12

ইউসুফ

আয়াত সংখ্যা 111

0.00

24:45

الٓرٰ ۟ تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ ۟﴿۱﴾

আলিফ-লা-ম-রা; এগুলো সুস্পষ্ট গ্রন্থের আয়াত ।


اِنَّاۤ اَنۡزَلۡنٰہُ قُرۡءٰنًا عَرَبِیًّا لَّعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۲﴾

আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রুপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার ।


نَحۡنُ نَقُصُّ عَلَیۡکَ اَحۡسَنَ الۡقَصَصِ بِمَاۤ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡکَ هٰذَا الۡقُرۡاٰنَ ٭ۖ وَ اِنۡ کُنۡتَ مِنۡ قَبۡلِهٖ لَمِنَ الۡغٰفِلِیۡنَ ﴿۳﴾

আমি তোমার নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করেছি, যেমতে আমি এ কোরআন তোমার নিকট অবতীর্ণ করেছি । তুমি এর আগে অবশ্যই এ ব্যাপারে জনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে ।


اِذۡ قَالَ یُوۡسُفُ لِاَبِیۡہِ یٰۤاَبَتِ اِنِّیۡ رَاَیۡتُ اَحَدَعَشَرَ کَوۡکَبًا وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ رَاَیۡتُہُمۡ لِیۡ سٰجِدِیۡنَ ﴿۴﴾

যখন ইউসুফ পিতাকে বলল: পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে, সূর্যকে এবং চন্দ্রকে । আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশ্যে সিজদা করতে দেখেছি !


قَالَ یٰبُنَیَّ لَا تَقۡصُصۡ رُءۡیَاکَ عَلٰۤی اِخۡوَتِکَ فَیَکِیۡدُوۡا لَکَ کَیۡدًا ؕ اِنَّ الشَّیۡطٰنَ لِلۡاِنۡسَانِ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۵﴾

তিনি বললেন : বৎস, তোমার ভাইদের সামনে এ স্বপ্ন বর্ণনা করো না । তাহলে তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে । নিশ্চয় শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু ।


وَ کَذٰلِکَ یَجۡتَبِیۡکَ رَبُّکَ وَ یُعَلِّمُکَ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ وَ یُتِمُّ نِعۡمَتَہٗ عَلَیۡکَ وَ عَلٰۤی اٰلِ یَعۡقُوۡبَ کَمَاۤ اَتَمَّہَا عَلٰۤی اَبَوَیۡکَ مِنۡ قَبۡلُ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ اِسۡحٰقَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ عَلِیۡمٌ حَکِیۡمٌ ٪﴿۶﴾

এমনিভাবে তোমার পালনকারী তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে বাণীসমূহের নিদৃঢ় তত্ত্ব শিক্ষা দেবেন এবং পূর্ণ করবেন স্বীয় অনুগ্রহ তোমার প্রতি ও ইয়াকুব পরিবার- পরিজনের প্রতি । যেমন ইতিপূর্বে তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি পূর্ণ করেছেন । নিশ্চয় তোমার পালনকর্তা অত্যন্ত জ্ঞানী, প্রজ্ঞাময় ।


لَقَدۡ کَانَ فِیۡ یُوۡسُفَ وَ اِخۡوَتِہٖۤ اٰیٰتٌ لِّلسَّآئِلِیۡنَ ﴿۷﴾

অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনবলী রয়েছে ।


اِذۡ قَالُوۡا لَیُوۡسُفُ وَ اَخُوۡہُ اَحَبُّ اِلٰۤی اَبِیۡنَا مِنَّا وَ نَحۡنُ عُصۡبَۃٌ ؕ اِنَّ اَبَانَا لَفِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنِۣ ۚ﴿ۖ۸﴾

যখন তারা বলল : অবশ্যই ইউসুফ ও তাঁর ভাই আমাদের পিতার কাছে আমাদের চাইতে অধিক প্রিয় অথচ আমরা একটা সংহত শক্তিবিশেষ । নিশ্চয় আমাদের পিতা স্পষ্ট ভ্রান্তিতে রয়েছেন ।


