7

আল আ'রাফ

আয়াত সংখ্যা 206

0.00

48:00

﴾ الٓـمّٓصٓ ۚ﴿۱

আলিফ, লাম, মীম, ছোয়াদ ।


کِتٰبٌ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ فَلَا یَکُنۡ فِیۡ صَدۡرِکَ حَرَجٌ مِّنۡہُ لِتُنۡذِرَ بِہٖ وَ ذِکۡرٰی لِلۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲﴾

এটি একটি গ্রন্থ যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে করে আপনি এর মাধ্যমে ভীতি-প্রদর্শন করেন । অতএব, এটি পৌঁছে দিতে আপনার মনে কোনরুপ সংকীর্ণতা থাকা উচিত নয় । আর এটি বিশ্বাসীদের জন্য উপদেশ ।


اِتَّبِعُوۡا مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۳﴾

তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না ।


وَ کَمۡ مِّنۡ قَرۡیَۃٍ اَهْلَکۡنٰہَا فَجَآءَهَا بَاۡسُنَا بَیَاتًا اَوۡ هُمۡ قَآئِلُوۡنَ ﴿۴﴾

আর তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর । অনেক জনপদকে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি । তাদের কাছে আমাদের আযাব রাত্রি বেলায় পৌঁছেছে অথবা দ্বিপ্রহরে বিশ্রামরত অবস্থায় ।


فَمَا کَانَ دَعۡوٰىہُمۡ اِذۡ جَآءَۡهُمْ بَاۡسُنَاۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اِنَّا کُنَّا ظٰلِمِیۡنَ ﴿۵﴾

অনন্তর যখন তাদের কাছে আমার আযাব উপস্থিত হয়, তখন তাদের কথা এই ছিল যে, তারা বলল, নিশ্চয় আমরা অত্যাচারী ছিলাম ।


فَلَنَسۡـَٔلَنَّ الَّذِیۡنَ اُرۡسِلَ اِلَیۡہِمۡ وَ لَنَسۡـَٔلَنَّ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ۙ﴿۶﴾

অতএব, আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব যাদের কাছে রাসূল প্রেরিত হয়েছিল এবং আমি অবশ্যই জিজ্ঞেস করব রাসূলগণকে ।


فَلَنَقُصَّنَّ عَلَیۡہِمۡ بِعِلۡمٍ وَّ مَا کُنَّا غَآئِبِیۡنَ ﴿۷﴾

অত:পর আমি স্বজ্ঞানে তাদের কাছে অবস্থা বর্ণনা করব বস্তুত আমি অনুপস্থিত তো ছিলাম না ।


وَ الۡوَزۡنُ یَوۡمَئِذِ ۣالۡحَقُّ ۚ فَمَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۸﴾

আর সেদিন যথার্থই ওযন হবে । অত:পর যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই সফলকাম হবে ।


وَ مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ بِمَا کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۹﴾

এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে, তারাই এমন হবে, যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে । কেননা, তারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করতো ।


وَ لَقَدۡ مَکَّنّٰکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ وَ جَعَلۡنَا لَکُمۡ فِیۡہَا مَعَایِشَ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَشۡکُرُوۡنَ ﴿٪۱۰﴾

আমি তোমাদেরকে পৃথিবীতে ঠাঁই দিয়েছি এবং তোমাদের জীবিকা নির্দিষ্ট করে দিয়েছি । তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর ।


وَ لَقَدۡ خَلَقۡنٰکُمۡ ثُمَّ صَوَّرۡنٰکُمۡ ثُمَّ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ ٭ۖ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ لَمۡ یَکُنۡ مِّنَ السّٰجِدِیۡنَ ﴿۱۱﴾

আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব তৈরি করেছি । অত:পর আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছি-আদমকে সিজদা কর, তখন সবাই সিজদা করেছে, কিন্তু ইবলীশ; সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না ।


قَالَ مَا مَنَعَکَ اَلَّا تَسۡجُدَ اِذۡ اَمَرۡتُکَ ؕ قَالَ اَنَا خَیۡرٌ مِّنۡہُ ۚ خَلَقۡتَنِیۡ مِنۡ نَّارٍ وَّ خَلَقۡتَہٗ مِنۡ طِیۡنٍ ﴿۱۲﴾

আল্লাহ বললেন : আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি, তখন তোকে কিসে সিজদা করতে বারণ করল ? সে বলল : আমি তাঁর চাইতে শ্রেষ্ঠ । আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা ।


قَالَ فَاهْبِطۡ مِنۡہَا فَمَا یَکُوۡنُ لَکَ اَنۡ تَتَکَبَّرَ فِیۡہَا فَاخۡرُجۡ اِنَّکَ مِنَ الصّٰغِرِیۡنَ ﴿۱۳﴾

বললেন : তুই এখান থেকে যা । এখানে অহংকার করার কোন অধিকার তোর নেই । অতএব তুই বের হয়ে যা । তুই হীনতমদের অন্তর্ভুক্ত ।


قَالَ اَنۡظِرۡنِیۡۤ اِلٰی یَوۡمِ یُبۡعَثُوۡنَ ﴿۱۴﴾

সে বলল : আমাকে কিয়ামত দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন ।


قَالَ اِنَّکَ مِنَ الۡمُنۡظَرِیۡنَ ﴿۱۵﴾

আল্লাহ বললেন : তোকে সময় দেয়া হলো ।


قَالَ فَبِمَاۤ اَغۡوَیۡتَنِیۡ لَاَقۡعُدَنَّ لَہُمۡ صِرَاطَکَ الۡمُسۡتَقِیۡمَ ﴿ۙ۱۶﴾

সে বলল : আপনি আমাকে যেমন উদভ্রান্ত করেছেন, আমিও অবশ্যই তাদের জন্য আপনার সরল পথে বসে থাকবো ।


ثُمَّ لَاٰتِیَنَّہُمۡ مِّنۡۢ بَیۡنِ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ مِنۡ خَلۡفِہِمۡ وَ عَنۡ اَیۡمَانِہِمۡ وَ عَنۡ شَمَآئِلِہِمۡ ؕ وَ لَا تَجِدُ اَکۡثَرَۡهُمْ شٰکِرِیۡنَ ﴿۱۷﴾

এরপর তাদের কাছে আসব তাদের সামনের দিক থেকে, পেছন দিক থেকে, ডানদিক থেকে এবং বামদিক থেকে । আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না ।


قَالَ اخۡرُجۡ مِنۡہَا مَذۡءُوۡمًا مَّدۡحُوۡرًا ؕ لَمَنۡ تَبِعَکَ مِنۡہُمۡ لَاَمۡلَـَٔنَّ جَہَنَّمَ مِنۡکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۸﴾

আল্লাহ বললেন : বের হয়ে যা এখান থেকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে তাদের যে কেউ তোর পথে চলবে, নিশ্চয় আমি তোদের সবার দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করে দেব ।


وَ یٰۤاٰدَمُ اسۡکُنۡ اَنۡتَ وَ زَوۡجُکَ الۡجَنَّۃَ فَکُلَا مِنۡ حَیۡثُ شِئۡتُمَا وَ لَا تَقۡرَبَا هٰذِهِ الشَّجَرَۃَ فَتَکُوۡنَا مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۹﴾

হে আদম ! তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর । অতঃপর সেখান থেকে যা ইচ্ছা খাও, তবে এ বৃক্ষের কাছে যেয়ো না ! তাহলে তোমরা গুনাহগার হয়ে যাবে ।


فَوَسۡوَسَ لَهُمَا الشَّیۡطٰنُ لِیُبۡدِیَ لَهُمَا مَا وٗرِیَ عَنۡهُمَا مِنۡ سَوۡاٰتِهِمَا وَ قَالَ مَا نَهٰکُمَا رَبُّکُمَا عَنۡ هٰذِهِ الشَّجَرَۃِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَا مَلَکَیۡنِ اَوۡ تَکُوۡنَا مِنَ الۡخٰلِدِیۡنَ ﴿۲۰﴾

অত:পর শয়তান উভয়কে প্ররোচিত করল, যাতে তাদের অঙ্গ, যা তাদের কাছে গোপন ছিল, তাদের সামনে প্রকাশ করে দেয় । সে বলল : তোমাদের পালনকর্তা তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করেননি; তবে তা এ কারণে যে, তোমরা না আবার ফেরেশতা হয়ে যাও-কিংবা হয়ে যাও এখানকারই চিরকালীন বাসিন্দা ।


وَ قَاسَمَہُمَاۤ اِنِّیۡ لَکُمَا لَمِنَ النّٰصِحِیۡنَ ﴿ۙ۲۱﴾

সে তাদের কাছে কসম খেয়ে বলল : আমি অবশ্যই তোমাদের হিতাকাঙ্কী ।


فَدَلّٰىہُمَا بِغُرُوۡرٍ ۚ فَلَمَّا ذَاقَا الشَّجَرَۃَ بَدَتۡ لَہُمَا سَوۡاٰتُہُمَا وَ طَفِقَا یَخۡصِفٰنِ عَلَیۡہِمَا مِنۡ وَّرَقِ الۡجَنَّۃِ ؕ وَ نَادٰىہُمَا رَبُّہُمَاۤ اَلَمۡ اَنۡہَکُمَا عَنۡ تِلۡکُمَا الشَّجَرَۃِ وَ اَقُلۡ لَّکُمَاۤ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ لَکُمَا عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۲۲﴾

অত:পর প্রতারণা পূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল । অনন্তর যখন তারা বৃক্ষ আস্বাদন করল তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল এবং তারা নিজের উপর বেহেশতের পাতা জড়াতে লাগল । তাদের পালনকর্তা তাদেরকে ডেকে বললেন । আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শয়তান তোমাদের শত্রু ?


قَالَا رَبَّنَا ظَلَمۡنَاۤ اَنۡفُسَنَا وَ اِنۡ لَّمۡ تَغۡفِرۡ لَنَا وَ تَرۡحَمۡنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۲۳﴾

তারা উভয়ে বলল : হে আমাদের পালনকর্তা ! আমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছি । যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব ।


قَالَ اهۡبِطُوۡا بَعۡضُکُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ ۚ وَ لَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ مُسۡتَقَرٌّ وَّ مَتَاعٌ اِلٰی حِیۡنٍ ﴿۲۴﴾

আল্লাহ বললেন : তোমরা নেমে যাও । তোমরা একে অপরের শত্রু । তোমাদের জন্য পৃথিবীতে বাসস্থান আছে এবং একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ফল-ভোগ আছে ।


قَالَ فِیۡہَا تَحۡیَوۡنَ وَ فِیۡہَا تَمُوۡتُوۡنَ وَ مِنۡہَا تُخۡرَجُوۡنَ ﴿٪۲۵﴾

বললেন : তোমরা সেখানেই জীবিত থাকবে, সেখানেই মৃত্যুবরণ করবে এবং সেখান থেকেই পুনরুত্থিত হবে ।


یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ قَدۡ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکُمۡ لِبَاسًا یُّوَارِیۡ سَوۡاٰتِکُمۡ وَ رِیۡشًا ؕ وَ لِبَاسُ التَّقۡوٰی ۙ ذٰلِکَ خَیۡرٌ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ لَعَلَّہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ﴿۲۶﴾

হে বনি-আদম ! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ-সজ্জার বস্ত্র এবং পরহিযগারীর, পোশাক-এটি সর্বোত্তম । এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নির্দশন, যাতে তারা চিন্তাভাবনা করে ।


یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ لَا یَفۡتِنَنَّکُمُ الشَّیۡطٰنُ کَمَاۤ اَخۡرَجَ اَبَوَیۡکُمۡ مِّنَ الۡجَنَّۃِ یَنۡزِعُ عَنۡہُمَا لِبَاسَہُمَا لِیُرِیَہُمَا سَوۡاٰتِہِمَا ؕ اِنَّہٗ یَرٰىکُمۡ هُوَ وَ قَبِیۡلُہٗ مِنۡ حَیۡثُ لَا تَرَوۡنَہُمۡ ؕ اِنَّا جَعَلۡنَا الشَّیٰطِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ لِلَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۲۷﴾

হে বনী-আদম ! শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে, যেমন সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে এমতাবস্থায় যে, তাদের পোশাক তাদের থেকে খুলিয়ে দিয়েছে-যাতে তাদেরকে লজ্জাস্থান দেখিয়ে দেয় । সে এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখে, যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখ না । আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না ।


وَ اِذَا فَعَلُوۡا فَاحِشَۃً قَالُوۡا وَجَدۡنَا عَلَیۡہَاۤ اٰبَآءَنَا وَ اللّٰہُ اَمَرَنَا بِہَا ؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَاۡمُرُ بِالۡفَحۡشَآءِ ؕ اَتَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۸﴾

তারা যখন কোন মন্দ কাজ করে, তখন বলে: আমরা বাপ-দাদাকে এমনি করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন । আল্লাহ মন্দ কাজের আদেশ দেন না । এমন কথা আল্লাহর প্রতি কেন আরোপ কর, যা তোমরা জান না ?


قُلۡ اَمَرَ رَبِّیۡ بِالۡقِسۡطِ ۟ وَ اَقِیۡمُوۡا وُجُوۡهَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ ادۡعُوۡہُ مُخۡلِصِیۡنَ لَہُ الدِّیۡنَ ۬ؕ کَمَا بَدَاَکُمۡ تَعُوۡدُوۡنَ ﴿ؕ۲۹﴾

আপনি বলে দিন : আমার পালনকর্তা সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন । এবং তোমরা প্রত্যেক সিজদার সময় স্বীয় মূখমন্ডল সোজা রাখ এবং তাকে খাটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাক ।


فَرِیۡقًا هَدٰی وَ فَرِیۡقًا حَقَّ عَلَیۡہِمُ الضَّلٰلَۃُ ؕ اِنَّہُمُ اتَّخَذُوا الشَّیٰطِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ ﴿۳۰﴾

তোমাদেরকে প্রথম যেমন সৃষ্টি করেছেন, পুনর্বারও সৃজিত হবে । একদলকে পথপ্রদর্শক করেছেন এবং একদলের জন্য পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে ।


یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ کُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿٪۳۱﴾

তারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং ধারণা করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে । হে বনী আদম ! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও-খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না । তিনি অপব্যয়কারীদের পছন্দ করেন না ।


قُلۡ مَنۡ حَرَّمَ زِیۡنَۃَ اللّٰہِ الَّتِیۡۤ اَخۡرَجَ لِعِبَادِہٖ وَ الطَّیِّبٰتِ مِنَ الرِّزۡقِ ؕ قُلۡ هِیَ لِلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا خَالِصَۃً یَّوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ ؕ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۲﴾

আপনি বলুন : আল্লাহর দেয়া সাজসজ্জাকে-যা তিনি বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্যবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছে ? আপনি বলুন : এসব নিয়ামত আসলে পার্থিব জীবনে মু’মিনদের জন্য এবং কিয়ামতের দিন খাঁটিভাবে তাদেরই জন্য । এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি তাদের জন্য, যারা বুঝে ।


قُلۡ اِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّیَ الۡفَوَاحِشَ مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَ مَا بَطَنَ وَ الۡاِثۡمَ وَ الۡبَغۡیَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ اَنۡ تُشۡرِکُوۡا بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ سُلۡطٰنًا وَّ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۳﴾

আপনি বলে দিন : আমার পালনকর্তা কেবল অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন-যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গুনাহ অন্যায়-অত্যাচার, আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে অংশীদার করা, তিনি যার কোন সনদ অবতীর্ণ করেন নি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করা, যা তোমরা জান না ।


وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ اَجَلٌ ۚ فَاِذَا جَآءَ اَجَلُہُمۡ لَا یَسۡتَاۡخِرُوۡنَ سَاعَۃً وَّ لَا یَسۡتَقۡدِمُوۡنَ ﴿۳۴﴾

প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে । যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহুর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে ।


یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ اِمَّا یَاۡتِیَنَّکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡکُمۡ یَقُصُّوۡنَ عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتِیۡ ۙ فَمَنِ اتَّقٰی وَ اَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۳۵﴾

হে বনী আদম ! যদি তোমাদের কাছে তোমাদেরই মধ্য থেকে পয়গম্বর আগমন করে-তোমাদেরকে আমার আয়াতসমুহ শোনায় তবে যে ব্যক্তি সংযত হয় এবং সৎকাজ অবলম্বন করে, তাদের কোন আশংকা নেই এবং তারা দু:খিত হবে না ।


وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اسۡتَکۡبَرُوۡا عَنۡہَاۤ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ هُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۳۶﴾

যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলবে এবং তার প্রতি অহংকার করবে, তারাই দোযখী এবং তথায় চিরকাল থাকবে ।


فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِہٖ ؕ اُولٰٓئِکَ یَنَالُہُمۡ نَصِیۡبُہُمۡ مِّنَ الۡکِتٰبِ ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُنَا یَتَوَفَّوۡنَہُمۡ ۙ قَالُوۡۤا اَیۡنَ مَا کُنۡتُمۡ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ قَالُوۡا ضَلُّوۡا عَنَّا وَ شَہِدُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ اَنَّہُمۡ کَانُوۡا کٰفِرِیۡنَ ﴿۳۷﴾

অত:পর ঐ ব্যক্তির চাইতে অধিক যালিম কে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তার নির্দেশাবলীকে মিথ্যা বলে ? তারা তাদের আমলনামায় লিখিত অংশ পেয়ে যাবে । এমনকি, যখন তাদের কাছে আমার প্রেরিত ফেরেশতারা প্রাণ নেওয়ার জন্য পৌঁছে, তখন তারা বলে : তারা কোথায় গেল, যাদেরকে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আহবান করতে ? তারা উত্তর দিবে : আমাদের কাছ থেকে উধাও হয়ে গেছে । তারা নিজেদের সম্পর্কে স্বীকার করবে যে, তারা অবশ্যই কাফির ছিলো ।


قَالَ ادۡخُلُوۡا فِیۡۤ اُمَمٍ قَدۡ خَلَتۡ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ فِی النَّارِ ؕ کُلَّمَا دَخَلَتۡ اُمَّۃٌ لَّعَنَتۡ اُخۡتَهَا ؕ حَتّٰۤی اِذَا ادَّارَکُوۡا فِیۡهَا جَمِیۡعًا ۙ قَالَتۡ اُخۡرٰىهُمۡ لِاُوۡلٰىهُمۡ رَبَّنَا هٰۤؤُلَآءِ اَضَلُّوۡنَا فَاٰتِهِمۡ عَذَابًا ضِعۡفًا مِّنَ النَّارِ ۬ؕ قَالَ لِکُلٍّ ضِعۡفٌ وَّ لٰکِنۡ لَّا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۸﴾

আল্লাহ বলবেন : তোমাদের পূর্বে জিন ও মানবের যেসব সম্প্রদায় চলে গেছে, তাদের সাথে তোমরাও দোযখে যাও । যখন এক সম্প্রদায় প্রবেশ করবে, তখন তারা অন্য সম্প্রদায়কে অভিসম্পাত করবে। এমনকি যখন তাতে সবাই পতিত হবে, যখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবে : হে আমাদের পালনকর্তা ! এরাই আমাদেরকে বিপথগামী করেছিল । অতএব আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন । আল্লাহ বলবেন : প্রত্যেকেরই দ্বিগুণ; কিন্তু তোমরা জান না ।


وَ قَالَتۡ اُوۡلٰىہُمۡ لِاُخۡرٰىہُمۡ فَمَا کَانَ لَکُمۡ عَلَیۡنَا مِنۡ فَضۡلٍ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡسِبُوۡنَ ﴿٪۳۹﴾

পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবে : তাহলে আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই । অতএব, শাস্তি আস্বাদন কর স্বীয় কর্মের কারণে ।


اِنَّ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اسۡتَکۡبَرُوۡا عَنۡہَا لَا تُفَتَّحُ لَہُمۡ اَبۡوَابُ السَّمَآءِ وَ لَا یَدۡخُلُوۡنَ الۡجَنَّۃَ حَتّٰی یَلِجَ الۡجَمَلُ فِیۡ سَمِّ الۡخِیَاطِ ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾

নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে এবং এগুলো থেকে অহংকার করেছে, তাদের জন্য আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যে পর্যন্ত না সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে । আমি এমনিভাবে পাপীদেরকে শাস্তি প্রদান করি ।


لَہُمۡ مِّنۡ جَہَنَّمَ مِہَادٌ وَّ مِنۡ فَوۡقِہِمۡ غَوَاشٍ ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۱﴾

তাদের জন্য নরকাপ্নির শয্য রয়েছে এবং উপর থেকে চাদর । আমি এমনিভাবে যালিমদেরকে শাস্তি প্রদান করি ।


وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَا نُکَلِّفُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَاۤ ۫ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ هُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۴۲﴾

যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে আমি কাউকে তার সামর্থ্যের চাইতে বেশি বোঝা দিই না-তারাই জান্নাতের অধিবাসী । তারা তাতেই চিরকাল থাকবে ।


وَ نَزَعۡنَا مَا فِیۡ صُدُوۡرِهِمۡ مِّنۡ غِلٍّ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمُ الۡاَنۡہٰرُ ۚ وَ قَالُوا الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ هَدٰىنَا لِہٰذَا ۟ وَ مَا کُنَّا لِنَہۡتَدِیَ لَوۡ لَاۤ اَنۡ هَدٰىنَا اللّٰہُ ۚ لَقَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُ رَبِّنَا بِالۡحَقِّ ؕ وَ نُوۡدُوۡۤا اَنۡ تِلۡکُمُ الۡجَنَّۃُ اُوۡرِثۡتُمُوۡہَا بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۴۳﴾

তাদের অন্তরে যা কিছু দু:খ ছিল, আমি তা বের করে দেব । তাদের তলদেশ দিয়ে নির্ঝরিণী প্রবাহিত হবে । তারা বলবে : আল্লাহর শোকর, যিনি আমাদেরকে এ পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন । আমরা কখনও পথ পেতাম না, যদি আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করতেন । আমাদের পালনকর্তার রাসূল আমাদের কাছে সত্য কথা নিয়ে এসেছিলেন । আওয়াজ আসবে : এটি জান্নাত । তোমরা এর উত্তরাধিকারী হলে তোমাদের কর্মের প্রতিদানে ।


وَ نَادٰۤی اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ اَصۡحٰبَ النَّارِ اَنۡ قَدۡ وَجَدۡنَا مَا وَعَدَنَا رَبُّنَا حَقًّا فَہَلۡ وَجَدۡتُّمۡ مَّا وَعَدَ رَبُّکُمۡ حَقًّا ؕ قَالُوۡا نَعَمۡ ۚ فَاَذَّنَ مُؤَذِّنٌۢ بَیۡنَہُمۡ اَنۡ لَّعۡنَۃُ اللّٰہِ عَلَی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾

জান্নাতীরা দোযখীদেরকে ডেকে বলবে : আমাদের সাথে আমাদের পালনকর্তা যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আমরা সত্য পেয়েছি । তোমরাও কি তোমাদের পালনকর্তার ওয়াদা সত্য পেয়েছ ? তারা বলবে : হ্যাঁ, । অত:পর একজন ঘোষক উভয়ের মাঝখানে ঘোষণা করবে : আল্লাহর অভিসম্পাত যালিমদের উপর,


الَّذِیۡنَ یَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ وَ یَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ۚ وَ هُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ کٰفِرُوۡنَ ﴿ۘ۴۵﴾

যারা আল্লাহর পথে বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অন্বেষণ করত, তারা পরকালের বিষয়েও অবিশ্বাসী ছিল ।


وَ بَیۡنَہُمَا حِجَابٌ ۚ وَ عَلَی الۡاَعۡرَافِ رِجَالٌ یَّعۡرِفُوۡنَ کُلًّۢا بِسِیۡمٰہُمۡ ۚ وَ نَادَوۡا اَصۡحٰبَ الۡجَنَّۃِ اَنۡ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ ۟ لَمۡ یَدۡخُلُوۡهَا وَ هُمۡ یَطۡمَعُوۡنَ ﴿۴۶﴾

উভয়ের মাঝখানে একটি প্রাচীর থাকবে এবং আ’রাফের উপরে অনেক লোক থাকবে । তারা প্রত্যেককে তার চিহ্ন দ্বারা চিনে নেবে । তারা জান্নাতীদেরকে ডেকে বলবে : তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক । তারা তখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না কিন্তু প্রবেশ করার ব্যাপারে আগ্রহী হবে ।


وَ اِذَا صُرِفَتۡ اَبۡصَارُهُمۡ تِلۡقَآءَ اَصۡحٰبِ النَّارِ ۙ قَالُوۡا رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا مَعَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿٪۴۷﴾

যখন তাদের দৃষ্টি দোযখীদের উপর পড়বে, তখন বলবে : হে আমাদের পালনকর্তা ! আমাদেরকে এ যালিমদের সাথী করো না ।


وَ نَادٰۤی اَصۡحٰبُ الۡاَعۡرَافِ رِجَالًا یَّعۡرِفُوۡنَہُمۡ بِسِیۡمٰہُمۡ قَالُوۡا مَاۤ اَغۡنٰی عَنۡکُمۡ جَمۡعُکُمۡ وَ مَا کُنۡتُمۡ تَسۡتَکۡبِرُوۡنَ ﴿۴۸﴾

আ’রাফবাসীরা যাদেরকে তাদের চিহ্ন দ্বারা চিনবে তাদেরকে ডেকে বলবে : তোমাদের দলবল ও ঔদ্ধত্য তোমাদের কোন কাজে আসেনি ।


اَهٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ اَقۡسَمۡتُمۡ لَا یَنَالُهُمُ اللّٰهُ بِرَحۡمَۃٍ ؕ اُدۡخُلُوا الۡجَنَّۃَ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡکُمۡ وَ لَاۤ اَنۡتُمۡ تَحۡزَنُوۡنَ ﴿۴۹﴾

এরা কি তারাই, যাদের সম্পর্কে তোমরা কসম খেয়ে বলতে যে, আল্লাহ এদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন না । প্রবেশ কর জান্নাতে । তোমাদের কোন আশংকা নেই এবং তোমরা দু:খিত হবে না ।


وَ نَادٰۤی اَصۡحٰبُ النَّارِ اَصۡحٰبَ الۡجَنَّۃِ اَنۡ اَفِیۡضُوۡا عَلَیۡنَا مِنَ الۡمَآءِ اَوۡ مِمَّا رَزَقَکُمُ اللّٰہُ ؕ قَالُوۡۤا اِنَّ اللّٰہَ حَرَّمَہُمَا عَلَی الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿ۙ۵۰﴾

দোযখীরা জান্নাতীদের ডেকে বলবে আমাদের উপর সামান্য পানি নিক্ষেপ কর অথবা আল্লাহ তোমাদের যে রুযী দিয়েছেন, তা থেকেই কিছু দাও । তারা বলবে : আল্লাহ এই উভয় বস্তু কাফিরদের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন।


الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا دِیۡنَهُمۡ لَهۡوًا وَّ لَعِبًا وَّ غَرَّتۡهُمُ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا ۚ فَالۡیَوۡمَ نَنۡسٰهُمۡ کَمَا نَسُوۡا لِقَآءَ یَوۡمِهِمۡ هٰذَا ۙ وَ مَا کَانُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَجۡحَدُوۡنَ ﴿۵۱﴾

তারা স্বীয় ধর্মকে তামাশা ও খেলা বানিয়ে নিয়েছিল এবং পার্থিব জীবনে তাদের ধোঁকায় ফেলে রেখেছিল । অতএব আমি আজকে তাদের ভুলে যাব, যেমন তারা এ দিনের সাক্ষাতকে ভুলে গিয়েছিল এবং যেমন তারা আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করত ।


وَ لَقَدۡ جِئۡنٰہُمۡ بِکِتٰبٍ فَصَّلۡنٰہُ عَلٰی عِلۡمٍ هُدًی وَّ رَحۡمَۃً لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۲﴾

আমি তাদের কাছে গ্রন্থ পৌছিয়েছি, যা আমি স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি, যা পথপ্রদর্শক এবং মু’মিনদের জন্য রহমত ।


هَلۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّا تَاۡوِیۡلَہٗ ؕ یَوۡمَ یَاۡتِیۡ تَاۡوِیۡلُہٗ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ نَسُوۡہُ مِنۡ قَبۡلُ قَدۡ جَآءَتۡ رُسُلُ رَبِّنَا بِالۡحَقِّ ۚ فَہَلۡ لَّنَا مِنۡ شُفَعَآءَ فَیَشۡفَعُوۡا لَنَاۤ اَوۡ نُرَدُّ فَنَعۡمَلَ غَیۡرَ الَّذِیۡ کُنَّا نَعۡمَلُ ؕ قَدۡ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿٪۵۳﴾

তারা কি এখন এ অপেক্ষায়ই আছে যে, এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হোক ? যেদিন এর বিষয়বস্তু প্রকাশিত হবে, সেদিন পূর্বে যারা একে ভুলে গিয়েছিল, তারা বলবে : বাস্তবিকই আমাদের পালনকর্তার পয়গম্বরগণ সত্যসহ আগমন করেছিলেন । অতএব, আমাদের জন্য কোন সুপারিশকারী আছে কি, যে সুপারিশ করবে অথবা আমাদের পুন:প্রেরণ করা হলে আমরা পুর্বে যা করতাম, তার বিপরীত কাজ করে আসতাম । নিশ্চয় তারা নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে । তারা মনগড়া যা বলত, তা উধাও হয়ে যাবে ।


اِنَّ رَبَّکُمُ اللّٰہُ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ ثُمَّ اسۡتَوٰی عَلَی الۡعَرۡشِ ۟ یُغۡشِی الَّیۡلَ النَّہَارَ یَطۡلُبُہٗ حَثِیۡثًا ۙ وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ وَ النُّجُوۡمَ مُسَخَّرٰتٍۭ بِاَمۡرِہٖ ؕ اَلَا لَہُ الۡخَلۡقُ وَ الۡاَمۡرُ ؕ تَبٰرَکَ اللّٰہُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۵۴﴾

নিশ্চয় তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ । তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন । অত:পর আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন । তিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে দৌড়ে রাতের পেছনে আসে । তিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র স্বীয় আদেশের অনুগামী । শুনে রেখ, তারই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা । আল্লাহ বরকতময়, যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক ।


اُدۡعُوۡا رَبَّکُمۡ تَضَرُّعًا وَّ خُفۡیَۃً ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿ۚ۵۵﴾

তোমরা স্বীয় পালনকর্তাকে ডাক কাকুতি-মিনতি করে এবং সংগোপনে । তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না ।


وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا وَ ادۡعُوۡہُ خَوۡفًا وَّ طَمَعًا ؕ اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۵۶﴾

পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না । তাকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে । নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী ।


وَ هُوَ الَّذِیۡ یُرۡسِلُ الرِّیٰحَ بُشۡرًۢا بَیۡنَ یَدَیۡ رَحۡمَتِہٖ ؕ حَتّٰۤی اِذَاۤ اَقَلَّتۡ سَحَابًا ثِقَالًا سُقۡنٰہُ لِبَلَدٍ مَّیِّتٍ فَاَنۡزَلۡنَا بِہِ الۡمَآءَ فَاَخۡرَجۡنَا بِہٖ مِنۡ کُلِّ الثَّمَرٰتِ ؕ کَذٰلِکَ نُخۡرِجُ الۡمَوۡتٰی لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۵۷﴾

তিনিই বৃষ্টির আগে সুসংবাদবাহী বায়ু পাঠিয়ে দেন । এমনকি যখন পানি পূর্ণ মেঘমালা বয়ে আনে, যখন আমি এগুলোকে একটি মৃত জনপদের দিকে পাঠিয়ে দেই । অত:পর এ মেঘ থেকে বৃষ্টিধার বর্ষণ করি । অত:পর পানি দ্বারা সব রকমের ফল উৎপন্ন করি। এমনিভাবে মৃতদেরকে বের করব-যাতে তোমরা চিন্তা কর।


وَ الۡبَلَدُ الطَّیِّبُ یَخۡرُجُ نَبَاتُہٗ بِاِذۡنِ رَبِّہٖ ۚ وَ الَّذِیۡ خَبُثَ لَا یَخۡرُجُ اِلَّا نَکِدًا ؕ کَذٰلِکَ نُصَرِّفُ الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّشۡکُرُوۡنَ ﴿٪۵۸﴾

যে ভূখন্ড উৎকৃষ্ট, তার ফসল তার পালনকর্তার নির্দেশে উৎপন্ন হয় এবং যা নিকৃষ্ট তাতে অল্পই ফসল উৎপন্ন হয় । এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করি কৃতজ্ঞ সম্প্রদায়ের জন্য ।


لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا نُوۡحًا اِلٰی قَوۡمِہٖ فَقَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اِنِّیۡۤ اَخَافُ عَلَیۡکُمۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۵۹﴾

নিশ্চয় আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম্ । সে বলল : হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত আমাদের কোন উপাস্য নেই। আমি তোমাদের জন্য একটি মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করি।


قَالَ الۡمَلَاُ مِنۡ قَوۡمِہٖۤ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۶۰﴾

তার সম্প্রদায়ের সর্দাররা বলল : আমরা তোমাকে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতার মাঝে দেখতে পাচ্ছি ।


قَالَ یٰقَوۡمِ لَیۡسَ بِیۡ ضَلٰلَۃٌ وَّ لٰکِنِّیۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۶۱﴾

সে বলল : হে আমার সম্প্রদায় ! আমি কখনও ভ্রান্ত নই; বরং আমি বিশ্ব পালনকর্তার রাসূল ।


اُبَلِّغُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ اَنۡصَحُ لَکُمۡ وَ اَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۲﴾

তোমাদের পালনকর্তার পয়গাম পৌঁছাই এবং তোমাদের সদুপদেশ দিই । আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন সব বিষয় জানি, যেগুলো তোমরা জান না ।


اَوَ عَجِبۡتُمۡ اَنۡ جَآءَکُمۡ ذِکۡرٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَلٰی رَجُلٍ مِّنۡکُمۡ لِیُنۡذِرَکُمۡ وَ لِتَتَّقُوۡا وَ لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۶۳﴾

তোমরা কি আশ্চর্য বোধ করছ যে, তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের বাচনিক উপদেশ এসেছে-যাতে সে তোমাদের ভীতি প্রদর্শন করে, যেন তোমরা সংযত হও এবং যেন তোমরা অনুগৃহীত হও ।


فَکَذَّبُوۡہُ فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ الَّذِیۡنَ مَعَہٗ فِی الۡفُلۡکِ وَ اَغۡرَقۡنَا الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا عَمِیۡنَ ﴿٪۶۴﴾

অত:পর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল । আমি তাকে এবং নৌকাস্থিত লোকদেরকে উদ্ধার করলাম এবং যারা মিথ্যারোপ করত, তাদেরকে ডুবিয়ে দিলাম। নিশ্চয় ওরা ছিল এক অন্ধ জনগোষ্ঠী ।


وَ اِلٰی عَادٍ اَخَاهُمۡ هُوۡدًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ اَفَلَا تَتَّقُوۡنَ ﴿۶۵﴾

’আদ সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করেছি তাদের ভাই হুদকে । সে বলল : হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই;


قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖۤ اِنَّا لَنَرٰىکَ فِیۡ سَفَاهَۃٍ وَّ اِنَّا لَنَظُنُّکَ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۶۶﴾

তার সম্প্রদায়ের সর্দাররা বলল : আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখতে পাচ্ছি এবং আমরা তোমাকে মিথ্যাবাদী মনে করি ।


قَالَ یٰقَوۡمِ لَیۡسَ بِیۡ سَفَاهَۃٌ وَّ لٰکِنِّیۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۶۷﴾

সে বলল : হে আমার সম্প্রদায় ! আমি মোটেই নির্বোধ নই, বরং আমি বিশ্ব-পালকের প্রেরিত পয়গম্বর।


اُبَلِّغُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ اَنَا لَکُمۡ نَاصِحٌ اَمِیۡنٌ ﴿۶۸﴾

আমি তোমাদের কাছে আমার প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিচ্ছি, আর আমি তোমাদের বিশ্বস্ত কল্যাণকামী।


اَوَ عَجِبۡتُمۡ اَنۡ جَآءَکُمۡ ذِکۡرٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَلٰی رَجُلٍ مِّنۡکُمۡ لِیُنۡذِرَکُمۡ ؕ وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ جَعَلَکُمۡ خُلَفَآءَ مِنۡۢ بَعۡدِ قَوۡمِ نُوۡحٍ وَّ زَادَکُمۡ فِی الۡخَلۡقِ بَصۜۡطَۃً ۚ فَاذۡکُرُوۡۤا اٰلَآءَ اللّٰہِ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۶۹﴾

তোমরা কি আশ্চর্যবোধ করছ যে, তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্য থেকেই একজনের বাচনিক উপদেশ এসেছে, যাতে সে তোমাদের ভীতি প্রদর্শন করে । তোমরা স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদের কওমে-নূহের পর প্রাধান্য দান করেছেন এবং তোমাদের দৈহিক সৌষ্ঠবও বাড়িয়ে দিয়েছেন । তোমরা আল্লাহর নিয়ামতসমূহ সরণ কর-যাতে তোমাদের মঙ্গল হয় ।


قَالُوۡۤا اَجِئۡتَنَا لِنَعۡبُدَ اللّٰہَ وَحۡدَہٗ وَ نَذَرَ مَا کَانَ یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَا ۚ فَاۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۷۰﴾

তারা বলল : তুমি কি আমাদের কাছে এজন্য এসেছ যে, আমরা এক আল্লাহর ইবাদত করি এবং আমাদের বাপ-দাদা যাদের পূজা করত, তাদেরকে ছেড়ে দেই ? অতএব, নিয়ে এস আমাদের কাছে যা দিয়ে আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছ, যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক।


قَالَ قَدۡ وَقَعَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ رِجۡسٌ وَّ غَضَبٌ ؕ اَتُجَادِلُوۡنَنِیۡ فِیۡۤ اَسۡمَآءٍ سَمَّیۡتُمُوۡهَاۤ اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمۡ مَّا نَزَّلَ اللّٰهُ بِهَا مِنۡ سُلۡطٰنٍ ؕ فَانۡتَظِرُوۡۤا اِنِّیۡ مَعَکُمۡ مِّنَ الۡمُنۡتَظِرِیۡنَ ﴿۷۱﴾

সে বলল : অবধারিত হয়ে গেছে তোমাদের উপর তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে শাস্তি ও ক্রোধ । আমার সাথে ঐসব নাম সম্পর্কে কেন তর্ক করছ, যেগুলো তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা রেখেছ । আল্লাহ এ সবের কোন সনদ অবতীর্ণ করেন নি। অতএব অপেক্ষা কর। আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি।


فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ الَّذِیۡنَ مَعَہٗ بِرَحۡمَۃٍ مِّنَّا وَ قَطَعۡنَا دَابِرَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ مَا کَانُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿٪۷۲﴾

অনন্তর আমি তাকে ও তার সঙ্গীদের স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং যারা আমার আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করত, তাদের মূল কেটে দিলাম। বস্তুত তারা মান্যকারী ছিল না ।


وَ اِلٰی ثَمُوۡدَ اَخَاهُمۡ صٰلِحًا ۘ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰهَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰهٍ غَیۡرُهٗ ؕ قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ بَیِّنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ ؕ هٰذِهٖ نَاقَۃُ اللّٰهِ لَکُمۡ اٰیَۃً فَذَرُوۡهَا تَاۡکُلۡ فِیۡۤ اَرۡضِ اللّٰهِ وَ لَا تَمَسُّوۡهَا بِسُوۡٓءٍ فَیَاۡخُذَکُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۷۳﴾

আমি সামুদ জাতির কাছে তাদের ভাই সালিহকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ নেই। তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। এটি হল আল্লাহর উটনী, তোমাদের জন্য নিদর্শন, তাকে আল্লাহর যমীনে চরে খেতে দাও, মন্দ উদ্দেশে একে স্পর্শ করবে না, করলে পীড়াদায়ক শাস্তি তোমাদেরকে গ্রাস করবে।


وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ جَعَلَکُمۡ خُلَفَآءَ مِنۡۢ بَعۡدِ عَادٍ وَّ بَوَّاَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ تَتَّخِذُوۡنَ مِنۡ سُہُوۡلِہَا قُصُوۡرًا وَّ تَنۡحِتُوۡنَ الۡجِبَالَ بُیُوۡتًا ۚ فَاذۡکُرُوۡۤا اٰلَآءَ اللّٰہِ وَ لَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ ﴿۷۴﴾

তোমরা স্মরণ কর, যখন তোমাদের ‘আদ জাতির পরে সর্দার করেছেন: তোমাদের পৃথিবীতে ঠিকানা দিয়েছেন । তোমরা নরম মাটিতে অট্টালিকা নির্মাণ কর এবং পর্বতগাত্র খনন করে প্রকোষ্ঠ নির্মাণ কর। অতএব, আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না ।


قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ لِلَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا لِمَنۡ اٰمَنَ مِنۡہُمۡ اَتَعۡلَمُوۡنَ اَنَّ صٰلِحًا مُّرۡسَلٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قَالُوۡۤا اِنَّا بِمَاۤ اُرۡسِلَ بِہٖ مُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۷۵﴾

তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দারেরা ঈমানদার দরিদ্রদের জিজ্ঞেস করল: তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, সালেহকে তার পালনকর্তা প্রেরণ করেছেন ? তারা বলল : আমরা তো তাঁর আনীত বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসী ।


قَالَ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡۤا اِنَّا بِالَّذِیۡۤ اٰمَنۡتُمۡ بِہٖ کٰفِرُوۡنَ ﴿۷۶﴾

দাম্ভিকরা বলল : তোমরা যে বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছ, আমরা তা অস্বীকার করি ।


فَعَقَرُوا النَّاقَۃَ وَ عَتَوۡا عَنۡ اَمۡرِ رَبِّہِمۡ وَ قَالُوۡا یٰصٰلِحُ ائۡتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۷۷﴾

অত:পর তারা সে উষ্ট্রীকে হত্যা করল এবং স্বীয় পালনকর্তার আদেশ অমান্য করল, তারা বলল : হে সালেহ, নিয়ে এস যা দ্বারা আমাদেরকে ভয় দেখাতে, যদি তুমি রাসূল হয়ে থাক !


فَاَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دَارِهِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿۷۸﴾

অত:পর এসে আপতিত হলো তাদের উপর ভূমিকম্প ! ফলে সকাল বেলায় নিজ নিজ গৃহে তারা লাশ হয়ে পড়ে রইল ।


فَتَوَلّٰی عَنۡہُمۡ وَ قَالَ یٰقَوۡمِ لَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ رِسَالَۃَ رَبِّیۡ وَ نَصَحۡتُ لَکُمۡ وَ لٰکِنۡ لَّا تُحِبُّوۡنَ النّٰصِحِیۡنَ ﴿۷۹﴾

সালেহ তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করল এবং বলল : হে আমার সম্প্রদায় ! আমি তোমাদের কাছে স্বীয় পালনকর্তার পয়গাম পৌঁছিয়েছি এবং তোমাদের মঙ্গল কামনা করেছি; কিন্তু তোমরা মঙ্গলাকাঙ্খীদেরকে ভালবাস না ।


وَ لُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِہٖۤ اَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ مَا سَبَقَکُمۡ بِہَا مِنۡ اَحَدٍ مِّنَ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۸۰﴾

এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ?


اِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ شَہۡوَۃً مِّنۡ دُوۡنِ النِّسَآءِ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ مُّسۡرِفُوۡنَ ﴿۸۱﴾

তোমরা তো কামবশত পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে । এতে করে তোমরা সীমা অতিক্রম করছ ।


وَ مَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اَخۡرِجُوۡهُمۡ مِّنۡ قَرۡیَتِکُمۡ ۚ اِنَّہُمۡ اُنَاسٌ یَّتَطَہَّرُوۡنَ ﴿۸۲﴾

তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে জনপদ থেকে । এরা খুব পূত-পবিত্র থাকতে চায় ।


فَاَنۡجَیۡنٰہُ وَ اَهْلَہٗۤ اِلَّا امۡرَاَتَہٗ ۫ۖ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۸۳﴾

অত:পর আমি তাঁকে ও তাঁর পরিবার-পরিজনকে বাঁচিয়ে দিলাম কিন্তু তাঁর স্ত্রী । সে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল, যারা রয়ে গিয়েছিল । আমি তাদের উপর প্রস্তর বর্ষণ করলাম ।


وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ مَّطَرًا ؕ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿٪۸۴﴾

অত:পর দেখ, অপরাধীদের পরিণতি কেমন হয়েছে ।


وَ اِلٰی مَدۡیَنَ اَخَاهُمۡ شُعَیۡبًا ؕ قَالَ یٰقَوۡمِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرُہٗ ؕ قَدۡ جَآءَتۡکُمۡ بَیِّنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَ الۡمِیۡزَانَ وَ لَا تَبۡخَسُوا النَّاسَ اَشۡیَآءَهُمۡ وَ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿ۚ۸۵﴾

আমি মাদইয়ানের প্রতি তাদের ভাই শোয়ায়েবকে প্রেরণ করেছি । সে বলল : হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর । তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য নেই । তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে প্রমাণ এসে গেছে । অতএব, তোমরা মাপ ও ওযন পূর্ন কর এবং মানুষকে তাদের দ্রব্যাদি কম দিয়ো না এবং ভূপৃষ্টের সংস্কার সাধন করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না । এই হলো তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও ।


وَ لَا تَقۡعُدُوۡا بِکُلِّ صِرَاطٍ تُوۡعِدُوۡنَ وَ تَصُدُّوۡنَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ مَنۡ اٰمَنَ بِہٖ وَ تَبۡغُوۡنَہَا عِوَجًا ۚ وَ اذۡکُرُوۡۤا اِذۡ کُنۡتُمۡ قَلِیۡلًا فَکَثَّرَکُمۡ ۪ وَ انۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۸۶﴾

তোমরা পথে-ঘাটে এ কারণে বসে থেকো না যে, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসীদের হুমকি দেবে, আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করবে এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করবে । স্মরণ কর যখন তোমরা সংখ্যায় অল্প ছিলে, অত:পর আল্লাহ তোমাদেরকে অধিক করেছেন এবং লক্ষ্য কর কিরুপ অশুভ পরিণতি হয়েছে অনর্থককারীদের ।


وَ اِنۡ کَانَ طَآئِفَۃٌ مِّنۡکُمۡ اٰمَنُوۡا بِالَّذِیۡۤ اُرۡسِلۡتُ بِہٖ وَ طَآئِفَۃٌ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا فَاصۡبِرُوۡا حَتّٰی یَحۡکُمَ اللّٰہُ بَیۡنَنَا ۚ وَ هُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۸۷﴾

আর যদি তোমাদের একদল ঐ বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, যা আমার হাতে প্রেরিত হয়েছে এবং একদল বিশাস স্থাপন না করে তবে সবর কর যে পর্যন্ত আল্লাহ আমাদের মধ্যে মীমাংসা না করে দেন । তিনিই শ্রেষ্ঠ মীমাংসাকারী ।


قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ اسۡتَکۡبَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ لَنُخۡرِجَنَّکَ یٰشُعَیۡبُ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَکَ مِنۡ قَرۡیَتِنَاۤ اَوۡ لَتَعُوۡدُنَّ فِیۡ مِلَّتِنَا ؕ قَالَ اَوَ لَوۡ کُنَّا کٰرِهِیۡنَ ﴿۟۸۸﴾

তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক সর্দাররা বলল: হে শোয়ায়েব ! আমরা অবশ্যই তোমাকে এবং তোমার সাথে বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকে শহর থেকে বের করে দেব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করবে। শোয়ায়েব বলল: আমরা অপছন্দ করলেও কি ?


قَدِ افۡتَرَیۡنَا عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اِنۡ عُدۡنَا فِیۡ مِلَّتِکُمۡ بَعۡدَ اِذۡ نَجّٰنَا اللّٰہُ مِنۡہَا ؕ وَ مَا یَکُوۡنُ لَنَاۤ اَنۡ نَّعُوۡدَ فِیۡہَاۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ رَبُّنَا ؕ وَسِعَ رَبُّنَا کُلَّ شَیۡءٍ عِلۡمًا ؕ عَلَی اللّٰہِ تَوَکَّلۡنَا ؕ رَبَّنَا افۡتَحۡ بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَ قَوۡمِنَا بِالۡحَقِّ وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡفٰتِحِیۡنَ ﴿۸۹﴾

আমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদকারী হয়ে যাব যদি আমরা তোমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করি, অথচ তিনি আমাদের এ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমাদের কাজ নয় এ ধর্মে প্রত্যাবর্তন করা, কিন্তু আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যদি চান। আমাদের প্রতিপালক প্রত্যেক বস্তুকে স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বেষ্টন করে আছেন। আল্লাহর প্রতিই আমরা ভরসা করেছি। হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ফয়সালা করে দিন- যথার্থ ফয়সালা। আপনিই শ্রেষ্ঠতম ফয়সালাকরী।


وَ قَالَ الۡمَلَاُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ قَوۡمِہٖ لَئِنِ اتَّبَعۡتُمۡ شُعَیۡبًا اِنَّکُمۡ اِذًا لَّخٰسِرُوۡنَ ﴿۹۰﴾

তার সম্প্রদায়ের কাফির সর্দাররা বলল: যদি তোমরা শোয়ায়েবের অনুসরণ কর, তবে নিশ্চিতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


فَاَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ فَاَصۡبَحُوۡا فِیۡ دَارِهِمۡ جٰثِمِیۡنَ ﴿ۚۖۛ۹۱﴾

অনন্তর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে তারা সকাল বেলায় গৃহমধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে রইল।


الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا شُعَیۡبًا کَاَنۡ لَّمۡ یَغۡنَوۡا فِیۡہَا ۚۛ اَلَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا شُعَیۡبًا کَانُوۡا هُمُ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۹۲﴾

শোয়ায়েবের প্রতি মিথ্যারোপকারীরা যেন কোনদিন সেখানে বসবাসই করেনি। যারা শোয়ায়েবের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হলো।


فَتَوَلّٰی عَنۡہُمۡ وَ قَالَ یٰقَوۡمِ لَقَدۡ اَبۡلَغۡتُکُمۡ رِسٰلٰتِ رَبِّیۡ وَ نَصَحۡتُ لَکُمۡ ۚ فَکَیۡفَ اٰسٰی عَلٰی قَوۡمٍ کٰفِرِیۡنَ ﴿٪۹۳﴾

অনন্তর সে তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করল এবং বলল: হে আমার সম্প্রদায় ! আমি তোমাদের পালনকর্তার পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি এবং তোমাদের হিত কামনা করেছি। এখন আমি কাফিরদের জন্য কেন দু:খ করব।


وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا فِیۡ قَرۡیَۃٍ مِّنۡ نَّبِیٍّ اِلَّاۤ اَخَذۡنَاۤ اَهْلَہَا بِالۡبَاۡسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ لَعَلَّہُمۡ یَضَّرَّعُوۡنَ ﴿۹۴﴾

আর আমি কোন জনপদে কোন নবী পাঠাইনি তবে ( এমতাবস্থায় ) পাকড়াও করেছি সে জনপদের অধিবাসীদের কষ্ট ও কঠোরতার মধ্যে, যাতে তারা শিথিল হয়ে পড়ে।


ثُمَّ بَدَّلۡنَا مَکَانَ السَّیِّئَۃِ الۡحَسَنَۃَ حَتّٰی عَفَوۡا وَّ قَالُوۡا قَدۡ مَسَّ اٰبَآءَنَا الضَّرَّآءُ وَ السَّرَّآءُ فَاَخَذۡنٰہُمۡ بَغۡتَۃً وَّ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۹۵﴾

অত:পর অকল্যাণের স্থলে তা কল্যাণে বদলে দিয়েছি। এমনকি তারা অনেক বেড়ে গিয়েছে এবং বলতে শুরু করেছে, আমাদের বাপ-দাদাদের উপরও এমন আনন্দ-বেদনা এসেছে। অত:পর আমি তাদের পাকড়াও করেছি এমন আকস্মিতভাবে যে, তারা টেরও পায়নি।


وَ لَوۡ اَنَّ اَهْلَ الۡقُرٰۤی اٰمَنُوۡا وَ اتَّقَوۡا لَفَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ بَرَکٰتٍ مِّنَ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ وَ لٰکِنۡ کَذَّبُوۡا فَاَخَذۡنٰہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۹۶﴾

আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেরগারী অবলস্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নিয়ামতসমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদের পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে !


اَفَاَمِنَ اَهْلُ الۡقُرٰۤی اَنۡ یَّاۡتِیَہُمۡ بَاۡسُنَا بَیَاتًا وَّ هُمۡ نَآئِمُوۡنَ ﴿ؕ۹۷﴾

এখনও কি এই জনপদের অধিবাসীরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে, আমার আযাব তাদের উপর রাতের বেলায় এসে পড়বে অথচ তখন তারা থাকবে ঘুমে অচেতন।


اَوَ اَمِنَ اَهْلُ الۡقُرٰۤی اَنۡ یَّاۡتِیَہُمۡ بَاۡسُنَا ضُحًی وَّ هُمۡ یَلۡعَبُوۡنَ ﴿۹۸﴾

আর এই জনপদের অধিবাসীরা কি নিশ্চিন্ত হয়ে পড়েছে যে, তাদের উপর আমার আযাব দিনের বেলায় এসে পড়বে অথচ তারা তখন থাকবে খেলাধুলায় মত্ত।


اَفَاَمِنُوۡا مَکۡرَ اللّٰہِ ۚ فَلَا یَاۡمَنُ مَکۡرَ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿٪۹۹﴾

তারা কি আল্লাহর পাকড়াওয়ের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হয়ে গেছে ? বস্তুত আল্লাহর পাকড়াও থেকে তারাই নিশ্চিন্ত হতে পারে, যাদের ধ্বংস ঘনিয়ে আসে।


اَوَ لَمۡ یَہۡدِ لِلَّذِیۡنَ یَرِثُوۡنَ الۡاَرۡضَ مِنۡۢ بَعۡدِ اَهْلِہَاۤ اَنۡ لَّوۡ نَشَآءُ اَصَبۡنٰہُمۡ بِذُنُوۡبِہِمۡ ۚ وَ نَطۡبَعُ عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ فَہُمۡ لَا یَسۡمَعُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾

তাদের নিকট কি এ কথা প্রকাশিত হয়নি, যারা উত্তরাধিকার লাভ করেছে ? সেখানকার লোকদের ফেলতাম। বস্তুত আমি মোহর এঁটে দিয়েছি তাদের অন্তরসমূহের উপর। কাজেই এরা শুনতে পায় না।


تِلۡکَ الۡقُرٰی نَقُصُّ عَلَیۡکَ مِنۡ اَنۡۢبَآئِہَا ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَتۡہُمۡ رُسُلُہُمۡ بِالۡبَیِّنٰتِ ۚ فَمَا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡا بِمَا کَذَّبُوۡا مِنۡ قَبۡلُ ؕ کَذٰلِکَ یَطۡبَعُ اللّٰہُ عَلٰی قُلُوۡبِ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۰۱﴾

এসব হলো সেসব জনপদ, যার কিছু বিবরণ আমি আপনাকে অবহিত করছি। আর নিশ্চিতই ওদের কাছে পৌঁছেছিলেন রাসূল নিদর্শন সহকারে। অতএব কস্মিনকালেও এরা ঈমান আনবার ছিল না, তারপরে যা তারা ইতিপূর্বে মিথ্যা বলে প্রতিপন্ন করেছে। এভাবেই আল্লাহ কাফিরদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন।


وَ مَا وَجَدۡنَا لِاَکۡثَرِهِمۡ مِّنۡ عَہۡدٍ ۚ وَ اِنۡ وَّجَدۡنَاۤ اَکۡثَرَهُمۡ لَفٰسِقِیۡنَ ﴿۱۰۲﴾

আর তাদের অধিকাংশ লোককেই আমি প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নকারীরুপে পাইনি, বরং তাদের অধিকাংশকে পেয়েছি হুকুম অমান্যকারী।


ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِهِمۡ مُّوۡسٰی بِاٰیٰتِنَاۤ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ فَظَلَمُوۡا بِہَا ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾

অত:পর আমি তাঁদের পরে মুসাকে পাঠিয়েছি নিদর্শনাবলী দিয়ে ফিরাউন ও তার সন্তানদের নিকট। বস্তুত ওরা তাঁর মুকাবিলায় কুফরী করেছে। সুতরাং চেয়ে দেখ কি পরিণতি হয়েছে অনাচারীদের।


وَ قَالَ مُوۡسٰی یٰفِرۡعَوۡنُ اِنِّیۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾ۙ

আর মুসা বললেন, হে ফিরাউন, আমি বিশ্ব পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত রাসূল।


حَقِیۡقٌ عَلٰۤی اَنۡ لَّاۤ اَقُوۡلَ عَلَی اللّٰہِ اِلَّا الۡحَقَّ ؕ قَدۡ جِئۡتُکُمۡ بِبَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ فَاَرۡسِلۡ مَعِیَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿۱۰۵﴾ؕ

আল্লাহর পক্ষ থেকে যে সত্য এসেছে তার ব্যতিক্রম কিছু না বলার ব্যাপারে আমি সুদৃঢ়। আমি তোমাদের পরওয়ারদিগারের নিদর্শন নিয়ে এসেছি। সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলদের আমার সাথে পাঠিয়ে দাও।


قَالَ اِنۡ کُنۡتَ جِئۡتَ بِاٰیَۃٍ فَاۡتِ بِہَاۤ اِنۡ کُنۡتَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۱۰۶﴾

সে বলল, যদি তুমি কোন নিদর্শন নিয়ে এসে থাক, তাহলে তা উপস্থিত কর, যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক।


فَاَلۡقٰی عَصَاہُ فَاِذَا هِیَ ثُعۡبَانٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۰۷﴾ۚۖ

তখন তিনি নিক্ষেপ করলেন নিজের লাঠিখানা এবং তৎক্ষণাৎ তা জলজ্যান্ত এক অজগরে রুপান্তরিত হয়ে গেল।


وَّ نَزَعَ یَدَہٗ فَاِذَا هِیَ بَیۡضَآءُ لِلنّٰظِرِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾٪

আর বের করলেন নিজের হাত এবং তা সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের চোখে ধবধবে উজ্জ্বল দেখাতে লাগল।


قَالَ الۡمَلَاُ مِنۡ قَوۡمِ فِرۡعَوۡنَ اِنَّ هٰذَا لَسٰحِرٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۰۹﴾ۙ

ফিরাউনের সাঙ্গপাঙ্গরা বলতে লাগল, নিশ্চয় লোকটি বিজ্ঞ যাদুকর।


یُّرِیۡدُ اَنۡ یُّخۡرِجَکُمۡ مِّنۡ اَرۡضِکُمۡ ۚ فَمَا ذَا تَاۡمُرُوۡنَ ﴿۱۱۰﴾

সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দিতে চায়। এ ব্যাপারে তোমাদের কি মত ?


قَالُوۡۤا اَرۡجِہۡ وَ اَخَاہُ وَ اَرۡسِلۡ فِی الۡمَدَآئِنِ حٰشِرِیۡنَ ﴿۱۱۱﴾ۙ

তারা বলল, আপনি তাকে ও তার ভাইকে অবকাশ দান করুন এবং শহরে-বন্দরে লোক পাঠিয়ে দিন লোকদের সমাবেত করার জন্য-


یَاۡتُوۡکَ بِکُلِّ سٰحِرٍ عَلِیۡمٍ ﴿۱۱۲﴾

যাতে তারা পরাকাষ্ঠসম্পন্ন বিজ্ঞ যাদুকরদের এনে সমবেত করে।


وَ جَآءَ السَّحَرَۃُ فِرۡعَوۡنَ قَالُوۡۤا اِنَّ لَنَا لَاَجۡرًا اِنۡ کُنَّا نَحۡنُ الۡغٰلِبِیۡنَ ﴿۱۱۳﴾

বস্তুত যাদুকররা এসে ফিরাউনের কাছে উপস্থিত হলো। তারা বলল, আমাদের জন্য কি কোন পারিশ্রমিক নির্ধারিত আছে, যদি আমরা জয়লাভ করি ?


قَالَ نَعَمۡ وَ اِنَّکُمۡ لَمِنَ الۡمُقَرَّبِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾

সে বলল, হ্যা। এবং অবশ্যই তোমরা আমার নিকটবর্তী লোক হয়ে যাবে।


قَالُوۡا یٰمُوۡسٰۤی اِمَّاۤ اَنۡ تُلۡقِیَ وَ اِمَّاۤ اَنۡ نَّکُوۡنَ نَحۡنُ الۡمُلۡقِیۡنَ ﴿۱۱۵﴾

তারা বলল, হে মূসা ! হয় তুমি নিক্ষেপ কর অথবা আমরা নিক্ষেপ করছি।


قَالَ اَلۡقُوۡا ۚ فَلَمَّاۤ اَلۡقَوۡا سَحَرُوۡۤا اَعۡیُنَ النَّاسِ وَ اسۡتَرۡهَبُوۡهُمۡ وَ جَآءُوۡ بِسِحۡرٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۱۶﴾

তিনি বললেন, তোমরাই নিক্ষেপ কর। যখন তারা নিক্ষেপ করল, তখন লোকদের চোখগুলোকে ধাঁধিয়ে দিল, ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলল এবং মহাযাদু প্রদর্শন করল।


وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی اَنۡ اَلۡقِ عَصَاکَ ۚ فَاِذَا هِیَ تَلۡقَفُ مَا یَاۡفِکُوۡنَ ﴿۱۱۷﴾ۚ

তারপর আমি ওহীযোগে মূসাকে বললাম, এবার নিক্ষেপ কর তোমার লাঠিখানা । অতএব সঙ্গে সঙ্গে তা সে সমুদয়কে গিলতে লাগল যা তারা বানিয়েছিল যাদুবলে্ ।


فَوَقَعَ الۡحَقُّ وَ بَطَلَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۱۸﴾ۚ

সুতরাং এভাবে প্রকাশ হয়ে গেল সত্য বিষয় এবং ভুল প্রতিপন্ন হয়ে গেল যা কিছু তারা করেছিল ।


فَغُلِبُوۡا هُنَالِکَ وَ انۡقَلَبُوۡا صٰغِرِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾ۚ

সুতরাং তারা সেখানেই পরাজিত হয়ে গেল এবং অতীব লাঞ্ছিত হলো।


وَ اُلۡقِیَ السَّحَرَۃُ سٰجِدِیۡنَ ﴿۱۲۰﴾ۚۖ

এবং যাদুকররা সিজদায় পড়ে গেল।


قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۲۱﴾ۙ

বলল, আমরা ঈমান আনছি মহা বিশ্বের পরওয়ারদিগারের প্রতি।


رَبِّ مُوۡسٰی وَ هٰرُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾

যিনি মূসা ও হারুনের পরওয়ারদিগার।


قَالَ فِرۡعَوۡنُ اٰمَنۡتُمۡ بِهٖ قَبۡلَ اَنۡ اٰذَنَ لَکُمۡ ۚ اِنَّ هٰذَا لَمَکۡرٌ مَّکَرۡتُمُوۡهُ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ لِتُخۡرِجُوۡا مِنۡهَاۤ اَهۡلَهَا ۚ فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۲۳﴾

তোমরা কি ( তাহলে ) আমার অনুমতি দেওয়ার আগেই ঈমান নিয়ে আসলে-এটা যে প্রতারণা, যা তোমরা এ নগরীতে প্রদর্শন করলে যাতে করে এ শহরের অধিবাসীদের শহর থেকে বের করে দিতে পার। সুতরাং তোমরা শীঘ্রই বুঝতে পারবে।


لَاُقَطِّعَنَّ اَیۡدِیَکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ ثُمَّ لَاُصَلِّبَنَّکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۲۴﴾

অবশ্যই আমি কেটে দেব তোমাদের হাত ও পা বিপরীত দিক থেকে। তারপর তোমাদের সবাইকে শূলীতে চড়িয়ে মারব।


قَالُوۡۤا اِنَّاۤ اِلٰی رَبِّنَا مُنۡقَلِبُوۡنَ ﴿۱۲۵﴾ۚ

তারা বলল, আমাদের তো মৃত্যুর পর নিজেদের পরওয়ারদিগারের নিকট যেতেই হবে।


وَ مَا تَنۡقِمُ مِنَّاۤ اِلَّاۤ اَنۡ اٰمَنَّا بِاٰیٰتِ رَبِّنَا لَمَّا جَآءَتۡنَا ؕ رَبَّنَاۤ اَفۡرِغۡ عَلَیۡنَا صَبۡرًا وَّ تَوَفَّنَا مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۱۲۶﴾٪

আর তুমি আমাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করছ শুধু এ কারণে যে, আমরা আমাদের রবের আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান এনেছি, যখন তা আমাদের কাছে এসেছে। হে আমাদের রব, আমাদেরকে পরিপূর্ণ ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে মৃত্যু দান করুন।


وَ قَالَ الۡمَلَاُ مِنۡ قَوۡمِ فِرۡعَوۡنَ اَتَذَرُ مُوۡسٰی وَ قَوۡمَہٗ لِیُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ یَذَرَکَ وَ اٰلِہَتَکَ ؕ قَالَ سَنُقَتِّلُ اَبۡنَآءَۡهُمْ وَ نَسۡتَحۡیٖ نِسَآءَهُمۡ ۚ وَ اِنَّا فَوۡقَہُمۡ قٰہِرُوۡنَ ﴿۱۲۷﴾

ফিরাউনের সম্প্রদায়ের সর্দাররা বলল, তুমি কি এমনি ছেড়ে দেবে মূসা ও তার সম্প্রদায়কে দেশময় হৈ-চৈ করার জন্য এবং তোমাকে ও তোমার দেব-দেবীকে বাতিল করে দেবার জন্য ? সে বলল, আমি এখনি হত্যা করব তাদের পুত্র সন্তারদের; আর জীবিত রাখব মেয়েদের। বস্তুত আমরা তাদের উপর প্র্রবল।


قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہِ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِاللّٰہِ وَ اصۡبِرُوۡا ۚ اِنَّ الۡاَرۡضَ لِلّٰہِ ۟ۙ یُوۡرِثُہَا مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۲۸﴾

মূসা বললেন তাঁর কওমকে, সাহায্য প্রার্থনা কর আল্লাহর নিকট এবং ধৈর্যধারণ কর। নিশ্চয়ই এ পৃথিবী আল্লাহর। তিনি নিজের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা এর উত্তারাধীকারী বানিয়ে দেন এবং শেষ কল্যাণ মুত্তাকীদের জন্যই নির্ধারিত রয়েছে।


قَالُوۡۤا اُوۡذِیۡنَا مِنۡ قَبۡلِ اَنۡ تَاۡتِیَنَا وَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جِئۡتَنَا ؕ قَالَ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّہۡلِکَ عَدُوَّکُمۡ وَ یَسۡتَخۡلِفَکُمۡ فِی الۡاَرۡضِ فَیَنۡظُرَ کَیۡفَ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۹﴾

তারা বলল, আমাদের কষ্ট ছিল তোমার আসার পূর্বে এবং তোমরা আসার পরে। তিনি বললেন, তোমাদের পরওয়ারদিগার শীঘ্রই তোমাদের শত্রুদের ধ্বংস করে দেবেন এবং তোমারদের কে দেশের প্রতিনিধিত্ব দান করবেন। তারপর দেখবেন, তোমরা কেমন কাজ কর।


وَ لَقَدۡ اَخَذۡنَاۤ اٰلَ فِرۡعَوۡنَ بِالسِّنِیۡنَ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الثَّمَرٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ﴿۱۳۰﴾

তারপর আমি পাকড়াও করেছি-ফিরাউনের অনুসারীদের দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে এবং ফল ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।


فَاِذَا جَآءَتۡهُمُ الۡحَسَنَۃُ قَالُوۡا لَنَا هٰذِهٖ ۚ وَ اِنۡ تُصِبۡهُمۡ سَیِّئَۃٌ یَّطَّیَّرُوۡا بِمُوۡسٰی وَ مَنۡ مَّعَهٗ ؕ اَلَاۤ اِنَّمَا طٰٓئِرُهُمۡ عِنۡدَ اللّٰهِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳۱﴾

অত:পর যখন শুভদিন ফিরে আসে, তখন তারা বলতে আরম্ভ করে যে, এটাই আমাদের জন্য উপযোগী। আর যদি অকল্যাণ এসে উপস্থিত হয়, তবে তাতে মূসার এবং তাঁর সঙ্গীদের অলক্ষণ বলে অভিহিত করে। শুনে রাখ, তাদের অলক্ষণ যে আল্লাহরই ইলমে রয়েছে, অথচ এরা জানে না।


وَ قَالُوۡا مَہۡمَا تَاۡتِنَا بِہٖ مِنۡ اٰیَۃٍ لِّتَسۡحَرَنَا بِہَا ۙ فَمَا نَحۡنُ لَکَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۳۲﴾

তারা আরও বলতে লাগল, আমাদের উপর যাদু করার জন্য তুমি যে নিদর্শনই নিয়ে আস না কেন আমরা কিন্তু তোমার উপর ঈমান আনছি না ।


فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمُ الطُّوۡفَانَ وَ الۡجَرَادَ وَ الۡقُمَّلَ وَ الضَّفَادِعَ وَ الدَّمَ اٰیٰتٍ مُّفَصَّلٰتٍ ۟ فَاسۡتَکۡبَرُوۡا وَ کَانُوۡا قَوۡمًا مُّجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۳۳﴾

অতঃপর আমরা তাদের উপর তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত বিস্তারিত নিদর্শন হিসেবে প্রেরণ করি। এরপরও তারা অহংকার করল। আর তারা ছিল এক অপরাধী সম্প্রদায়।


وَ لَمَّا وَقَعَ عَلَیۡہِمُ الرِّجۡزُ قَالُوۡا یٰمُوۡسَی ادۡعُ لَنَا رَبَّکَ بِمَا عَہِدَ عِنۡدَکَ ۚ لَئِنۡ کَشَفۡتَ عَنَّا الرِّجۡزَ لَنُؤۡمِنَنَّ لَکَ وَ لَنُرۡسِلَنَّ مَعَکَ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ﴿۱۳۴﴾ۚ

আর তাদের উপর যখন কোন আযাব পড়ে তখন বলে, হে মূসা ! আমাদের জন্য তোমার পরওয়ারদিগারের নিকট সে বিষয়ে দোয়া কর যা তিনি তোমাদের সাথে ওয়াদা করে রেখেছেন। যদি তুমি আমাদের উপর থেকে এ আযাব সরিয়ে দাও, তবে অবশ্যই আমরা ঈমান আনব তোমার উপর এবং তোমার সাথে বনী ইসরাঈলদের যেতে দেব।


فَلَمَّا کَشَفۡنَا عَنۡہُمُ الرِّجۡزَ اِلٰۤی اَجَلٍ هُمۡ بٰلِغُوۡہُ اِذَا هُمۡ یَنۡکُثُوۡنَ ﴿۱۳۵﴾

অত:পর যখন আমি তাদের উপর থেকে আযাব তুলে নিতাম নির্ধারিত একটি সময় পর্যন্ত- যেখান পর্যন্ত তাদেরকে পৌছানো উদ্দেশ্য ছিল, তখন তড়িঘড়ি তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করত।


فَانۡتَقَمۡنَا مِنۡہُمۡ فَاَغۡرَقۡنٰہُمۡ فِی الۡیَمِّ بِاَنَّہُمۡ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا عَنۡہَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾

সুতরাং আমি তাদের কাছ থেকে বদলা নিয়ে নিলাম- বস্তুত তাদেরকে সাগরে ডুবিয়ে দিলাম। কারণ তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল আমার নিদর্শনসমূহকে এবং তৎপ্রতি অনীহা প্রদর্শন করেছিল।


وَ اَوۡرَثۡنَا الۡقَوۡمَ الَّذِیۡنَ کَانُوۡا یُسۡتَضۡعَفُوۡنَ مَشَارِقَ الۡاَرۡضِ وَ مَغَارِبَہَا الَّتِیۡ بٰرَکۡنَا فِیۡہَا ؕ وَ تَمَّتۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ الۡحُسۡنٰی عَلٰی بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ ۬ۙ بِمَا صَبَرُوۡا ؕ وَ دَمَّرۡنَا مَا کَانَ یَصۡنَعُ فِرۡعَوۡنُ وَ قَوۡمُہٗ وَ مَا کَانُوۡا یَعۡرِشُوۡنَ ﴿۱۳۷﴾

আর যাদেরকে দুর্বল মনে করা হতো তাদেরকেও আমি উত্তরাধিকার দান করেছি এ ভূখন্ডের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের, যাতে আমি বরকত সন্নিহিত রেখেছি এবং পরিপূর্ণ হয়ে গেছে তোমার পালনকর্তার প্রতিশ্রত কল্যাণ বনি ইসরাঈলদের জন্য তাদের ধৈর্যধারণের দরুন। আর ধ্বংস করে দিয়েছি সবকিছু যা তৈরি করেছিল ফিরাউন ও তার সম্প্রদায় এবং ধ্বংস করেছি যা কিছু তারা সুউচ্চ নির্মাণ করেছিল।


وَ جٰوَزۡنَا بِبَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ الۡبَحۡرَ فَاَتَوۡا عَلٰی قَوۡمٍ یَّعۡکُفُوۡنَ عَلٰۤی اَصۡنَامٍ لَّہُمۡ ۚ قَالُوۡا یٰمُوۡسَی اجۡعَلۡ لَّنَاۤ اِلٰـہًا کَمَا لَہُمۡ اٰلِـہَۃٌ ؕ قَالَ اِنَّکُمۡ قَوۡمٌ تَجۡہَلُوۡنَ ﴿۱۳۸﴾

আর বনী ইসরাঈলকে আমি সমুদ্র পার করিয়ে দিলাম। অতঃপর তারা আসল এমন এক কওমের কাছে যারা নিজদের মূর্তিগুলোর পূজায় রত ছিল। তারা বলল, হে মূসা, তাদের যেমন উপাস্য আছে আমাদের জন্য তেমনি উপাস্য নির্ধারণ করে দাও। সে বলল, নিশ্চয় তোমরা এমন এক কওম যারা মূর্খ।


اِنَّ هٰۤؤُلَآءِ مُتَبَّرٌ مَّا هُمۡ فِیۡهِ وَ بٰطِلٌ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۳۹﴾

এরা যে কাজে নিয়োজিত রয়েছে তা ধ্বংস হবে এবং যা কিছু তারা করেছে তা যে ভুল !


قَالَ اَغَیۡرَ اللّٰہِ اَبۡغِیۡکُمۡ اِلٰـہًا وَّ هُوَ فَضَّلَکُمۡ عَلَی الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۴۰﴾

তিনি বললেন, তাহলে কি আল্লাহকে ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোন উপাস্য অনুসন্ধান করব, অথচ তিনিই তোমাদের সারা বিশ্বে শ্রেষ্টত্ব দান করেছেন।


وَ اِذۡ اَنۡجَیۡنٰکُمۡ مِّنۡ اٰلِ فِرۡعَوۡنَ یَسُوۡمُوۡنَکُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ ۚ یُقَتِّلُوۡنَ اَبۡنَآءَکُمۡ وَ یَسۡتَحۡیُوۡنَ نِسَآءَکُمۡ ؕ وَ فِیۡ ذٰلِکُمۡ بَلَآءٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ عَظِیۡمٌ ﴿۱۴۱﴾٪

আর সে সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন আমি তোমাদের ফিরাউনের লোকদের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছি; তারা তোমাদের দিত নিকৃষ্ট শাস্তি, তোমাদের পুত্র- সন্তানদের মেরে ফেলত এবং মেয়েদের বাঁচিয়ে রাখত। এতে তোমাদের প্রতি তোমাদের পরওয়ারদিগারের বিরাট পরীক্ষা রয়েছে।


وَ وٰعَدۡنَا مُوۡسٰی ثَلٰثِیۡنَ لَیۡلَۃً وَّ اَتۡمَمۡنٰهَا بِعَشۡرٍ فَتَمَّ مِیۡقَاتُ رَبِّهٖۤ اَرۡبَعِیۡنَ لَیۡلَۃً ۚ وَ قَالَ مُوۡسٰی لِاَخِیۡهِ هٰرُوۡنَ اخۡلُفۡنِیۡ فِیۡ قَوۡمِیۡ وَ اَصۡلِحۡ وَ لَا تَتَّبِعۡ سَبِیۡلَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۱۴۲﴾

আর আমি মূসাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ত্রিশ রাত্রির এবং সেগুলোকে পূর্ণ করেছি আরো দশ দ্বারা। বস্তুত এভাবে চল্লিশ রাতের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে গেছে। আর মূসা তাঁর ভাই হারুনকে বললেন, আমার সম্প্রদায়ে তুমি আমার প্রতিনিধি হিসাবে থাক। তাদের সংশোধন করতে থাক এবং হাঙ্গামা সৃষ্টিকারীদের পথে চলো না।


وَ لَمَّا جَآءَ مُوۡسٰی لِمِیۡقَاتِنَا وَ کَلَّمَہٗ رَبُّہٗ ۙ قَالَ رَبِّ اَرِنِیۡۤ اَنۡظُرۡ اِلَیۡکَ ؕ قَالَ لَنۡ تَرٰىنِیۡ وَ لٰکِنِ انۡظُرۡ اِلَی الۡجَبَلِ فَاِنِ اسۡتَقَرَّ مَکَانَہٗ فَسَوۡفَ تَرٰىنِیۡ ۚ فَلَمَّا تَجَلّٰی رَبُّہٗ لِلۡجَبَلِ جَعَلَہٗ دَکًّا وَّ خَرَّ مُوۡسٰی صَعِقًا ۚ فَلَمَّاۤ اَفَاقَ قَالَ سُبۡحٰنَکَ تُبۡتُ اِلَیۡکَ وَ اَنَا اَوَّلُ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۴۳﴾

তারপর মূসা যখন আমার প্রতিশ্রুত সময় অনুযায়ী এসে হাজির হলেন এবং তার সাথে তার পরওয়ারদিগার কথা বললেন, হে আমার প্রভু, তোমার দীদার আমাকে দাও, যেন আমি তোমাকে দেখতে পাই। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কশ্মিনকালেও দেখতে পাবে না। তবে তুাম পাহাড়ের দিকে দেখতে থাক, সেটি যদি স্বস্থানে দাঁড়িয়ে থাকে তবে তুমিও আমাকে দেখতে পাবে। তারপর যখন তার পরওয়ারদিগার পাহাড়ের উপর আপন জ্যোতির বিকিরণ ঘটালেন, সেটিকে বিধ্বস্ত করে দিলেন এবং মূসা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। অত:পর তার যখন জ্ঞান ফিরে এল; বললেন, হে প্রভু ! তোমার সত্তা পবিত্র, তোমার দরবারে আমি তওবা করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম বিশ্বাস স্থাপন করছি।


قَالَ یٰمُوۡسٰۤی اِنِّی اصۡطَفَیۡتُکَ عَلَی النَّاسِ بِرِسٰلٰتِیۡ وَ بِکَلَامِیۡ ۫ۖ فَخُذۡ مَاۤ اٰتَیۡتُکَ وَ کُنۡ مِّنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۴۴﴾

( পরওয়ারদিগার ) বললেন, হে মূসা, আমি তোমাকে আমার বার্তা পাঠানোর এবং কথা বলার মাধ্যমে লোকদের উপর বিশিষ্টতা দান করেছি। সুতরাং যা কিছু আমি তোমাকে দান করলাম, গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞ থাক।


وَ کَتَبۡنَا لَہٗ فِی الۡاَلۡوَاحِ مِنۡ کُلِّ شَیۡءٍ مَّوۡعِظَۃً وَّ تَفۡصِیۡلًا لِّکُلِّ شَیۡءٍ ۚ فَخُذۡهَا بِقُوَّۃٍ وَّ اۡمُرۡ قَوۡمَکَ یَاۡخُذُوۡا بِاَحۡسَنِہَا ؕ سَاُورِیۡکُمۡ دَارَ الۡفٰسِقِیۡنَ ﴿۱۴۵﴾

আর আমি তার জন্য ফলকসমূহে লিখে দিয়েছি প্রত্যেক বিষয়ের উপদেশ এবং প্রত্যেক বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা। সুতরাং তা শক্ত করে ধর এবং তোমার কওমকে নির্দেশ দাও, যেন তারা গ্রহণ করে এর উত্তম বিষয়গুলো। আমি অচিরেই তোমাদেরকে দেখাব ফাসিকদের আবাস।


سَاَصۡرِفُ عَنۡ اٰیٰتِیَ الَّذِیۡنَ یَتَکَبَّرُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ وَ اِنۡ یَّرَوۡا کُلَّ اٰیَۃٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡا بِہَا ۚ وَ اِنۡ یَّرَوۡا سَبِیۡلَ الرُّشۡدِ لَا یَتَّخِذُوۡہُ سَبِیۡلًا ۚ وَ اِنۡ یَّرَوۡا سَبِیۡلَ الۡغَیِّ یَتَّخِذُوۡہُ سَبِیۡلًا ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ کَانُوۡا عَنۡہَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۴۶﴾

আমি আমার নিদর্শনসমূহ হতে তাদেরকে ফিরিয়ে রাখি, যারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে গর্ব করে। যদি তারা সমস্ত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে ফেলে, তবুও তা বিশ্বাস করবে না। আর যদি হিদায়েতের পথ দেখে, তবে সে পথ গ্রহণ করে না। অথচ গোমরাহীর পথ দেখলে তাই গ্রহণ করে নেয়। এর কারণ, তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলে মনে করেছে এবং তা থেকে যে খবর রয়ে গেছে ।


وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ لِقَآءِ الۡاٰخِرَۃِ حَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ ؕ ۡهَلْ یُجۡزَوۡنَ اِلَّا مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۷﴾٪

বস্তুত যারা মিথ্যা জেনেছে আমার আযাতসমূহকে এবং আখিরাতের সাক্ষাৎকে, তাদের যাবতীয় কাজকর্ম ধ্বংস হয়ে গেছে। তেমন সে বদলাহ পাবে যেমন আমল করত।


وَ اتَّخَذَ قَوۡمُ مُوۡسٰی مِنۡۢ بَعۡدِہٖ مِنۡ حُلِیِّہِمۡ عِجۡلًا جَسَدًا لَّہٗ خُوَارٌ ؕ اَلَمۡ یَرَوۡا اَنَّہٗ لَا یُکَلِّمُہُمۡ وَ لَا یَہۡدِیۡہِمۡ سَبِیۡلًا ۘ اِتَّخَذُوۡہُ وَ کَانُوۡا ظٰلِمِیۡنَ ﴿۱۴۸﴾

আর বানিয়ে নিল মূসার সম্প্রদায় তার অনুপস্থিতিতে নিজেদের অলংকারাদির দ্বারা একটি বাছুর মা থেকে বেরুচ্ছিল ’হাম্বা হাম্বা’ শব্দ । তারা কি একথাও লক্ষ্য করল না যে, সেটি তাদের সাথে কথাও বলছে না এবং তাদেরকে কোন পথও বাতলে দিচ্ছে না ? তারা সেটিকে উপাস্য বানিয়ে নিল। বস্তুত তারা ছিল জালিম।


وَ لَمَّا سُقِطَ فِیۡۤ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ رَاَوۡا اَنَّہُمۡ قَدۡ ضَلُّوۡا ۙ قَالُوۡا لَئِنۡ لَّمۡ یَرۡحَمۡنَا رَبُّنَا وَ یَغۡفِرۡ لَنَا لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ ﴿۱۴۹﴾

অত:পর যখন তারা অনুতপ্ত হলো এবং বুঝতে পারল যে, আমরা নিশ্চিতই গোমরাহ হয়ে পড়েছি, তখন বলতে লাগল আমারদের প্রতি যদি আমাদের পরওয়ারদিগার করুণা না করেন, তবে অবশ্যই আমরা ধ্বংস হয়ে যাব।


وَ لَمَّا رَجَعَ مُوۡسٰۤی اِلٰی قَوۡمِہٖ غَضۡبَانَ اَسِفًا ۙ قَالَ بِئۡسَمَا خَلَفۡتُمُوۡنِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِیۡ ۚ اَعَجِلۡتُمۡ اَمۡرَ رَبِّکُمۡ ۚ وَ اَلۡقَی الۡاَلۡوَاحَ وَ اَخَذَ بِرَاۡسِ اَخِیۡہِ یَجُرُّہٗۤ اِلَیۡہِ ؕ قَالَ ابۡنَ اُمَّ اِنَّ الۡقَوۡمَ اسۡتَضۡعَفُوۡنِیۡ وَ کَادُوۡا یَقۡتُلُوۡنَنِیۡ ۫ۖ فَلَا تُشۡمِتۡ بِیَ الۡاَعۡدَآءَ وَ لَا تَجۡعَلۡنِیۡ مَعَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۵۰﴾

আর মূসা যখন নিজ কওমের কাছে ফিরে আসল রাগান্বিত বিক্ষুদ্ধ অবস্থায়, তখন বলল, আমার পরে তোমরা আমার কত খারাপ প্রতিনিধিত্ব করেছ! তোমাদের রবের নির্দেশের পূর্বে তোমরা তাড়াহুড়া করলে? আর সে ফলকগুলো ফেলে দিল এবং স্বীয় ভাইয়ের মাথা ধরে নিজের দিকে টেনে আনতে লাগল। সে বলল, হে আমার মায়ের পুত্র, এ জাতি আমাকে দুর্বল মনে করেছে এবং আমাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছে, তাই তুমি আমার ব্যাপারে শত্রুদেরকে আনন্দিত করো না এবং আমাকে যালিম কওমের অন্তর্ভুক্ত করো না।


قَالَ رَبِّ اغۡفِرۡ لِیۡ وَ لِاَخِیۡ وَ اَدۡخِلۡنَا فِیۡ رَحۡمَتِکَ ۫ۖ وَ اَنۡتَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ﴿۱۵۱﴾٪

মূসা বললেন, হে আমার পরওয়ারদিগার, ক্ষমা কর আমাকে আর আমার ভাইকে এবং আমাদেরকে তোমার রহমতের অন্তর্ভুক্ত কর। তুমি যে সর্বাধিক করুণাময়।


اِنَّ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوا الۡعِجۡلَ سَیَنَالُہُمۡ غَضَبٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ ذِلَّۃٌ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُفۡتَرِیۡنَ ﴿۱۵۲﴾

অবশ্য যারা গো-বৎসকে উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে, তাদের উপর তাদের পরওয়ারদিগারের পক্ষ থেকে পার্থিব এ জীবনেই গযব ও লাঞ্ছনা এসে পড়বে। এভাবে আমি অপবাদ আরোপকারীদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি।


وَ الَّذِیۡنَ عَمِلُوا السَّیِّاٰتِ ثُمَّ تَابُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِهَا وَ اٰمَنُوۡۤا ۫ اِنَّ رَبَّکَ مِنۡۢ بَعۡدِهَا لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۵۳﴾

আর যারা মন্দ কাজ করে, তারপর তওবা করে নেয় এবং ঈমান নিয়ে আসে, তবে নিশ্চয়ই তোমার পরওয়ারদিগার তওবার পর অবশ্য ক্ষমাকারী , করুনাময়।


وَ لَمَّا سَکَتَ عَنۡ مُّوۡسَی الۡغَضَبُ اَخَذَ الۡاَلۡوَاحَ ۚۖ وَ فِیۡ نُسۡخَتِہَا هُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ لِّلَّذِیۡنَ هُمۡ لِرَبِّہِمۡ یَرۡهَبُوۡنَ ﴿۱۵۴﴾

আর যখন মূসার ক্রোধ থেমে গেল তখন সে ফলকগুলো তুলে নিল। তার লেখাতে ছিল হিদায়াত ও রহমত, তাদের জন্য যারা নিজদের রবকেই ভয় করে।


وَ اخۡتَارَ مُوۡسٰی قَوۡمَہٗ سَبۡعِیۡنَ رَجُلًا لِّمِیۡقَاتِنَا ۚ فَلَمَّاۤ اَخَذَتۡہُمُ الرَّجۡفَۃُ قَالَ رَبِّ لَوۡ شِئۡتَ اَهْلَکۡتَہُمۡ مِّنۡ قَبۡلُ وَ اِیَّایَ ؕ اَتُہۡلِکُنَا بِمَا فَعَلَ السُّفَہَآءُ مِنَّا ۚ اِنۡ هِیَ اِلَّا فِتۡنَتُکَ ؕ تُضِلُّ بِہَا مَنۡ تَشَآءُ وَ تَہۡدِیۡ مَنۡ تَشَآءُ ؕ اَنۡتَ وَلِیُّنَا فَاغۡفِرۡ لَنَا وَ ارۡحَمۡنَا وَ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡغٰفِرِیۡنَ ﴿۱۵۵﴾

আর মূসা বেছে দিলেন নিজের সম্প্রদায় থেকে সত্তর জন লোক আমার প্রতিশ্রুত সময়ের জন্য। তারপর যখন তাদেরকে ভূমিকম্প পাকড়াও করল, তখন বললেন, হে আমার পরওয়ারদিগার, তুমি যদি ইচ্ছা করতে তবে তাদেরকে আগেই ধ্বংস করে দিতে এবং আমাকেও। আমাদেরকে কি সে কর্মের কারণে ধ্বংস করছ, যা আমার সম্প্রদায়ের নির্বোধ লোকেরা করেছে ? এ সবই তোমার পরীক্ষা; তুমি যাকে ইচ্ছা এতে পথভ্রষ্ট করবে এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথে রাখবে। তুমিই তো আমাদের রক্ষক-সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের উপর করুণা কর। তাছাড়া তুমিই তো সর্বাধিক ক্ষমাকারী।


وَ اکۡتُبۡ لَنَا فِیۡ هٰذِهِ الدُّنۡیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الۡاٰخِرَۃِ اِنَّا هُدۡنَاۤ اِلَیۡکَ ؕ قَالَ عَذَابِیۡۤ اُصِیۡبُ بِهٖ مَنۡ اَشَآءُ ۚ وَ رَحۡمَتِیۡ وَسِعَتۡ کُلَّ شَیۡءٍ ؕ فَسَاَکۡتُبُهَا لِلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّکٰوۃَ وَ الَّذِیۡنَ هُمۡ بِاٰیٰتِنَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۵۶﴾ۚ

আর পৃথিবীতে এবং আখিরাতে আমাদের জন্য কল্যাণ লিখে দাও। আমরা তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন করছি । আল্লাহ তা’আলা বললেন, আমার আযাব তারই উপর চাপিয়ে দিই যার উপর ইচ্ছা করি। বস্তুত আমার রহমত সবকিছুর উপরই পরিব্যাপ্ত। সুতরাং তা তাদের জন্য লিখে দেব যারা ভয় রাখে, যাকাত দান করে এবং যারা আমার আয়াতসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে।


اَلَّذِیۡنَ یَتَّبِعُوۡنَ الرَّسُوۡلَ النَّبِیَّ الۡاُمِّیَّ الَّذِیۡ یَجِدُوۡنَہٗ مَکۡتُوۡبًا عِنۡدَهُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ ۫ یَاۡمُرُهُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡہٰہُمۡ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُحِلُّ لَہُمُ الطَّیِّبٰتِ وَ یُحَرِّمُ عَلَیۡہِمُ الۡخَبٰٓئِثَ وَ یَضَعُ عَنۡہُمۡ اِصۡرَهُمۡ وَ الۡاَغۡلٰلَ الَّتِیۡ کَانَتۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِہٖ وَ عَزَّرُوۡہُ وَ نَصَرُوۡہُ وَ اتَّبَعُوا النُّوۡرَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ مَعَہٗۤ ۙ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾٪

সে সমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রাসূলের, যিনি নিরক্ষর নবী, যার সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তাওরাত, ইঞ্জীলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষণা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তার উপর ঈমান এনেছে, তার সহচর্য অবলম্বন করেছে, তাকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্যে সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।


قُلۡ یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنِّیۡ رَسُوۡلُ اللّٰہِ اِلَیۡکُمۡ جَمِیۡعَۨا الَّذِیۡ لَہٗ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۚ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا هُوَ یُحۡیٖ وَ یُمِیۡتُ ۪ فَاٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہِ النَّبِیِّ الۡاُمِّیِّ الَّذِیۡ یُؤۡمِنُ بِاللّٰہِ وَ کَلِمٰتِہٖ وَ اتَّبِعُوۡہُ لَعَلَّکُمۡ تَہۡتَدُوۡنَ ﴿۱۵۸﴾

বলে দাও হে মানবমন্ডলী ! তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রাসূল,-সমগ্র আসমান ও যমীনে তার রাজত্ব। একমাত্র তাকে ছাড়া আর কারো উপাসনা নয়। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো আল্লাহর উপর, তার প্রেরিত উম্মী নবীর উপর, যিনি বিশ্বাস রাখেন আল্লাহর এবং তার সমস্ত কালামের উপর। তার অনুসরণ কর যাতে সরথলপথ প্রাপ্ত হতে পার।


وَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰۤی اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾

মূসার কওম থেকে এমন এক দল রয়েছে যারা সঠিকভাবে পথ প্রদর্শন করে এবং তা দ্বারা ইনসাফ করে।


وَ قَطَّعۡنٰہُمُ اثۡنَتَیۡ عَشۡرَۃَ اَسۡبَاطًا اُمَمًا ؕ وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسٰۤی اِذِ اسۡتَسۡقٰىہُ قَوۡمُہٗۤ اَنِ اضۡرِبۡ بِّعَصَاکَ الۡحَجَرَ ۚ فَانۡۢبَجَسَتۡ مِنۡہُ اثۡنَتَا عَشۡرَۃَ عَیۡنًا ؕ قَدۡ عَلِمَ کُلُّ اُنَاسٍ مَّشۡرَبَہُمۡ ؕ وَ ظَلَّلۡنَا عَلَیۡہِمُ الۡغَمَامَ وَ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡہِمُ الۡمَنَّ وَ السَّلۡوٰی ؕ کُلُوۡا مِنۡ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقۡنٰکُمۡ ؕ وَ مَا ظَلَمُوۡنَا وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۶۰﴾

আর আমি পৃথক পৃথক করে দিয়েছি তাদের বারজন পিতামহের সন্তানদের বিরাট বিরাট দলে, এবং নির্দেশ দিয়েছি মূসাকে, যখন তার কাছে তার সম্প্রদায় পানি চাইল যে, স্বীয় যষ্ঠির দ্বারা আঘাত কর এ পাথরের উপর। অত:পর এর ভেতর থেকে ফুটে বের হলো বারটি প্রস্রবণ! প্রতিটি গোত্র চিনে নিল নিজ নিজ ঘাঁটি। আর আমি ছায়া দান করলাম তাদের উপর মেঘের এবং তাদের জন্য অবতীর্ণ করলাম ‘মানদা’ ও ’সালওয়া’ । যে পরিচ্ছন্ন বস্তু জীবিকারুপে আমি তোমাদের দিয়েছি তা থেকে তোমরা ভক্ষণ কর। বস্তুত তারা আমার কোন ক্ষতি করেনি; বরং ক্ষতি করেছে নিজেদেরই।


وَ اِذۡ قِیۡلَ لَهُمُ اسۡکُنُوۡا هٰذِهِ الۡقَرۡیَۃَ وَ کُلُوۡا مِنۡهَا حَیۡثُ شِئۡتُمۡ وَ قُوۡلُوۡا حِطَّۃٌ وَّ ادۡخُلُوا الۡبَابَ سُجَّدًا نَّغۡفِرۡ لَکُمۡ خَطِیۡٓـٰٔتِکُمۡ ؕ سَنَزِیۡدُ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۶۱﴾

আর যখন তাদের প্রতি নির্দেশ হলো যে, তোমরা এ নগরীতে বসবাস কর এবং খাও তা থেকে যেখান থেকে ইচ্ছা এবং বল, আমাদের ক্ষমা করুন। আর দরজা দিয়ে প্রবেশ কর প্রণত অবস্থায়। তবে আমি ক্ষমা করে দেব তোমাদের পাপসমূহ। অবশ্য আমি সৎকর্মীদের অতিরিক্ত দান করব।


فَبَدَّلَ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡہُمۡ قَوۡلًا غَیۡرَ الَّذِیۡ قِیۡلَ لَہُمۡ فَاَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِمۡ رِجۡزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا کَانُوۡا یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۶۲﴾٪

অনন্তর জালিমরা এতে অন্য শব্দ বদলে দিল তার পরিবর্তে, যা তাদেরকে বলা হয়েছিল। সুতরাং আমি তাদের উপর আযাব পাঠিয়েছি আসমান থেকে তাদের অপকর্মের কারণে।


وَ سۡـَٔلۡہُمۡ عَنِ الۡقَرۡیَۃِ الَّتِیۡ کَانَتۡ حَاضِرَۃَ الۡبَحۡرِ ۘ اِذۡ یَعۡدُوۡنَ فِی السَّبۡتِ اِذۡ تَاۡتِیۡہِمۡ حِیۡتَانُہُمۡ یَوۡمَ سَبۡتِہِمۡ شُرَّعًا وَّ یَوۡمَ لَا یَسۡبِتُوۡنَ ۙ لَا تَاۡتِیۡہِمۡ ۚۛ کَذٰلِکَ ۚۛ نَبۡلُوۡهُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۱۶۳﴾

আর তাদের কাছে সে জনপদের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা যা ছিল নদী তীরে অবস্থিত। যখন শনিবার দিনের নির্দেশ ব্যাপারে সীমাতিক্রম করতে লাগল, যখন আসতে লাগল মাছগুলো তাদের কাছে শনিবার দিন পানির উপর; আর যেদিন শনিবার হতো না আসতো না; এভাবে আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি। কারণ তারা ছিল নাফরমান।


وَ اِذۡ قَالَتۡ اُمَّۃٌ مِّنۡہُمۡ لِمَ تَعِظُوۡنَ قَوۡمَۨا ۙ اللّٰہُ مُہۡلِکُہُمۡ اَوۡ مُعَذِّبُہُمۡ عَذَابًا شَدِیۡدًا ؕ قَالُوۡا مَعۡذِرَۃً اِلٰی رَبِّکُمۡ وَ لَعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ ﴿۱۶۴﴾

আর যখন তাদের মধ্যে থেকে এক সম্প্রদায় বলল, কেন সে লোকদের সদুপদেশ দিচ্ছেন, যাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিতে চান কিংবা আযাব দিতে চান-কঠিন আযাব ? সে বলল, তোমাদের পালনকর্তার সামনে দোষ ফুরাবার জন্য এবং এজন্য যেন তারা ভীত হয় ।


فَلَمَّا نَسُوۡا مَا ذُکِّرُوۡا بِہٖۤ اَنۡجَیۡنَا الَّذِیۡنَ یَنۡہَوۡنَ عَنِ السُّوۡٓءِ وَ اَخَذۡنَا الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا بِعَذَابٍۭ بَئِیۡسٍۭ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۱۶۵﴾

অত:পর যখন তারা সেসব বিষয় ভুলে গেল, যা তাদেরকে বোঝানো হয়েছিল, তখন আমি সেসব লোককে মুক্তি দান করলাম, যারা মন্দ কাজ থেকে বারণ করত। আর পাকড়াও করলাম, গোনাহগারদের নিকৃষ্ট আযাবের মাধ্যমে তাদের নাফরমানীর দরুন।


فَلَمَّا عَتَوۡا عَنۡ مَّا نُہُوۡا عَنۡہُ قُلۡنَا لَہُمۡ کُوۡنُوۡا قِرَدَۃً خٰسِئِیۡنَ ﴿۱۶۶﴾

তারপর যখন তারা এগিয়ে যেতে লাগল সে কর্মে যা থেকে তাদের বারণ করা হয়েছিল, তখন আমি নির্দেশ দিলাম যে, তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও ।


وَ اِذۡ تَاَذَّنَ رَبُّکَ لَیَبۡعَثَنَّ عَلَیۡہِمۡ اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ مَنۡ یَّسُوۡمُہُمۡ سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ ؕ اِنَّ رَبَّکَ لَسَرِیۡعُ الۡعِقَابِ ۚۖ وَ اِنَّہٗ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۶۷﴾

আর সে সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন তোমার পালনকর্তা সংবাদ দিয়েছেন যে, অবশ্যই কিয়ামত দিবস পর্যন্ত ইহুদীদের উপর এমন লোক পাঠাতে থাকবেন যারা তাদেরকে নিকৃষ্ট শান্তি দান করতে থাকবে । নি:সন্দেহে তোমার পালনকর্তা শীঘ্র শান্তিদানকারী এবং তিনি ক্ষমাশীল,দয়ালু ।


وَ قَطَّعۡنٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ اُمَمًا ۚ مِنۡہُمُ الصّٰلِحُوۡنَ وَ مِنۡہُمۡ دُوۡنَ ذٰلِکَ ۫ وَ بَلَوۡنٰہُمۡ بِالۡحَسَنٰتِ وَ السَّیِّاٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۱۶۸﴾

আর আমি তাদেরকে বিভক্ত করে দিয়েছি দেশময় বিভিন্ন শ্রেণীতে; তাদের মধ্যে কিছু রয়েছে ভাল; আর কিছু অন্য রকম। তাছাড়া আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি ভাল ও মন্দের মাধ্যমে যাতে তারা ফিরে আসে।


 فَخَلَفَ مِنۡۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ وَّرِثُوا الۡکِتٰبَ یَاۡخُذُوۡنَ عَرَضَ هٰذَا الۡاَدۡنٰی وَ یَقُوۡلُوۡنَ سَیُغۡفَرُ لَنَا ۚ وَ اِنۡ یَّاۡتِهِمۡ عَرَضٌ مِّثۡلُهٗ یَاۡخُذُوۡهُ ؕ اَلَمۡ یُؤۡخَذۡ عَلَیۡهِمۡ مِّیۡثَاقُ الۡکِتٰبِ اَنۡ لَّا یَقُوۡلُوۡا عَلَی اللّٰهِ اِلَّا الۡحَقَّ وَ دَرَسُوۡا مَا فِیۡهِ ؕ وَ الدَّارُ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۶۹﴾

তারপর তাদের পেছনে এসেছে কিছু অপদার্থ, যারা উত্তরাধিকারী হয়েছে কিতাবের, তারা নিকৃষ্ট পার্থিব উপকরণ আহরণ করেছে এবং বলছে আমাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। বস্তুত এমনি ধরনের উপকরণ যদি আবারও তাদের সামনে উপস্থিত হয়, তবে তাও তুলে নেবে। তাদের কাছ থেকে কিতাবে কি অঙ্গীকর নেয়া হয়নি যে, আল্লাহর প্রতি সত্য ছাড়া কিছু বলবে না ? অথচ তারা সে সবই পাঠ করেছে, যা তাতে লেখা রয়েছে। বস্তুত আখিরাতের আলয় মুত্তাকীদের জন্য উত্তম---তোমরা কি তা বুঝ না !


وَ الَّذِیۡنَ یُمَسِّکُوۡنَ بِالۡکِتٰبِ وَ اَقَامُوا الصَّلٰوۃَ ؕ اِنَّا لَا نُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُصۡلِحِیۡنَ ﴿۱۷۰﴾

আর যেসব লোক সুদৃঢ়ভাবে কিতাবকে আকড়ে থাকে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে-নিশ্চয়ই আমি বিনষ্ট করব না সৎকর্মীদের সওয়াব।


وَ اِذۡ نَتَقۡنَا الۡجَبَلَ فَوۡقَہُمۡ کَاَنَّہٗ ظُلَّۃٌ وَّ ظَنُّوۡۤا اَنَّہٗ وَاقِعٌۢ بِہِمۡ ۚ خُذُوۡا مَاۤ اٰتَیۡنٰکُمۡ بِقُوَّۃٍ وَّ اذۡکُرُوۡا مَا فِیۡہِ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۷۱﴾٪

আর যখন আমি তুলে ধরলাম পাহাড়কে তাদের উপর সামিয়ানার মত এবং তারা ভয় করতে লাগল যে, সেটি তাদের উপর পড়বে, তখন আমি বললাম, ধর, যা আমি তোমাদের দিয়েছি দৃঢ়ভাবে এবং স্মরণ রেখো যা তাতে রয়েছে, যেন তোমরা বাঁচতে পার।


وَ اِذۡ اَخَذَ رَبُّکَ مِنۡۢ بَنِیۡۤ اٰدَمَ مِنۡ ظُهُوۡرِهِمۡ ذُرِّیَّتَهُمۡ وَ اَشۡهَدَهُمۡ عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ ۚ اَلَسۡتُ بِرَبِّکُمۡ ؕ قَالُوۡا بَلٰی ۚۛ شَهِدۡنَا ۚۛ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اِنَّا کُنَّا عَنۡ هٰذَا غٰفِلِیۡنَ ﴿۱۷۲﴾ۙ

আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই? তারা বলল, অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি। আবার না কিয়ামতের দিন বলতে শুরু কর যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।


اَوۡ تَقُوۡلُوۡۤا اِنَّمَاۤ اَشۡرَکَ اٰبَآؤُنَا مِنۡ قَبۡلُ وَ کُنَّا ذُرِّیَّۃً مِّنۡۢ بَعۡدِۡهِمْ ۚ اَفَتُہۡلِکُنَا بِمَا فَعَلَ الۡمُبۡطِلُوۡنَ ﴿۱۷۳﴾

অথবা বলতে শুরু কর যে, অংশীদারিত্বের প্রথা তো আমাদের বাপ-দাদারা উদ্ভাবন করেছিল আমাদের পূর্বেই । আর আমরা হলাম তাদের পশ্চাৎবর্তী, সন্তান-সন্ততি। তাহলে কি সে কর্মের জন্য আমাদের ধ্বংস করবেন, যা পথভ্রষ্টরা করেছে।


وَ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ وَ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۱۷۴﴾

বস্তুত এভাবে আমি বিষয়সমূহ সবিস্তারে বর্ণনা করি, যাতে তারা ফিরে আসে।


وَ اتۡلُ عَلَیۡہِمۡ نَبَاَ الَّذِیۡۤ اٰتَیۡنٰہُ اٰیٰتِنَا فَانۡسَلَخَ مِنۡہَا فَاَتۡبَعَہُ الشَّیۡطٰنُ فَکَانَ مِنَ الۡغٰوِیۡنَ ﴿۱۷۵﴾

আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন সেই লোকের অবস্থা, যাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তান, ফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে।


وَ لَوۡ شِئۡنَا لَرَفَعۡنٰہُ بِہَا وَ لٰکِنَّہٗۤ اَخۡلَدَ اِلَی الۡاَرۡضِ وَ اتَّبَعَ هَوٰىہُ ۚ فَمَثَلُہٗ کَمَثَلِ الۡکَلۡبِ ۚ اِنۡ تَحۡمِلۡ عَلَیۡہِ یَلۡہَثۡ اَوۡ تَتۡرُکۡہُ یَلۡہَثۡ ؕ ذٰلِکَ مَثَلُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَاقۡصُصِ الۡقَصَصَ لَعَلَّہُمۡ یَتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۱۷۶﴾

অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম সে সকল নিদর্শনসমূহের দৌলতে। কিন্তু সে যে অধ:পতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইল। সুতরাং তার অবস্থা হলো কুকুরের মত; যদি তাকে তাড়া কর তবুও হাপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাপাবে। এ হলো সে সব লোকের উদাহরণ যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার নিদর্শনসমূহকে। অতএব আপনি বিকৃত করুন এসব কাহিনী, যাতে তারা চিন্তা করে।


سَآءَ مَثَلَاۨ الۡقَوۡمُ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ اَنۡفُسَہُمۡ کَانُوۡا یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۱۷۷﴾

তাদের উদাহরণ অতি নিকৃষ্ট, যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াতসমূহকে এবং তারা নিজেদেরই ক্ষতি সাধন করছে।


مَنۡ یَّہۡدِ اللّٰہُ فَہُوَ الۡمُہۡتَدِیۡ ۚ وَ مَنۡ یُّضۡلِلۡ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿۱۷۸﴾

যাকে আল্লাহ পথ দেখাবেন, সে-ই পথপ্রাপ্ত হবে। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করবেন , সে হবে ক্ষতিগ্রস্ত।


وَ لَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَہَنَّمَ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۫ۖ لَہُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَہُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِہَا ؕ اُولٰٓئِکَ کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ هُمۡ اَضَلُّ ؕ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ ﴿۱۷۹﴾

আর আমি সৃষ্টি করেছি দোযখের জন্য বহু জিন ও মানুষ। তাদের অন্তর রয়েছে, তার দ্বারা বিবেচনা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তার দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, তার দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর। তারাই হলো গাফিল শৈথিল্যপরায়ণ।


وَ لِلّٰہِ الۡاَسۡمَآءُ الۡحُسۡنٰی فَادۡعُوۡہُ بِہَا ۪ وَ ذَرُوا الَّذِیۡنَ یُلۡحِدُوۡنَ فِیۡۤ اَسۡمَآئِہٖ ؕ سَیُجۡزَوۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۸۰﴾

আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তার ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে।


وَ مِمَّنۡ خَلَقۡنَاۤ اُمَّۃٌ یَّہۡدُوۡنَ بِالۡحَقِّ وَ بِہٖ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۸۱﴾٪

আর যাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের মধ্যে এমন এক দল রয়েছে যারা সত্য পথ দেখায় এবং সে অনুযায়ী ন্যায়বিচার করে।


وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا سَنَسۡتَدۡرِجُہُمۡ مِّنۡ حَیۡثُ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۲﴾ۚۖ

বস্তুত যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াতসমূহকে, আমি তাদেরকে ক্রমান্বয়ে পাকড়াও করব এমন জায়গা থেকে, যার সম্পর্কে তাদের ধারণাও হবে না।


وَ اُمۡلِیۡ لَہُمۡ ؕ۟ اِنَّ کَیۡدِیۡ مَتِیۡنٌ ﴿۱۸۳﴾

বস্তুত আমি তাদেরকে চিল দিয়ে থাকি। নি:সন্দেহে আমার কৌশল অতি পাকা।


اَوَ لَمۡ یَتَفَکَّرُوۡا مَا بِصَاحِبِہِمۡ مِّنۡ جِنَّۃٍ ؕ اِنۡ هُوَ اِلَّا نَذِیۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۸۴﴾

তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, তাদের সঙ্গী লোকটির মস্তিকে কোন বিকৃতি নেই ? তিনি তো ভীতি প্রদর্শনকারী প্রকৃষ্টভাবে।


اَوَ لَمۡ یَنۡظُرُوۡا فِیۡ مَلَکُوۡتِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا خَلَقَ اللّٰہُ مِنۡ شَیۡءٍ ۙ وَّ اَنۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ قَدِ اقۡتَرَبَ اَجَلُہُمۡ ۚ فَبِاَیِّ حَدِیۡثٍۭ بَعۡدَہٗ یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾

তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজ্য সম্পর্কে এবং যা কিছু সৃষ্টি করেছে আল্লাহ তা’আলা বস্তু সামগ্রী থেকে এবং এ ব্যাপারে যে, তাদের সাথে কৃত ওয়াদার সময় নিকটবর্তী হয়ে এসেছে ? বস্তুত এরপর কিসের উপর ঈমান আনবে।


مَنۡ یُّضۡلِلِ اللّٰہُ فَلَا هَادِیَ لَہٗ ؕ وَ یَذَرُهُمۡ فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ﴿۱۸۶﴾

আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাপ কোন পথপ্রদর্শক নেই। আর আল্লাহ তাদেরকে তাদের দুষ্টামিতে মত্ত অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে রাখেন।


یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ السَّاعَۃِ اَیَّانَ مُرۡسٰہَا ؕ قُلۡ اِنَّمَا عِلۡمُہَا عِنۡدَ رَبِّیۡ ۚ لَا یُجَلِّیۡہَا لِوَقۡتِہَاۤ اِلَّا هُوَ ؕۘؔ ثَقُلَتۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ لَا تَاۡتِیۡکُمۡ اِلَّا بَغۡتَۃً ؕ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ کَاَنَّکَ حَفِیٌّ عَنۡہَا ؕ قُلۡ اِنَّمَا عِلۡمُہَا عِنۡدَ اللّٰہِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۷﴾

আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে ? বলে দিন-এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে । আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়। যখন তা তোমাদের উপর অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকট রয়েছে। কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না।


قُلۡ لَّاۤ اَمۡلِکُ لِنَفۡسِیۡ نَفۡعًا وَّ لَا ضَرًّا اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ کُنۡتُ اَعۡلَمُ الۡغَیۡبَ لَاسۡتَکۡثَرۡتُ مِنَ الۡخَیۡرِۚۖۛ وَ مَا مَسَّنِیَ السُّوۡٓءُ ۚۛ اِنۡ اَنَا اِلَّا نَذِیۡرٌ وَّ بَشِیۡرٌ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۸۸﴾٪

আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়েবের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম। ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতিপ্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।


هُوَ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ وَّاحِدَۃٍ وَّ جَعَلَ مِنۡہَا زَوۡجَہَا لِیَسۡکُنَ اِلَیۡہَا ۚ فَلَمَّا تَغَشّٰہَا حَمَلَتۡ حَمۡلًا خَفِیۡفًا فَمَرَّتۡ بِہٖ ۚ فَلَمَّاۤ اَثۡقَلَتۡ دَّعَوَا اللّٰہَ رَبَّہُمَا لَئِنۡ اٰتَیۡتَنَا صَالِحًا لَّنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۱۸۹﴾

তিনিই সেই সত্তা, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র সত্তা থেকে আর তা থেকেই তৈরি করেছেন তার জোড়া, যাতে তার কাছে স্বস্তি পেতে পারে। অত:পর পুরুষ যখন নারীকে আবৃত করল, তখন সে গর্ভবতী হলো; অতি হালকা গর্ত। সে তাই নিয়ে চলাফেরা করতে থাকলো। তারপর যখন বোঝা হয়ে গেল, তখন উভয়েই আল্লাহকে ডাকল যিনি তাদের পালনকর্তা যে, তুমি যদি আমাদেরকে সুস্থ ও ভাল দান কর তবে আমরা তোমার শুকরিয়া আদায় করব।


فَلَمَّاۤ اٰتٰہُمَا صَالِحًا جَعَلَا لَہٗ شُرَکَآءَ فِیۡمَاۤ اٰتٰہُمَا ۚ فَتَعٰلَی اللّٰہُ عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۹۰﴾

অত:পর তাদেরকে যখন সুস্থ ও ভাল দান করা হলো, তখন দানকৃত বিষয় তার অংশীদার তৈরী করতে লাগল। বস্তুত আল্লাহ তাদের শরীক সাব্যস্ত করা থেকে বহু উর্ধ্বে।


اَیُشۡرِکُوۡنَ مَا لَا یَخۡلُقُ شَیۡئًا وَّ هُمۡ یُخۡلَقُوۡنَ ﴿۱۹۱﴾۫ۖ

তারা কি এমন কাউকে শরীক সাব্যস্ত করে যে একটি বস্তও সৃষ্টি করেনি; বরং তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়েছে।


وَ لَا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ لَہُمۡ نَصۡرًا وَّ لَاۤ اَنۡفُسَہُمۡ یَنۡصُرُوۡنَ ﴿۱۹۲﴾

আর তারা না তাদের সাহায্য করতে পারে, না নিজের সাহায্য করতে পারে।


وَ اِنۡ تَدۡعُوۡهُمۡ اِلَی الۡہُدٰی لَا یَتَّبِعُوۡکُمۡ ؕ سَوَآءٌ عَلَیۡکُمۡ اَدَعَوۡتُمُوۡهُمۡ اَمۡ اَنۡتُمۡ صَامِتُوۡنَ ﴿۱۹۳﴾

আর তোমরা যদি তাদেরকে আহ্বান কর সুপথের দিকে, তবে তারা তোমাদের আহ্বান অনুযায়ী চলবে না। তাদেরকে আহ্বান জানানো কিংবা নীরব থাকা দুই-ই তোমাদের জন্য সমান।


اِنَّ الَّذِیۡنَ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ عِبَادٌ اَمۡثَالُکُمۡ فَادۡعُوۡهُمۡ فَلۡیَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۹۴﴾

আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমরা যাদেরকে ডাক, তারা সবাই তোমাদের মতই বান্দা। অতএব তোমরা যখন তাদেরকে ডাক, তখন তাদের পক্ষেও তো তোমাদের সে ডাক কবুল করা উচিত- যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক ?


اَلَہُمۡ اَرۡجُلٌ یَّمۡشُوۡنَ بِہَاۤ ۫ اَمۡ لَہُمۡ اَیۡدٍ یَّبۡطِشُوۡنَ بِہَاۤ ۫ اَمۡ لَہُمۡ اَعۡیُنٌ یُّبۡصِرُوۡنَ بِہَاۤ ۫ اَمۡ لَہُمۡ اٰذَانٌ یَّسۡمَعُوۡنَ بِہَا ؕ قُلِ ادۡعُوۡا شُرَکَآءَکُمۡ ثُمَّ کِیۡدُوۡنِ فَلَا تُنۡظِرُوۡنِ ﴿۱۹۵﴾

তাদের কি পা আছে যার সাহায্যে তারা চলে? বা তাদের কি হাত আছে যা দ্বারা তারা ধরে? বা তাদের কি চক্ষু আছে যার মাধ্যমে তারা দেখে? অথবা তাদের কি কান আছে যা দ্বারা তারা শুনে? বল, তোমরা তোমাদের শরীকদের ডাক। তারপর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর এবং আমাকে অবকাশ দিয়ো না।


اِنَّ وَلِیَِّۧ اللّٰہُ الَّذِیۡ نَزَّلَ الۡکِتٰبَ ۫ۖ وَ هُوَ یَتَوَلَّی الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۱۹۶﴾

আমার সহায় তো হলেন আল্লাহ , যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। বস্তুত তিনিই সাহায্য করেন সৎকর্মশীল বান্দাদের।


وَ الَّذِیۡنَ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖ لَا یَسۡتَطِیۡعُوۡنَ نَصۡرَکُمۡ وَ لَاۤ اَنۡفُسَہُمۡ یَنۡصُرُوۡنَ ﴿۱۹۷﴾

আর তোমরা তাকে বাদ দিয়ে, যাদেরকে ডাক- তারা না তোমাদের কোন সাহায্য করতে পারবে, না নিজেদের আত্মরক্ষা করতে পারবে।


وَ اِنۡ تَدۡعُوۡهُمۡ اِلَی الۡہُدٰی لَا یَسۡمَعُوۡا ؕ وَ تَرٰىہُمۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَیۡکَ وَ هُمۡ لَا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۱۹۸﴾

আর তুমি যদি তাদেরকে সুপথে আহবান কর তবে তারা তা কিছুই শুনবে না। আর তুমি তো তাদেরকে দেখছই তোমার দিকে তাকিয়ে আছে অথচ তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছে না।


خُذِ الۡعَفۡوَ وَ اۡمُرۡ بِالۡعُرۡفِ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۱۹۹﴾

আর ক্ষমা করার অভ্যাস গড়ে তোল, সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খ জাহিলদের থেকে দূরে সরে থাক।


وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۰۰﴾

আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর শরণাপন্ন হও। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।


اِنَّ الَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا اِذَا مَسَّہُمۡ طٰٓئِفٌ مِّنَ الشَّیۡطٰنِ تَذَکَّرُوۡا فَاِذَا ہُمۡ مُّبۡصِرُوۡنَ ﴿۲۰۱﴾ۚ

যাদের মনে ভয় রয়েছে, তাদের উপর শয়তানের আগমন ঘটার সাথে সাথেই তারা সতর্ক হয়ে যায় এবং তখনই তাদের বিবেচনাশক্তি জাগ্রত হয়ে ওঠে।


وَ اِخۡوَانُہُمۡ یَمُدُّوۡنَہُمۡ فِی الۡغَیِّ ثُمَّ لَا یُقۡصِرُوۡنَ ﴿۲۰۲﴾

পক্ষান্তরে যারা শয়তানের ভাই, তাদেরকে সে ক্রমাগত পথভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যায়। অত:পর তাতে কোন কমতি করে না।


وَ اِذَا قُرِیَٔ الۡقُرۡاٰنُ فَاسۡتَمِعُوۡا لَہٗ وَ اَنۡصِتُوۡا لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۲۰۴﴾

আর যখন আপনি তাদের নিকট কোন নিদর্শন নিয়ে না যান, তখন তারা বলে, আপনি নিজের পক্ষ থেকে কেন অমুকটি নিয়ে আসলেন না, তখন আপনি বলে দিন আমি তো সে মতেই চলি যে হুকুমি আমার নিকট আসে আমার পরওয়ারদিগারের কাছ থেকে। এটা ভাববার বিষয় তোমাদের পরওয়ারদিগারের পক্ষ থেকে এবং হিদায়েত ও রহমত সেই সব লোকের জন্য যারা ঈমান এনেছে।


وَ اذۡکُرۡ رَّبَّکَ فِیۡ نَفۡسِکَ تَضَرُّعًا وَّ خِیۡفَۃً وَّ دُوۡنَ الۡجَہۡرِ مِنَ الۡقَوۡلِ بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَالِ وَ لَا تَکُنۡ مِّنَ الۡغٰفِلِیۡنَ ﴿۲۰۵﴾

আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়।


اِنَّ الَّذِیۡنَ عِنۡدَ رَبِّکَ لَا یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ عَنۡ عِبَادَتِہٖ وَ یُسَبِّحُوۡنَہٗ وَ لَہٗ یَسۡجُدُوۡنَ ﴿۲۰۶﴾

আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় প্রতিপালককে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্তস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম; সকালে ও সন্ধায়। আর বে-খবর থেকো না।


وَ اِذَا قُرِیَٔ الۡقُرۡاٰنُ فَاسۡتَمِعُوۡا لَہٗ وَ اَنۡصِتُوۡا لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۲۰۴﴾

নিশ্চয় যারা তোমার পরওয়ারদিগারের সান্নিধ্যে রয়েছেন, তারা তার বন্দেগীর ব্যাপারে অহংকার করেন না এবং স্মরণ করেন তার পবিত্র সত্তাকে, আর তাকেই সিজদা করেন।