا وَقَتْلَهُمُ الْاَنْۢبِیَآءَ بِغَیْرِ حَقٍّ ۙ وَّ نَقُوْلُ ذُوْقُوْا عَذَابَ الْحَرِیْقِ ﴿۱۸۱﴾

নিশ্চয় আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন, যারা বলেছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ দরিদ্র এবং আমরা ধনী’। অচিরেই আমি লিখে রাখব তারা যা বলেছে এবং নবীদেরকে তাদের অন্যায়ভাবে হত্যার বিষয়টিও এবং আমি বলব, ‘তোমরা উত্তপ্ত আযাব আস্বাদন কর’।


ذٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ اَیْدِیْكُمْ وَاَنَّ اللهَ لَیْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِیْدِ ﴿۱۸۲﴾ۚ

এ হল তোমাদের হাত যা আগাম পেশ করেছে এটা সে কারণে। আর নিশ্চয় আল্লাহ বান্দাদের প্রতি যালিম নন।


اَلَّذِیْنَ قَالُوْۤا اِنَّ اللهَ عَهِدَ اِلَیْنَاۤ اَلَّا نُؤْمِنَ لِرَسُوْلٍ حَتّٰی یَاْتِیَنَا بِقُرْبَانٍ تَاْكُلُهُ النَّارُ ؕ قُلْ قَدْ جَآءَكُمْ رُسُلٌ مِّنْ قَبْلِیْ بِالْبَیِّنٰتِ وَبِالَّذِیْ قُلْتُمْ فَلِمَ قَتَلْتُمُوْهُمْ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴿۱۸۳﴾

যারা বলে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ আমাদেরকে অঙ্গীকার দিয়েছিলেন যে, আমরা যেন কোন রাসূলের প্রতি বিশ্বাস না করি, যতক্ষণ না সে আমাদের নিকট নিয়ে আসে এমন কুরবানী যাকে আগুন খেয়ে ফেলবে’। বল, ‘আমার পূর্বে রাসূলগণ তোমাদের নিকট এসেছে স্পষ্ট প্রমাণসমূহ নিয়ে এবং তোমরা যা বলছ তা নিয়ে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে কেন হত্যা করেছিলে যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক’?


فَاِنْ کَذَّبُوْكَ فَقَدْ كُذِّبَ رُسُلٌ مِّنْ قَبْلِكَ جَآءُوْ بِالْبَیِّنٰتِ وَالزُّبُرِ وَ الْکِتٰبِ الْمُنِیْرِ ﴿۱۸۴﴾

অতএব যদি তারা তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে, তবে তোমার পূর্বে রাসূলগণকে মিথ্যাবাদী বলা হয়েছিল। তারা স্পষ্ট প্রমাণসমূহ, সহীফা ও আলোকময় কিতাবসহ এসেছিল।


كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَۃُ الْمَوْتِ ؕ وَ اِنَّمَا تُوَفَّوْنَ اُجُوْرَكُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَاُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ ؕ وَمَا الْحَیٰوۃُ الدُّنْیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الْغُرُوْرِ ﴿۱۸۵﴾

প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর ‘অবশ্যই কিয়ামতের দিনে তাদের প্রতিদান পরিপূর্ণভাবে দেয়া হবে। সুতরাং যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে সে-ই সফলতা পাবে। আর দুনিয়ার জীবন শুধু ধোঁকার সামগ্রী।


لَتُبْلَوُنَّ فِیْۤ اَمْوَالِكُمْ وَاَنْفُسِكُمْ ۟ وَلَتَسْمَعُنَّ مِنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ مِنْ قَبْلِكُمْ وَمِنَ الَّذِیْنَ اَشْرَكُوْۤا اَذًی کَثِیْرًا ؕ وَ اِنْ تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوْا فَاِنَّ ذٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْاُمُوْرِ ﴿۱۸۶﴾

অবশ্যই তোমাদেরকে তোমাদের ধন-সম্পদ ও তোমাদের নিজ জীবন সম্পর্কে পরীক্ষা করা হবে। আর অবশ্যই তোমরা শুনবে তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে এবং মুশরিকদের পক্ষ থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর তবে নিশ্চয় তা হবে দৃঢ় সংকল্পের কাজ।


وَ اِذْ اَخَذَ اللهُ مِیْثَاقَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ لَتُبَیِّنُنَّهٗ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُوْنَهٗ ۫ فَنَبَذُوْهُ وَرَآءَ ظُهُوْرِهِمْ وَاشْتَرَوْا بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًا ؕ فَبِئْسَ مَا یَشْتَرُوْنَ ﴿۱۸۷﴾

আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ কিতাবপ্রাপ্তদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, ‘অবশ্যই তোমরা তা মানুষের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না’। কিন্তু তারা তা তাদের পেছনে ফেলে দেয় এবং তা বিক্রি করে তুচ্ছ মূল্যে। অতএব তারা যা ক্রয় করে, তা কতইনা মন্দ!


لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ یَفْرَحُوْنَ بِمَاۤ اَتَوْا وَّیُحِبُّوْنَ اَنْ یُّحْمَدُوْا بِمَا لَمْ یَفْعَلُوْا فَلَا تَحْسَبَنَّهُمْ بِمَفَازَۃٍ مِّنَ الْعَذَابِ ۚ وَلَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ ﴿۱۸۸﴾

যারা তাদের কৃতকর্মের প্রতি খুশী হয় এবং যা তারা করেনি তা নিয়ে প্রশংসিত হতে পছন্দ করে, তুমি তাদেরকে আযাব থেকে মুক্ত মনে করো না। আর তাদের জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।


وَلِلّٰهِ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ وَاللهُ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۱۸۹﴾۠

আর আল্লাহর জন্যই আসমান ও যমীনের রাজত্ব। আর আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।


اِنَّ فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ الَّیْلِ وَالنَّهَارِ لَاٰیٰتٍ لِّاُولِی الْاَلْبَابِ ﴿۱۹۰﴾ۚۙ

নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য বহু নির্দশন।


الَّذِیْنَ یَذْكُرُوْنَ اللهَ قِیٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰی جُنُوْبِهِمْ وَیَتَفَکَّرُوْنَ فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا ۚ سُبْحٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۱۹۱﴾

যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে। (বলে) ‘হে আমাদের রব, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র মহান। সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর’।


رَبَّنَاۤ اِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ اَخْزَیْتَهٗ ؕ وَمَا لِلظّٰلِمِیْنَ مِنْ اَنْصَارٍ ﴿۱۹۲﴾

‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় তুমি যাকে আগুনে প্রবেশ করাবে, অবশ্যই তাকে তুমি অপমান করবে। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই’।


رَبَّنَاۤ اِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِیًا یُّنَادِیْ لِلْاِیْمَانِ اَنْ اٰمِنُوْا بِرَبِّكُمْ فَاٰمَنَّا ٭ۖ رَبَّنَا فَاغْفِرْلَنَا ذُنُوْبَنَا وَکَفِّرْعَنَّا سَیِّاٰتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْاَبْرَارِ ﴿۱۹۳﴾ۚ

‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা শুনেছিলাম একজন আহবানকারীকে, যে ঈমানের দিকে আহবান করে যে, ‘তোমরা তোমাদের রবের প্রতি ঈমান আন’। তাই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব আমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং বিদূরিত করুন আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি, আর আমাদেরকে মৃত্যু দিন নেককারদের সাথে’।


رَبَّنَا وَاٰتِنَا مَا وَعَدْتَّنَا عَلٰی رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ اِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِیْعَادَ ﴿۱۹۴﴾

হে আমাদের রাব্ব! আপনি স্বীয় রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা দান করুন এবং উত্থান দিবসে আমাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন না। নিশ্চয়ই আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না।


فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ اَنِّیْ لَاۤ اُضِیْعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنْكُمْ مِّنْ ذَکَرٍ اَوْ اُنْثٰی ۚ بَعْضُكُمْ مِّنْۢ بَعْضٍ ۚ فَالَّذِیْنَ هَاجَرُوْا وَاُخْرِجُوْا مِنْ دِیَارِهِمْ وَاُوْذُوْا فِیْ سَبِیْلِیْ وَقٰتَلُوْا وَقُتِلُوْا لَاُکَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَیِّاٰتِهِمْ وَلَاُدْخِلَنَّهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ ۚ ثَوَابًا مِّنْ عِنْدِ اللهِ ؕ وَاللهُ عِنْدَهٗ حُسْنُ الثَّوَابِ ﴿۱۹۵﴾

অতঃপর তাদের রব তাদের ডাকে সাড়া দিলেন যে, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের কোন পুরুষ অথবা মহিলা আমলকারীর আমল নষ্ট করব না। তোমাদের একে অপরের অংশ। সুতরাং যারা হিজরত করেছে এবং যাদেরকে তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং যাদেরকে আমার রাস্তায় কষ্ট দেয়া হয়েছে, আর যারা যুদ্ধ করেছে এবং নিহত হয়েছে, আমি অবশ্যই তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিসমূহ বিলুপ্ত করে দেব এবং তাদেরকে প্রবেশ করাবো জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে নহরসমূহ; আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিদানস্বরূপ। আর আল্লাহর নিকট রয়েছে উত্তম প্রতিদান।


لَا یَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا فِی الْبِلَادِ ﴿۱۹۶﴾ؕ

নগরসমূহে সেসব লোকের চলা-ফেরা তোমাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে যারা কুফরী করেছে।


مَتَاعٌ قَلِیْلٌ ۟ ثُمَّ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ ؕ وَبِئْسَ الْمِهَادُ ﴿۱۹۷﴾

সামান্য ভোগ, তারপর জাহান্নাম তাদের আবাস, আর তা কতই না নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল!


لٰکِنِ الَّذِیْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِیْنَ فِیْهَا نُزُلًا مِّنْ عِنْدِ اللهِ ؕ وَمَا عِنْدَ اللهِ خَیْرٌ لِّلْاَبْرَارِ ﴿۱۹۸﴾

কিন্তু যারা তাদের রবকে ভয় করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে মেহমানদারী। আর আল্লাহর নিকট যা রয়েছে তা নেককার লোকদের জন্য উত্তম।


وَ اِنَّ مِنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ لَمَنْ یُّؤْمِنُ بِاللهِ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْكُمْ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِمْ خٰشِعِیْنَ لِلّٰهِ ۙ لَا یَشْتَرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللهِ ثَمَنًا قَلِیْلًا ؕ اُولٰٓئِكَ لَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ؕ اِنَّ اللهَ سَرِیْعُ الْحِسَابِ ﴿۱۹۹﴾

আর নিশ্চয় আহলে কিতাবদের মধ্যে এমন লোক রয়েছে, যে আল্লাহর জন্য বিনীত হয়ে ঈমান আনে আল্লাহর প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে তোমাদের প্রতি, আর যা নাযিল করা হয়েছে তাদের প্রতি। তারা আল্লাহর আয়াতসমূহ স্বল্পমূল্যের বিনিময়ে বিক্রয় করে না। তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট পুরস্কার। নিশ্চয় আল্লাহ অতি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا ۟ وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ﴿۲۰۰﴾۠

হে মু’মিনগণ! ধৈর্য অবলম্বন কর, দৃঢ়তা প্রদর্শন কর, নিজেদের প্রতিরক্ষাকল্পে পারস্পরিক বন্ধন মজবুত কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।