اقۡتُلُوۡا یُوۡسُفَ اَوِ اطۡرَحُوۡہُ اَرۡضًا یَّخۡلُ لَکُمۡ وَجۡہُ اَبِیۡکُمۡ وَ تَکُوۡنُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِہٖ قَوۡمًا صٰلِحِیۡنَ ﴿۹﴾

হত্যা কর ইউসুফকে কিংবা ফেলে আস তাকে অন্য কোন স্থানে । এতে শুধু তোমাদের প্রতিই তোমাদের পিতার মনোযোগ নিবিষ্ট হবে এবং এরপর তোমরা যোগ্য বিবেচিত হয়ে থাকবে ।


قَالَ قَآئِلٌ مِّنۡہُمۡ لَا تَقۡتُلُوۡا یُوۡسُفَ وَ اَلۡقُوۡہُ فِیۡ غَیٰبَتِ الۡجُبِّ یَلۡتَقِطۡہُ بَعۡضُ السَّیَّارَۃِ اِنۡ کُنۡتُمۡ فٰعِلِیۡنَ ﴿۱۰﴾

তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, তোমরা ইউসুফকে হত্যা করো না, বরং ফেলে দাও তাকে অন্ধকুপে যাতে কোন পথিক তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়, যদি তোমাদের কিছু করতেই হয়ে ।


قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا مَا لَکَ لَا تَاۡمَنَّا عَلٰی یُوۡسُفَ وَ اِنَّا لَہٗ لَنٰصِحُوۡنَ ﴿۱۱﴾

তারা বলল : পিতা ;, ব্যাপার কি, আপনি ইউসুফের ব্যাপারে আমাদেরকে বিশ্বাস করেন না ? আমরা তো তার হিতাকাংখী ।


اَرۡسِلۡہُ مَعَنَا غَدًا یَّرۡتَعۡ وَ یَلۡعَبۡ وَ اِنَّا لَہٗ لَحٰفِظُوۡنَ ﴿۱۲﴾

আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন—তৃপ্তিসহ খাবে এবং খেলাধুলা করবে এবং আমরা অবশ্যই তার রক্ষাণাবেক্ষণ করব ।


قَالَ اِنِّیۡ لَیَحۡزُنُنِیۡۤ اَنۡ تَذۡهَبُوۡا بِہٖ وَ اَخَافُ اَنۡ یَّاۡکُلَہُ الذِّئۡبُ وَ اَنۡتُمۡ عَنۡہُ غٰفِلُوۡنَ ﴿۱۳﴾

তিনি বললেন : আমার দুশ্চিন্তা হয় যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি আশঙ্কা করি যে, ব্যাঘ্র তাঁকে খেয়ে ফেলবে এবং তোমরা তার দিক থেকে গাফেল থাকবে ।


قَالُوۡا لَئِنۡ اَکَلَہُ الذِّئۡبُ وَ نَحۡنُ عُصۡبَۃٌ اِنَّاۤ اِذًا لَّخٰسِرُوۡنَ ﴿۱۴﴾

তারা বলল : আমরা একটি ভারী দল থাকা সত্ত্বেও যদি ব্যাঘ্র তাকে খেয়ে ফেলে,. তবে আমরা সবই হারালাম ।


فَلَمَّا ذَهَبُوۡا بِهٖ وَ اَجۡمَعُوۡۤا اَنۡ یَّجۡعَلُوۡهُ فِیۡ غَیٰبَتِ الۡجُبِّ ۚ وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡهِ لَتُنَبِّئَنَّهُمۡ بِاَمۡرِهِمۡ هٰذَا وَ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۵﴾

অত:পর তারা যখন তাকে নিয়ে চলল এবং অন্ধকুপে নিক্ষেপ করতে একমত হল এবং আমি তাকে ইঙ্গিত করলাম যে, তুমি তাদেরকে তাদের এ কাজের কথা বলবে এমতাবস্থায় যে, তারা তোমাকে চিনবে না ।


وَ جَآءُوۡۤ اَبَاهُمۡ عِشَآءً یَّبۡکُوۡنَ ؕ﴿۱۶﴾

তারা রাতের বেলায় কাঁদতে কাঁদতে পিতার কাছে এল ।


قَالُوۡا یٰۤاَبَانَاۤ اِنَّا ذَهَبۡنَا نَسۡتَبِقُ وَ تَرَکۡنَا یُوۡسُفَ عِنۡدَ مَتَاعِنَا فَاَکَلَهُ الذِّئۡبُ ۚ وَ مَاۤ اَنۡتَ بِمُؤۡمِنٍ لَّنَا وَ لَوۡ کُنَّا صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۷﴾

তারা বলল : পিতা : আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছিলাম এবং ইউসুফকে আসবাব পত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম । অত:পর তাকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে । আপনি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী ।


وَ جَآءُوۡ عَلٰی قَمِیۡصِهٖ بِدَمٍ کَذِبٍ ؕ قَالَ بَلۡ سَوَّلَتۡ لَکُمۡ اَنۡفُسُکُمۡ اَمۡرًا ؕ فَصَبۡرٌ جَمِیۡلٌ ؕ وَ اللّٰهُ الۡمُسۡتَعَانُ عَلٰی مَا تَصِفُوۡنَ ﴿۱۸﴾

এবং তারা তার জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে আনল । বললেন : এটা কখনই নয় ; বরং তোমাদের মন তোমাদেরকে একটা কথা সাজিয়ে দিয়েছে । সুতরাং এখন ছবর করাই আমার পক্ষে শ্রেয় । তোমরা যা নর্ণনা করছ, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্য স্থল ।


وَ جَآءَتۡ سَیَّارَۃٌ فَاَرۡسَلُوۡا وَارِدَهُمۡ فَاَدۡلٰی دَلۡوَهٗ ؕ قَالَ یٰبُشۡرٰی هٰذَا غُلٰمٌ ؕ وَ اَسَرُّوۡهُ بِضَاعَۃً ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۹﴾

এবং একটি কাফেলা এল । অত:পর তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল । সে বালতি ফেলল । বলল : কি আনন্দের কথা ! এ তো একটি কিশোর ! তারা তাকে পণ্যদ্রব্য গণ্য করে গোপন করে ফেলল । আল্লাহ খুব জানেন যা কিছু তারা করেছিল ।


وَ شَرَوۡهُ بِثَمَنٍۭ بَخۡسٍ دَرَاهِمَ مَعۡدُوۡدَۃٍ ۚ وَ کَانُوۡا فِیۡهِ مِنَ الزَّاهِدِیۡنَ ﴿۲۰﴾

ওরা তাকে কম মূল্যে বিক্রি করে দিল গুণাগুণতি কয়েক দেরহাম এবং তাঁর ব্যাপারে নিরাসক্ত ছিল ।


وَ قَالَ الَّذِی اشۡتَرٰىهُ مِنۡ مِّصۡرَ لِامۡرَاَتِهٖۤ اَکۡرِمِیۡ مَثۡوٰىهُ عَسٰۤی اَنۡ یَّنۡفَعَنَاۤ اَوۡ نَتَّخِذَهٗ وَلَدًا ؕ وَ کَذٰلِکَ مَکَّنَّا لِیُوۡسُفَ فِی الۡاَرۡضِ ۫ وَ لِنُعَلِّمَهٗ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ ؕ وَ اللّٰهُ غَالِبٌ عَلٰۤی اَمۡرِهٖ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۲۱﴾

মিসরের যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করল, সে তার স্ত্রীকে বলল : একে সম্মানে রাখ । সম্ভবত সে আমাদের কাজে আসবে অথবা আমরা তাকে পুত্ররুপে গ্রহণ করে নেব । এমনিভাবে আমি ইউসুফকে এদেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম এবং এ জন্য যে তাকে বাক্যদির পূর্ণ মর্ম অনুধাবনের পদ্ধতি বিষয়ে শিক্ষা দেই । আল্লাহ নিজ কাজে প্রবল থাকেন কিন্তু অধিকাংশ লোকে তা জানে না ।


وَ لَمَّا بَلَغَ اَشُدَّهٗۤ اٰتَیۡنٰهُ حُکۡمًا وَّ عِلۡمًا ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۲۲﴾

যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছে গেল, তখন তাকে প্রজ্ঞা ও ব্যুৎপত্তি দান করলাম । এমনিভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে প্রতিদান দেই ।


وَ رَاوَدَتۡهُ الَّتِیۡ هُوَ فِیۡ بَیۡتِهَا عَنۡ نَّفۡسِهٖ وَ غَلَّقَتِ الۡاَبۡوَابَ وَ قَالَتۡ هَیۡتَ لَکَ ؕ قَالَ مَعَاذَ اللّٰهِ اِنَّهٗ رَبِّیۡۤ اَحۡسَنَ مَثۡوَایَ ؕ اِنَّهٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۳﴾

আর সে যে মহিলার ঘরে ছিল, ঐ মহিলা তাকে ফুসলাতে লাগল এবং দরজাসমূহ বন্ধ করে দিল । সে মহিলা বলল : শুন ! তোমাকে বলছি, এদিকে আস ! সে বলল : আল্লাহ রক্ষা করুন ,তোমার স্বামী আমার মালিক । তিনি আমাকে সযত্নে থাকতে দিয়েছেন । নিশ্চয় সীমা লংঘনকারীগণ সফল হয় না ।


وَ لَقَدۡ هَمَّتۡ بِهٖ ۚ وَ هَمَّ بِهَا لَوۡ لَاۤ اَنۡ رَّاٰ بُرۡهَانَ رَبِّهٖ ؕ کَذٰلِکَ لِنَصۡرِفَ عَنۡهُ السُّوۡٓءَ وَ الۡفَحۡشَآءَ ؕ اِنَّهٗ مِنۡ عِبَادِنَا الۡمُخۡلَصِیۡنَ ﴿۲۴﴾

নিশ্চয় মহিলা তার বিষয়ে চিন্তা করেছিল এবং সেও মহিলার বিষয়ে চিন্তা করত । যদি না সে স্বীয় পালনকর্তার মহিমা অবলোকন করত । এমনিভাবে হয়েছে, যাতে আমি তার কাছ থেকে মন্দ বিষয় ও নির্লজ্জ বিষয় সরিয়ে দেই । নিশ্চয় সে আমার মনোনীত বান্দাদের একজন ।


وَ اسۡتَبَقَا الۡبَابَ وَ قَدَّتۡ قَمِیۡصَهٗ مِنۡ دُبُرٍ وَّ اَلۡفَیَا سَیِّدَهَا لَدَا الۡبَابِ ؕ قَالَتۡ مَا جَزَآءُ مَنۡ اَرَادَ بِاَهۡلِکَ سُوۡٓءًا اِلَّاۤ اَنۡ یُّسۡجَنَ اَوۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۲۵﴾

তারা উভয়ে ছুটে দরজার দিকে গেল এবং মহিলা ইউসুফের জামা পেছন দিক থেকে ছিড়ে ফেলল । উভয়ে মহিলার স্বামীকে দরজার কাছে পেল । মহিলা বলল : যে ব্যক্তি তোমার পরিজনের সাথে কূকর্মের ইচ্ছা করে তাকে কারাগারে পাঠানো অথবা অন্য কোন যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দেওয়া ছাড়া তার আর কি শাস্তি হতে পারে ?


قَالَ هِیَ رَاوَدَتۡنِیۡ عَنۡ نَّفۡسِیۡ وَ شَهِدَ شَاهِدٌ مِّنۡ اَهۡلِهَا ۚ اِنۡ کَانَ قَمِیۡصُهٗ قُدَّ مِنۡ قُبُلٍ فَصَدَقَتۡ وَ هُوَ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۲۶﴾

ইউসুফ ( আ ) বললেন : সে-ই আমাকে আত্মসংবরণ না করতে ফুসলিয়েছে । মহিলার পরিবারের জনৈক সাক্ষী সাক্ষ্য দিল যে, যদি তার জামা সামনের দিক থেকে ছিন্ন থাকে, তবে মহিলা সত্যবাদিনী এবং সে মিথ্যাবাদী ।


وَ اِنۡ کَانَ قَمِیۡصُهٗ قُدَّ مِنۡ دُبُرٍ فَکَذَبَتۡ وَ هُوَ مِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۲۷﴾

এবং যদি তার জামা পিছন দিক থেকে ছিন্ন থাকে, তবে মহিলা মিথ্যাবাদিনী এবং সে সত্যবাদী ।


فَلَمَّا رَاٰ قَمِیۡصَهٗ قُدَّ مِنۡ دُبُرٍ قَالَ اِنَّهٗ مِنۡ کَیۡدِکُنَّ ؕ اِنَّ کَیۡدَکُنَّ عَظِیۡمٌ ﴿۲۸﴾

অত:পর গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক থেকে ছিন্ন, তখন সে বলল : নিশ্চয় এটা তোমাদের ছলনা । নি:সন্দেহে তোমাদের ছলনা খুবই মারাত্মক ।


یُوۡسُفُ اَعۡرِضۡ عَنۡ هٰذَا وَ اسۡتَغۡفِرِیۡ لِذَنۡۢبِکِ ۚۖ اِنَّکِ کُنۡتِ مِنَ الۡخٰطِئِیۡنَ ﴿۲۹﴾

ইউসুফ এ প্রসঙ্গ ছাড় ! আর হে স্ত্রীলোক এ পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর । নি:সন্দেহে তুমিই পাপাচারিনী ।


وَ قَالَ نِسۡوَۃٌ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ امۡرَاَتُ الۡعَزِیۡزِ تُرَاوِدُ فَتٰىهَا عَنۡ نَّفۡسِهٖ ۚ قَدۡ شَغَفَهَا حُبًّا ؕ اِنَّا لَنَرٰىهَا فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۳۰﴾

নগরে মহিলারা বলাবলি করতে লাগল যে, আজীজের স্ত্রী গোলামকে কুমতলব চরিতার্থ করার জন্য ফুসলায় । সে তার প্রেমে উম্মত্ত হয়ে গেছে । আমরা তো তাকে প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে দেখতে পাচ্ছি ।


فَلَمَّا سَمِعَتۡ بِمَکۡرِهِنَّ اَرۡسَلَتۡ اِلَیۡهِنَّ وَ اَعۡتَدَتۡ لَهُنَّ مُتَّکَاً وَّ اٰتَتۡ کُلَّ وَاحِدَۃٍ مِّنۡهُنَّ سِکِّیۡنًا وَّ قَالَتِ اخۡرُجۡ عَلَیۡهِنَّ ۚ فَلَمَّا رَاَیۡنَهٗۤ اَکۡبَرۡنَهٗ وَ قَطَّعۡنَ اَیۡدِیَهُنَّ وَ قُلۡنَ حَاشَ لِلّٰهِ مَا هٰذَا بَشَرًا ؕ اِنۡ هٰذَاۤ اِلَّا مَلَکٌ کَرِیۡمٌ ﴿۳۱﴾

যখন সে তাদের চক্রান্ত শুনল, তখন তাদেরকে ডেকে পাঠালো এবং তাদের জন্য একটি ভোজসভার আয়োজন করল । সে তাদের প্রত্যেককে একটি ছুরি দিল । বলল : ইউসুফ, এদের সামনে চলে এস । যখন তারা তাকে দেখল, হতভম্ব হয়ে গেল এবং আপন হাত কেটে ফেলল । তারা বলল কখনই নয়-এ ব্যক্তি মানব নয় । এ তো কোন মহান ফেরেশতা !


قَالَتۡ فَذٰلِکُنَّ الَّذِیۡ لُمۡتُنَّنِیۡ فِیۡهِ ؕ وَ لَقَدۡ رَاوَدۡتُّهٗ عَنۡ نَّفۡسِهٖ فَاسۡتَعۡصَمَ ؕ وَ لَئِنۡ لَّمۡ یَفۡعَلۡ مَاۤ اٰمُرُهٗ لَیُسۡجَنَنَّ وَ لَیَکُوۡنًا مِّنَ الصّٰغِرِیۡنَ ﴿۳۲﴾

মহিলা বলল : এ ঐ ব্যক্তি, যার জন্য তোমরা আমাকে ভৎসনা করছিলে । আমি ওরই মন জয় করতে চেয়েছিলাম ! কিন্তু সে নিজেকে নিবৃত রেখেছে । আর আমি যা আদেশ দেই, সে যদি তা না করে, তবে অবশ্যই সে কারাগারে প্রেরিত হবে এবং লাঞ্ছিত হবে ।


قَالَ رَبِّ السِّجۡنُ اَحَبُّ اِلَیَّ مِمَّا یَدۡعُوۡنَنِیۡۤ اِلَیۡہِ ۚ وَ اِلَّا تَصۡرِفۡ عَنِّیۡ کَیۡدَهُنَّ اَصۡبُ اِلَیۡہِنَّ وَ اَکُنۡ مِّنَ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۳۳﴾

ইউসুফ বলল : হে পালনকর্তা, তারা আমাকে যে কাজের দিকে আহবান করে, তার চাইতে আমি কারাগারই পছন্দ করি । যদি আপনি তাদের চক্রান্ত আমার উপর থেকে প্রতিহত না করেন, তবে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব ।


فَاسۡتَجَابَ لَہٗ رَبُّہٗ فَصَرَفَ عَنۡہُ کَیۡدَهُنَّ ؕ اِنَّہٗ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۳۴﴾

অত:পর তার পালনকর্তা তার দোয়া কবুল করে নিলেন । অত:পর তাদের চক্রান্ত প্রতিহত করলেন । নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ ।


ثُمَّ بَدَا لَہُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَا رَاَوُا الۡاٰیٰتِ لَیَسۡجُنُنَّہٗ حَتّٰی حِیۡنٍ ﴿٪۳۵﴾

অত:পর এসব নিদর্শন দেখার পর তারা তাকে কিছু দিন কারাগারে রাখা সমীচীন মনে করল ।


وَ دَخَلَ مَعَہُ السِّجۡنَ فَتَیٰنِ ؕ قَالَ اَحَدُهُمَاۤ اِنِّیۡۤ اَرٰىنِیۡۤ اَعۡصِرُ خَمۡرًا ۚ وَ قَالَ الۡاٰخَرُ اِنِّیۡۤ اَرٰىنِیۡۤ اَحۡمِلُ فَوۡقَ رَاۡسِیۡ خُبۡزًا تَاۡکُلُ الطَّیۡرُ مِنۡہُ ؕ نَبِّئۡنَا بِتَاۡوِیۡلِہٖ ۚ اِنَّا نَرٰىکَ مِنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۳۶﴾

তার সাথে কারাগারে দু’জন যুবক প্রবেশ করল । তাদের একজন বলল : আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি মদ নিঙড়াচ্ছি । অপরজন বলল : আমি দেখলাম যে, নিজ মাথায় রুটি বহন করছি । তা থেকে পাখি ঠুকরিয়ে খাচ্ছে । আমাদেরকে এ ব্যাখা বলুন । আমরা আপনাকে সৎকর্মশীল দেখতে পাচ্ছি ।


قَالَ لَا یَاۡتِیۡکُمَا طَعَامٌ تُرۡزَقٰنِہٖۤ اِلَّا نَبَّاۡتُکُمَا بِتَاۡوِیۡلِہٖ قَبۡلَ اَنۡ یَّاۡتِیَکُمَا ؕ ذٰلِکُمَا مِمَّا عَلَّمَنِیۡ رَبِّیۡ ؕ اِنِّیۡ تَرَکۡتُ مِلَّۃَ قَوۡمٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ هُمۡ بِالۡاٰخِرَۃِ هُمۡ کٰفِرُوۡنَ ﴿۳۷﴾

তিনি বললেন : তোমাদেরকে প্রত্যহ যে খাদ্য দেওয়া হয়, তা তোমাদের কাছে আসার আগেই আমি তার ব্যাখা বলে দেব । এ জ্ঞাণ আমার পালনকর্তা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন । আমি ঐসব লোকের ধর্ম পরিত্যাগ করেছি যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে না এবং পরকালে অবিশ্বাসী ।


وَ اتَّبَعۡتُ مِلَّۃَ اٰبَآءِیۡۤ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ ؕ مَا کَانَ لَنَاۤ اَنۡ نُّشۡرِکَ بِاللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ فَضۡلِ اللّٰہِ عَلَیۡنَا وَ عَلَی النَّاسِ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَشۡکُرُوۡنَ ﴿