2

আল বাকারাহ

আয়াত সংখ্যা 286

0.00

1:27:21

الٓمَّٓ

আলিফ - লাম-মীম।


ذٰلِكَ الْکِتٰبُ لَا رَیْبَ ۚۖۛ فِیْهِ ۚۛ هُدًی لِّلْمُتَّقِیْنَ ۙ﴿۲﴾

ইহা এমন একটি কিতাব, যার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। ইহা পথ প্রদর্শনকারী পরহেজগারদের জন্য,


الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِالْغَیْبِ وَیُقِیْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَمِمَّا رَزَقْنٰهُمْ یُنْفِقُوْنَ ۙ﴿۳﴾

যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে| আর আমি তাদের যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।


وَالَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِمَاۤ اُ نۡزِلَ اِلَیۡکَ وَمَاۤ اُ نۡزِلَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ  و َبِالۡاٰخِرَۃِ هُمۡ یُوۡقِنُوۡنَ ؕ﴿۴﴾

এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।


اُولٰٓئِكَ عَلٰی هُدًی مِّنْ رَّبِّهِمْ* وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ ﴿۵﴾

তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম।


اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا سَوَآ ءٌ عَلَیْهِمْ ءَاَ نْذَرْتَهُمْ اَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ ﴿۶﴾

নিশ্চই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কোন কিছুই যায় আসে না, তারা ঈমান আনবে না।


خَتَمَ اللهُ عَلٰی قُلُوْبِهِمْ وَعَلٰی سَمْعِهِمْ ؕ وَعَلٰۤی اَبْصَارِهِمْ غِشَاوَۃٌ ۫ وَّلَهُمْ عَذَابٌ عَظِیْمٌ ۠﴿۷﴾

আল্লাহ্ তাদের অন্তকরণ এবং কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন। আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।


وَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللهِ وَ بِالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِیْنَ ۘ﴿۸﴾

আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ্ এবং পরকালের প্রতি ঈমান এনেছি অথচ তারা মুমিন নয়।


یُخٰدِعُوۡنَ اللّٰهَ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ۚ وَ مَا یَخۡدَعُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَهُمۡ وَ مَا یَشۡعُرُوۡنَ ؕ﴿۹﴾

আল্লাহ্ এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে ধোঁকা দেয় অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না। কিন্তু তারা তা অনুভব করতে পারে না।


فِیْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ ۙ فَزَادَهُمُ اللهُ مَرَضًا ۚ وَلَهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌۢ ۬ۙ بِمَا کَانُوْا یَکْذِبُوْنَ ﴿۱۰﴾

তাদের অন্তরে রয়েছে রোগ আল্লাহ্ তাদের রোগ আরও বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। আরও তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রয়েছে, যেহেতু তারা মিথ্যা বলল।


وَاِذَا قِیۡلَ لَہُمۡ لَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ  قَالُوۡۤا اِنَّمَا نَحۡنُ مُصۡلِحُوۡنَ ﴿۱۱﴾

তাদের যখন বলা হয় তোমরা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করো না, তারা বলে আমরা তো শান্তি স্থাপনকারী।


اَلَاۤ اِنَّهُمۡ هُمُ الۡمُفۡسِدُوۡنَ وَ لٰکِنۡ لَّا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۲

মনে রেখো, তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।


وَاِذَا قِیۡلَ لَہُمۡ اٰمِنُوۡا کَمَاۤ اٰمَنَ النَّاسُ قَالُوۡۤا اَ نُؤۡمِنُ کَمَاۤ اٰمَنَ السُّفَہَآءُؕ ا َلَاۤ اِنَّہُمۡ هُمُ السُّفَہَآءُ وَلٰکِنۡ لَّا یَعۡلَمُوۡنَ﴿۱۳﴾

আর যখন তাদের বলা হয় যে, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে আমরাও কি ঈমান আনবো বোকাদের মত! মনে রেখো প্রকৃত পক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বুঝে না।


وَ اِذَا لَقُوا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا قَالُوۡۤا اٰمَنَّا ۚۖ وَ اِذَا خَلَوۡا اِلٰی شَیٰطِیۡنِهِمۡ ۙ قَالُوۡۤا اِنَّا مَعَکُمۡ ۙ اِنَّمَا نَحۡنُ مُسۡتَهۡزِءُوۡنَ ﴿۱۴﴾

আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে, তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন শয়তানের সাথে একান্ত সাক্ষাত করে, তখন বলে, আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি - আমরা তো (মুসলমানদের সাথে) উপহাস করি মাত্র।


اَللهُ یَسْتَهْزِئُ بِهِمْ وَیَمُدُّهُمْ فِیْ طُغْیَانِهِمْ یَعْمَهُوْنَ ﴿۱۵﴾

বরং আল্লাহ্ই তাদের সাথে উপহাস করেন। আর তাদেরকে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন যেনো তারা নিজেদের অহংকার ও কুমতলবে হয়রান ও পেরেশান থাকে।


اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰی ۪ فَمَا رَبِحَتْ تِّجَارَتُهُمْ وَمَا کَانُوْا مُهْتَدِیْنَ ﴿۱۶﴾

তারা সে সমস্ত লোক, যারা হেদায়াতের বিনিময় গোমরাহী খরিদ করে। বস্তুতঃ তারা তাদের এ ব্যবসায় লাভবান হতে পারেনি এবং তারা হেদায়াতও লাভ করতে পারেনি।


﴾ مَثَلُهُمۡ کَمَثَلِ الَّذِی اسۡتَوۡقَدَ نَارًا ۚ فَلَمَّاۤ اَضَآءَتۡ مَا حَوۡلَهٗ ذَهَبَ اللّٰهُ بِنُوۡرِهِمۡ وَ تَرَکَهُمۡ فِیۡ ظُلُمٰتٍ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ ﴿۱۷

তাদের অবস্থা সে ব্যক্তির মত, যে লোক কোথাও আগুন লাগালো এবং তার চার দিককার সব কিছুকে যখন আগুন স্পষ্ট করে তুললো, ঠিক তখনি আল্লাহ তার চারদিকের আলো উঠিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারে ছেড়ে দিলেন। ফলে তারা কিছুই দেখতে পায় না।


صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْیٌ فَهُمْ لَا یَرْجِعُوْنَ ﴿ۙ۱۸﴾

তারা বধির মুখ ও অন্ধ। সুতরাং তারা ফিরে আসবে না।


اَوۡ کَصَیِّبٍ مِّنَ السَّمَآءِ فِیۡهِ ظُلُمٰتٌ وَّ رَعۡدٌ وَّ بَرۡقٌ ۚ یَجۡعَلُوۡنَ اَصَابِعَهُمۡ فِیۡۤ اٰذَانِهِمۡ مِّنَ الصَّوَاعِقِ حَذَرَ الۡمَوۡتِ ؕ وَ اللّٰهُ مُحِیۡطٌۢ بِالۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۱۹﴾

আর তাদের উদাহরণ সে সব লোকের মত যারা দুর্যোগপূর্ণ ঝড়ো রাতে পথ চলে, যাতে থাকে আঁধার, গর্জন ও বিদ্যুৎচমক। মৃত্যুর ভয়ে গর্জনের সময় কানে আঙ্গুল দিয়ে রক্ষা পেতে চায়। অথচ সমস্ত কাফেরই আল্লাহ কর্তৃক পরিবেষ্টিত।


یَکَادُ الۡبَرۡقُ یَخۡطَفُ اَبۡصَارَهُمۡ ؕ کُلَّمَاۤ اَضَآءَ لَهُمۡ مَّشَوۡا فِیۡهِ ٭ۙ وَ اِذَاۤ اَظۡلَمَ عَلَیۡهِمۡ قَامُوۡا ؕ وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰهُ لَذَهَبَ بِسَمۡعِهِمۡ وَ اَبۡصَارِهِمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۲۰﴾

বিদ্যুৎতালোকে যখন সামান্য আলোকিত হয়, তখন কিছুটা পথ চলে। আবার যখন অন্ধকার হয়ে যায়, তখন ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকে। যদি আল্লাহ ইচ্ছে করেন তাহলে তাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নিতে পারেন। আল্লাহ যাবতীয় বিষয়ের উপর সর্বময় ক্ষমতাশীল।


یٰۤا َیُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوْا رَبَّكُمُ الَّذِیْ خَلَقَكُمْ وَالَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ ﴿ۙ۲۱﴾

হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেজগারী অর্জন করতে পারবে।


الَّذِیْ جَعَلَ لَكُمُ الْاَرْضَ فِرَاشًا وَّا ۪لسَّمَٓاءَ بِنَآءً وَّاَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَاَخْرَجَ بِهٖ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزْقًا لَّكُمْ ۚ فَلَا تَجْعَلُوْا لِلّٰهِ اَنْدَادًا وَّ اَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ﴿۲۲﴾

যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য জমিনকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিযেছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব আল্লাহর সাথে তোমরা কাউকে সমকক্ষ করো না বস্তুতঃ তোমরা এসব জান।


وَ اِنْ كُنْتُمْ فِیْ رَیْبٍ مِّمَّا نَزَّلْنَا عَلٰی عَبْدِنَا فَاْتُوْا بِسُوْرَۃٍ مِّنْ مِّثْلِهٖ ۪ وَادْعُوْا شُهَدَآءَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴿۲۳﴾

এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে আসো। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকেও সঙ্গে নাও এক আল্লাহকে ছাড়া যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।


فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا وَلَنْ تَفْعَلُوْا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِیْ وَقُوْدُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَۃُ ۚۖ اُعِدَّتْ لِلْکٰفِرِیْنَ ﴿۲۴﴾

আর যদি তা না পার-অবশ্যই তা তোমরা কখনো পারবে না, তাহলে ভয় কর সে আগুন কে , যার জ্বালানি হবে মানুষ এবং পাথর। যা প্রস্তুত করা হযেছে কাফেরদের জন্য।


وَبَشِّرِ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اَنَّ لَهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ ؕ كُلَّمَا رُزِقُوْا مِنْهَا مِنْ ثَمَرَۃٍ رِّزْقًا ۙ قَالُوْا هٰذَا الَّذِیْ رُزِقْنَا مِنْ قَبْلُ ۙ وَاُتُوْابِهٖ مُتَشَابِهًا ؕ وَلَهُمْ فِیْهَاۤ اَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَۃٌ ٭ۙ وَّهُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۲۵﴾

আর হে নবী, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন জান্নাতের সুসংবাদ দিন, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনি তাদেরকে তা থেকে রিজিক হিসাবে কোন ফল দেয়া হবে, তখনি তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর তারা সেখানে অনন্তকাল অবস্থান করবে।


اِنَّ اللهَ لَا یَسْتَحْیٖۤ اَنْ یَّضْرِبَ مَثَلًا مَّا بَعُوْضَۃً فَمَا فَوْقَهَا ؕ فَاَمَّا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا فَیَعْلَمُوْنَ اَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّهِمْ ۚ وَاَمَّا الَّذِیْنَ کَفَرُوْا فَیَقُوْلُوْنَ مَاذَٓا اَرَادَ اللهُ بِهٰذَا مَثَلًا ۘ یُضِلُّ بِهٖ کَثِیْرًا ۙ وَّیَهْدِیْ بِهٖ کَثِیْرًا ؕ وَمَا یُضِلُّ بِهٖۤ اِلَّا الْفٰسِقِیْنَ ﴿ۙ۲۶﴾

আল্লাহপাক নিঃসন্দেহে মশা বা তদুর্ধ্ব বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। যারা মুমিন তারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে যে, তাদের পালনকর্তা কর্তৃক উপস্থাপিত এ উপমা সম্পূর্ণ নির্ভুল ও সঠিক। আর যারা কাফের তারা বলে, এরূপ উপমা উপাস্থাপনে আল্লাহর মতলবই বা কি ছিল। এ দ্বারা আল্লাহ তায়ালা অনেককে বিপথগামী করেন আবার অনেককে সঠিক পথও প্রদর্শন করেন। তিনি অনুরূপ উপমা দ্বারা অসৎ ব্যক্তিবর্গ ভিন্ন কাকেও বিপথগামী করেন না।


الَّذِیْنَ یَنْقُضُوْنَ عَهْدَ اللهِ مِنْۢ بَعْدِ مِیْثَاقِهٖ ۪ وَیَقْطَعُوْنَ مَاۤ اَمَرَ اللهُ بِهٖۤ اَنْ یُّوْصَلَ وَیُفْسِدُوْنَ فِی الْاَرْضِ ؕ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ ﴿۲۷﴾

(বিপথগামী ওরাই) যারা আল্লাহর সঙ্গে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ্ পাক যা অবিচ্ছিন্ন রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন, তা ছিন্ন করে, আর পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টি করে। ওরা যথার্থই ক্ষতিগ্রস্ত।


کَیْفَ تَكْفُرُوْنَ بِاللهِ وَكُنْتُمْ اَمْوَاتًا فَاَحْیَاكُمْ ۚ ثُمَّ یُمِیْتُكُمْ ثُمَّ یُحْیِیْكُمْ ثُمَّ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ ﴿۲۸﴾

কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফুরি অবলম্বন করছ ? অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ। অতএব তিনি তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন আবার মৃত্যু দান করবেন। পুনরায় তোমাদেরকে জীবন দান করবেন। অতঃপর তারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে।


هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ لَكُمْ مَّا فِی الْاَرْضِ جَمِیْعًا ٭ ثُمَّ اسْتَوٰۤی اِلَی السَّمَٓاءِ فَسَوّٰىهُنَّ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ ؕ وَهُوَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ ﴿۠۲۹﴾

তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য-যা কিছু জমিনে রয়েছে তা। তারপর তিনি মনোসংযোগ করেছেন আকাশের প্রতি। বস্তুতঃ তিনি তৈরী করছেন সাত আসমান। আর আল্লাহ্ সব বিষয়ে অবহিত।


وَ اِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلٰٓئِکَةِ اِنِّیْ جَاعِلٌ فِی الْاَرْضِ خَلِیْفَۃً ؕ قَالُوْۤا اَتَجْعَلُ فِیْهَا مَنْ یُّفْسِدُ فِیْهَا وَیَسْفِكُ الدِّمَآءَ ۚ وَنَحْنُ نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَ ؕ قَالَ اِنِّیْۤ اَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ ﴿۳۰﴾

আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি তখন ফেরেশতারা বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে, যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে ? অথচ আমরা প্রতিনিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার প্রবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না।


وَ عَلَّمَ اٰدَمَ الۡاَسۡمَآءَ کُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمۡ عَلَی الۡمَلٰٓئِکَۃِ ۙ فَقَالَ اَنۡۢبِـُٔوۡنِیۡ بِاَسۡمَآءِ هٰۤؤُلَآءِ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۳۱﴾

আর তিনি আদম (আ.) কে সমস্ত বস্তু সামগ্রীর নাম শিক্ষা দিলেন। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সমাগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে পেশ করলেন এবং বললেন তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।


قَالُوْا سُبْحٰنَكَ لَا عِلْمَ لَنَاۤ اِلَّا مَا عَلَّمْتَنَا ؕ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَلِیْمُ الْحَکِیْمُ ﴿۳۲﴾

তারা বলল আপনি মহা পবিত্র। আপনি আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছেন তা ছাড়া আমরা আর কিছুই জানি না নিশ্চয় আপনি প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।


قَالَ یٰۤاٰدَمُ اَنْۢبِئْهُمْ بِاَسْمَآئِهِمْ ۚ فَلَمَّاۤ اَنْۢبَاَهُمْ بِاَسْمَآئِهِمْ ۙ قَالَ اَلَمْ اَقُلْ لَّكُمْ اِنِّیْۤ اَعْلَمُ غَیْبَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ۙ وَاَعْلَمُ مَا تُبْدُوْنَ وَمَا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ ﴿۳۳﴾

তিনি বললেন, হে আদম, আপনি ফেরেশতাদের এসবের নামসমূহ বলে দেন। যখন তিনি তাদেরকে সে সবের নাম বলে দিলেন, তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান এবং যমিনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভালো করেই অবগত রয়েছি? এবং সে সব বিষয়ও জানি যা, তোমরা গোপন কর আর যা তোমরা প্রকাশ কর।


وَ اِذْ قُلْنَا لِلْمَلٰٓئِكَةِ اسْجُدُوْا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوْۤا اِلَّاۤ اِبْلِیْسَ ؕ اَبٰی وَاسْتَكْبَرَ ٭۫ وَکَانَ مِنَ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۳۴﴾

যখন আমি হযরত (আ.) কে সিজদা করার জন্য ফেরেশতাদের নির্দেশ দিলাম, তখন ইবলিশ ব্যতীত সবাই সিজদা করল। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।


وَقُلْنَا یٰۤاٰدَمُ اسْكُنْ اَنْتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ وَكُلَا مِنْهَا رَغَدًا حَیْثُ شِئْتُمَا ۪ وَلَا تَقْرَبَا هٰذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكُوْنَا مِنَ الظّٰلِمِیْنَ ﴿۳۵﴾

তিনি বলেন, আমি বললাম হে, আদম তুমি আর তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর, এবং এর যেখান থেকে ইচ্ছে প্রাণ ভরে খাও। কিন্তু এই গাছের কাছেও যেও না। অন্যথায় তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।


فَاَزَلَّهُمَا الشَّیْطٰنُ عَنْهَا فَاَخْرَجَهُمَا مِمَّا کَانَا فِیْهِ ۪ وَقُلْنَا اهْبِطُوْا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ ۚ وَلَكُمْ فِی الْاَرْضِ مُسْتَقَرٌّ وَّمَتَاعٌ اِلٰی حِیْنٍ ﴿۳۶﴾

কিন্তু শয়তান তাদেরকে তা থেকে পদস্খলিত করে দিল এবং তাঁরা যার ভেতর ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে ছাড়ল। আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও, তোমরা একে অন্যের দুশমন হবে এবং তোমাদেরকে কিছুকাল সেখানে অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।


فَتَلَقّٰۤی اٰدَمُ مِنْ رَّبِّهٖ کَلِمٰتٍ فَتَابَ عَلَیْهِ ؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ ﴿۳۷﴾

অতঃপর আদম (আ.) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ্ পাক তাঁর প্রতি ( করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয় তিনি মহাক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।


قُلْنَا اهْبِطُوْا مِنْهَا جَمِیْعًا ۚ فَاِمَّا یَاْتِیَنَّكُمْ مِّنِّیْ هُدًی فَمَنْ تَبِعَ هُدَایَ فَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۳۸﴾

আমি আদেশ করলাম, তোমরা সবাই নীচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়াত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার হেদায়াত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না ( কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে।


وَالَّذِیْنَ کَفَرُوْا وَکَذَّبُوْا بِاٰیٰتِنَاۤ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۠۳۹﴾

আর যে লোক অস্বীকার করবে আর আমার নিদর্শগুলো মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রায়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অনন্তকাল সেখানে থাকবে।


یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اذْكُرُوْا نِعْمَتِیَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتُ عَلَیْكُمْ وَاَوْفُوْا بِعَهْدِیْۤ اُوْفِ بِعَهْدِكُمْ ۚ وَ اِیَّایَ فَارْهَبُوْنِ ﴿۴۰﴾

হে বনী ঈসরাইল! তোমরা স্মরণ কর আমার সেই অনুগ্রহ যা আমি তোমাদের প্রতি করেছি, এবং তোমরা পূরণ কর আমার সাথে কৃত প্রতিজ্ঞা তাহলে আমি তোমদেরকে প্রদত্ত ওয়াদা পূরণ করব। আর ভয় কর আমাকেই।


وَاٰمِنُوْا بِمَاۤ اَنْزَلْتُ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمْ وَلَا تَكُوْنُوْۤا اَوَّلَ کَافِرٍۭ بِهٖ ۪ وَلَا تَشْتَرُوْا بِاٰیٰتِیْ ثَمَنًا قَلِیْلًا ۫ وَّ اِیَّایَ فَاتَّقُوْنِ ﴿۴۱﴾

আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবক্তা হিসাবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর আমার আয়াতের অল্প মূল্য দিও না। এবং আমার আযাব থেকে বাঁচ।


وَلَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوا الْحَقَّ وَاَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ﴿۴۲﴾

তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিওনা এবং জানা সত্ত্বেও সত্যকে তোমরা গোপন করো না।


وَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَ وَارْکَعُوْا مَعَ الرّٰکِعِیْنَ ﴿۴۳﴾

আর নামাজ কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং নামাজে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।


اَتَاْمُرُوْنَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَاَنْتُمْ تَتْلُوْنَ الْکِتٰبَ ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ ﴿۴۴﴾

তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভুলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর ? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না ?


وَاسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلٰوةِ ؕ وَ اِنَّهَا لَکَبِیْرَۃٌ اِلَّا عَلَی الْخٰشِعِیْنَ ﴿ۙ۴۵﴾

ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাজের মাধ্যমে। অবশ্যই তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই সম্ভব।


الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوْا رَبِّهِمْ وَاَنَّهُمْ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ ﴿۠۴۶﴾

যারা একথা খেয়াল করে যে, তাদেরকে সম্মুখীন হতে হবে স্বীয় পরওয়ারদেগারের এবং তাঁর দিকেই ফিরে যেতে হবে।


یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اذْكُرُوْا نِعْمَتِیَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتُ عَلَیْكُمْ وَاَنِّیْ فَضَّلْتُكُمْ عَلَی الْعٰلَمِیْنَ ﴿۴۷﴾

হে , ইসরাঈলগন! তোমরা স্মরণ কর আমার অনুগ্রহের কথা, যা আমি তোমাদের উপর করেছি এবং ( স্মরণ কর) সে বিষয়টি যে, আমি তোমাদেরকে উচ্চমর্যাদা দান করেছি সমগ্র বিশ্বের উপর।


وَاتَّقُوْا یَوْمًا لَّا تَجْزِیْ نَفْسٌ عَنْ نَّفْسٍ شَیْئًا وَّلَا یُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَۃٌ وَّلَا یُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَّلَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ ﴿۴۸﴾

আর সে দিনের ভয় কর , যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না।


وَ اِذْ نَجَّیْنٰكُمْ مِّنْ اٰلِ فِرْعَوْنَ یَسُوْمُوْنَكُمْ سُوْٓءَ الْعَذَابِ یُذَبِّحُوْنَ اَبْنَآءَكُمْ وَیَسْتَحْیُوْنَ نِسَآءَكُمْ ؕ وَ فِیْ ذٰلِكُمْ بَلَآ ءٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ عَظِیْمٌ ﴿۴۹﴾

আর স্মরণ কর সে সময়ের কথা, তোমাদেরকে মুক্তিদান করেছি ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে যারা তোমাদের কঠিন শাস্তি দান করত; তোমাদের পুত্র সন্তানদের জবেহ্ করত এবং তোমাদের স্ত্রীদেরকে অব্যাহতি দিত। বস্তুতঃ তাতে পরীক্ষা ছিল তোমাদের পালন কর্তার পক্ষ থেকে মহা পরীক্ষা।|


وَ اِذْ فَرَقْنَا بِكُمُ الْبَحْرَ فَاَنْجَیْنٰكُمْ وَاَغْرَقْنَاۤ اٰلَ فِرْعَوْنَ وَاَنْتُمْ تَنْظُرُوْنَ ﴿۵۰﴾

আর যখন আমি তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিখণ্ডিত করেছি, অতঃপর তোমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছি এবং ডুবিয়ে দিয়েছি ফেরাউনের লোকদেরকে অথচ তোমরা দেখছিলে।


وَ اِذْ وٰعَدْنَا مُوْسٰۤی اَرْبَعِیْنَ لَیْلَۃً ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَاَنْتُمْ ظٰلِمُوْنَ ﴿۵۱﴾

আর যখন আমি মূসার সাথে ওয়াদা করেছি চল্লিশ রাত্রির অতঃপর তোমরা গোবৎস বানিয়ে নিয়েছ মূসার অনুপস্থিতিতে। বস্তুতঃ তোমরা ছিলে যালেম।


ثُمَّ عَفَوْنَا عَنْكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ ﴿۵۲﴾

তারপর আমি তোমাদের তাতেও ক্ষমা করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও।


وَ اِذْ اٰتَیْنَا مُوْسَی الْکِتٰبَ وَالْفُرْقَانَ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ ﴿۵۳﴾

আর (স্মরণ কর) যখন আমি মূসাকে কিতাব এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্য বিধানকারী নির্দেশ দান করেছি, যাতে তোমরা সরল পথ প্রাপ্ত হতে পার।


وَ اِذْ قَالَ مُوْسٰی لِقَوْمِهٖ یٰقَوْمِ اِنَّكُمْ ظَلَمْتُمْ اَنْفُسَكُمْ بِاتِّخَاذِكُمُ الْعِجْلَ فَتُوْبُوْۤا اِلٰی بَارِئِكُمْ فَاقْتُلُوْۤا اَنْفُسَكُمْ ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ عِنْدَ بَارِئِكُمْ ؕ فَتَابَ عَلَیْكُمْ ؕ اِنَّهٗ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ ﴿۵۴﴾

আর মূসা (আ.) যখন তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা তোমাদেরই ক্ষতিসাধন করেছ এই গোবৎস নির্মাণ করে। কাজেই এখন তাওবা কর স্বীয় স্রষ্টার প্রতি এবং নিজ নিজ প্রাণ বিসর্জন দাও। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর তোমাদের স্রষ্টার নিকট। তারপর তোমাদের প্রতি লক্ষ্য করা হল। নিঃসন্দেহে তিনিই ক্ষমাকারী অত্যন্ত মেহেরবান।


وَ اِذْ قُلْتُمْ یٰمُوْسٰی لَنْ نُّؤْمِنَ لَكَ حَتّٰی نَرَی اللهَ جَهْرَۃً فَاَخَذَتْكُمُ الصّٰعِقَۃُ وَاَنْتُمْ تَنْظُرُوْنَ ﴿۵۵﴾

আর যখন তোমরা বললে, হে মূসা, কস্মিনকালেও আমরা তোমাকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্য দেখতে পাব। বস্তুতঃ তোমাদেরকে পাকড়াও করল বিদ্যুৎ। অথচ তোমরা প্রত্যক্ষ করছিলে।


ثُمَّ بَعَثْنٰكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَوْتِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ ﴿۵۶﴾

তারপর মরে যাওয়ার পর আমি তোমাদেরকে তুলে দাঁড় করেছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও।


وَظَلَّلْنَا عَلَیْكُمُ الْغَمَامَ وَاَنْزَلْنَا عَلَیْكُمُ الْمَنَّ وَالسَّلْوٰی ؕ كُلُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْ ؕ وَمَا ظَلَمُوْنَا وَلٰکِنْ کَانُوْۤا اَنْفُسَهُمْ یَظْلِمُوْنَ ﴿۵۷﴾

আর আমি তোমার উপর ছায়া দান করেছি মেঘমালার দ্বারা এবং তোমাদের জন্য খাবার পাঠিয়েছি মান্না ও সালওয়া। সে সব পবিত্র বস্তু তোমরা ভক্ষণ কর, যা আমি তোমাদের দান করেছি। বস্তুতঃ তারা আমার কোন ক্ষতি করতে পারেনি, বরং নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি সাধন করেছে।


وَ اِذْ قُلْنَا ادْخُلُوْا هٰذِهِ الْقَرْیَةَ فَكُلُوْا مِنْهَا حَیْثُ شِئْتُمْ رَغَدًا وَّادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَّقُوْلُوْا حِطَّۃٌ نَّغْفِرْلَكُمْ خَطٰیٰكُمْ ؕ وَسَنَزِیْدُ الْمُحْسِنِیْنَ ﴿۵۸﴾

আর আমি যখন বললাম, তোমরা প্রবেশ কর এ নগরীতে এবং এতে যেখানে খুশি খেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে বিচরণ করতে থাক এবং দরজার ভিতর দিয়ে প্রবেশ করার সময় সেজদা করে ঢুক, আর বলতে থাক - আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও তাহলে আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব এবং সৎকর্মশীলদেরকে অতিরিক্ত দানও করব।


فَبَدَّلَ الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا قَوْلًا غَیْرَ الَّذِیْ قِیْلَ لَهُمْ فَاَنْزَلْنَا عَلَی الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا رِجْزًا مِّنَ السَّمَآءِ بِمَا کَانُوْا یَفْسُقُوْنَ ﴿۠۵۹﴾

অতঃপর যালেমরা কথা পাল্টে দিয়েছে যা, কিছু তাদেরকে বলে দেয়া হয়েছিল তা থেকে। তারপর আমি অবতীর্ণ করেছি যালেমদের উপর আযাব আসমান থেকে নির্দেশ লঙ্ঘন করার কারণে।


وَ اِذِ اسْتَسْقٰی مُوْسٰی لِقَوْمِهٖ فَقُلْنَا اضْرِبْ بِّعَصَاكَ الْحَجَرَ ؕ فَانْفَجَرَتْ مِنْهُ اثْنَتَا عَشْرَةَ عَیْنًا ؕ قَدْ عَلِمَ كُلُّ اُنَاسٍ مَّشْرَبَهُمْ ؕ كُلُوْا وَاشْرَبُوْا مِنْ رِّزْقِ اللهِ وَلَا تَعْثَوْا فِی الْاَرْضِ مُفْسِدِیْنَ ﴿۶۰﴾

আর মুসা (আ.) যখন নিজ জাতির জন্য পানি চাইল, তখন আমি বললাম,স্বীয় যষ্ঠির দ্বারা আঘাত কর পাথরের উপরে। অতঃপর তা থেকে বেরিয়ে এল বারটি প্রস্রবণ। তাদের সব গোত্রই চিনে নিল নিজ নিজ ঘাট। আল্লাহর দেয়া রিযিক খাও , পান কর আর দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে বেড়িও না।


وَ اِذْ قُلْتُمْ یٰمُوْسٰی لَنْ نَّصْبِرَ عَلٰی طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُخْرِجْ لَنَا مِمَّا تُنْۢبِتُ الْاَرْضُ مِنْۢ بَقْلِهَا وَقِثَّآئِهَا وَفُوْمِهَا وَعَدَسِهَا وَبَصَلِهَا ؕ قَالَ اَتَسْتَبْدِلُوْنَ الَّذِیْ هُوَ اَدْنٰی بِالَّذِیْ هُوَ خَیْرٌ ؕ اِهْبِطُوْا مِصْرًا فَاِنَّ لَكُمْ مَّا سَاَلْتُمْ ؕ وَضُرِبَتْ عَلَیْهِمُ الذِّلَّۃُ وَالْمَسْکَنَۃُ ٭ وَبَآءُوْ بِغَضَبٍ مِّنَ اللهِ ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ کَانُوْا یَکْفُرُوْنَ بِاٰیٰتِ اللهِ وَیَقْتُلُوْنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیْرِ الْحَقِّ ؕ ذٰلِكَ بِمَا عَصَوْا وَّکَانُوْا یَعْتَدُوْنَ ﴿۠۶۱﴾

আর তোমরা যখন বললে, হে মূসা, আমরা একই ধরনের খাদ্য-দ্রব্যে কখনো ধৈর্যধারণ করব না। কাজেই তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, তিনি যেনো আমাদের এমন বস্তুসামগ্রী দান করেন, যা জমিনে উৎপন্ন হয়, তরকারি, কাকড়ী, গম, মসুরি, পেঁয়াজ ইত্যাদি। মূসা (আ.) বললেন, তোমরা কি এমন বস্তু নিতে চাও যা নিকৃষ্ট সে বস্তুর পরিবর্তে যা উত্তম ? তোমরা কোন নগরীতে উপনীত হও, তাহলেই পাবে যা তোমরা কামনা করছ। আর তাদের উপর আরোপ করা হল লাঞ্ছনা ও পরমুখাপেক্ষীতা। তারা আল্লাহর রোষানলে পতিত হয়ে ঘুরতে থাকল। এমন হলো এজন্য যে, তারা আল্লাহর বিধি-বিধান মানতো না এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। তার কারণ তারা ছিল নাফরমান সীমালঙ্ঘনকারী।


اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِیْنَ هَادُوْا وَالنَّصٰرٰی وَالصّٰبِئِیْنَ مَنْ اٰمَنَ بِاللهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَعَمِلَ صَالِحًا فَلَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ۪ۚ وَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۶۲﴾

নিঃসন্দেহে যারা মুসলমান হয়েছে এবং যারা ইহুদী, নাসারা ও সাবেঈন, ( তাদের মধ্য থেকে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামত দিবসের প্রতি এবং সৎকাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে তার সওয়াব তাদের পালনকর্তার কাছে। আর তাদের কোন ভয়-ভীতি নেই, তারা দুঃখীতও হবে না।


وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّوْرَ ؕ خُذُوْامَاۤ اٰتَیْنٰكُمْ بِقُوَّۃٍ وَّاذْكُرُوْا مَا فِیْهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ ﴿۶۳﴾

আর আমি যখন তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তূর পর্বতকে তোমাদের মাথার উপর তুলে ধরেছিলাম এই বলে যে, তোমাদেরকে যে কিতাব দেয়া হয়েছে তাকে ধর সুদৃঢ়ভাবে এবং এতে যা কিছু রয়েছে তা মনে রেখো যাতে তোমরা ভয় কর।


ثُمَّ تَوَلَّیْتُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ ۚ فَلَوْ لَا فَضْلُ اللهِ عَلَیْكُمْ وَرَحْمَتُهٗ لَكُنْتُمْ مِّنَ الْخٰسِرِیْنَ ﴿۶۴﴾

তারপরেও তোমরা তা থেকে ফিরে গেছ। কাজেই আল্লাহর অনুগ্রহ ও মেহেরবানী যদি তোমাদের উপর না থাকত, অবশ্যই তোমরা ধ্বংস হয়ে যেতে।


وَلَقَدْ عَلِمْتُمُ الَّذِیْنَ اعْتَدَوْا مِنْكُمْ فِی السَّبْتِ فَقُلْنَا لَهُمْ كُوْنُوْا قِرَدَۃً خٰسِئِیْنَ ﴿ۚ۶۵﴾

তোমরা তাদেরকে ভালোভাবে জেনেছ,যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করেছিল। আমি বলেছিলাম তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও।


فَجَعَلْنٰهَا نَکَالًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهَا وَمَا خَلْفَهَا وَمَوْعِظَۃً لِّلْمُتَّقِیْنَ ﴿۶۶﴾

অতঃপর আমি এই ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং আল্লাহভীরুদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপাদান করে দিয়েছি।


وَ اِذْ قَالَ مُوْسٰی لِقَوْمِهٖۤ اِنَّ اللهَ یَاْمُرُكُمْ اَنْ تَذْبَحُوْا بَقَرَۃً ؕ قَالُوْۤا اَتَتَّخِذُنَا هُزُوًا ؕ قَالَ اَعُوْذُ بِاللهِ اَنْ اَ كُوْنَ مِنَ الْجٰهِلِیْنَ ﴿۶۷﴾

যখন মুসা (আ.) স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেন, আল্লাহ্ তোমাদের একটি গরু জবাই করতে বলেছেন। তারা বলল, তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ ? মুসা (আ.) বললেন, মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।


قَالُوا ادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّنْ لَّنَا مَا هِیَ ؕ قَالَ اِنَّهٗ یَقُوْلُ اِنَّهَا بَقَرَۃٌ لَّا فَارِضٌ وَّلَا بِكْرٌ ؕ عَوَانٌۢ بَیْنَ ذٰلِكَ ؕ فَافْعَلُوْا مَا تُؤْمَرُوْنَ ﴿۶۸﴾

তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সেটির রূপ বিশ্লেষণ করা হয়। মূসা (আ.) বললেন, আল্লাহ্ বলেছেন সেটি হবে একটি গাভী, যা বৃদ্ধও নয় এবং কুমারীও নয়-বার্ধক্য এবং যৌবনের মাঝামাঝি বয়সের। এখন আদিষ্ট কাজ করে ফেল।


قَالُوا ادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّنْ لَّنَا مَا لَوْنُهَا ؕ قَالَ اِنَّهٗ یَقُوْلُ اِنَّهَا بَقَرَۃٌ صَفْرَآءُ ۙ فَاقِعٌ لَّوْنُهَا تَسُرُّ النّٰظِرِیْنَ ﴿۶۹﴾

তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রং কিরূপ হবে? মূসা আ. বললেন, তিনি বলেছেন যে, গাঢ় পীতবর্ণের গাভী-যা দর্শকদের চমৎকৃত করবে।


قَالُوا ادْعُ لَنَا رَبَّكَ یُبَیِّنْ لَّنَا مَا هِیَ ۙ اِنَّ الْبَقَرَ تَشٰبَهَ عَلَیْنَا ؕ وَ اِنَّاۤ اِنْ شَآءَ اللهُ لَمُهْتَدُوْنَ ﴿۷۰﴾

তারা (আবার) বলল, আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট আবেদন করুন, তিনি যেন, আমাদের স্পষ্ট করে দেন, সে গাভীটি কেমন হবে ? গাভীটি তো আমাদেরকে সন্দেহে ফেলে দিয়েছে। আল্লাহ্ চাইলে আমরা সেটির দিশা পেয়ে যাবো।


قَالَ اِنَّهٗ یَقُوْلُ اِنَّهَا بَقَرَۃٌ لَّا ذَلُوْلٌ تُثِیْرُ الْاَرْضَ وَلَا تَسْقِی الْحَرْثَ ۚ مُسَلَّمَۃٌ لَّا شِیَةَ فِیْهَا ؕ قَالُوا الْـٰٔنَ جِئْتَ بِالْحَقِّ ؕ فَذَبَحُوْهَا وَمَا کَادُوْا یَفْعَلُوْنَ ﴿۠۷۱﴾

মূসা (আ.) বললেন, তিনি বলেন যে, এ-গাভী ভূ্কর্ষণ ও জল সেচনের শ্রমে অভ্যস্ত নয়-হবে নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত। তারা বলল, এবার সঠিক তথ্য এনেছ। অতঃপর তারা সেটা জবাই করল, অথচ জবাই করবে বলে মনে হচ্ছিল না।


وَ اِذْ قَتَلْتُمْ نَفْسًا فَادّٰرَءْ تُمْ فِیْهَا ؕ وَاللهُ مُخْرِجٌ مَّا كُنْتُمْ تَكْتُمُوْنَ ﴿ۚ۷۲﴾

যখন তোমরা একজনকে হত্যা করে পরে সে সম্পর্কে একে অপরকে অভিযুক্ত করেছিলে। যা তোমরা গোপন করছিলে, তা প্রকাশ করে দেয়া হয়েছিল আল্লাহ্ অভিপ্রায়।


فَقُلْنَا اضْرِبُوْهُ بِبَعْضِهَا ؕ کَذٰلِكَ یُحْیِ اللهُ الْمَوْتٰی ۙ وَیُرِیْكُمْ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ ﴿۷۳﴾

অতঃপর গরুর একটি অংশ দ্বারা মৃতকে আঘাত কর। এভাবে। আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদেরকে তার নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন-যাতে তোমরা চিন্তা কর।


ثُمَّ قَسَتْ قُلُوْبُكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ ذٰلِكَ فَهِیَ کَالْحِجَارَةِ اَوْ اَشَدُّ قَسْوَۃً ؕ وَ اِنَّ مِنَ الْحِجَارَةِ لَمَا یتَفَجَّرُ مِنْهُ الْاَنْهٰرُ ؕ وَ اِنَّ مِنْهَا لَمَا یَشَّقَّقُ فَیَخْرُجُ مِنْهُ الْمَآءُ ؕ وَ اِنَّ مِنْهَا لَمَا یَهْبِطُ مِنْ خَشْیَةِ اللهِ ؕوَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ ﴿۷۴﴾

অতঃপর এ-ঘটনার পরে তোমাদের অন্তর কঠিন হয়ে গেছে। তা পাথরের মত বা তদপেক্ষাও কঠিন; পাথরের মধ্যে এমনও আছে; যা থেকে ঝরণা প্রবাহিত হয়, এমনও আছে, যা বিদীর্ণ হয়, অতঃপর তা থেকে পানি নির্গত হয় এবং এমনও আছে যা, আল্লাহর ভয়ে খসে পড়তে থাকে! আল্লাহ্ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বেখবর নন।


اَفَتَطْمَعُوْنَ اَنْ یُّؤْمِنُوْا لَكُمْ وَقَدْ کَانَ فَرِیْقٌ مِّنْهُمْ یَسْمَعُوْنَ کَلٰمَ اللهِ ثُمَّ یُحَرِّفُوْنَهٗ مِنْۢ بَعْدِ مَا عَقَلُوْهُ وَهُمْ یَعْلَمُوْنَ ﴿۷۵﴾

(হে মুসলমানগণ) তোমরা কি এখনো এই আশা কর যে, তোমাদের কথা তারা ঈমান আনবে ? অথচ তাদের মধ্যে একটি দল এমন ছিল, যারা আল্লাহর কালাম শুনত। অতপর তা ভালোভাবে বোঝার পরও জেনে - শুনে তারা বিকৃতি ঘটাত।


وَ اِذَا لَقُوا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا قَالُوْۤا اٰمَنَّا ۚۖ وَ اِذَا خَلَا بَعْضُهُمْ اِلٰی بَعْضٍ قَالُوْۤا اَتُحَدِّثُوْنَهُمْ بِمَا فَتَحَ اللهُ عَلَیْكُمْ لِیُحَآجُّوْكُمْ بِهٖ عِنْدَ رَبِّكُمْ ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ ﴿۷۶﴾

আর যখন তারা মুমিনদের সাথে সাক্ষাৎ করে তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন একে অপরের সাথে একান্তে মিলিত হয় তখন বলে, তোমরা কি তাদের সাথে সে কথা আলোচনা কর, যা আল্লাহ তোমাদের উপর উম্নুক্ত করেছেন, যাতে তারা এর মাধ্যমে তোমাদের রবের নিকট তোমাদের বিরুদ্ধে দলীল পেশ করবে? তবে কি তোমরা বুঝ না?


اَوَلَا یَعْلَمُوْنَ اَنَّ اللهَ یَعْلَمُ مَا یُسِرُّوْنَ وَمَا یُعْلِنُوْنَ ﴿۷۷﴾

এসব লোক কি ( যারা এমন কথা বলে) জানে না যে, তারা যে সব কথা গোপন করে ও প্রকাশ করে সবই আল্লাহ্ জানেন।


وَمِنْهُمْ اُمِّیُّوْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ الْکِتٰبَ اِلَّاۤ اَمَانِیَّ وَ اِنْ هُمْ اِلَّا یَظُنُّوْنَ ﴿۷۸﴾

তাদের মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।


فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ یَكْتُبُوْنَ الْکِتٰبَ بِاَیْدِیْهِمْ ٭ ثُمَّ یَقُوْلُوْنَ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ لِیَشْتَرُوْا بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًا ؕ فَوَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا کَتَبَتْ اَیْدِیْهِمْ وَوَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا یَكْسِبُوْنَ ﴿۷۹﴾

সূতরাং দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে এবং বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য, এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ তাদের উপার্জনের জন্য।


وَقَالُوْا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ اِلَّاۤ اَیَّامًا مَّعْدُوْدَۃً ؕ قُلْ اَتَّخَذْتُمْ عِنْدَ اللهِ عَهْدًا فَلَنْ یُّخْلِفَ اللهُ عَهْدَهٗۤ اَمْ تَقُوْلُوْنَ عَلَی اللهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ ﴿۸۰﴾

তারা বলে, আগুন আমাদেরকে কখনো স্পর্শ করবে না, দিন কতক ব্যতীত। বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহর কাছ থেকে কোন অঙ্গিকার পেয়েছ যে, আল্লাহ্ কখনো তার খেলাফ করবেন না-না তোমরা যা জান না, তা আল্লাহর সাথে জুড়ে দিচ্ছ।


بَلٰی مَنْ کَسَبَ سَیِّئَۃً وَّاَحَاطَتْ بِهٖ خَطِیْٓــَٔتُهٗ فَاُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۸۱﴾

হ্যাঁ যারা পাপ অর্জন করেছে এবং সে পাপ তাদেরকে পরিবেষ্টিত করে দিয়েছে, তারাই দোযখের অধিবাসী তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।|


وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۠۸۲﴾

পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।


وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ لَا تَعْبُدُوْنَ اِلَّا اللهَ ۟ وَبِالْوَالِدَیْنِ اِحْسَانًا وَّذِی الْقُرْبٰی وَالْیَتٰمٰی وَالْمَسٰکِیْنِ وَقُوْلُوْا لِلنَّاسِ حُسْنًا وَّاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَ ؕ ثُمَّ تَوَلَّیْتُمْ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْكُمْ وَاَنْتُمْ مُّعْرِضُوْنَ ﴿۸۳﴾

স্মরণ কর, যখন আমি বনী ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম, তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করবে না, মাতাপিতা, আত্নীয় -স্বজন, পিতৃহীন ও দরিদ্রদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে , মানুষের সঙ্গে সদালাপ করবে, সালাত কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে, কিন্তু স্বল্পসংখ্যক লোক ব্যতীত তোমরা অগ্রাহ্যকারী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলে।


وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَكُمْ لَا تَسْفِكُوْنَ دِمَآءَكُمْ وَلَا تُخْرِجُوْنَ اَنْفُسَكُمْ مِّنْ دِیَارِكُمْ ثُمَّ اَقْرَرْتُمْ وَاَنْتُمْ تَشْهَدُوْنَ ﴿۸۴﴾

যখন আমি তোমাদের থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা পরস্পরে খুনাখুনি করবে না এবং নিজেদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করবে না, তখন তোমরা তা অঙ্গীকার করে ছিলে এবং তোমরা সাক্ষ্য দিচ্ছিলে।


ثُمَّ اَنْتُمْ هٰۤـؤُلَآءِ تَقْتُلُوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَتُخْرِجُوْنَ فَرِیْقًا مِّنْكُمْ مِّنْ دِیَارِهِمْ ۫ تَظٰهَرُوْنَ عَلَیْهِمْ بِالْاِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ؕ وَ اِنْ یَّاْ تُوْكُمْ اُسٰرٰی تُفٰدُوْهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَیْكُمْ اِخْرَاجُهُمْ ؕ اَفَتُؤْمِنُوْنَ بِبَعْضِ الْکِتٰبِ وَتَكْفُرُوْنَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَآءُ مَنْ یَّفْعَلُ ذٰلِكَ مِنْكُمْ اِلَّا خِزْیٌ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا ۚ وَیَوْمَ الْقِیٰمَةِ یُرَدُّوْنَ اِلٰۤی اَشَدِّ الْعَذَابِ ؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ ﴿۸۵﴾

অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বাহিষ্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায় এর মাধ্যমে আক্রমণ করছ। আর যদি তারাই কারও বন্দি হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্তি করছ। অথচ তাদের বহিষ্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর! যারা এরূপ করে, পার্থিক জীবনের দুর্গতি ছাড়া তাদের আর কোন পথও নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।


اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الْحَیٰوةَ الدُّنْیَا بِالْاٰخِرَةِ فَلَا یُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ ﴿۠۸۶﴾

এরাই পরকালেন বিনিময় পার্থিব জীবন ক্রয় করছে। অতএব এদের শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্য পাবে না।


وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَی الْکِتٰبَ وَقَفَّیْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ بِالرُّسُلِ ۫ وَاٰتَیْنَا عِیْسَی ابْنَ مَرْیَمَ الْبَیِّنٰتِ وَاَیَّدْنٰهُ بِرُوْحِ الْقُدُسِ ؕ اَفَكُلَّمَا جَآءَكُمْ رَسُوْلٌۢ بِمَا لَا تَهْوٰۤی اَنْفُسُكُمُ اسْتَكْبَرْتُمْ ۚ فَفَرِیْقًا کَذَّبْتُمْ ۫ وَفَرِیْقًا تَقْتُلُوْنَ ﴿۸۷﴾

অবশ্যই আমি মূসা ( আ.) কে কিতাব দিয়েছি। এবং তারপর পর্যায়ক্রমে রাসূল পাঠিয়েছি। আমি মারিয়ম তনয় ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেযা দান করেছি এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে শক্তি দান করেছি। অতঃপর যখনই কোন রাসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে ভালো লাগেনি, তখনি তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ।


وَقَالُوْا قُلُوْبُنَا غُلْفٌ ؕ بَلْ لَّعَنَهُمُ اللهُ بِكُفْرِهِمْ فَقَلِیْلًا مَّا یُؤْمِنُوْنَ ﴿۸۸﴾

তারা বলে আমাদের অন্তর অর্ধাবৃত। এবং তাদের কুফরের কারণে আল্লাহ্ অভিসম্পাত করেছেন। ফলে তারা অল্পই ঈমান আনে।


وَلَمَّا جَآءَهُمْ کِتٰبٌ مِّنْ عِنْدِ اللهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ ۙ وَکَانُوْا مِنْ قَبْلُ یَسْتَفْتِحُوْنَ عَلَی الَّذِیْنَ کَفَرُوْا ۚۖ فَلَمَّا جَآءَهُمْ مَّا عَرَفُوْا کَفَرُوْا بِهٖ ۫ فَلَعْنَۃُ اللهِ عَلَی الْکٰفِرِیْنَ ﴿۸۹﴾

যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাব এসে পৌঁছাল, যা সে বিষয়ে সত্যায়ন করে, যা তাদের কাছে রয়েছে এবং তারা পূর্বে করত। অবশেষে যখন তাদের কাছে পৌঁছল যাকে তারা চিনে রেখেছিল, তখন তারা তা অস্বীকার করে বসল। অতএব অঙ্গীকারকারীদের জন্য আল্লাহর অভিশাপ।


بِئْسَمَا اشْتَرَوْا بِهٖۤ اَنْفُسَهُمْ اَنْ یَّكْفُرُوْا بِمَاۤ اَنْزَلَ اللهُ بَغْیًا اَنْ یُّنَزِّلَ اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ عَلٰی مَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ ۚ فَبَآءُؤ بِغَضَبٍ عَلٰی غَضَبٍ ؕ وَ لِلْکٰفِرِیْنَ عَذَابٌ مُّهِیْنٌ ﴿۹۰﴾

যার বিনিময়ে তারা নিজেদেরকে বিক্রি করেছে, তা খুবই মন্দ, যেহেতু তারা আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন, তা অস্বীকার করেছে - এই হঠকারিতার দরূন যে, আল্লাহ্ নিজ বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছে অনুগ্রহ নাযিল করেন। আতএব, তারা ক্রেধের উপর ক্রোধ অর্জন করেছে। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি।


وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمْ اٰمِنُوْا بِمَاۤ اَنْزَلَ اللهُ قَالُوْا نُؤْمِنُ بِمَاۤ اُنْزِلَ عَلَیْنَا وَیَكْفُرُوْنَ بِمَا وَرَآءَهٗ ٭ وَهُوَ الْحَقُّ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَهُمْ ؕ قُلْ فَلِمَ تَقْتُلُوْنَ اَنْۢبِیَآءَ اللهِ مِنْ قَبْلُ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿۹۱﴾

যখন তাদের বলা হয় আল্লাহ্ যা পাঠিয়েছেন তা মেনে নাও, তখন তারা বলে, আমরা মানি যা আমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে। সেটা ছাড়া তারা সবগুলো অস্বীকার করে আথচ এই গ্রন্থটি সত্য এবং সত্যায়ন করে ঐ গ্রন্থের যা, তাদের কাছে রয়েছে। বলে দিন তোমরা ইতিপূর্বে পয়গাম্বরদের হত্যা করতে কেন যদি তোমরা বিশ্বাসী ছিলে?


وَلَقَدْ جَآءَكُمْ مُّوْسٰی بِالْبَیِّنٰتِ ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِنْۢ بَعْدِهٖ وَ اَنْتُمْ ظٰلِمُوْنَ ﴿۹۲﴾

এবং নিশ্চয় মূসা তোমাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণসহ এসেছিল; অনন্তর তোমরা গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিলে, যেহেতু তোমরা অত্যাচারী ছিলে।


وَ اِذْ اَخَذْنَا مِیْثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّوْرَ ؕ خُذُوْا مَاۤ اٰتَیْنٰكُمْ بِقُوَّۃٍ وَّاسْمَعُوْا ؕ قَالُوْا سَمِعْنَا وَعَصَیْنَا ٭ وَاُشْرِبُوْا فِیْ قُلُوْبِهِمُ الْعِجْلَ بِكُفْرِهِمْ ؕ قُلْ بِئْسَمَا یَاْمُرُكُمْ بِهٖۤ اِیْمَانُكُمْ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿۹۳﴾

আর আমি যখন তোমাদের কাছ থেকে ওয়াদা নিলাম এবং তূর পর্বতকে তোমাদের উপর তুলে ধরলাম যে, শক্ত করে ধর, আমি যা তোমাদের দিয়েছি আর শোন। তারা বলল আমরা শুনেছি আর অমান্য করেছি। কুফরের কারণে তাদের অন্তরে গোবৎসপ্রীতি পান করানো হয়েছিল। বলে দিন, তোমরা বিশ্বাসী হলে, তোমাদের সে বিশ্বাস মন্দ বিষয়াদি শিক্ষা দেয়।


قُلْ اِنْ کَانَتْ لَكُمُ الدَّارُ الْاٰخِرَۃُ عِنْدَ اللهِ خَالِصَۃً مِّنْ دُوْنِ النَّاسِ فَتَمَنَّوُا الْمَوْتَ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴿۹۴﴾

বলে দিন যদি আখেরাতের বাসস্থান আল্লাহর কাছে একমাত্র তোমাদের জন্য বরাদ্দ হয়ে থাকে - অন্য লোকদের বাদ দিয়ে, তবে মৃত্যু কামনা কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।


وَلَنْ یَّتَمَنَّوْهُ اَبَدًۢا بِمَا قَدَّمَتْ اَیْدِیْهِمْ ؕ وَاللهُ عَلِیْمٌۢ بِالظّٰلِمِیْنَ ﴿۹۵﴾

কিন্তু তাদের কৃতকর্মের জন্য তারা কখনো মৃত্যু কামনা করবে না এবং আল্লাহ্ জালিমদের সম্বন্ধে সম্যক অবগত রয়েছেন।


وَلَتَجِدَنَّهُمْ اَحْرَصَ النَّاسِ عَلٰی حَیٰوۃٍ ۚۛ وَمِنَ الَّذِیْنَ اَشْرَكُوْا ۚۛ یَوَدُّ اَحَدُهُمْ لَوْ یُعَمَّرُ اَلْفَ سَنَۃٍ ۚ وَمَا هُوَ بِمُزَحْزِحِهٖ مِنَ الْعَذَابِ اَنْ یُّعَمَّرَ ؕ وَاللهُ بَصِیْرٌۢ بِمَا یَعْمَلُوْنَ ﴿۠۹۶﴾

আপনি তাদেরকে জীবনের প্রতি সবার চাইতে এমনকি মুশরিকদের চাইতেও অধিক লোভী দেখবেন। তাদের প্রত্যেকে কামনা করে, যেন হাজার বছর আয়ু পায়। অথচ এরূপ আয়ুপ্রাপ্তি তাদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আল্লাহ দেখেন যা কিছু তারা করে।|


قُلْ مَنْ کَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِیْلَ فَاِنَّهٗ نَزَّلَهٗ عَلٰی قَلْبِكَ بِاِذْنِ اللهِ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ وَهُدًی وَّبُشْرٰی لِلْمُؤْمِنِیْنَ ﴿۹۷﴾

আপনি বলে দিন, যে কেউ জীবরাঈলের দুশমন হয়-যেহেতু তিনি আল্লাহর আদেশে এ-কলাম আপনার অন্তরে নাযিল করেছেন, যা সত্যায়নকারী তাদের সম্মুখস্থ কালামের এবং মুমিনদের জন্য পথপ্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা।


مَنْ کَانَ عَدُوًّا لِلّٰهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَرُسُلِهٖ وَجِبْرِیْلَ وَمِیْکٰىلَ فَاِنَّ اللهَ عَدُوٌّ لِّلْکٰفِرِیْنَ ﴿۹۸﴾

যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তাঁর ফেরেশতা ও রাসূলগণ এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের দুশমন হয়, নিশ্চিতই আল্লাহ্ সে সব কাফেরের দুশমন।


وَلَقَدْ اَنْزَلْنَاۤ اِلَیْكَ اٰیٰتٍۭ بَیِّنٰتٍ ۚ وَمَا یَكْفُرُ بِهَاۤ اِلَّا الْفٰسِقُوْنَ ﴿۹۹﴾

এবং আমি নিশ্চই তোমার প্রতি স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ অবতীর্ণ করেছি এবং দুস্কর্মকারী ব্যতীত কেউ তা বিশ্বাস করবে না।


اَوَكُلَّمَا عٰهَدُوْا عَهْدًا نَّبَذَهٗ فَرِیْقٌ مِّنْهُمْ ؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا یُؤْمِنُوْنَ ﴿۱۰۰﴾

কি আশ্চর্য, যখন তারা কোন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়, তখন তাদের একদল তা ছুঁড়ে ফেলে, বরং অধিকাংশই বিশ্বাস করে না।


وَلَمَّا جَآءَهُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ عِنْدِ اللهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِیْقٌ مِّنَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ ٭ۙ کِتٰبَ اللهِ وَرَآءَ ظُهُوْرِهِمْ کَاَنَّهُمْ لَا یَعْلَمُوْنَ ﴿۱۰۱﴾۫

যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রাসূল আগমন করলেন। যিনি ঐ কিতাবের সত্যায়ণ করেন, যা তাদের রয়েছে, তখন আহলে কিতাবের একদল আল্লাহর গ্রন্থকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করল - যেন তারা জানেই না।


وَاتَّبَعُوْا مَا تَتْلُوا الشَّیٰطِیْنُ عَلٰی مُلْكِ سُلَیْمٰنَ ۚ وَمَا کَفَرَ سُلَیْمٰنُ وَلٰکِنَّ الشَّیٰطِیْنَ کَفَرُوْا یُعَلِّمُوْنَ النَّاسَ السِّحْرَ ٭ وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلَی الْمَلَکَیْنِ بِبَابِلَ هَارُوْتَ وَمَارُوْتَ ؕ وَمَا یُعَلِّمٰنِ مِنْ اَحَدٍ حَتّٰی یَقُوْلَاۤ اِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَۃٌ فَلَا تَكْفُرْ ؕ فَیَتَعَلَّمُوْنَ مِنْهُمَا مَا یُفَرِّقُوْنَ بِهٖ بَیْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهٖ ؕ وَمَا هُمْ بِضَآرِّیْنَ بِهٖ مِنْ اَحَدٍ اِلَّا بِاِذْنِ اللهِ ؕ وَیَتَعَلَّمُوْنَ مَا یَضُرُّهُمْ وَلَا یَنْفَعُهُمْ ؕ وَلَقَدْ عَلِمُوْا لَمَنِ اشْتَرٰىهُ مَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ۟ؕ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْا بِهٖۤ اَنْفُسَهُمْ ؕ لَوْ کَانُوْا یَعْلَمُوْنَ ﴿۱۰۲﴾

তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তান রা পাঠ করত সুলাইমান (আ.) এর রাজত্বে। আর সুলাইমান কুফরি করেনি; বরং শযতানরা কুফরি করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত এবং ( তারা অনুসরণ করেছে) যা নাযিল করা হয়েছিলে বাবেলে দুই ফেরেশতা হারূত ও মারূতের উপর। আর তারা কাউকে শিখাত না যে পর্যন্ত না বলত যে, আমরা কেবল পরীক্ষা স্বরূপ সুতরাং তোমরা কুফরি কর না এরপরও তারা এদের কাছ থেকে শিখত, যার মাধ্যমে তারা পুরুষ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাত। অথচ তারা তার মাধ্যমে কারো কোন ক্ষতি করতে পারত না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আর তারা শিখত যা তাদের ক্ষতি করত, তাদের উপকার করত না এবং তারা অবশ্যই জানত যে, যে ব্যক্তি তা ক্রয় করবে, অখেরাতে তার কোন অংশ থাকবে না। তা নিশ্চিতরূপে কতই-না মন্দ, যার বিনিময়ে তারা নিজেদেরকে বিক্রয় করেছে। যদি তারা জানত।


وَلَوْ اَنَّهُمْ اٰمَنُوْا وَاتَّقَوْا لَمَثُوْبَۃٌ مِّنْ عِنْدِ اللهِ خَیْرٌ ؕ لَوْ کَانُوْا یَعْلَمُوْنَ ﴿۱۰۳﴾

এবং এর ( বিপরীতে) তারা যদি ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিদান পেত। যদি তাদের ( এ সত্য সম্পর্কে প্রকৃত) জ্ঞান থাকত।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَقُوْلُوْا رَاعِنَا وَقُوْلُوا انْظُرْنَا وَاسْمَعُوْا ؕ وَ لِلْکٰفِرِیْنَ عَذَابٌ اَلِیْمٌ ﴿۱۰۴﴾

হে মুমিনগণ, তোমরা রায়িনা বলো না - উনযুরনা ‍বল এবং শুনতে থাক। আর কাফেরদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।


مَا یَوَدُّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا مِنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ وَلَا الْمُشْرِکِیْنَ اَنْ یُّنَزَّلَ عَلَیْكُمْ مِّنْ خَیْرٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ ؕ وَاللهُ یَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهٖ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ ذُوالْفَضْلِ الْعَظِیْمِ ﴿۱۰۵﴾

আহলে কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে যারা কাফের, তাদের মনঃপুত নয় যে, তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিশেষভাবে স্বীয় অনুগ্রহ দান করেন। আল্লাহ মহান অনুগ্রহদাতা।


مَا نَنْسَخْ مِنْ اٰیَۃٍ اَوْ نُنْسِهَا نَاْتِ بِخَیْرٍ مِّنْهَاۤ اَوْ مِثْلِهَا ؕ اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۱۰۶﴾

আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম আথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্ সব কিছুর উপর শক্তিমান?


اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللهَ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ وَمَا لَكُمْ مِّنْ دُوْنِ اللهِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّلَا نَصِیْرٍ ﴿۱۰۷﴾

তুমি কি জান না যে, আল্লাহর জন্যই আসমান ও জমিনসমূহের আধিপত্য ? আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধু ও সাহায্যকারী নেই।


اَمْ تُرِیْدُوْنَ اَنْ تَسْـَٔلُوْا رَسُوْلَكُمْ کَمَا سُئِلَ مُوْسٰی مِنْ قَبْلُ ؕ وَمَنْ یَّتَبَدَّلِ الْكُفْرَ بِالْاِیْمَانِ فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِیْلِ ﴿۱۰۸﴾

তোমরা কি তোমাদের রাসূলকে তেমনি প্রশ্ন করতে চাও ? যেভাবে মূসা ( আ.) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যে কেউ ঈমানের পরিবর্তে কুফর গ্রহণ করে, সে সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়।


وَدَّ کَثِیْرٌ مِّنْ اَهْلِ الْکِتٰبِ لَوْ یَرُدُّوْنَكُمْ مِّنْۢ بَعْدِ اِیْمَانِكُمْ كُفَّارًا ۚۖ حَسَدًا مِّنْ عِنْدِ اَنْفُسِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمُ الْحَقُّ ۚ فَاعْفُوْا وَاصْفَحُوْا حَتّٰی یَاْتِیَ اللهُ بِاَمْرِهٖ ؕ اِنَّ اللهَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۱۰۹﴾

আহলে কিতাবদের অনেকেই প্রতিহিংসাবশতঃ চায় যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদেরকে কোন রকম কাফির বানিয়ে দেয়। তাদের কাছে সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর (তারা এটা চায়)। যাক তোমরা আল্লাহর নির্দেশ আশা পর্যন্ত তাদের ক্ষমা কর ও উপেক্ষা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।


وَاَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّکٰوةَ ؕ وَمَا تُقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ مِّنْ خَیْرٍ تَجِدُوْهُ عِنْدَ اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ ﴿۱۱۰﴾

তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্য পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর., নিশ্চয় আল্লাহ তা প্রত্যক্ষ করেন।


وَقَالُوْا لَنْ یَّدْخُلَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ کَانَ هُوْدًا اَوْ نَصٰرٰی ؕ تِلْكَ اَمَانِیُّهُمْ ؕ قُلْ هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِیْنَ ﴿۱۱۱﴾

ওরা বলে ইহুদী অথবা খ্রীষ্টান ব্যতীত কেউ জান্নাতে যাবে না। এটা ওদের মনের বাসনা। বলে দিন, তোমরা সত্যবাদী হলে, প্রমাণ উপস্থিত কর।


بَلٰی ࢥ مَنْ اَسْلَمَ وَجْهَهٗ لِلّٰهِ وَهُوَ مُحْسِنٌ فَلَهٗۤ اَجْرُهٗ عِنْدَ رَبِّهٖ ۪ وَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۱۱۲﴾

হ্যাঁ যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সমর্পণ করেছে এবং সে সৎকর্মশীলও বটে তার জন্য পালনকর্তার কাছে পুরুস্কার রয়েছে। তাদের ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।


وَقَالَتِ الْیَهُوْدُ لَیْسَتِ النَّصٰرٰي عَلٰی شَیْءٍ ۪ وَّ قَالَتِ النَّصٰرٰی لَیْسَتِ الْیَهُوْدُ عَلٰی شَیْءٍ ۙ وَّهُمْ یَتْلُوْنَ الْکِتٰبَ ؕ کَذٰلِكَ قَالَ الَّذِیْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ مِثْلَ قَوْلِهِمْ ۚ فَاللهُ یَحْكُمُ بَیْنَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ فِیْمَا کَانُوْا فِیْهِ یَخْتَلِفُوْنَ ﴿۱۱۳﴾

ইহুদীরা বলে, খ্রীষ্টানরা কোন ভিত্তির উপরেই নয় এবং খ্রীষ্টানরা বলে, ইহুদীরা কোন ভিত্তির উপরেই নয়। অথচ ওরা সবাই কিতাব পাঠ করে! এমনিভাবে যারা মূর্খ, তার ও ওদের মতই উক্তি করে। অতএব, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে ফয়সালা দিবেন, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছিল।


وَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ یُّذْکَرَ فِیْهَا اسْمُهٗ وَسَعٰی فِیْ خَرَابِهَا ؕ اُولٰٓئِكَ مَا کَانَ لَهُمْ اَنْ یَّدْخُلُوْهَاۤ اِلَّا خَآئِفِیْنَ ۬ؕ لَهُمْ فِی الدُّنْیَا خِزْیٌ وَّلَهُمْ فِی الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِیْمٌ ﴿۱۱۴﴾

যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে, তাঁর চাইতে বড় জালেম আর কে ? এদের পক্ষে মসজিদসমূহে প্রবেশ করা বিধেয় নয়, অবশ্য ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায়। ওদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে।


وَ لِلّٰهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ ࢥ فَاَیْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللهِ ؕ اِنَّ اللهَ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ ﴿۱۱۵﴾

পূর্ব এবং পশ্চিম আল্লাহরই! অতএব তোমরা যে দিকেই মুখ ফেরাও, সে দিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।


وَقَالُوا اتَّخَذَ اللهُ وَلَدًا ۙ سُبْحٰنَهٗ ؕ بَلْ لَّهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ كُلٌّ لَّهٗ قٰنِتُوْنَ ﴿۱۱۶﴾

তারা বলে আল্লাহ্ সন্তান গ্রহণ করেছেন, তিনি তো এসব কিছু থেকে পবিত্র; বরং আসমান ও জমিনসমূহতে যা কিছু রয়েছে সবই তার আজ্ঞাধীন।


بَدِیْعُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ وَ اِذَا قَضٰۤی اَمْرًا فَاِنَّمَا یَقُوْلُ لَهٗ كُنْ فَیَكُوْنُ ﴿۱۱۷﴾

তিনি আসমান ও জমিনসমূহের উদ্ভাবক। যখন তিনি কোন কার্য সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেটিকে এক কথাই বলেন হয়ে যাও তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়।


وَقَالَ الَّذِیْنَ لَا یَعْلَمُوْنَ لَوْلَا یُکَلِّمُنَا اللهُ اَوْ تَاْتِیْنَاۤ اٰیَۃٌ ؕ کَذٰلِكَ قَالَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ؕ تَشَابَهَتْ قُلُوْبُهُمْ ؕ قَدْ بَیَّنَّا الْاٰیٰتِ لِقَوْمٍ یُّوْقِنُوْنَ ﴿۱۱۸﴾

যারা কিছু জানে না তারা বলে, আল্লাহ্ আমাদের সঙ্গে কেন কথা বলেন না। অথবা আমাদের কাছে কোন নিদর্শন কেন আসে না ? এমনিভাবে তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও তাদের অনুরূপ কথা বলেছে। তাদের অন্তর একই রকম। নিশ্চই আমি উজ্জল নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেছি তাদের জন্য, যারা প্রত্যয়শীল।


اِنَّاۤ اَرْسَلْنٰكَ بِالْحَقِّ بَشِیْرًا وَّنَذِیْرًا ۙ وَّلَا تُسْئَلُ عَنْ اَصْحٰبِ الْجَحِیْمِ ﴿۱۱۹﴾

নিশ্চয় আমি আপনাকে সত্য ধর্মসহ সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছি। আপনি দোযখবাসীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন না।


وَلَنْ تَرْضٰی عَنْكَ الْیَهُوْدُ وَلَا النَّصٰرٰی حَتّٰی تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ ؕ قُلْ اِنَّ هُدَی اللهِ هُوَ الْهُدٰی ؕ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ اَهْوَآءَ هُمْ بَعْدَ الَّذِیْ جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِ ۙ مَا لَكَ مِنَ اللهِ مِنْ وَّلِیٍّ وَّلَا نَصِیْرٍ ﴿۱۲۰﴾ؔ

ইহুদী আর খ্রীষ্টানরা কখনো আপনার উপর সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যস্ত আপনি তাদের ধর্মে অনুসরণ করেন। বলে দিন, যে আল্লাহ্ পথ প্রদর্শন করেন, তাই হল সরলপথ যদি আপনি তাদের আকাঙ্খাসমূহের অনুসরণ করেন, ঐ জ্ঞান লাভের পর, যা আপনার কাছে পৌঁছেছে, তবে কেউ আল্লাহর কবল থেকে আপনার উদ্ধারকারী ও সাহায্যকারী নেই।


اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْکِتٰبَ یَتْلُوْنَهٗ حَقَّ تِلَاوَتِهٖ ؕ اُولٰٓئِكَ یُؤْمِنُوْنَ بِهٖ ؕ وَمَنْ یَّكْفُرْ بِهٖ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ ﴿۱۲۱﴾۠

আমি যাদেরকে গ্রন্থ দান করেছি, তারা যখন তা যথাযথভাবে পাঠ করে, তখন তারাই তার প্রতি ঈমান রাখে। আর যারা তা অবিশ্বাস করে, তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।


یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اذْكُرُوْا نِعْمَتِیَ الَّتِیْۤ اَنْعَمْتُ عَلَیْكُمْ وَاَنِّیْ فَضَّلْتُكُمْ عَلَی الْعٰلَمِیْنَ ﴿۱۲۲﴾

হে বনী ঈসরাইল! তোমরা আমার সেই নিয়ামত স্মরণ কর, যা আমি তোমাদেরকে দিয়েছিলাম এবং এ বিষয়টি ( -ও স্মরণ কর) যে, আমি জগতসমূহের মধ্যে তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।


وَاتَّقُوْا یَوْمًا لَّا تَجْزِیْ نَفْسٌ عَنْ نَّفْسٍ شَیْئًا وَّلَا یُقْبَلُ مِنْهَا عَدْلٌ وَّلَا تَنْفَعُهَا شَفَاعَۃٌ وَّلَا هُمْ یُنْصَرُوْنَ ﴿۱۲۳﴾

তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে না, কারও কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে না কারও সুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।


وَ اِذِ ابْتَلٰۤی اِبْرٰهٖمَ رَبُّهٗ بِکَلِمٰتٍ فَاَتَمَّهُنَّ ؕ قَالَ اِنِّیْ جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ اِمَامًا ؕ قَالَ وَمِنْ ذُرِّیَّتِیْ ؕ قَالَ لَا یَنَالُ عَهْدِی الظّٰلِمِیْنَ ﴿۱۲۴﴾

এবং ( সেই সময়কে স্মরণ কর), যখন ইবরাহীমকে তার প্রতিপালক কয়েকটি বিষয় দ্বারা পরীক্ষা করলেন এবং তিনি তা পূরণ করে দিলেন। আল্লাহ্ তাকে বললেন, আমি তোমাকে সমস্ত মানুষের ইমাম বানাতে চাই। ইবরাহীম বলল, আমার সন্তানদের মধ্যে হতে ? আল্লাহ্ বললেন আমার এ ওয়াদা যালিমদের জন্য প্রযোজ্য নয়।


وَاِذۡ جَعَلۡنَا الۡبَیۡتَ مَثَابَۃً لِّلنَّاسِ وَاَمۡنًا ؕ وَاتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰہٖمَ مُصَلًّی ؕ وَعَہِدۡنَاۤ اِلٰۤی اِبۡرٰہٖمَ وَاِسۡمٰعِیۡلَ اَنۡ طَہِّرَا بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ وَالۡعٰکِفِیۡنَ وَالرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ﴿﴿۱۲۵﴾﴾

যখন আমি কাবাগৃহকে মানুষের জন্য সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, তখন তোমরা ইবরাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাজের জায়গা বানাও এবং আমি ইবরাহীম ও ঈসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।


وَ اِذْ قَالَ اِبْرٰهٖمُ رَبِّ اجْعَلْ هٰذَا بَلَدًا اٰمِنًا وَّارْزُقْ اَهْلَهٗ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَنْ اٰمَنَ مِنْهُمْ بِاللهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ قَالَ وَمَنْ کَفَرَ فَاُمَتِّعُهٗ قَلِیْلًا ثُمَّ اَضْطَرُّهٗۤ اِلٰی عَذَابِ النَّارِ ؕ وَبِئْسَ الْمَصِیْرُ ﴿۱۲۶﴾

যখন ইবরাহীম বললেন, পরওয়ারদেগার! এ স্থানকে তুমি এক নিরাপদ নগর বানিয়ে দাও এবং এর বাসিন্দাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্ ও আখেরাতে ঈমান আনবে তাদেরকে বিভিন্ন রকমের ফলের রিজিক দান কর। আল্লাহ্ বলেন যে, ব্যক্তি কুফর অবলম্বন করবে তাকেও আমি কিছু কালের জন্য জীবন ভোগের সুযোগ দেব, তারপর তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাবো জাহান্নামের দিকে। তা নিকৃষ্টতম ঠিকানা।


وَ اِذْ یَرْفَعُ اِبْرٰهٖمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَیْتِ وَ اِسْمٰعِیْلُ ؕ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا ؕ اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ ﴿۱۲۷﴾

স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম ও ঈসমাইল কাবাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার আমাদের থেকে ( এ সেবা) কবুল কর। নিশ্চয়ই, আপনি শ্রবণকারী সর্বজ্ঞ।


رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَیْنِ لَكَ وَمِنْ ذُرِّیَّتِنَاۤ اُمَّۃً مُّسْلِمَۃً لَّكَ ࣕ وَاَرِنَا مَنَاسِکَنَا وَتُبْ عَلَیْنَا ۚ اِنَّكَ اَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ ﴿۱۲۸﴾

পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ্ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটা অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজে¦র রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী ও দয়ালু।


رَبَّنَا وَابْعَثْ فِیْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ یَتْلُوْا عَلَیْهِمْ اٰیٰتِكَ وَیُعَلِّمُهُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَیُزَکِّیْهِمْ ؕ اِنَّكَ اَنْتَ الْعَزِیْزُ الْحَکِیْمُ ﴿۱۲۹﴾۠

হে, আমাদের প্রতিপালক! তাদের মধ্য থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুন। যিনি আপনার আয়াত সমূহ তাদের কাছে তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী ও হেকমত ওয়ালা।


وَمَنْ یَّرْغَبُ عَنْ مِّلَّةِ اِبْرٰهٖمَ اِلَّا مَنْ سَفِهَ نَفْسَهٗ ؕ وَلَقَدِ اصْطَفَیْنٰهُ فِی الدُّنْیَا ۚ وَ اِنَّهٗ فِی الْاٰخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحِیْنَ ﴿۱۳۰﴾

যে ব্যক্তি নিজেকে নির্বোধ সাব্যস্ত করেছে, সে ছাড়া আর কে ইবরাহীমের পথ পরিহার করে? বাস্তবতা তো এই যে, আমি দুনিয়াতে তাকে ( নিজের জন্য) বেছে নিয়েছি, আর আখিরাতে তো সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।


اِذْ قَالَ لَهٗ رَبُّهٗۤ اَسْلِمْ ۙ قَالَ اَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَ ﴿۱۳۱﴾

স্বরণ কর, যখন তার প্রতিপালক তাঁকে বললেন, আনুগত্যে নতশিত হও তখন তিনি ( সঙ্গে সঙ্গে ) বলল, আমি রাব্বুল আলামিনের (প্রতিটি হুকুমে) সামনে মাথা নত করলাম।


وَوَصّٰی بِهَاۤ اِبْرٰهٖمُ بَنِیْهِ وَیَعْقُوْبُ ؕ یٰبَنِیَّ اِنَّ اللهَ اصْطَفٰی لَكُمُ الدِّیْنَ فَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ ﴿۱۳۲﴾ؕ

এরই অছিয়ত করেছে ইবরাহীম ( আ.) তার সন্তানদের এবং ইয়াকুব যে, হে আমার পুত্রগণ! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। সুতরাং কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে মৃত্যু বরণ করো না।


اَمْ كُنْتُمْ شُهَدَآءَ اِذْ حَضَرَ یَعْقُوْبَ الْمَوْتُ ۙ اِذْ قَالَ لِبَنِیْهِ مَا تَعْبُدُوْنَ مِنْۢ بَعْدِیْ ؕ قَالُوْا نَعْبُدُ اِلٰهَكَ وَ اِلٰـهَ اٰبَآئِكَ اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ اِلٰـهًا وَّاحِدًا ۚۖ وَّنَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ ﴿۱۳۳﴾

তোমরা কি উপস্থিত ছিলে যখন ইয়াকুব (আ.) এর মৃত্যু নিকটবর্তী হয়ে এসেছিল ? যখন সে তার পুত্রদের বলেছিল, আমার পর তোমরা কার ইবাদত করবে? তারা, সকলে বলেছিল আমরা সেই এক আল্লাহরই ইবাদত করব, যিনি আপনার মাবুদ এবং আপনার বাপ- দাদা ইবরাহীম, ইসমাইল ও ইসহাকেরও মাবুদ। আমরা কেবল তাঁরই অনুগত।


تِلْكَ اُمَّۃٌ قَدْ خَلَتْ ۚ لَهَا مَا کَسَبَتْ وَلَكُمْ مَّا کَسَبْتُمْ ۚ وَلَا تُسْـَٔلُوْنَ عَمَّا کَانُوْا یَعْمَلُوْنَ ﴿۱۳۴﴾

আমরা সবাই তাঁর আজ্ঞাবহ। তারা ছিল এক সম্প্রদায় - যারা গত হয়ে গেছে। তারা যা করেছে তা তদেরই জন্য। তারা কি করত সে সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবে না।


وَقَالُوْا كُوْنُوْا هُوْدًا اَوْ نَصٰرٰی تَهْتَدُوْا ؕ قُلْ بَلْ مِلَّةَ اِبْرٰهٖمَ حَنِیْفًا ؕ وَمَا کَانَ مِنَ الْمُشْرِکِیْنَ ﴿۱۳۵﴾

তারা বলে তোমরা ইহুদী বা খ্রীষ্টান হয়ে যাও, তবেই তোমরা সুপথ পাবে। আপনি বলুন কখনই নয়; বরং আমরা ইবরাহীমের ধর্মে আছি যাতে বক্রতা নেই। তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।


قُوْلُوْۤا اٰمَنَّا بِاللهِ وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْنَا وَمَاۤ اُنْزِلَ اِلٰۤی اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَیَعْقُوْبَ وَالْاَسْبَاطِ وَمَاۤ اُوْتِیَ مُوْسٰی وَعِیْسٰی وَمَاۤ اُوْتِیَ النَّبِیُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ ۚ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ ۫ۖ وَنَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ ﴿۱۳۶﴾

তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হযেছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইবরাহীম, ঈসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাদের সন্তানদের প্রতি এবং যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হযেছে তাদের রবের পক্ষ থেকে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত।


فَاِنْ اٰمَنُوْا بِمِثْلِ مَاۤ اٰمَنْتُمْ بِهٖ فَقَدِ اهْتَدَوْا ۚ وَ اِنْ تَوَلَّوْا فَاِنَّمَا هُمْ فِیْ شِقَاقٍ ۚ فَسَیَكْفِیْکَهُمُ اللهُ ۚ وَهُوَ السَّمِیْعُ الْعَلِیْمُ ﴿۱۳۷﴾ؕ

অতএব তাঁরা যদি ঈমান আনে, তোমাদের ঈমান আনার মত, তবে তাঁরা সুপথ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয,তাহলে তাঁরা বিরোধের মধ্যেই থাকলো, তাদের বিপক্ষে তোমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ঠ। আর তিনি সব কিছু শুনেন এবং সব কিছু জানেন।


صِبْغَةَ اللهِ ۚ وَمَنْ اَحْسَنُ مِنَ اللهِ صِبْغَۃً ۫ وَّنَحْنُ لَهٗ عٰبِدُوْنَ ﴿۱۳۸﴾

বল, আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করলাম, আর রং-এর দিক দিয়ে আল্লাহর চেয়ে কে অধিক সুন্দর? এবং আমরা তারই ইবাদতকারী।


﴾ۙ قُلۡ اَتُحَآجُّوۡنَنَا فِی اللّٰهِ وَ هُوَ رَبُّنَا وَ رَبُّکُمۡ ۚ وَ لَنَاۤ اَعۡمَالُنَا وَ لَکُمۡ اَعۡمَالُکُمۡ ۚ وَ نَحۡنُ لَهٗ مُخۡلِصُوۡنَ ﴿۱۳۹

বল, তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে বিতর্ক করছ অথচ তিনি আমাদের রব এবং তোমাদেরও রব। আর আমাদের জন্য রয়েছে আমাদের আমল সমূহ আর তোমাদের জন্য তোমাদের আমলসমূহ এবং আমরা তার জন্য একনিষ্ঠ।


اَمْ تَقُوْلُوْنَ اِنَّ اِبْرٰهٖمَ وَ اِسْمٰعِیْلَ وَ اِسْحٰقَ وَیَعْقُوْبَ وَالْاَسْبَاطَ کَانُوْا هُوْدًا اَوْ نَصٰرٰی ؕ قُلْ ءَاَنْتُمْ اَعْلَمُ اَمِ اللهُ ؕ وَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ کَتَمَ شَهَادَۃً عِنْدَهٗ مِنَ اللهِ ؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ ﴿۱۴۰﴾

নাকি তোমরা বলছ, নিশ্চয়ই ইবরাহীম, ঈসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তাঁদের সন্তানেরা ছিল ইহুদী অথবা নাসারা? আপনি বলেদিন তোমরা বেশি জান না আল্লাহ্? আর তার চেয়ে অধিক যালেম কে, যে আল্লাহর পক্ষ থেকে তার কাছে যে সাক্ষ্য রয়েছে তা গোপন করে? আর তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্পর্কে গাফিল নন।


تِلْكَاُ اُمَّةٌ قَدْ خَلَتْ ۚ لَهَا مَا کَسَبَتْ وَلَكُمْ مَّا کَسَبْتُمْ ۚ وَلَا تُسْـَٔلُوْنَ عَمَّا کَانُوْا یَعْمَلُوْنَ ﴿۱۴۱﴾۠

তারা ছিল এক উম্মত,যা বিগত হয়েছে। তারা যা-কিছু অর্জন করেছে তা তাদের, আর যা কিছু তোমরা অর্জন করেছ তা তোমাদের। তারা কি কাজ করত তা তোমাদের জিজ্ঞেস করা হবে না।


سَیَقُوْلُ السُّفَهَآءُ مِنَ النَّاسِ مَا وَلّٰهُمْ عَنْ قِبْلَتِهِمُ الَّتِیْ کَانُوْا عَلَیْهَا ؕ قُلْ لِّلّٰهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ ؕ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ ﴿۱۴۲﴾

নির্বোধ লোকেরা অচিরেই বলবে যে, কিসে তাদেরকে সেই কিবলা থেকে ফিরিয়ে দিল, যার দিকে তারা ছিল? আপনি বলেদিন পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই জন্য, তিনি যাকে ইচ্ছে সরল পথ প্রদর্শন করেন।


وَکَذٰلِكَ جَعَلْنٰكُمْ اُمَّةً وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَی النَّاسِ وَیَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَیْكُمْ شَهِیْدًا ؕ وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِیْ كُنْتَ عَلَیْهَاۤ اِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ یَّتَّبِعُ الرَّسُوْلَ مِمَّنْ یَّنْقَلِبُ عَلٰی عَقِبَیْهِ ؕ وَ اِنْ کَانَتْ لَکَبِیْرَۃً اِلَّا عَلَی الَّذِیْنَ هَدَی اللهُ ؕ وَمَا کَانَ اللهُ لِیُضِیْعَ اِیْمَانَكُمْ ؕ اِنَّ اللهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوْفٌ رَّحِیْمٌ ﴿۱۴۳﴾

(যেভাবে আমি তোমাদের হেদায়াত দিয়েছি) সেভাবেই আমি তোমাদের এক মধ্যপন্থি উম্মতে পরিণত করেছি, যেনো তোমরা দুনিয়ার অন্যান্য মানুষের উপর (হেদায়াতের সাক্ষী হয়ে থাকতে পারো এবং রাসূলও তোমাদের উপর সাক্ষী হয়ে থাকতে পারে। যে কেবলার উপর তোমরা (এতদিন) প্রতিষ্ঠিত ছিলে আমি তা এ উদ্দেশ্যেই নির্ধারণ করেছিলাম, যাতে করে আমি একথাটা জেনে নিতে পারি, তোমাদের মধ্য থেকে কে রাসূলের অনুসরণ করে আর কে তাঁর ( অনুসরণ) থেকে ঘাড় ফিরিয়ে নেয়, তাদের উপর এটা কঠিন (পরীক্ষা), অবশ্য আল্লাহ্ তায়ালা যাদের হেদায়াত দান করেছেন তাদের কথা আলাদা, আল্লাহ্ তায়ালা এমন নন যে, তিনি তোমাদের ঈমান বিনষ্ট করবেন, অবশ্যই আল্লাহ্ তায়ালা মানুষের সাথে বড় দয়ালু ও একান্ত মেহেরবান।


قَدْ نَرٰی تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِی السَّمَآءِ ۚ فَلَنُوَ لِّیَنَّكَ قِبْلَۃً تَرْضٰهَا ࣡ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ؕ وَحَیْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ شَطْرَهٗ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ لَیَعْلَمُوْنَ اَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّهِمْ ؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا یَعْمَلُوْنَ ﴿۱۴۴﴾

আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই জানে যে, তা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করে, সে ব্যাপারে আল্লাহ বেখবর নন।


وَلَئِنْ اَتَیْتَ الَّذِیْنَ اُوْتُوا الْکِتٰبَ بِكُلِّ اٰیَۃٍ مَّا تَبِعُوْا قِبْلَتَكَ ۚ وَمَاۤ اَنْتَ بِتَابِعٍ قِبْلَتَهُمْ ۚ وَمَا بَعْضُهُمْ بِتَابِعٍ قِبْلَةَ بَعْضٍ ؕ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ اَهْوَآءَهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِ ۙ اِنَّكَ اِذًا لَّمِنَ الظّٰلِمِیْنَ ﴿۱۴۵﴾ۘ

ইতিপূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের সামনে যদি তুমি ( দুনিয়ার) সব কয়টি প্রমাণ এনেও হাজির কর, ( তারপরেও) তারা তোমার কেবলা অনুসরণ করবে না, আর ( এরপর) তুমিও তাদের কিবলা অনুসরণকারী হতে পারবে না, (তাছাড়া) এদের এক দলও তো আরেক দলের কেবলা অনুসরণ করে না; ( আমার পক্ষ থেকে) এ জ্ঞান তোমাদের কাছে পৌঁছার পর তুমি যদি তাদের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা অনুসরণ কর, তাহলে অবশ্যই তুমি যালেমদের দলে শামিল হয়ে যাবে।


اَلَّذِیْنَ اٰتَیْنٰهُمُ الْکِتٰبَ یَعْرِفُوْنَهٗ کَمَا یَعْرِفُوْنَ اَبْنَآءَهُمْ ؕ وَ اِنَّ فَرِیْقًا مِّنْهُمْ لَیَكْتُمُوْنَ الْحَقَّ وَهُمْ یَعْلَمُوْنَ ﴿۱۴۶﴾

যাদের আমি কিতাব দান করেছি এরা তাঁকে ভালো করে চিনে, যেমনি এরা চিনে আপন ছেলেদের, অবশ্যই এদের একদল লোক জেনে বুঝে সত্য গোপন করার চেষ্টা করে।


اَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَلَا تَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِیْنَ ﴿۱۴۷﴾

সত্য তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে প্রেরিত। সুতরাং তুমি সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হইও না।


وَ لِكُلٍّ وِّجْهةٌ هُوَ مُوَلِّیْهَا فَاسْتَبِقُوا الْخَیْرٰتِ ؕ؃ اَیْنَ مَا تَكُوْنُوْا یَاْتِ بِكُمُ اللهُ جَمِیْعًا ؕ اِنَّ اللهَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۱۴۸﴾

আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে ( ইবাদত করবে) কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাকবে আল্লাহ্ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন। নিশ্চই আল্লাহ্ সব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।


وَمِنْ حَیْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ؕ وَاِنَّهٗ لَلْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ ؕ وَمَا اللهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ ﴿۱۴۹﴾

আর যে স্থান থেকে তুমি বের হও, নিজের মুখ মসজিদে হারামের দিকে ফিরাও - নিঃসন্দেহে এটাই হলো তোমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্ধারিত বাস্তব সত্য। বস্তুতঃ তোমার পালনকর্তা তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনবহিত নন।


وَمِنْ حَیْثُ خَرَجْتَ فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ؕ وَحَیْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ شَطْرَهٗ ۙ لِئَلَّا یَكُوْنَ لِلنَّاسِ عَلَیْكُمْ حُجَّةٌ ࢥ اِلَّا الَّذِیْنَ ظَلَمُوْا مِنْهُمْ ࢥ فَلَا تَخْشَوْهُمْ وَاخْشَوْنِیْ ࢥ وَلِاُتِمَّ نِعْمَتِیْ عَلَیْكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ ۙ ﴿۱۵۰﴾ۙۛ

আর তোমরা যেখান থেকেই বেরিয়ে আস এবং যেখানেই অবস্থান কর সেদিকেই মুখ ফেরাও, যাতে করে মানুষের জন্য তোমাদের সাথে ঝগড়া করার অবকাশা না থাকে। অবশ্যই যারা অবিবেচক, তাদের কথা আলাদা। কাজেই তাদের আপত্তিতে ভীত হয়ো না। আমাকেই ভয় কর। যাতে আমি তোমাদের জন্যে আমার অনুগ্রহসমূহ পূর্ণ করে দেয় এবং তাতে যেন তোমরা সরলপথ প্রাপ্ত হও।


کَمَاۤ اَرْسَلْنَا فِیْكُمْ رَسُوْلًا مِّنْكُمْ یَتْلُوْا عَلَیْكُمْ اٰیٰتِنَا وَیُزَکِّیْكُمْ وَیُعَلِّمُكُمُ الْکِتٰبَ وَالْحِكْمَةَ وَیُعَلِّمُكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ ﴿۱۵۱﴾

যেমন, আমি পাঠিয়েছি তোমাদেরই মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে একজন রাসূল, যিনি তোমাদের নিকট আমার বাণীসমূহ পাঠ করবেন এবং তোমাদের পবিত্র করবেন; আর তোমাদের শিক্ষা দেবেন কিতাব ও তার তত্ত্বজ্ঞান এবং শিক্ষা দেবেন এমন বিষয় যা কখনো তোমরা জানতে না।


فَاذْكُرُوْنِیْۤ اَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوْا لِیْ وَلَا تَكْفُرُوْنِ ﴿۱۵۲﴾

সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اسْتَعِیْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلٰوةِ ؕ اِنَّ اللهَ مَعَ الصّٰبِرِیْنَ ﴿۱۵۳﴾

হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চিতই আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছে।


وَلَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ یُّقْتَلُ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ اَمْوَاتٌ ؕ بَلْ اَحْیَآءٌ وَّلٰکِنْ لَّا تَشْعُرُوْنَ ﴿۱۵۴﴾

আর যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তাঁরা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।


وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَیْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوْعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْاَمْوَالِ وَالْاَنْفُسِ وَالثَّمَرٰتِ ؕ وَبَشِّرِ الصّٰبِرِیْنَ ﴿۱۵۵﴾

আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুদা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।


الَّذِیْنَ اِذَاۤ اَصَابَتْهُمْ مُّصِیْبَةٌ ۙ قَالُوْۤا اِنَّا لِلّٰهِ وَ اِنَّاۤ اِلَیْهِ رٰجِعُوْنَ ﴿۱۵۶﴾ؕ

যখন তাঁরা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা সবাই আল্লাহ্‌র জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।


اُولٰٓئِكَ عَلَیْهِمْ صَلَوٰتٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ࣞ وَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُوْنَ ﴿۱۵۷﴾

তাঁরা সে সেমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহ্‌র অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত।


اِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَآئِرِ اللهِ ۚ فَمَنْ حَجَّ الْبَیْتَ اَوِاعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِ اَنْ یَّطَّوَّفَ بِهِمَا ؕ وَمَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًا ۙ فَاِنَّ اللهَ شَاکِرٌ عَلِیْمٌ ﴿۱۵۸﴾

নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যারা কাবা ঘরে হজ্জ বা ওমরাহ পালন করে, তাদের পক্ষে এ দু’টিতে প্রদক্ষিণ করাতে কোন দোষ নেই। বরং কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিছু নেকীর কাজ করে, তবে আল্লাহ্ তায়ালা অবশ্যই তা অবগত হবেন এবং তাঁর সে আমলের সঠিক মূল্য দেবেন।


اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْتُمُوْنَ مَاۤ اَنْزَلْنَا مِنَ الْبَیِّنٰتِ وَالْهُدٰی مِنْۢ بَعْدِ مَا بَیَّنّٰهُ لِلنَّاسِ فِی الْکِتٰبِ ۙ اُولٰٓئِكَ یَلْعَنُهُمُ اللهُ وَیَلْعَنُهُمُ اللّٰعِنُوْنَ ﴿۱۵۹﴾

নিশ্চয়ই যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়েতের কথা নাযিল করেছি মানুষের জন্য, কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও; সে সমস্ত লোকের প্রতিই আল্লাহ্‌র অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীগণেরও।


اِلَّا الَّذِیْنَ تَابُوْا وَاَصْلَحُوْا وَبَیَّنُوْا فَاُولٰٓئِكَ اَتُوْبُ عَلَیْهِمْ ۚ وَاَنَا التَّوَّابُ الرَّحِیْمُ ﴿۱۶۰﴾

তবে যারা তওবা করে এবং বর্ণীত তথ্যাদির সংশোধন করে মানুষের কাছে বর্ণনা করে দেয়, সে সমস্ত লোকের তওবা আমি কবুলকারী এবং আমি তাওবা কবুলকারী পরম দয়ালু।


اِنَّ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا وَمَاتُوْا وَهُمْ كُفَّارٌ اُولٰٓئِكَ عَلَیْهِمْ لَعْنَۃُ اللهِ وَالْمَلٰٓئِکَةِ وَالنَّاسِ اَجْمَعِیْنَ ﴿۱۶۱﴾

নিশ্চয়ই যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করে সে সমস্ত লোকের প্রতি আল্লাহ্‌র ফেরেশতাগণের এবং সমস্ত মানুষের লা’নত।


خٰلِدِیْنَ فِیْهَا ۚ لَا یُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ یُنْظَرُوْنَ ﴿۱۶۲﴾

এরা চিরকাল এ লা’নতের মাঝেই থাকবে। উপর থেকে আযাব কখনও হালকা করা হবে না এবং এরা বিরামও পাবে না।


وَ اِلٰـهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الرَّحْمٰنُ الرَّحِیْمُ ﴿۱۶۳﴾

আর তোমাদের উপাস্য, একমাত্র উপাস্য, তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই।


اِنَّ فِیْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ الَّیْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِیْ تَجْرِیْ فِی الْبَحْرِ بِمَا یَنْفَعُ النَّاسَ وَمَاۤ اَنْزَلَ اللهُ مِنَ السَّمَآءِ مِنْ مَّآءٍ فَاَحْیَا بِهِ الْاَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِیْهَا مِنْ كُلِّ دَآبَّةٍ ࣕ وَّتَصْرِیْفِ الرِّیٰحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَیْنَ السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ لَاٰیٰتٍ لِّقَوْمٍ یَّعْقِلُوْنَ ﴿۱۶۴﴾

নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের, সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে, আর আল্লাহ্ তায়ালা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তা দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু, আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালায় যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে- নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।


وَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّتَّخِذُ مِنْ دُوْنِ اللهِ اَنْدَادًا یُّحِبُّوْنَهُمْ کَحُبِّ اللهِ ؕ وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰهِ ؕوَلَوْ یَرَی الَّذِیْنَ ظَلَمُوْۤا اِذْ یَرَوْنَ الْعَذَابَ ۙ اَنَّ الْقُوَّةَ لِلّٰهِ جَمِیْعًا ۙ وَّاَنَّ اللهَ شَدِیْدُ الْعَذَابِ ﴿۱۶۵﴾

আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে, যারা আল্লাহ্ ছাড়া অন্যকে আল্লাহ্‌র সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তাদেরকে আল্লাহকে ভালবাসার মত ভালবাসে। আর যারা ঈমান এনেছে, তারা আল্লাহ্‌র জন্য ভালবাসায় দূঢ়তর। আর যদি যালিমগণ দেখে-যখন তারা আযাব দেখবে যে, নিশ্চয় সকল শক্তি আল্লাহ্‌র জন্য এবং নিশ্চয় আল্লাহ্ আযাব দানে কঠোর।


اِذْ تَبَرَّاَ الَّذِیْنَ اتُّبِعُوْا مِنَ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْا وَرَاَوُا الْعَذَابَ وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ الْاَسْبَابُ ﴿۱۶۶﴾

যখন, যাদেরকে অনুসরণ করা হয়েছে, তারা অনুসারীদের থেকে আলাদা হয়ে যাবে এবং তারা আযাব দেখতে পাবে। আর তাদের সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।


وَقَالَ الَّذِیْنَ اتَّبَعُوْا لَوْ اَنَّ لَنَا کَرَّۃً فَنَتَبَرَّاَ مِنْهُمْ کَمَا تَبَرَّءُوْا مِنَّا ؕ کَذٰلِكَ یُرِیْهِمُ اللهُ اَعْمَالَهُمْ حَسَرٰتٍ عَلَیْهِمْ ؕ وَمَا هُمْ بِخٰرِجِیْنَ مِنَ النَّارِ ﴿۱۶۷﴾

আর যারা অনুসরণ করেছে, তারা বলবে, ‘ যদি আমাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ হত, তাহলে আমরা তাদের থেকে আলাদা হয়ে যেতাম, যেভাবে তারা আলাদা হয়ে গিয়েছে। এভাবে আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের আমলসমূহ দেখাবেন, তাদের জন্য আক্ষেপস্বরূপ। আর তার আগুন থেকে বের হতে পারবে না।


یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ كُلُوْا مِمَّا فِی الْاَرْضِ حَلٰلًا طَیِّبًا ۫ۖ وَّلَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ ؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ ﴿۱۶۸﴾

হে মানুষ, যমীনে যা রয়েছে, তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট শত্রু।


اِنَّمَا یَاْمُرُكُمْ بِالسُّوْٓءِ وَالْفَحْشَآءِ وَاَنْ تَقُوْلُوْا عَلَی اللهِ مَا لَا تَعْلَمُوْنَ ﴿۱۶۹﴾

সে তো কেবল তোমাদেরকে মন্দ ও অশ্লীল কাজের এবং আল্লাহ্‌র সম্বন্ধে তোমরা যা জান না এমন সব বিষয় বলার নির্দেশ দেয়।


وَ اِذَا قِیْلَ لَهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلْفَیْنَا عَلَیْهِ اٰبَآءَنَا ؕ اَوَلَوْ کَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ شَیْئًا وَّلَا یَهْتَدُوْنَ ﴿۱۷۰﴾

আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা অনুসরণ কর, যা আল্লাহ্ নাযিল করেছেন; তারা বলে, ‘ বরং আমরা অনুসরণ করব আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি। যদি তাদের পিতৃ-পুরুষরা কিছু না বুঝে এবং হেদায়াত প্রাপ্ত না হয়, তাহলেও কি?


وَمَثَلُ الَّذِیْنَ کَفَرُوْا کَمَثَلِ الَّذِیْ یَنْعِقُ بِمَا لَا یَسْمَعُ اِلَّا دُعَآءً وَّ نِدَآءً ؕ صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْیٌ فَهُمْ لَا یَعْقِلُوْنَ ﴿۱۷۱﴾

আর যারা কুফরী করেছে তাদের উদাহরণ তার মত, যে এমন কিছুর জন্য চিৎকার করছে, হাঁক-ডাক ছাড়া যে কিছু শুনে না। তারা বধির, বোবা ও অন্ধ। তাই তারা বুঝে না।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُلُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا رَزَقْنٰكُمْ وَاشْكُرُوْا لِلّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ اِیَّاهُ تَعْبُدُوْنَ ﴿۱۷۲﴾

হে মুমিনগণ, আহার কর আমি তোমাদেরকে যে হালাল রিযক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহ্‌র জন্য শোকর কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত কর।


اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَیْكُمُ الْمَیْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِیْرِ وَمَاۤ اُهِلَّ بِهٖ لِغَیْرِ اللهِ ۚ فَمَنِ اضْطُرَّ غَیْرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِ ؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۱۷۳﴾

নিশ্চই তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকুরের গোশ্ত এবং যা গায়রুল্লাহর নামে জবাই করা হয়েছে। সুতরাং যে বাধ্য হবে, অবাধ্য বা সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে, তাহলে তার কোন পাপ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْتُمُوْنَ مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ مِنَ الْکِتٰبِ وَیَشْتَرُوْنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًا ۙ اُولٰٓئِكَ مَا یَاْكُلُوْنَ فِیْ بُطُوْنِهِمْ اِلَّا النَّارَ وَلَا یُکَلِّمُهُمُ اللهُ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَلَا یُزَکِّیْهِمْ ۚۖ وَلَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ ﴿۱۷۴﴾

প্রকৃতপক্ষে যারা আল্লাহ্‌র নাযিলকৃত কিতাবকে গোপন করে এবং তার বিনিময় তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া কিছুই ভরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদরেকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।


اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰی وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ ۚ فَمَاۤ اَصْبَرَهُمْ عَلَی النَّارِ ﴿۱۷۵﴾

তারাই হেদায়াতের পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা এবং মাগফিরাতের পরিবর্তে আযাব ক্রয় করেছে। আগুনের উপর তারা কতইনা ধৈর্যশীল।


ذٰلِكَ بِاَنَّ اللهَ نَزَّلَ الْکِتٰبَ بِالْحَقِّ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیْنَ اخْتَلَفُوْا فِی الْکِتٰبِ لَفِیْ شِقَاقٍۭ بَعِیْدٍ ﴿۱۷۶﴾

তা এই কারণে যে আল্লাহ্ যথার্থরূপে কিতাব নাযিল করেছেন। আর নিশ্চয় যারা কিতাবে মতবিরোধ করেছে, তারা অবশ্যই সুদূর মতানৈক্যে রয়েছে।


لَیْسَ الْبِرَّ اَنْ تُوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلٰکِنَّ الْبِرَّ مَنْ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ وَ الْمَلٰٓئِکَةِ وَ الْکِتٰبِ وَ النَّبِیّٖنَ ۚ وَاٰتَی الْمَالَ عَلٰی حُبِّهٖ ذَوِی الْقُرْبٰی وَ الْیَتٰمٰی وَ الْمَسٰکِیْنَ وَ ابْنَ السَّبِیْلِ ۙ وَالسَّآئِلِیْنَ وَ فِی الرِّقَابِ ۚ وَاَقَامَ الصَّلٰوةَ وَاٰتَی الزَّکٰوةَ ۚ وَالْمُوْفُوْنَ بِعَهْدِهِمْ اِذَا عٰهَدُوْا ۚ وَالصّٰبِرِیْنَ فِی الْبَاْسَآءِ والضَّرَّآءِ وَحِیْنَ الْبَاْسِ ؕ اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ صَدَقُوْا ؕ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُتَّقُوْنَ ﴿۱۷۷﴾ ی

ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হলো যে, ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব নবীগণের প্রতি এবং সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি থাকা সত্বেও নিকট আত্মীয়গণের, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুক্তাকী।


يٰٓاَيُّهَاالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِصَاصُ فِی الْقَتْلٰی ؕ الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالْاُنْثٰی بِالْاُنْثٰی ؕ فَمَنْ عُفِیَ لَهٗ مِنْ اَخِیْهِ شَیْءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِ وَاَدَآءٌ اِلَیْهِ بِاِحْسَانٍ ؕ ذٰلِكَ تَخْفِیْفٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَرَحْمَۃٌ ؕ فَمَنِ اعْتَدٰی بَعْدَ ذٰلِكَ فَلَهٗ عَذَابٌ اَلِیْمٌ ﴿۱۷۸﴾

হে মুমিনগণ! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের উপর ‘কিসাস’ ফরজ করা হয়েছে। স্বাধীনের বদলে স্বাধীন, দাসের বদলে দাস, নারীর বদলে নারী, তবে যাকে কিছুটা ক্ষমা করা হবে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে তাহলে সততার অনুসরণ করবে এবং সুন্দরভাবে তাকে আদায় করে দেবে। এটি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে হালকাকরণ ও রহমত। সুতরাং এরপর যে সীমালঙ্ঘন করবে, তার জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।


وَلَكُمْ فِی الْقِصَاصِ حَیٰوۃٌ يٰٓاُولِى الْاَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ ﴿۱۷۹﴾

আর হে বিবেক সম্পন্নগণ,কিসাসে রয়েছে তোমাদের জন্য জীবন, আশা করা যায় তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে।


كُتِبَ عَلَیْكُمْ اِذَا حَضَرَ اَحَدَكُمُ الْمَوْتُ اِنْ تَرَكَ خَیْرَا ۚۖنِ الْوَصِیَّۃُ لِلْوَالِدَیْنِ وَالْاَقْرَبِیْنَ بِالْمَعْرُوْفِ ۚ حَقًّا عَلَی الْمُتَّقِیْنَ ﴿۱۸۰﴾

তোমাদের উপর ফরজ করা হয়েছে যে, যখন তোমাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হবে, যদি সে কোন সম্পদ রেখে যায়, তবে পিতা-মাতা ও নিকটাত্মীয়দের জন্য ন্যায়ভিত্তিক অসিয়ত করবে। এটি মুক্তাকিদের দায়িত্ব।


فَمَنْۢ بَدَّلَهٗ بَعْدَ مَا سَمِعَهٗ فَاِنَّمَاۤ اِثْمُهٗ عَلَی الَّذِیْنَ یُبَدِّلُوْنَهٗ ؕ اِنَّ اللهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿۱۸۱﴾

অতএব যে তা শ্রবণ করার পর পরিবর্তন করবে, তবে এর পাপ তাদের হবে, যারা তা পরিবর্তন করে, নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।


فَمَنْ خَافَ مِنْ مُّوْصٍ جَنَفًا اَوْ اِثْمًا فَاَصْلَحَ بَیْنَهُمْ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِ ؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۱۸۲﴾

তবে কেউ যদি অসিয়তকারীর পক্ষ থেকে পক্ষ পাতিত্ব ও পাপের আশঙ্কা করে, অতঃপর তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তাহলে তার কোন পাপ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا كُتِبَ عَلَیْكُمُ الصِّیَامُ کَمَا كُتِبَ عَلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُوْنَ ﴿۱۸۳﴾

হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।


اَیَّامًا مَّعْدُوْدٰتٍ ؕ فَمَنْ کَانَ مِنْكُمْ مَّرِیْضًا اَوْ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ وَعَلَی الَّذِیْنَ یُطِیْقُوْنَهٗ فِدْیَۃٌ طَعَامُ مِسْکِیْنٍ ؕ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَیْرًا فَهُوَ خَیْرٌ لَّهٗ ؕ وَ اَنْ تَصُوْمُوْا خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ﴿۱۸۴﴾

নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, অথবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদইয়া-একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান।


شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِیْۤ اُنْزِلَ فِیْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَبَیِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰی وَالْفُرْقَانِ ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُ ؕ وَمَنْ کَانَ مَرِیْضًا اَوْ عَلٰی سَفَرٍ فَعِدَّۃٌ مِّنْ اَیَّامٍ اُخَرَ ؕ یُرِیْدُ اللهُ بِكُمُ الْیُسْرَ وَلَا یُرِیْدُ بِكُمُ الْعُسْرَ ۫ وَ لِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَ لِتُکَبِّرُوا اللهَ عَلٰی مَا هَدٰىكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ ﴿۱۸۵﴾

প্রকৃতপক্ষে যারা আল্লাহ্‌র নাযিলকৃত কিতাবকে গোপন করে এবং তার বিনিময় তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের পেটে আগুন ছাড়া কিছুই ভরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং তাদরেকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।


وَ اِذَا سَاَلَكَ عِبَادِیْ عَنِّیْ فَاِنِّیْ قَرِیْبٌ ؕ اُجِیْبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ ۙ فَلْیَسْتَجِیْبُوْا لِیْ وَلْیُؤْمِنُوْا بِیْ لَعَلَّهُمْ یَرْشُدُوْنَ ﴿۱۸۶﴾

আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞেসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।


اُحِلَّ لَكُمْ لَیْلَةَ الصِّیَامِ الرَّفَثُ اِلٰی نِسَآئِكُمْ ؕ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَاَنْتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ؕ عَلِمَ اللهُ اَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَخْتَانُوْنَ اَنْفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَیْكُمْ وَعَفَا عَنْكُمْ ۚ فَالْئٰنَ بَاشِرُوْهُنَّ وَابْتَغُوْا مَا کَتَبَ اللهُ لَكُمْ ؃ وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا حَتّٰی یَتَبَیَّنَ لَكُمُ الْخَیْطُ الْاَبْیَضُ مِنَ الْخَیْطِ الْاَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ۪ ثُمَّ اَتِمُّوا الصِّیَامَ اِلَی الَّیْلِ ۚ وَلَا تُبَاشِرُوْهُنَّ وَاَنْتُمْ عٰکِفُوْنَ ۙ فِی الْمَسٰجِدِ ؕ تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ فَلَا تَقْرَبُوْهَا ؕ کَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ یَتَّقُوْنَ ﴿۱۸۷﴾

রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে,তোমরা আত্মপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরণ কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের সুভ্ররেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশ না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেওয়াা সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেয়ো না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াতসমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।


وَلَا تَاْكُلُوْۤا اَمْوَالَكُمْ بَیْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُوْابِهَاۤ اِلَی الْحُکَّامِ لِتَاْكُلُوْا فَرِیْقًا مِّنْ اَمْوَالِ النَّاسِ بِالْاِثْمِ وَاَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ﴿۱۸۸﴾

তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ কর না এবং মানুষের সম্পদের কিয়দংশ জেন-শুনে পাপ পন্থায় আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে শাসন কর্তৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।


یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْاَهِلَّةِ ؕ قُلْ هِیَ مَوَاقِیْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ ؕ وَلَیْسَ الْبِرُّ بِاَنْ تَاْتُوا الْبُیُوْتَ مِنْ ظُهُوْرِهَا وَلٰکِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقٰیۚ وَاْتُوا الْبُیُوْتَ مِنْ اَبْوَابِهَا ۪ وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ﴿۱۸۹﴾

তোমরা নিকট তারা জিজ্ঞেস করে নতুন চাঁদের বিষয়ে। বলে দাও এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজ্জের সময় ঠিক করার মাধ্যম। আর পিছনের দিক দিয়ে ঘরে প্রবেশ করার মধ্যে কোন নেকী বা কল্যাণ নেই। অবশ্য নেকী হলো আল্লাহকে ভয় করার মধ্যে। আর তোমরা ঘরে প্রবেশ কর দরজা দিয়ে এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা নিজেদের বাসনায় কৃতকার্য হতে পার।


وَقَاتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ الَّذِیْنَ یُقَاتِلُوْنَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوْا ؕ اِنَّ اللهَ لَا یُحِبُّ الْمُعْتَدِیْنَ ﴿۱۹۰﴾

আর যারা তোমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহ্‌র পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ; কিন্তু সীমালঙ্ঘন কর না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না।


وَاقْتُلُوْهُمْ حَیْثُ ثَقِفْتُمُوْهُمْ وَاَخْرِجُوْهُمْ مِّنْ حَیْثُ اَخْرَجُوْكُمْ وَالْفِتْنَۃُ اَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقٰتِلُوْهُمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتّٰی یُقٰتِلُوْكُمْ فِیْهِ ۚ فَاِنْ قٰتَلُوْكُمْ فَاقْتُلُوْهُمْ ؕ کَذٰلِكَ جَزَآءُ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۱۹۱﴾

যেখানে তাদেরকে পাইবে হত্যা করবে এবং যে স্থান থেকে তারা তোমাদেরকে বহিষ্কার করেছে তোমরাও সেই স্থান থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করবে। ফিতনা হত্যা অপেক্ষা গুরুতর। মসজিদুল হারামের নিকট তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে না, যে পর্যন্ত তারা সেখানে তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না করে। যদি তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তবে তোমরা তাদেরকে হত্যা করবে, আর ইহাই কাফেরদের পরিণাম।


فَاِنِ انْتَهَوْا فَاِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۱۹۲﴾

যদি তারা বিরত থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


وَقٰتِلُوْهُمْ حَتّٰی لَا تَكُوْنَ فِتْنَۃٌ وَّیَكُوْنَ الدِّیْنُ لِلّٰهِ ؕ فَاِنِ انْتَهَوْا فَلَا عُدْوَانَ اِلَّا عَلَی الظّٰلِمِیْنَ ﴿۱۹۳﴾

আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর যদি তারা নিবৃত হয়ে যায়, তাহলে কারো প্রতি কোন জবরদস্তি নেই, কিন্তু যারা (যালেম তাদের ব্যাপার আলাদা)।


اَلشَّهْرُ الْحَرَامُ بِالشَّهْرِ الْحَرَامِ وَالْحُرُمٰتُ قِصَاصٌ ؕ فَمَنِ اعْتَدٰی عَلَیْكُمْ فَاعْتَدُوْا عَلَیْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدٰی عَلَیْكُمْ ۪ وَاتَّقُوا اللهَ وَ اعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ مَعَ الْمُتَّقِیْنَ ﴿۱۹۴﴾

সম্মানিত মাসই সম্মানিত মাসের বদলা আর সম্মান করারও বদলা রয়েছে। বস্তুতঃ যারা তোমাদের উপর জবরদস্তি করেছে, তোমরা তাদের উপর জবরদস্তি কর, যেমন জবরদস্তি তারা করেছে তোমাদের উপর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেজগার, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছে।


وَ اَنْفِقُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ وَلَا تُلْقُوْا بِاَیْدِیْكُمْ اِلَی التَّهْلُکَةِ ۚۖۛ وَاَحْسِنُوْا ۚۛ اِنَّ اللهَ یُحِبُّ الْمُحْسِنِیْنَ ﴿۱۹۵﴾

আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন কর না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।


وَاَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلّٰهِ ؕ فَاِنْ اُحْصِرْتُمْ فَمَا اسْتَیْسَرَ مِنَ الْهَدْیِ ۚ وَلَا تَحْلِقُوْا رُءُوْسَكُمْ حَتّٰی یَبْلُغَ الْهَدْیُ مَحِلَّهٗ ؕ فَمَنْ کَانَ مِنْكُمْ مَّرِیْضًا اَوْ بِهٖۤ اَذًی مِّنْ رَّاْسِهٖ فَفِدْیَۃٌ مِّنْ صِیَامٍ اَوْ صَدَقَۃٍ اَوْ نُسُكٍ ۚ فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْ فَمَنْ تَمَتَّعَ بِالْعُمْرَةِ اِلَی الْحَجِّ فَمَا اسْتَیْسَرَ مِنَ الْهَدْیِ ۚ فَمَنْ لَّمْ یَجِدْ فَصِیَامُ ثَلٰثَةِ اَیَّامٍ فِی الْحَجِّ وَسَبْعَۃٍ اِذَا رَجَعْتُمْ ؕ تِلْكَ عَشَرَۃٌ کَامِلَۃٌ ؕ ذٰلِكَ لِمَنْ لَّمْ یَكُنْ اَهْلُهٗ حَاضِرِی الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ؕ وَاتَّقُوا اللهَ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ شَدِیْدُ الْعِقَابِ ﴿۱۹۶﴾

আর তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমরাহ পরিপূর্ণভাবে পালন কর। যদি তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তাহলে কুরবানির জন্য যা কিছু সহজলভ্য, তাই তোমাদের উপর ধার্য আর তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মাথামুণ্ডন করবে না, যততক্ষণ না কুরববানি যথাস্থানে পৌঁছে যাবে। যারা তোমাদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়বে অথবা মাথায় যদি কোন কষ্ট থাকে, তাহলে তার পরিবর্তে রোজা করবে অথবা সদকা দিবে অথবা কুরবানি করবে। আর তোমাদের মধ্যে যারা হজ্জ ও ওমরাহ একত্রে একই সাথে পালন করতে চাও, তবে যা কিছু সহজলভ্য, তা দিয়ে কুরবানি করাই তার উপর কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা কুরবানির পশু পাবে না, তারা হজ্জের দিনগুলোর মধ্যে রোজা রাখবে তিনটি আর সাতটি রোজা রাখবে ফিরে যাবার পর। এভাবে দশটি রোজা পূর্ণ হয়ে যাবে। এই নির্দেশটি তাদের জন্য, যাদের পরিবার-পরিজন মসজিদুল-হারামের আশে-পাশে বসবাস করে না। আল্লাহকে ভয় করতে থাক। নিশ্চই জেনে রাখ যে, আল্লাহর আযাব বড় কঠিন।


اَلْحَجُّ اَشْهُرٌ مَّعْلُوْمٰتٌ ۚ فَمَنْ فَرَضَ فِیْهِنَّ الْحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوْقَ ۙ وَلَا جِدَالَ فِی الْحَجِّ ؕ وَمَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَیْرٍ یَّعْلَمْهُ اللهُ ؕؔ وَتَزَوَّدُوْا فَاِنَّ خَیْرَ الزَّادِ التَّقْوٰی ۫ وَاتَّقُوْنِ یٰۤاُولِی الْاَلْبَابِ ﴿۱۹۷﴾

হজের সময় নির্দিষ্ট মাসসমূহ। অতএব এই মাসসমূহে যে নিজের উপর হজ্জ আরোপ করে নিল, তার জন্য হজে অশ্লীল ও পাপ কাজ এবং জগড়া-বিবাদ বৈধ নয়। আর তোমরা ভালো কাজের যা কর, আল্লাহ তা জানেন এব়ং পাথেয়ও গ্রহণ কর। নিশ্চয়ই উত্তম পাথেয় তাকওয়া আর হে বিবেক সম্পন্নগণ, তোমরা আমাকে় ভয় কর।


لَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ اَنْ تَبْتَغُوْا فَضْلًا مِّنْ رَّبِّكُمْ ؕ فَاِذَاۤ اَفَضْتُمْ مِّنْ عَرَفٰتٍ فَاذْكُرُوا اللهَ عِنْدَ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ ۪ وَاذْكُرُوْهُ کَمَا هَدٰى كُمْ ۚ وَ اِنْ كُنْتُمْ مِّنْ قَبْلِهٖ لَمِنَ الضَّآلِّیْنَ ﴿۱۹۸﴾

তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ করায় কোন পাপ নেই। অতঃপর যখন তাওয়াফের জন্য ফিরে আসবে আরাফা থেকে, তখন তোমরা মাশআরে হারামের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর। আর তাকে স্মরণ কর তেমনি করে, যেমন তোমাদেরকে হেদায়াত করা হয়েছে-আর নিশ্চয়ই তোমরা ইতিপূর্বে অজ্ঞ ছিলে ।


ثُمَّ اَفِیْضُوْا مِنْ حَیْثُ اَفَاضَ النَّاسُ وَاسْتَغْفِرُوا اللهَ ؕ اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۱۹۹﴾

অতঃপর তওয়াফের জন্য দ্রুতগতিতে সেখান থেকে ফিরে আসো, যেখান থেকে সবাই ফিরে। আর আল্লাহর কাছেই মাগফিরাত কামনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী করুণাময়।


فَاِذَا قَضَیْتُمْ مَّنَاسِکَكُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ کَذِكْرِكُمْ اٰبَآءَكُمْ اَوْ اَشَدَّ ذِكْرًا ؕ فَمِنَ النَّاسِ مَنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا وَمَا لَهٗ فِی الْاٰخِرَةِ مِنْ خَلَاقٍ ﴿۲۰۰﴾

আর অতঃপর যখন হজের যাবতীয় অনুষ্ঠান ক্রিয়াদি সমাপ্ত করে সারবে, তখন স্মরণ করবে আল্লাহকে যেমন করে তোমরা স্মরণ করতে নিজেদের বাপ-দাদাদেরকে; বরং তার চেয়েও বেশি স্মরণ করবে। তারপর অনেকে তো বলে যে, হে পরওয়ারদেগার! আমাদেরকে দুনিয়াতে দান কর অথচ তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই।


وَمِنْهُمْ مَّنْ یَّقُوْلُ رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَۃً وَّ فِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَۃً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ ﴿۲۰۱﴾

আর তাদের মধ্যে যারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখিরাতে কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে দোযখের শাস্তি থেকে রক্ষা কর-’


اُولٰٓئِكَ لَهُمْ نَصِیْبٌ مِّمَّا کَسَبُوْا ؕ وَاللهُ سَرِیْعُ الْحِسَابِ ﴿۲۰۲﴾

তারা যা অর্জন করেছে তার প্রাপ্য অংশ তাদেরই। বস্তুত আল্লাহ্ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর।


وَاذْكُرُوا اللهَ فِیْۤ اَیَّامٍ مَّعْدُوْدٰتٍ ؕ فَمَنْ تَعَجَّلَ فِیْ یَوْمَیْنِ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِ ۚ وَمَنْ تَاَخَّرَ فَلَاۤ اِثْمَ عَلَیْهِ ۙ لِمَنِ اتَّقٰی ؕ وَاتَّقُوا اللهَ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّكُمْ اِلَیْهِ تُحْشَرُوْنَ ﴿۲۰۳﴾

আর স্মরণ কর আল্লাহকে নির্দিষ্ট সংখ্যক কয়েকটি দিনে। অতঃপর যে লোক তাড়াহুড়া করে চলে যাবে শুধু দুই দিনের মধ্যে তার জন্য কোন পাপ নেই। আর যে লোক থেকে যাবে তার কোন পাপ নেই। অবশ্যই তাদের পাপ নেই। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করতে থাক এবং নিশ্চিত জেনে রাখ, তোমরা সবাই তাঁর সামনে সমবেত হবে।


وَمِنَ النَّاسِ مَنْ یُّعْجِبُكَ قَوْلُهٗ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ یُشْهِدُ اللهَ عَلٰی مَا فِیْ قَلْبِهٖ ۙ وَهُوَ اَلَدُّ الْخِصَامِ ﴿۲۰۴﴾

আর মানুষের মধ্যে এমন ব্যক্তি আছে, পার্থিব জীবন সম্বন্ধে যার কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করে এবং তার অন্তরে যা আছে সে সম্বন্ধে আল্লাহ্কে সাক্ষী রাখে। প্রকৃতপক্ষে সে ভীষণ কলহপ্রিয়।


وَ اِذَا تَوَلّٰی سَعٰی فِی الْاَرْضِ لِیُفْسِدَ فِیْهَا وَ یُهْلِكَ الْحَرْثَ وَالنَّسْلَ ؕ وَ اللهُ لَا یُحِبُّ الْفَسَادَ ﴿۲۰۵﴾

আর যখন সে উঠে চলে যায়, তখন যমীনে তার দৌড়-ঝাপ হয় এই উদ্দেশ্য যে, সে তাতে অশান্তি ছড়াবে এবং ফসল ও (জীব-জন্তুর) বংশ নিপাত করবে অথচ আল্লাহ অশান্তি সৃষ্টি পছন্দ করেন না।


وَ اِذَا قِیْلَ لَهُ اتَّقِ اللهَ اَخَذَتْهُ الْعِزَّۃُ بِالْاِثْمِ فَحَسْبُهٗ جَهَنَّمُ ؕ وَلَبِئْسَ الْمِهَادُ ﴿۲۰۶﴾

আর যখন তাকে বলা হয় যে, আল্লাহকে ভয় কর,তখন তার পাপ তাকে অহংকারে উৎসাহিত করে । সুতরাং তার জন্য দোযখই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হলো নিকৃষ্টতর ঠিকানা।


وَ مِنَ النَّاسِ مَنْ یَّشْرِیْ نَفْسَهُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللهِ ؕ وَاللهُ رَءُوْفٌۢ بِالْعِبَادِ ﴿۲۰۷﴾

আর মানুষের মাঝে এমন শ্রেণীর লোক রয়েছে-যার আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জানের বাজি রাখে। আল্লাহ্ হলেন তার বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا ادْخُلُوْا فِی السِّلْمِ کَآفَّۃً ۪ وَ لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّیْطٰنِ ؕ اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِیْنٌ ﴿۲۰۸﴾

হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চতরূপে সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন“।


فَاِنْ زَلَلْتُمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْكُمُ الْبَیِّنٰتُ فَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ عَزِیْزٌ حَکِیْمٌ ﴿۲۰۹﴾

সুস্পষ্ট নিদর্শন তোমাদের নিকট আসার পর যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে তবে নিশ্চিত জেনে রাখ, আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।


هَلْ یَنْظُرُوْنَ اِلَّاۤ اَنْ یَّاْتِیَهُمُ اللهُ فِیْ ظُلَلٍ مِّنَ الْغَمَامِ وَالْمَلٰٓئِکَۃُ وَقُضِیَ الْاَمْرُ ؕ وَ اِلَی اللهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ ﴿۲۱۰﴾

তারা কি সে দিকেই তাকি়য়ে রয়েছে যে, মেঘের আড়ালে তাদের সামনে আসবেন আল্লাহ্ ও ফেরেশতাগণ? আর তাতেই সব মীমাংসা হয়ে যাবে। বস্তুতঃ সব কার্য-কলাপই আল্লাহর নিকট গিয়ে পৌঁছবে।


سَلْ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ کَمْ اٰتَیْنٰهُمْ مِّنْ اٰیَۃٍۭ بَیِّنَۃٍ ؕ وَمَنْ یُّبَدِّلْ نِعْمَةَ اللهِ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُ فَاِنَّ اللهَ شَدِیْدُ الْعِقَابِ ﴿۲۱۱﴾

বনী ঈসরাঈলগণকে জিজ্ঞেস কর, তাদের আমি কত স্পষ্ট নিদর্শনাবলী দান করেছি। আর আল্লাহর নেয়ামত পৌঁছে যাওয়ার পর যদি কেউ সে নেয়ামতকে পরিবর্তিত করে, তবে আল্লাহর আযাব অতি কঠিন।


زُیِّنَ لِلَّذِیْنَ کَفَرُوا الْحَیٰوۃُ الدُّنْیَا وَ یَسْخَرُوْنَ مِنَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا ۘ وَالَّذِیْنَ اتَّقَوْا فَوْقَهُمْ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ وَاللهُ یَرْزُقُ مَنْ یَّشَآءُ بِغَیْرِ حِسَابٍ ﴿۲۱۲﴾

পার্থিব জীবনের উপর কাফেরদেরকে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে আর তারা ঈমানদারদের প্রতি লক্ষ্য করে হাসাহাসি করে। পক্ষান্তরে যারা পরহেজগার তারা সেই কাফেরদের তুলনায় কেয়ামতের দিন অত্যন্ত উচ্চ মর্যাদায় থাকবে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সীমাহীন রুযী দান করেন।


کَانَ النَّاسُ اُمَّۃً وَّاحِدَۃً ۟ فَبَعَثَ اللهُ النَّبِیّٖنَ مُبَشِّرِیْنَ وَمُنْذِرِیْنَ ۪ وَ اَنْزَلَ مَعَهُمُ الْکِتٰبَ بِالْحَقِّ لِیَحْكُمَ بَیْنَ النَّاسِ فِیْمَا اخْتَلَفُوْا فِیْهِ ؕ وَمَا اخْتَلَفَ فِیْهِ اِلَّا الَّذِیْنَ اُوْتُوْهُ مِنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ الْبَیِّنٰتُ بَغْیًۢا بَیْنَهُمْ ۚ فَهَدَی اللهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِمَا اخْتَلَفُوْا فِیْهِ مِنَ الْحَقِّ بِاِذْنِهٖ ؕ وَاللهُ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسْتَقِیْمٍ ﴿۲۱۳﴾

সকল মানুষ একই জতিসত্তার অন্তর্ভুক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা পয়গম্বর পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসাবে। আর তাদের সাথে অবতীর্ণ করলেন সত্য কিতাব, যাতে মানুষের মাঝে বিতর্কমূলক বিষয়ে মীমাংসা করতে পারেন। বস্তুতঃ কিতাবের ব্যাপারে অন্য কেউ মতভেদ করেনি; কিন্তু পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর নিজেদের পারস্পরিক জেদবশতঃ তারাই করেছে যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ ঈমানদারদেরকে হেদায়াত করেছেন সেই সত্য বিষয়ে, যে ব্যাপারে তারা মতভেদে লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, সরল পথ বাতলে দেন।


اَمْ حَسِبْتُمْ اَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَ لَمَّا یَاْتِكُمْ مَّثَلُ الَّذِیْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ ؕ مَسَّتْهُمُ الْبَاْسَآءُ وَالضَّرَّآءُ وَ زُلْزِلُوْا حَتّٰی یَقُوْلَ الرَّسُوْلُ وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ مَتٰی نَصْرُ اللهِ ؕ اَلَاۤ اِنَّ نَصْرَ اللهِ قَرِیْبٌ ﴿۲۱۴﴾

তোমরা কি এমন ধারণা পোষণ কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ লাভ করবে, অথচ এখনও পর্যন্ত তোমাদের আগের লোকেদের মত অবস্থা তোমাদের সামনে আসেনি? তাদেরকে অভাবের তীব্র তাড়না এবং মুসিবত স্পর্শ করেছিল এবং তারা এতদূর বিকম্পিত হয়েছিল যে, নবী ও তার সঙ্গের মুমিনগণ চিৎকার করে বলেছিল-আল্লাহর সাহায্য কখন আসবে? জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী।


یَسْـَٔلُوْنَكَ مَاذَا یُنْفِقُوْنَ ۬ؕ قُلْ مَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِّنْ خَیْرٍ فَلِلْوَالِدَیْنِ وَالْاَقْرَبِیْنَ وَالْیَتٰمٰی وَالْمَسٰکِیْنِ وَابْنِ السَّبِیْلِ ؕ وَمَا تَفْعَلُوْا مِنْ خَیْرٍ فَاِنَّ اللهَ بِهٖ عَلِیْمٌ ﴿۲۱۵﴾

তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও-যে বস্তুই তোমরা ব্যয় কর, তা হবে পিতা-মাতার জন্যে, আত্মীয়-আপনজনের জন্যে, এতিম-অনাথদের জন্যে অসহায়দের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। আর তোমরা যে কোন সৎকাজ করবে, নিংসন্দেহে তা অত্যন্ত ভালোভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে।


كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ ۚ وَعَسٰۤی اَنْ تَكْرَهُوْا شَیْئًا وَّهُوَ خَیْرٌ لَّكُمْ ۚ وَعَسٰۤی اَنْ تُحِبُّوْا شَیْئًا وَّهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ ؕ وَاللهُ یَعْلَمُ وَ اَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ ﴿۲۱۶﴾

তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করা হয়েছে, অথচ তা তামাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরো তোমাদের কাছে হয়ত কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয় , অথচ তা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর। আর হয়ত বা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকাল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।


یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الشَّهْرِ الْحَرَامِ قِتَالٍ فِیْهِ ؕ قُلْ قِتَالٌ فِیْهِ کَبِیْرٌ ؕ وَصَدٌّ عَنْ سَبِیْلِ اللهِ وَكُفْرٌۢ بِهٖ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ ٭ وَ اِخْرَاجُ اَهْلِهٖ مِنْهُ اَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ ۚ وَ الْفِتْنَۃُ اَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ ؕ وَلَا یَزَالُوْنَ یُقَاتِلُوْنَكُمْ حَتّٰی یَرُدُّوْكُمْ عَنْ دِیْنِكُمْ اِنِ اسْتَطَاعُوْا ؕ وَمَنْ یَّرْتَدِدْ مِنْكُمْ عَنْ دِیْنِهٖ فَیَمُتْ وَهُوَکَافِرٌ فَاُولٰٓئِكَ حَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فِی الدُّنْیَا وَالْاٰخِرَةِ ۚ وَ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۲۱۷﴾

সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও, এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় পাপ। আর আল্লাহর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা এবং কুফরি করা, মসজিদে হারামের পথে বাধা দেওয়া এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা, আল্লাহর নিকট তার চেয়েও বড় পাপ। আর ধর্মের ব্যাপারে ফেতনা সৃষ্টি করা নরহত্যা অপেক্ষাও মহাপাপ। বস্তুবঃ তারা তো সর্বদাই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকবে, যাতে করে তোমাদেরকে দিন থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে, যদি তা সম্ভব হয়। তোমাদের মধ্যে যারা নিজের দিন থেকে ফিরে দাঁড়াবে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের যাবতীয় আমল বিনষ্ট হয়ে যাবে। আর তারাই হলো দোযখবাসী তাতে তারা চিরকাল বাস করবে।


اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ الَّذِیْنَ هَاجَرُوْا وَجٰهَدُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ ۙ اُولٰٓئِكَ یَرْجُوْنَ رَحْمَتَ اللهِ ؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۲۱۸﴾

যারা ঈমান আনে এবং যারা হিজরত করে এবং জিহাদ করে আল্লাহ্‌র পথে, তারাই আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে। আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।


یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَیْسِرِؕ قُلْ فِیْهِمَاۤ اِثْمٌ کَبِیْرٌ وَّ مَنَافِعُ لِلنَّاسِ ۫ وَ اِثْمُهُمَاۤ اَكْبَرُ مِنْ نَّفْعِهِمَا ؕ وَ یَسْـَٔلُوْنَكَ مَاذَا یُنْفِقُوْنَ ۬ؕ قُلِ الْعَفْوَ ؕ کَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمُ الْاٰیٰتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَکَّرُوْنَ ﴿۲۱۹﴾

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে । বলে দাও এতদুভয়ের মধ্যে রযেছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্য উপকারিতাও রয়েছে, তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে কি তারা ব্যয় করবে! বলে দাও নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা বাঁচে তাই খরচ করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্দেশ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পার।


فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ ؕ وَ یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْیَتٰمٰی ؕ قُلْ اِصْلَاحٌ لَّهُمْ خَیْرٌ ؕ وَ اِنْ تُخَالِطُوْهُمْ فَاِخْوَانُكُمْ ؕ وَاللهُ یَعْلَمُ الْمُفْسِدَ مِنَ الْمُصْلِحِ ؕ وَلَوْ شَآءَ اللهُ لَاَعْنَتَكُمْ ؕ اِنَّ اللهَ عَزِیْزٌ حَکِیْمٌ ﴿۲۲۰﴾

দুনিয়া ও আখেরাতের বিষয়। আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, এতিম সংক্রান্ত হুকুম। বলে দাও, তাদের কাজ-কর্ম সঠিকভাবে গুছিয়ে দেয়া উত্তম আর যদি তাদের ব্যয়ভার নিজের সাথে মিশিয়ে নাও, তাহলে মনে করবে তারা তোমাদের ভাই। বস্তুতঃ অমঙ্গলকামী ও মঙ্গলকামীদেরকে আল্লাহ জানেন। আল্লাহ যদি ইচ্ছে করতেন, তাহলে তোমাদের উপর জটিলতা আরোপ করতে পারতেন। নিশ্চই তিনি পরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞ।


وَ لَا تَنْکِحُوا الْمُشْرِکٰتِ حَتّٰی یُؤْمِنَّ ؕ وَلَاَمَۃٌ مُّؤْمِنَۃٌ خَیْرٌ مِّنْ مُّشْرِکَۃٍ وَّ لَوْ اَعْجَبَتْكُمْ ۚ وَ لَا تُنْکِحُوا الْمُشْرِکِیْنَ حَتّٰی یُؤْمِنُوْا ؕ وَلَعَبْدٌ مُّؤْمِنٌ خَیْرٌ مِّنْ مُّشْرِكٍ وَّ لَوْ اَعْجَبَكُمْ ؕ اُولٰٓئِكَ یَدْعُوْنَ اِلَی النَّارِ ۚۖ وَاللهُ یَدْعُوْۤا اِلَی الْجَنَّةِ وَالْمَغْفِرَةِ بِاِذْنِهٖ ۚ وَیُبَیِّنُ اٰیٰتِهٖ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ یَتَذَکَّرُوْنَ ﴿۲۲۱﴾

মুশরিক নারীগণ যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমান না আনে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিবাহ করো না। নিশ্চয় একজন মুমিন দাসী যে-কোন মুশরিক নারী অপেক্ষা শ্র্রেয়, যদিও সে মুশরিক নারী তোমাদের মুগ্ধ করে। আর নিজেদের নারীদের বিবাহ মুশরিক পুরুষদের সাথে সম্পূর্ণ করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিশ্চয় একজন মুমিন গোলাম যে-কোন একজন মুশরিক পুরুষ অপেক্ষা শ্রেয় যদিও সে মুশরিক পুরুষ তোমাদের মুগ্ধ করে। তারা সকলে তো জাহান্নামের দিকে ডাকে, যখন আল্লাহ নিজ জান্নাত ও মাগফিরাতের দিকে ডাকেন এবং তিনি স্বীয় বিধানাবলী মানুষের জন্য সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।


وَ یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْمَحِیْضِ ؕ قُلْ هُوَ اَذًی ۙ فَاعْتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الْمَحِیْضِ ۙ وَلَا تَقْرَبُوْهُنَّ حَتّٰی یَطْهُرْنَ ۚ فَاِذَا تَطَهَّرْنَ فَاْتُوْهُنَّ مِنْ حَیْثُ اَمَرَكُمُ اللهُ ؕ اِنَّ اللهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیْنَ وَیُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِیْنَ ﴿۲۲۲﴾

আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতু) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন গমন কর তাদের কাছে, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন।


نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ ۪ فَاْتُوْا حَرْثَكُمْ اَنّٰی شِئْتُمْ ۫ وَقَدِّمُوْا لِاَنْفُسِكُمْ ؕ وَ اتَّقُوا اللهَ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّكُمْ مُّلٰقُوْهُ ؕ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِیْنَ ﴿۲۲۳﴾

তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করিতে পার। তোমরা তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু কর এবং আল্লাহ্কেও ভয় করতে থাক। আর নিশ্চত ভাবে জেনে রাখ যে, তোমরা আল্লাহ্‌র সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাৎ করতেই হবে। তুমি মু'মিনগণকে সুসংবাদ দাও।


وَ لَا تَجْعَلُوا اللهَ عُرْضَۃً لِّاَیْمَانِكُمْ اَنْ تَبَرُّوْا وَتَتَّقُوْا وَتُصْلِحُوْا بَیْنَ النَّاسِ ؕ وَاللهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۲۴﴾

আর নিজেদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না মানুষের সাথে কোন আচার-আচরণ থেকে, পরহেজগারী থেকে এবং মানুষের মাঝে মীমাংসা করে দেয়া থেকে বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যে। আল্লাহ সব কিছুই শুনেন , জানেন।


لَا یُؤَاخِذُكُمُ اللهُ بِاللَّغْوِ فِیْۤ اَیْمَانِكُمْ وَلٰکِنْ یُّؤَاخِذُكُمْ بِمَا کَسَبَتْ قُلُوْبُكُمْ ؕ وَاللهُ غَفُوْرٌ حَلِیْمٌ ﴿۲۲۵﴾

তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে ধরবেন না, কিস্তু সেসব কসমের ব্যাপারে ধরবেন, তোমাদের মন যা প্রতিজ্ঞা করেছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী, ধৈর্যশীল।


لِلَّذِیْنَ یُؤْلُوْنَ مِنْ نِّسَآئِهِمْ تَرَبُّصُ اَرْبَعَةِ اَشْهُرٍ ۚ فَاِنْ فَآءُوْ فَاِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ ﴿۲۲۶﴾

যারা নিজেদের স্ত্রীদের নিকট গমন করবে না বলে কসম খেয়ে বসে তাদের জন্য চার মাসের অবকাশ রয়েছে। অতঃপর যদি পারস্পারিক মিলমিশ করে নেয় তবে আল্লাহ ক্ষমাকারী ও দয়ালু।


وَ اِنْ عَزَمُوا الطَّلَاقَ فَاِنَّ اللهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۲۷﴾

আর যদি বর্জন করার সংকল্প করে নেয়, তাহলে নিশ্চই আল্লাহ শ্রবণকারী ও জ্ঞানী


وَالْمُطَلَّقٰتُ یَتَرَبَّصْنَ بِاَنْفُسِهِنَّ ثَلٰثَةَ قُرُوْٓءٍ ؕ وَلَا یَحِلُّ لَهُنَّ اَنْ یَّكْتُمْنَ مَا خَلَقَ اللهُ فِیْۤ اَرْحَامِهِنَّ اِنْ كُنَّ یُؤْمِنَّ بِاللهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ وَبُعُوْلَتُهُنَّ اَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِیْ ذٰلِكَ اِنْ اَرَادُوْۤا اِصْلَاحًا ؕ وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِیْ عَلَیْهِنَّ بِالْمَعْرُوْفِ ۪ وَ لِلرِّجَالِ عَلَیْهِنَّ دَرَجَۃٌ ؕ وَاللهُ عَزِیْزٌ حَكِیْمٌ ﴿۲۲۸﴾

আর তালাকপ্রাপ্ত নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। আর যদি সে আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাত দিবসের উপর ঈমানদার হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহ যা তার জরায়ুতে সৃস্টি করেছেন তা লুকিয়ে রাখা যায়েয নয়। আর যদি সৎভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছ, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছ। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।


اَلطَّلَاقُ مَرَّتٰنِ۪ فَاِمْسَاكٌۢ بِمَعْرُوْفٍ اَوْ تَسْرِیْحٌۢ بِاِحْسَانٍ ؕ وَلَا یَحِلُّ لَكُمْ اَنْ تَاْخُذُوْا مِمَّاۤ اٰتَیْتُمُوْهُنَّ شَیْئًا اِلَّاۤ اَنْ یَّخَافَاۤ اَلَّا یُقِیْمَا حُدُوْدَ اللهِ ؕ فَاِنْ خِفْتُمْ اَلَّا یُقِیْمَا حُدُوْدَ اللهِ ۙ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِمَا فِیْمَا افْتَدَتْ بِهٖ ؕ تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ فَلَا تَعْتَدُوْهَا ۚ وَمَنْ یَّتَعَدَّ حُدُوْدَ اللهِ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ ﴿۲۲۹﴾

তালাকে ‘‘ রাজঈ’’ হলো দু’বার পর্যন্ত-তারপর হয় নিমানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর নিজেদের সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয় তাদের কাছ থেকে কিন্তু যে ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই এ ব্যাপারে ভয় করে যে, তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে অব্যাহতি নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে কারোরই কোন পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে অতিক্রম করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করবে, তারাই হলো জালেম।


فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهٗ مِنْۢ بَعْدُ حَتّٰی تَنْکِحَ زَوْجًا غَیْرَهٗ ؕ فَاِنْ طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِمَاۤ اَنْ یَّتَرَاجَعَاۤ اِنْ ظَنَّاۤ اَنْ یُّقِیْمَا حُدُوْدَ اللهِ ؕ وَ تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ یُبَیِّنُهَا لِقَوْمٍ یَّعْلَمُوْنَ ﴿۲۳۰﴾

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয় বার) তালাক দেয় , তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নিবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয় তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পূনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই, যাদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছে থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।


وَ اِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمْسِكُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ اَوْ سَرِّحُوْهُنَّ بِمَعْرُوْفٍ ۪ وَلَا تُمْسِكُوْهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعْتَدُوْا ۚ وَمَنْ یَّفْعَلْ ذٰلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهٗ ؕ وَلَا تَتَّخِذُوْۤا اٰیٰتِ اللهِ هُزُوًا ۫ وَّ اذْكُرُوْا نِعْمَتَ اللهِ عَلَیْكُمْ وَمَاۤ اَنْزَلَ عَلَیْكُمْ مِّنَ الْکِتٰبِ وَالْحِكْمَةِ یَعِظُكُمْ بِهٖ ؕ وَاتَّقُوا اللهَ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ ﴿۲۳۱﴾

আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও, অতঃপর তারা নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত করে নেয়, তখন তোমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও, অথবা সহানুভূতীর সাথে তাদেরকে মুক্ত করে দাও। আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্যে আটকে রেখ না। আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদেরই ক্ষতি করবে। আর আল্লাহর নির্দেশকে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত কর না। আল্লাহর সে অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর যা তোমাদের উপর রয়েছে এবং তাও স্মরণ কর, যে কিতাব ও জ্ঞানের কথা তোমাদের উপর নাযিল করা হয়েছে যার দ্বারা তোমাদের কে উপদেশ দান করা হয়। আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়েই জ্ঞানময়।


وَ اِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَلَا تَعْضُلُوْهُنَّ اَنْ یَّنْکِحْنَ اَزْوَاجَهُنَّ اِذَا تَرَاضَوْا بَیْنَهُمْ بِالْمَعْرُوْفِ ؕ ذٰلِكَ یُوْعَظُ بِهٖ مَنْ کَانَ مِنْكُمْ یُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِ ؕ ذٰلِكُمْ اَزْکٰی لَكُمْ وَاَطْهَرُ ؕ وَاللهُ یَعْلَمُ وَاَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ ﴿۲۳۲﴾

আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারপর তারাও নির্ধারিত ইদ্দত পূর্ণ করতে থাকে, তখন তাদেরকে পূর্ব স্বামীদের সাথে পারস্পারিক সম্মতির ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী বিয়ে করতে বাধাদান করো না। এই উপদেশ তাকেই দেয়া হচ্ছে, যে আল্লাহ ও কিয়ামত দিনের উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে। এর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে একান্ত পরিশুদ্ধতা ও অনেক পবিত্রতা। আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।


وَالْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ کَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ ؕ وَعَلَی الْمَوْلُوْدِ لَهٗ رِزْقُهُنَّ وَکِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوْفِ ؕ لَا تُکَلَّفُ نَفْسٌ اِلَّا وُسْعَهَا ۚ لَا تُضَآرَّ وَالِدَۃٌۢ بِوَلَدِهَا وَلَا مَوْلُوْدٌ لَّهٗ بِوَلَدِهٖ ٭ وَعَلَی الْوَارِثِ مِثْلُ ذٰلِكَ ۚ فَاِنْ اَرَادَا فِصَالًا عَنْ تَرَاضٍ مِّنْهُمَا وَتَشَاوُرٍ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْهِمَا ؕ وَ اِنْ اَرَدْتُّمْ اَنْ تَسْتَرْضِعُوْۤا اَوْلَادَكُمْ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ اِذَا سَلَّمْتُمْ مَّاۤ اٰتَیْتُمْ بِالْمَعْرُوْفِ ؕ وَاتَّقُوا اللهَ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ ﴿۲۳۳﴾

আর সন্তানবতী নারীরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বছর দুধ খাওয়াবে যদি দুধ খাওবার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়। আর সন্তানের অধিকারী অর্থাৎ পিতার উপর হলো সে সমস্ত নারীর খোর-পোষের দায়িত্ব প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী। কাউকে তার সামর্থাতিরিক্ত চাপের সম্মুখীন করা হয় না। আর মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না এবং যার সন্তান তাকেও তার সন্তানের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন করা যাবে না। আর ওয়ারিসদের উপরও দায়িত্ব এই। তারপর যদি পিতা-মাতা ইচ্ছে করে, তাহলে দুই বছরের ভিতরেই নিজেদের পারস্পারিক পরামর্শক্রমে দুধ ছাড়িয়ে দিতে পারে, তাতে তাদের কোন পাপ নেই, আর যদি তোমরা কোন ধাত্রীর দ্বারা নিজের সন্তানদেরকে দুধ খাওয়াতে চাও, তাহলে যদি তোমরা সাব্যস্তকৃত প্রচলিত বিনিময় দিয়ে দাও তাতে কোন পাপ নেই। আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ অত্যন্ত ভালো করেই দেখেন।


وَالَّذِیْنَ یُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَیَذَرُوْنَ اَزْوَاجًا یَّتَرَبَّصْنَ بِاَنْفُسِهِنَّ اَرْبَعَةَ اَشْهُرٍ وَّعَشْرًا ۚ فَاِذَا بَلَغْنَ اَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ فِیْمَا فَعَلْنَ فِیْۤ اَنْفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوْفِ ؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ ﴿۲۳۴﴾

তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুর মুখে পতিত হয় তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করে নিবে তখন নিজের ব্যাপারে নীতিসঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারে আল্লাহর অবগতি রয়েছে।


وَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ فِیْمَا عَرَّضْتُمْ بِهٖ مِنْ خِطْبَةِ النِّسَآءِ اَوْ اَكْنَنْتُمْ فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ ؕ عَلِمَ اللهُ اَنَّكُمْ سَتَذْكُرُوْنَهُنَّ وَلٰکِنْ لَّا تُوَاعِدُوْهُنَّ سِرًّا اِلَّاۤ اَنْ تَقُوْلُوْا قَوْلًا مَّعْرُوْفًا ۬ؕ وَلَا تَعْزِمُوْا عُقْدَةَ النِّکَاحِ حَتّٰی یَبْلُغَ الْکِتٰبُ اَجَلَهٗ ؕ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ یَعْلَمُ مَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ فَاحْذَرُوْهُ ۚ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ غَفُوْرٌ حَلِیْمٌ ﴿۲۳۵﴾۠

স্ত্রীলোকদের নিকট তোমরা ইশারায় বিবাহর প্রস্তাব করলে অথবা তোমাদের অন্তরে গোপন রাখলে তোমাদের কোন পাপ নেই। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা তাদের সম্বন্ধে অবশ্যই আলোচনা করবে; কিন্তু বিধিমত কথাবার্তা ব্যতীত গোপনে তাদের নিকট কোন অঙ্গীকার করো না; নির্দিষ্টকাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহকার্য করার সংকল্প করো না। এবং জেনে রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাদের মনোভাব জানেন। সুতরাং তাঁকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, পরম সহনশীল।


لَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ اِنْ طَلَّقْتُمُ النِّسَآءَ مَا لَمْ تَمَسُّوْهُنَّ اَوْ تَفْرِضُوْا لَهُنَّ فَرِیْضَۃً ۚۖ وَّمَتِّعُوْهُنَّ ۚ عَلَی الْمُوْسِعِ قَدَرُهٗ وَعَلَی الْمُقْتِرِ قَدَرُهٗ ۚ مَتَاعًۢا بِالْمَعْرُوْفِ ۚ حَقًّا عَلَی الْمُحْسِنِیْنَ ﴿۲۳۶﴾

স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করার আগে এবং কোন মহর সাব্যস্ত করার পূর্বেও যদি তালাক দিয়ে দাও, তবে তাতেও তোমাদের কোন পাপ নেই। তবে তাদেরকে কিছু খরচ দিবে। আর সামার্থ্যবানদের জন্য তাদের সামার্থ্য অনুযায়ী এবং কর্ম সামর্থ্যবানদের জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী। যে খরচ প্রচলিত রয়েছে তা সত্যকর্মশীলদের উপর দায়িত্ব।


وَ اِنْ طَلَّقْتُمُوْهُنَّ مِنْ قَبْلِ اَنْ تَمَسُّوْهُنَّ وَقَدْ فَرَضْتُمْ لَهُنَّ فَرِیْضَۃً فَنِصْفُ مَا فَرَضْتُمْ اِلَّاۤ اَنْ یَّعْفُوْنَ اَوْ یَعْفُوَا الَّذِیْ بِیَدِهٖ عُقْدَۃُ النِّکَاحِ ؕ وَ اَنْ تَعْفُوْۤا اَقْرَبُ لِلتَّقْوٰی ؕ وَلَا تَنْسَوُا الْفَضْلَ بَیْنَكُمْ ؕ اِنَّ اللهَ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ ﴿۲۳۷﴾

আর যদি মহর সাব্যস্ত করার পর স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিয়ে দাও, তাহলে যে মহর সাব্যস্ত করা হয়েছে তার অর্ধেক দিয়ে দিতে হবে। অবশ্যই যদি নারীরা ক্ষমা করে দেয় কিংবা বিয়ার বন্ধন যার অধিকারে সে ( অর্থাৎ স্বামী) যদি ক্ষমা করে দেয় তবে তা স্বতন্ত্র কথা। আর তোমরা পুরুষ যদি ক্ষমা কর তবে তা হবে পরহেজগারীর নিকটবর্তী। আর তোমরা পারষ্পরিক সহানুভূতির কথা ভুলে যেয়ো না। নিশ্চয়ই তোমরা যা কিছু কর আল্লাহর সে সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।


حٰفِظُوْا عَلَی الصَّلَوٰتِ وَالصَّلٰوةِ الْوُسْطٰی ٭ وَقُوْمُوْا لِلّٰهِ قٰنِتِیْنَ ﴿۲۳۸﴾

সমস্ত নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।


فَاِنْ خِفْتُمْ فَرِجَالًا اَوْ رُكْبَانًا ۚ فَاِذَاۤ اَمِنْتُمْ فَاذْكُرُوا اللهَ کَمَا عَلَّمَكُمْ مَّا لَمْ تَكُوْنُوْا تَعْلَمُوْنَ ﴿۲۳۹﴾

যদি তোমরা আশঙ্কা কর তবে পদচারী অথবা আরোহী অবস্থায় সালাত আদায় করে নাও। আর যখন তোমরা নিরাপদ বোধ কর তখন আল্লাহ্কে স্মরণ কর, যেভাবে তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা তোমরা ইতিপূর্বে জানতে না।


وَالَّذِیْنَ یُتَوَفَّوْنَ مِنْكُمْ وَیَذَرُوْنَ اَزْوَاجًا ۚۖ وَّصِیَّۃً لِّاَزْوَاجِهِمْ مَّتَاعًا اِلَی الْحَوْلِ غَیْرَ اِخْرَاجٍ ۚ فَاِنْ خَرَجْنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَیْكُمْ فِیْ مَا فَعَلْنَ فِیْۤ اَنْفُسِهِنَّ مِنْ مَّعْرُوْفٍ ؕ وَاللهُ عَزِیْزٌ حَکِیْمٌ ﴿۲۴۰﴾

তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং স্ত্রী রেখে যায় তারা যেন তাদের স্ত্রীদেরকে গৃহ থেকে বহিষ্কার না করে তাদের এক বৎসরের ভরণ-পোষণের ওসিয়াত করে। কিন্তু যদি তারা বের হয়ে যায় তবে বিধিমত নিজেদের জন্য তারা যা, করবে তাতে তোমাদের কোন গুনাহ নাই। আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


وَ لِلْمُطَلَّقٰتِ مَتَاعٌۢ بِالْمَعْرُوْفِ ؕ حَقًّا عَلَی الْمُتَّقِیْنَ ﴿۲۴۱﴾

তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে যথারীতি ভরণ-পোষণ করা মুত্তাকীদের কর্তব্য।


کَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمْ اٰیٰتِهٖ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ ﴿۲۴۲﴾

এই ভাবে আল্লাহ্ তাঁর বিধান স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার।


اَلَمْ تَرَ اِلَی الَّذِیْنَ خَرَجُوْا مِنْ دِیَارِهِمْ وَهُمْ اُلُوْفٌ حَذَرَ الْمَوْتِ ۪ فَقَالَ لَهُمُ اللهُ مُوْتُوْا ۟ ثُمَّ اَحْیَاهُمْ ؕ اِنَّ اللهَ لَذُوْ فَضْلٍ عَلَی النَّاسِ وَلٰکِنَّ اَكْثَرَ النَّاسِ لَا یَشْكُرُوْنَ ﴿۲۴۳﴾

তুমি কি তাদেরকে দেখনি যারা মৃত্যুর ভয়ে হাজারে হাজারে স্বীয় আবাসভূমি পরিত্যাগ করেছিল ? অতঃপর আল্লাহ্ তাদেরকে বলেছেন, ‘তোমাদের মূত্যু হোক । তারপর আল্লাহ্ তাদের জীবিত করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।


وَ قَاتِلُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۴۴﴾

তোমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ কর এবং জেনে রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।


مَنْ ذَا الَّذِیْ یُقْرِضُ اللهَ قَرْضًا حَسَنًا فَیُضٰعِفَهٗ لَهٗۤ اَضْعَافًا کَثِیْرَۃً ؕ وَاللهُ یَقْبِضُ وَیَبْصُۜطُ ۪ وَ اِلَیْهِ تُرْجَعُوْنَ ﴿۲۴۵﴾

কে সে, যে আল্লাহ্কে করযে হাসানা প্রদান করবে ? অতঃপর আল্লাহ্ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুন বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহ্ সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এব়ং তারই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে।


اَلَمْ تَرَ اِلَی الْمَلَاِ مِنْۢ بَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ مِنْۢ بَعْدِ مُوْسٰی ۘ اِذْ قَالُوْا لِنَبِیٍّ لَّهُمُ ابْعَثْ لَنَا مَلِكًا نُّقَاتِلْ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ ؕ قَالَ هَلْ عَسَیْتُمْ اِنْ كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِتَالُ اَلَّا تُقَاتِلُوْا ؕ قَالُوْا وَمَا لَنَاۤ اَلَّا نُقَاتِلَ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ وَقَدْ اُخْرِجْنَا مِنْ دِیَارِنَا وَاَبْنَاۤئِنَا ؕ فَلَمَّا كُتِبَ عَلَیْهِمُ الْقِتَالُ تَوَلَّوْا اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْهُمْ ؕ وَاللهُ عَلِیْمٌۢ بِالظّٰلِمِیْنَ ﴿۲۴۶﴾

তুমি কি মূসার পরবর্তী বনী ইসরাঈলের প্রধানদেরকে দেখ নাই ? তারা যখন তাদের নবীকে বলেছিল, ‘আমাদের জন্য এক রাজা নিযুক্ত কর যাতে আমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করতে পারি। নবী বললেন, তোমাদের প্রতিও কি এমন ধারণা করা যায় যে,লড়াইয়ের হুকুম যদি হয়,তাহলে তখন তোমরা লড়বে না? তারা বলল, আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর পথে লড়াই করো না? অথচ আমরা বিতাড়িত হয়েছি নিজেদের ঘর- বাড়ি ও সন্তান-সন্ততি থেকে অতঃপর যখন লড়াইয়ের নির্দেশ হলো, তখন তাদের সামান্য কয়েক জন ছাড়া তাদের সাবাই ঘুরে দাঁড়ালা। আর আল্লাহ্ তায়ালা জালেমদের ভালো করেই জানেন।


وَقَالَ لَهُمْ نَبِیُّهُمْ اِنَّ اللهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوْتَ مَلِكًا ؕ قَالُوْۤا اَنّٰی یَكُوْنُ لَهُ الْمُلْكُ عَلَیْنَا وَنَحْنُ اَحَقُّ بِالْمُلْكِ مِنْهُ وَلَمْ یُؤْتَ سَعَۃً مِّنَ الْمَالِ ؕ قَالَ اِنَّ اللهَ اصْطَفٰهُ عَلَیْكُمْ وَزَادَهٗ بَسْطَۃً فِی الْعِلْمِ وَالْجِسْمِ ؕ وَاللهُ یُؤْتِیْ مُلْکَهٗ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۴۷﴾

আর তাদের নবী তাদেরকে বললেন, আল্লাহ্ অবশ্যই তালূতকে তোমাদের রাজা করেছেন। তারা বলল, ‘ অথচ রাষ্ট্র ক্ষমতা পাওয়ার ক্ষেত্রে তার চেয়ে আমাদেরই অধিকার বেশি। আর সে সম্পদের দিক দিয়েও স্বচ্ছল নয়। নবী বলল,নিশ্চই আল্লাহ্ তোমাদের উপর তাকে পছন্দ করেছেন এবং স্বাস্থ্য ও জ্ঞানের দিক দিয়ে প্রাচুর্য দান করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তাকেই রাজ্জ দান করেন, যাকে ইচ্ছা। আর আল্লাহ্ হলেন অনুগ্রহ দানকারী এবং নব বিষয়ে অবগত।


وَقَالَ لَهُمْ نَبِیُّهُمْ اِنَّ اٰیَةَ مُلْکِهٖۤ اَنْ یَّاْتِیَكُمُ التَّابُوْتُ فِیْهِ سَکِیْنَۃٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَبَقِیَّۃٌ مِّمَّا تَرَكَ اٰلُ مُوْسٰی وَاٰلُ هٰرُوْنَ تَحْمِلُهُ الْمَلٰٓئِکَۃُ ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَۃً لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿۲۴۸﴾

আর তাদের নবী তাদের বললেন, ‘ তার রাজত্বের নিদর্শন এই যে, তোমাদের নিকট সেই সিন্ধুক আসবে প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের মনের সন্তুষ্টির নিমিত্ত। আর তাতে থাকবে মূসা, হারুন এবং তাদের সন্তান বর্গের কিছু সামগ্রী। সিন্ধুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।


فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوْتُ بِالْجُنُوْدِ ۙ قَالَ اِنَّ اللهَ مُبْتَلِیْكُمْ بِنَهَرٍ ۚ فَمَنْ شَرِبَ مِنْهُ فَلَیْسَ مِنِّیْ ۚ وَمَنْ لَّمْ یَطْعَمْهُ فَاِنَّهٗ مِنِّیْۤ اِلَّا مَنِ اغْتَرَفَ غُرْفَۃًۢ بِیَدِهٖ ۚ فَشَرِبُوْا مِنْهُ اِلَّا قَلِیْلًا مِّنْهُمْ ؕ فَلَمَّا جَاوَزَهٗ هُوَ وَالَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ ۙ قَالُوْا لَا طَاقَةَ لَنَا الْیَوْمَ بِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِهٖ ؕ قَالَ الَّذِیْنَ یَظُنُّوْنَ اَنَّهُمْ مُّلٰقُوا اللهِ ۙ کَمْ مِّنْ فِئَۃٍ قَلِیْلَۃٍ غَلَبَتْ فِئَۃً کَثِیْرَۃًۢ بِاِذْنِ اللهِ ؕ وَاللهُ مَعَ الصّٰبِرِیْنَ ﴿۲۴۹﴾

অতঃপর তালূত যখন সৈন্যবাহিনীসহ বের হলো, সে তখন বলল, আল্লাহ্ এক নদী দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করবেন। যে কেউ তা থেকে পান করবে সে আমার দলভুক্ত নয়; আর যে কেউ তার স্বাদ গ্রহণ করবে না সে আমার দলভুক্ত; তা ছাড়া যে কেউ তার হস্তে এক কোষ পানি গ্রহণ করবে সেও আমার দলভুক্ত নয়;। অতঃপর অল্প সংখ্যক ব্যতীত তারা তা থেকে পান করল। সে এবং তার সঙ্গী ঈমানদারগণ যখন তা অতিক্রম করল তখন তারা বলল, জালূত ও তার সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার মত শক্তি আজ আমাদের নেই। কিন্তু যাদের প্রত্যয় ছিল আল্লাহ্‌র সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ ঘটবে তারা বলল, আল্লাহ্‌র হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাভূত করেছে। আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।


وَلَمَّا بَرَزُوْا لِجَالُوْتَ وَجُنُوْدِهٖ قَالُوْا رَبَّنَاۤ اَفْرِغْ عَلَیْنَا صَبْرًا وَّثَبِّتْ اَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَی الْقَوْمِ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۲۵۰﴾ؕ

তারা যখন যুদ্ধার্থে জালূত ও তার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হল, তখন তারা বলল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ধৈর্য দান কর, আমাদের পা অবিচলিত রাখ এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য দান কর।


فَهَزَمُوْهُمْ بِاِذْنِ اللهِ ۟ۙ وَقَتَلَ دَاوٗدُ جَالُوْتَ وَاٰتٰىهُ اللهُ الْمُلْكَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَهٗ مِمَّا یَشَآءُ ؕ وَلَوْ لَا دَفْعُ اللهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَّفَسَدَتِ الْاَرْضُ وَلٰکِنَّ اللهَ ذُوْفَضْلٍ عَلَی الْعٰلَمِیْنَ ﴿۲۵۱﴾

সুতরাং তারা আল্লাহ্‌র হুকুমে তাদের পরাভূত করল ; দাউদ জালূতকে হত্যা করল। আল্লাহ্ তাকে রাজত্ব ও হেকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন তা তাকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ্ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন তবে পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ্ জগতসমূহের প্রতি অনুগ্রহশীল।


تِلْكَ اٰیٰتُ اللهِ نَتْلُوْهَا عَلَیْكَ بِالْحَقِّ ؕ وَ اِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِیْنَ ﴿۲۵۲﴾

এই সকল আল্লাহ্‌র আয়াত, আমি তোমার নিকট যা, যথাযথভাবে তেলাওয়াত করছি, আর নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্তর্ভুক্ত।


تِلْكَ الرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلٰی بَعْضٍ ۘ مِنْهُمْ مَّنْ کَلَّمَ اللهُ وَرَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجٰتٍ ؕ وَاٰتَیْنَا عِیْسَی ابْنَ مَرْیَمَ الْبَیِّنٰتِ وَاَیَّدْنٰهُ بِرُوْحِ الْقُدُسِ ؕ وَلَوْ شَآءَ اللهُ مَا اقْتَتَلَ الَّذِیْنَ مِنْۢ بَعْدِهِمْ مِّنْۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ الْبَیِّنٰتُ وَلٰکِنِ اخْتَلَفُوْا فَمِنْهُمْ مَّنْ اٰمَنَ وَمِنْهُمْ مَّنْ کَفَرَ ؕ وَلَوْ شَآءَ اللهُ مَا اقْتَتَلُوْا ۟ وَلٰکِنَّ اللهَ یَفْعَلُ مَا یُرِیْدُ ﴿۲۵۳﴾۠

এই রাসূলগণ- আমি তাদের কাউকে কারো উপর মর্যাদা দিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ তো হলো তারা যার সাথে আল্লাহ্ কথা বলেছেন, আর কারোও মর্যাদা উচ্চতর করেছেন এবং আমি মরিয়ম-তনয় ঈসাকে প্রকৃষ্ট মুজেযা দfন করেছি এবং তাকে শক্তিদান করেছি রুহুল কুদ্দস অর্থাৎ জিবরাঈলের মাধ্যমে। আর আল্লাহ্ যদি ইচ্ছে করতেন, তাহলে পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর পয়গম্বরদের পিছনে যারা ছিল তারা লড়াই করতো না। কিন্তু তাদের মধ্যে মতোবিরোধ সৃষ্টি হয়ে গেছে। অতঃপর তাদের কেউ তো ঈমান এনেছে, আর কেউ হয়েছে কাফের। আর আল্লাহ্ যদি ইচ্ছে করতেন, তাহলে তারা পরস্পর লড়াই করতো, কিন্তু আল্লাহ্ তাই করেন, যা তিনি ইচ্ছে করেন।


یٰۤاَ یُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ یَّاْتِیَ یَوْمٌ لَّا بَیْعٌ فِیْهِ وَلَا خُلَّۃٌ وَّلَا شَفَاعَۃٌ ؕ وَالْکٰفِرُوْنَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ ﴿۲۵۴﴾

হে মুমিনগণ, আমি তোমাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা হতে ব্যয় কর, সে দিন আসার পূর্বে, যে দিন থাকবে না কোন-বেচাকেনা, না কোন বন্ধুত্ব এবং না কোন সুপারিশ। আর কাফিররাই যালিম।


اَللهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلْحَیُّ الْقَیُّوْمُ ۬ۚ لَا تَاْخُذُهٗ سِنَۃٌ وَّلَا نَوْمٌ ؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الْاَرْضِ ؕ مَنْ ذَا الَّذِیْ یَشْفَعُ عِنْدَهٗۤ اِلَّا بِاِذْنِهٖ ؕ یَعْلَمُ مَا بَیْنَ اَیْدِیْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۚ وَلَا یُحِیْطُوْنَ بِشَیْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖۤ اِلَّا بِمَاشَآءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِیُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ ۚ وَلَا یَـُٔوْدُهٗ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِیُّ الْعَظِیْمُ ﴿۲۵۵﴾

আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছো এমন, যে সুপারিশ করবে তার কাছে তার অনুমতি ছাড়া! দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তার জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছে করেন। তার সিংহাসন সমস্ত আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।


لَاۤ اِكْرَاهَ فِی الدِّیْنِ ۟ۙ قَدْ تَّبَیَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَیِّ ۚ فَمَنْ یَّكْفُرْ بِالطَّاغُوْتِ وَیُؤْمِنْۢ بِاللهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقٰی ٭ لَا انْفِصَامَ لَهَا ؕ وَاللهُ سَمِیْعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۵۶﴾

দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী তাগুতদেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাঙ্গবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।


اَللهُ وَلِیُّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا ۙ یُخْرِجُهُمْ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوُرِ۬ؕ وَالَّذِیْنَ کَفَرُوْۤا اَوْلِیٰٓـُٔهُمُ الطَّاغُوْتُ ۙ یُخْرِجُوْنَهُمْ مِّنَ النُّوْرِ اِلَی الظُّلُمٰتِ ؕ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۲۵۷﴾۠

যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ্ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরি করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে।


اَلَمْ تَرَ اِلَی الَّذِیْ حَآجَّ اِبْرٰهٖمَ فِیْ رَبِّهٖۤ اَنْ اٰتٰىهُ اللهُ الْمُلْكَ ۘ اِذْ قَالَ اِبْرٰهٖمُ رَبِّیَ الَّذِیْ یُحْیٖ وَیُمِیْتُ ۙ قَالَ اَنَا اُحْیٖ وَاُمِیْتُ ؕ قَالَ اِبْرٰهٖمُ فَاِنَّ اللهَ یَاْتِیْ بِالشَّمْسِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَاْتِ بِهَا مِنَ الْمَغْرِبِ فَبُهِتَ الَّذِیْ کَفَرَ ؕ وَاللهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الظّٰلِمِیْنَ ﴿۲۵۸﴾ۚ

তুমি কি সে লোককে দেখনি, যে পালনকর্তার ব্যাপারে বাদানুবাদ করেছিল ইবরাহীমের সাথে এ কারণে যে আল্লাহ সে ব্যক্তিকে রাজ্য দান করেছিলেন? ইবরাহীম যখন বললেন, আমার পালনকর্তা হলেন তিনি, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমিও জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি ইবরাহীম বললেন নিশ্চই তিনি সূর্যকে উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে, এবার তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর। তখন সে কাফের হতভম্ব হয়ে গেল। আর সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায় কে সরল পথ প্রদর্শন করেন না।


اَوْکَالَّذِیْ مَرَّ عَلٰی قَرْیَۃٍ وَّهِیَ خَاوِیَۃٌ عَلٰی عُرُوْشِهَا ۚ قَالَ اَنّٰی یُحْیٖ هٰذِهِ اللهُ بَعْدَ مَوْتِهَا ۚ فَاَمَاتَهُ اللهُ مِائَةَ عَامٍ ثُمَّ بَعَثَهٗ ؕ قَالَ کَمْ لَبِثْتَ ؕ قَالَ لَبِثْتُ یَوْمًا اَوْ بَعْضَ یَوْمٍ ؕ قَالَ بَلْ لَّبِثْتَ مِائَةَ عَامٍ فَانْظُرْ اِلٰی طَعَامِكَ وَشَرَابِكَ لَمْ یَتَسَنَّهْ ۚ وَانْظُرْ اِلٰی حِمَارِكَ وَلِنَجْعَلَكَ اٰیَۃً لِّلنَّاسِ وَانْظُرْ اِلَی الْعِظَامِ کَیْفَ نُنْشِزُهَا ثُمَّ نَكْسُوْهَا لَحْمًا ؕ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَهٗ ۙ قَالَ اَعْلَمُ اَنَّ اللهَ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۲۵۹﴾

অথবা তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে এমন এক নগরে উপনীত হয়েছিল যা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সে বলল, ‘মৃত্যুর পর কিভাবে আল্লাহ্ ইহাকে জীবিত করবেন ?’ তারপর আল্লাহ্ তাহাকে একশত বৎসর মৃত রাখলেন। পরে তাকে পুনর্জীবিত করলেন। আল্লাহ্ বললেন, ‘তুমি কত কাল অবস্থান করলে ? সে বলল, ‘এক দিন অথবা এক দিনেরও কিছু কম অবস্থান করেছি। তিনি বললেন, ‘না, বরং তুমি একশত বৎসর অবস্থান করেছ। তোমার খাদ্যসামগ্রী ও পানীয় বস্তুর প্রতি লক্ষ্য কর, উহা অবিকৃত রয়েছে এবং তোমার গর্দভটির প্রতি লক্ষ্য কর, কারণ তোমাকে মানবজাতির জন্য নিদর্শনস্বরূপ করব। আর অস্থিগুলির প্রতি লক্ষ্য কর; কিভাবে সেগুলোকে সংযোজিত করি এবং গোশত দ্বারা ঢেকে দেই। যখন তা তার নিকট স্পষ্ট হল তখন সে বলে উঠল, ‘আমি জানি যে, আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।’


وَ اِذْ قَالَ اِبْرٰهٖمُ رَبِّ اَرِنِیْ کَیْفَ تُحْیِ الْمَوْتٰی ؕ قَالَ اَوَلَمْ تُؤْمِنْ ؕ قَالَ بَلٰی وَلٰکِنْ لِّیَطْمَئِنَّ قَلْبِیْ ؕ قَالَ فَخُذْ اَرْبَعَۃً مِّنَ الطَّیْرِ فَصُرْهُنَّ اِلَیْكَ ثُمَّ اجْعَلْ عَلٰی كُلِّ جَبَلٍ مِّنْهُنَّ جُزْءًا ثُمَّ ادْعُهُنَّ یَاْتِیْنَكَ سَعْیًا ؕ وَاعْلَمْ اَنَّ اللهَ عَزِیْزٌ حَکِیْمٌ ﴿۲۶۰﴾۠

আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন, তুমি বিশ্বাস কর না? বলল,অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্য চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। বললেন, তাহলে চারটি পাখি ধরে নাও! পরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও, অতঃপর সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর সেগুলো ডাক; তোমার নিকট দৌড়ে চলে আসবে। আর জেনে রাখ, নিশ্চই আল্লাহ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞানসম্পন্ন।


مَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ کَمَثَلِ حَبَّۃٍ اَنْۢبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِیْ كُلِّ سُنْۢبُلَۃٍ مِّائَۃُ حَبَّۃٍ ؕ وَاللهُ یُضٰعِفُ لِمَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۶۱﴾

যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশত করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ।


اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللهِ ثُمَّ لَا یُتْبِعُوْنَ مَاۤ اَنْفَقُوْا مَنًّا وَّلَاۤ اَذًی ۙ لَّهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ۚ وَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۲۶۲﴾

যারা স্বীয় ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না।


قَوْلٌ مَّعْرُوْفٌ وَّمَغْفِرَۃٌ خَیْرٌ مِّنْ صَدَقَۃٍ یَّتْبَعُهَاۤ اَذًی ؕ وَاللهُ غَنِیٌّ حَلِیْمٌ ﴿۲۶۳﴾

নম্র কথা বলে দেয়া এবং ক্ষমা প্রদর্শন করা ঐ দান খয়রাত অপেক্ষা উত্তম, যার পরে কষ্ট দেয়া হয়। আল্লাহ তায়ালা সম্পদশালী, সহিষ্ণু।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تُبْطِلُوْا صَدَقٰتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْاَذٰی ۙ کَالَّذِیْ یُنْفِقُ مَالَهٗ رِئَآءَ النَّاسِ وَلَا یُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْیَوْمِ الْاٰخِرِؕ فَمَثَلُهٗ کَمَثَلِ صَفْوَانٍ عَلَیْهِ تُرَابٌ فَاَصَابَهٗ وَابِلٌ فَتَرَکَهٗ صَلْدًا ؕ لَا یَقْدِرُوْنَ عَلٰی شَیْءٍ مِّمَّا کَسَبُوْا ؕ وَاللهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۲۶۴﴾

হে ঈমানদারগণ! তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ কর না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে না। অতএব, এ ব্যক্তির দৃষ্টান্ত একটি মসৃণ পাথরের মত যার উপর কিছু মাটি পড়েছিল। অতঃপর এর উপর প্রবল বৃষ্টি বর্ষিত হলো, অনন্তর তাকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার করে দিল। তারা ঐ বস্তুর কোন সওয়াব পায় না, যা তারা উপার্জন করেছে। আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না।


وَمَثَلُ الَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمُ ابْتِغَآءَ مَرْضَاتِ اللهِ وَتَثْبِیْتًا مِّنْ اَنْفُسِهِمْ کَمَثَلِ جَنَّۃٍۭ بِرَبْوَۃٍ اَصَابَهَا وَابِلٌ فَاٰتَتْ اُكُلَهَا ضِعْفَیْنِ ۚ فَاِنْ لَّمْ یُصِبْهَا وَابِلٌ فَطَلٌّ ؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ ﴿۲۶۵﴾

যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে এবং নিজের মনকে সুদূঢ় করার জন্যে তাদের উদাহরণ টিলায় অবস্থিত বাগানের মত, যাতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়; অতঃপর দ্বিগুণ ফসল দান করে। যদি এমন প্রবল বৃষ্টিপাত নাও হয়, তবে হাল্কা বর্ষণই যথেষ্ট। আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম যথার্থই প্রত্যক্ষ করেন।


اَیَوَدُّ اَحَدُكُمْ اَنْ تَكُوْنَ لَهٗ جَنَّۃٌ مِّنْ نَّخِیْلٍ وَّاَعْنَابٍ تَجْرِیْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ ۙ لَهٗ فِیْهَا مِنْ كُلِّ الثَّمَرٰتِ ۙ وَاَصَابَهُ الْکِبَرُ وَلَهٗ ذُرِّیَّۃٌ ضُعَفَآءُ ۪ۖ فَاَصَابَهَاۤ اِعْصَارٌ فِیْهِ نَارٌ فَاحْتَرَقَتْ ؕ کَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمُ الْاٰیٰتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَکَّرُوْنَ ﴿۲۶۶﴾۠

তোমাদের কেউ পছন্দ করে যে তার একটি খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান হবে, এর তলদেশ দিয়ে নহর প্রবাহিত হবে, আর এতে সর্বপ্রকার ফল-ফসল থাকবে এবং সে বার্ধক্যে পৌঁছবে, তার দুর্বল সন্তান-সন্ততিও থাকবে, এমতাস্থায় এ বাগানে একটি ঘুর্ণিবায়ু আসবে, যাতে আগুন রয়েছে, অনন্তর বাগানটি ভস্মীভূত হয়ে যাবে? এমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্যে নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেন-যাতে তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا کَسَبْتُمْ وَمِمَّاۤ اَخْرَجْنَا لَكُمْ مِّنَ الْاَرْضِ ۪ وَلَا تَیَمَّمُوا الْخَبِیْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ وَلَسْتُمْ بِاٰخِذِیْهِ اِلَّاۤ اَنْ تُغْمِضُوْا فِیْهِ ؕ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللهَ غَنِیٌّ حَمِیْدٌ ﴿۲۶۷﴾

হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে যমিন থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ কর না। কেননা, তা তোমরা কখনোও গ্রহণ করবে না; তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নাও! জেনে রাখ, আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।


اَلشَّیْطٰنُ یَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَیَاْمُرُكُمْ بِالْفَحْشَآءِ ۚ وَاللهُ یَعِدُكُمْ مَّغْفِرَۃً مِّنْهُ وَفَضْلًا ؕ وَاللهُ وَاسِعٌ عَلِیْمٌ ﴿۲۶۸﴾ۖۙ

শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয় পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বেশি অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ।


یُّؤْتِی الْحِكْمَةَ مَنْ یَّشَآءُ ۚ وَمَنْ یُّؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ اُوْتِیَ خَیْرًا کَثِیْرًا ؕ وَمَا یَذَّکَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الْاَلْبَابِ ﴿۲۶۹﴾

তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভূত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। উপদেশে তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান।


وَمَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِّنْ نَّفَقَۃٍ اَوْ نَذَرْتُمْ مِّنْ نَّذْرٍ فَاِنَّ اللهَ یَعْلَمُهٗ ؕ وَمَا لِلظّٰلِمِیْنَ مِنْ اَنْصَارٍ ﴿۲۷۰﴾

তোমরা যে খয়রাত সদ্ব্যয় কর কিংবা মান্নত কর, আল্লাহ নিশ্চয় সেসব কিছু জানেন। অন্যায়কারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।


اِنْ تُبْدُوا الصَّدَقٰتِ فَنِعِمَّا هِیَ ۚ وَ اِنْ تُخْفُوْهَا وَتُؤْتُوْهَا الْفُقَرَآءَ فَهُوَ خَیْرٌ لَّكُمْ ؕ وَیُکَفِّرُ عَنْكُمْ مِّنْ سَیِّاٰتِكُمْ ؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ ﴿۲۷۱﴾

যদি তোমরা প্রকশ্যে দান খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি খয়রাত গোপন কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্যে আরও উত্তম। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের কিছু গুনাহ দূর করে দিবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্মের খুব খবর রাখেন।


لَیْسَ عَلَیْكَ هُدٰىهُمْ وَلٰکِنَّ اللهَ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ فَلِاَنْفُسِكُمْ ؕ وَمَا تُنْفِقُوْنَ اِلَّا ابْتِغَآءَ وَجْهِ اللهِ ؕ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ یُّوَفَّ اِلَیْكُمْ وَاَنْتُمْ لَا تُظْلَمُوْنَ ﴿۲۷۲﴾

তাদেরকে সৎপথে আনার দায় তোমার নয়। বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। যে মাল তোমরা ব্যয় কর, তা নিজ উপকারার্থেই কর। আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় কর না। তোমরা যে অর্থ ব্যয় করবে, তার পুরস্কার পুরোপুরি পেয়ে যাবে এবং তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবে না।


لِلْفُقَرَآءِ الَّذِیْنَ اُحْصِرُوْا فِیْ سَبِیْلِ اللهِ لَا یَسْتَطِیْعُوْنَ ضَرْبًا فِی الْاَرْضِ ۫ یَحْسَبُهُمُ الْجَاهِلُ اَغْنِیَآءَ مِنَ التَّعَفُّفِ ۚ تَعْرِفُهُمْ بِسِیْمٰهُمْ ۚ لَا یَسْـَٔلُوْنَ النَّاسَ اِلْحَافًا ؕ وَمَا تُنْفِقُوْا مِنْ خَیْرٍ فَاِنَّ اللهَ بِهٖ عَلِیْمٌ ﴿۲۷۳﴾۠

খয়রাত ঐ সকল গরীব লোকের জন্যে, যারা আল্লাহর পথে আবদ্ধ হয়ে গেছে-জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফেরা করতে সক্ষম নয়। অজ্ঞ লোকেরা যাঞ্চা না করার কারনে তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। তোমরা তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে কাকুতি- মিনতি করে ভিক্ষা চায় না। তোমরা যে অর্থ ব্যয় করবে, তা আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই পরিজ্ঞাত।


اَلَّذِیْنَ یُنْفِقُوْنَ اَمْوَالَهُمْ بِالَّیْلِ وَالنَّهَارِ سِرًّا وَّ عَلَانِیَۃً فَلَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ۚ وَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۲۷۴﴾ؔ

যারা স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, রাতে ও দিনে গোপনে ও প্রকাশ্যে। তাদের জন্যে তাদের সওয়াব রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। তাদের কোন আশংকা নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।


اَلَّذِیْنَ یَاْكُلُوْنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوْمُوْنَ اِلَّا کَمَا یَقُوْمُ الَّذِیْ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیْطٰنُ مِنَ الْمَسِّ ؕ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْۤا اِنَّمَا الْبَیْعُ مِثْلُ الرِّبٰوا ۘ وَاَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَحَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَۃٌ مِّنْ رَّبِّهٖ فَانْتَهٰی فَلَهٗ مَا سَلَفَ ؕ وَاَمْرُهٗۤ اِلَی اللهِ ؕ وَمَنْ عَادَ فَاُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ ﴿۲۷۵﴾

যারা সুদ খায়, তারা কেয়ামতে দণ্ডায়মান হবে, যেভাবে দণ্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারন এই যে, তারা বলেছে, ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদ নেয়ারই মত। অথচ আল্লাহ তায়ালা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেনে এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।


یَمْحَقُ اللهُ الرِّبٰوا وَیُرْبِی الصَّدَقٰتِ ؕ وَاللهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ کَفَّارٍ اَثِیْمٍ ﴿۲۷۶﴾

আল্লাহ্ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ্ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসেন না।


اِنَّ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتَوُا الزَّکٰوةَ لَهُمْ اَجْرُهُمْ عِنْدَ رَبِّهِمْ ۚ وَلَا خَوْفٌ عَلَیْهِمْ وَلَا هُمْ یَحْزَنُوْنَ ﴿۲۷۷﴾

নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তাহাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের নিকট আছে। তাদের কোন ভয় নাই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ ﴿۲۷۸﴾

হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং সুদের বকেয়া যা আছে তা ছেড়ে দাও যদি তোমরা মুমিন হও।


فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَرَسُوْلِهٖ ۚ وَ اِنْ تُبْتُمْ فَلَكُمْ رُءُوْسُ اَمْوَالِكُمْ ۚ لَا تَظْلِمُوْنَ وَلَا تُظْلَمُوْنَ ﴿۲۷۹﴾

যদি তোমরা তা না ছাড় তবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। তাতে তোমরা অত্যাচার কর না এবং অত্যাচারিতও হবে না।


وَ اِنْ کَانَ ذُوْعُسْرَۃٍ فَنَظِرَۃٌ اِلٰی مَیْسَرَۃٍ ؕ وَ اَنْ تَصَدَّقُوْا خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ﴿۲۸۰﴾

যদি খাতক অভাবগ্রস্ত হয় তবে সচ্ছলতা পর্যন্ত তাকে অবকাশ দেওয়া বিধেয়। আর যদি তোমরা ক্ষমা করে দাও তবে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।


وَاتَّقُوْا یَوْمًا تُرْجَعُوْنَ فِیْهِ اِلَی اللهِ ٭۟ ثُمَّ تُوَفّٰی كُلُّ نَفْسٍ مَّا کَسَبَتْ وَهُمْ لَا یُظْلَمُوْنَ ﴿۲۸۱﴾۠

তোমরা সেই দিনকে ভয় কর যে দিন তোমরা আল্লাহ্‌র দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। অতঃপর প্রত্যেককে তার কর্মের ফল পুরাপুরি প্রদান করা হবে, আর তাদের প্রতি কোনরূপ অন্যায় করা হবে না।


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا تَدَایَنْتُمْ بِدَیْنٍ اِلٰۤی اَجَلٍ مُّسَمًّی فَاكْتُبُوْهُ ؕ وَلْیَكْتُبْ بَّیْنَكُمْ کَاتِبٌۢ بِالْعَدْلِ ۪ وَلَایَاْبَ کَاتِبٌ اَنْ یَّكْتُبَ کَمَا عَلَّمَهُ اللهُ فَلْیَكْتُبْ ۚ وَ لْیُمْلِلِ الَّذِیْ عَلَیْهِ الْحَقُّ وَلْیَتَّقِ اللهَ رَبَّهٗ وَلَا یَبْخَسْ مِنْهُ شَیْئًا ؕ فَاِنْ کَانَ الَّذِیْ عَلَیْهِ الْحَقُّ سَفِیْهًا اَوْ ضَعِیْفًا اَوْ لَا یَسْتَطِیْعُ اَنْ یُّمِلَّ هُوَ فَلْیُمْلِلْ وَلِیُّهٗ بِالْعَدْلِ ؕ وَاسْتَشْهِدُوْا شَهِیْدَیْنِ مِنْ رِّجَالِكُمْ ۚ فَاِنْ لَّمْ یَكُوْنَا رَجُلَیْنِ فَرَجُلٌ وَّامْرَاَتٰنِ مِمَّنْ تَرْضَوْنَ مِنَ الشُّهَدَآءِ اَنْ تَضِلَّ اِحْدٰىهُمَا فَتُذَکِّرَ اِحْدٰىهُمَا الْاُخْرٰی ؕ وَلَا یَاْبَ الشُّهَدَآءُ اِذَا مَا دُعُوْا ؕ وَلَا تَسْـَٔمُوْۤا اَنْ تَكْتُبُوْهُ صَغِیْرًا اَوْ کَبِیْرًا اِلٰۤی اَجَلِهٖ ؕ ذٰلِكُمْ اَقْسَطُ عِنْدَ اللهِ وَاَقْوَمُ لِلشَّهَادَةِ وَاَدْنٰۤی اَلَّا تَرْتَابُوْۤا اِلَّاۤ اَنْ تَكُوْنَ تِجَارَۃً حَاضِرَۃً تُدِیْرُوْنَهَا بَیْنَكُمْ فَلَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ اَلَّا تَكْتُبُوْهَا ؕ وَاَشْهِدُوْۤا اِذَا تَبَایَعْتُمْ ۪ وَلَا یُضَآرَّکَاتِبٌ وَّلَا شَهِیْدٌ ۬ؕ وَ اِنْ تَفْعَلُوْا فَاِنَّهٗ فُسُوْقٌۢ بِكُمْ ؕ وَاتَّقُوا اللهَ ؕ وَیُعَلِّمُكُمُ اللهُ ؕ وَاللهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمٌ ﴿۲۸۲﴾

হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরস্পর ঋণের লেন-দেন করবে, তখন তা লিখে রাখবে। আর তোমাদের মধ্যে একজন লেখক যেন ইনসাফের সাথে লিখে রাখে এবং কোন লেখক আল্লাহ তাকে যেরূপ শিক্ষা দিয়েছেন, তা লিখতে অস্বীকার করবে না। সুতরাং সে যেন লিখে রাখে এবং যার উপর পাওনা সে (ঋণ গ্রহীতা) যেন তা লিখিয়ে রাখে। আর সে যেন তার রব আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে এবং পাওনা থেকে যেন সামান্যও কম না দেয়। অতঃপর যার উপর পাওনা রয়েছে সে (ঋণ গ্রহীতা) যদি নির্বোধ বা দুর্বল হয়, অথবা সে লেখার বিষয়বস্তু বলতে না পারে, তাহলে যেন তার অভিভাবক ন্যায়ের সাথে লেখার বিষয়বস্তু বলে দেয়। আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ। অতঃপর যদি তারা উভয়ে পুরুষ না হয়, তাহলে একজন পুরুষ ও দু’জন নারী-যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর। যাতে তাদের (নারীদের) একজন ভুল করলে অপরজন স্মরণ করিয়ে দেয়। সাক্ষীরা যেন অস্বীকার না করে, যখন তাদেরকে ডাকা হয়। আর তা ছোট হোক কিংবা বড় তা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করতে তোমরা বিরক্ত হয়ো না। এটি আল্লাহর নিকট অধিক ইনসাফপূর্ণ এবং সাক্ষ্য দানের জন্য যথাযথ। আর তোমরা সন্দিহান না হওয়ার অধিক নিকটবর্তী। তবে যদি নগদ ব্যবসা হয় যা তোমরা হাতে হাতে লেনদেন কর, তাহলে তা না লিখলে তোমাদের কোন দোষ নেই। আর তোমরা সাক্ষী রাখ, যখন তোমরা বেচা-কেনা করবে এবং কোন লেখক ও সাক্ষীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হবে না। আর যদি তোমরা কর, তাহলে নিশ্চয় তা হবে তোমাদের সাথে অনাচার। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং আল্লাহ তোমাদেরকে শিক্ষা দেবেন। আর আল্লাহ সব বিষয়ে সম্যক জ্ঞানী।


وَ اِنْ كُنْتُمْ عَلٰی سَفَرٍ وَّلَمْ تَجِدُوْا کَاتِبًا فَرِهٰنٌ مَّقْبُوْضَۃٌ ؕ فَاِنْ اَمِنَ بَعْضُكُمْ بَعْضًا فَلْیُؤَدِّ الَّذِی اؤْتُمِنَ اَمَانَتَهٗ وَلْیَتَّقِ اللهَ رَبَّهٗ ؕ وَلَا تَكْتُمُوا الشَّهَادَةَ ؕ وَمَنْ یَّكْتُمْهَا فَاِنَّهٗۤ اٰثِمٌ قَلْبُهٗ ؕ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِیْمٌ ﴿۲۸۳﴾۠

আর যদি তোমরা সফরে থাক এবং কোন লেখক না পাও, তাহলে হস্তান্তরিত বন্ধক রাখবে। আর যদি তোমরা একে অপরকে বিশ্বস্ত মনে কর, তবে যাকে বিশ্বস্ত মনে করা হয়, সে যেন স্বীয় আমানত আদায় করে এবং নিজ রব আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে। আর তোমরা সাক্ষ্য গোপন করো না এবং যে কেউ তা গোপন করে, অবশ্যই তার অন্তর পাপী। আর তোমরা যা আমল কর, আল্লাহ সে ব্যাপারে সবিশেষ অবহিত।


لِلّٰهِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَمَا فِی الْاَرْضِ ؕ وَ اِنْ تُبْدُوْا مَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ اَوْ تُخْفُوْهُ یُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللهُ ؕ فَیَغْفِرُ لِمَنْ یَّشَآءُ وَیُعَذِّبُ مَنْ یَّشَآءُ ؕ وَاللهُ عَلٰی كُلِّ شَیْءٍ قَدِیْرٌ ﴿۲۸۴﴾

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর এবং তোমাদের অন্তরে যা রয়েছে তা প্রকাশ কর অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ তার হিসাব তোমাদের নিকট হতে গ্রহণ করবেন; অতঃপর তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন; এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।


اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْمِنُوْنَ ؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللهِ وَمَلٰٓئِکَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ ۟ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ ۟ وَقَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ٭۫ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ ﴿۲۸۵﴾

রাসূল তার রব হতে তার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা বিশ্বাস করে এবং মু’মিনগণও (বিশ্বাস করে); তারা সবাই আল্লাহকে, তাঁর মালাইকাকে, তাঁর গ্রন্থসমূহকে এবং তাঁর রাসূলগণকে বিশ্বাস করে; (তারা বলে) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কাউকেও পার্থক্য করি না। এবং তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং স্বীকার করলাম; হে আমাদের রব! আমরা আপনারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনারই দিকে শেষ প্রত্যাবর্তন।


لَا یُکَلِّفُ اللهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا ؕ لَهَا مَا کَسَبَتْ وَعَلَیْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ؕ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ اِنْ نَّسِیْنَاۤ اَوْ اَخْطَاْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَیْنَاۤ اِصْرًا کَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ ۚ وَاعْفُ عَنَّا ٝ وَاغْفِرْ لَنَا ٝ وَارْحَمْنَا ٝ اَنْتَ مَوْلٰىنَا فَانْصُرْنَا عَلَی الْقَوْمِ الْکٰفِرِیْنَ ﴿۲۸۶﴾۠

আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। সে যা অর্জন করে তা তার জন্যই এবং সে যা কামাই করে তা তার উপরই বর্তাবে। হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব, আমাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আর আমাদের উপর দয়া করুন। আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।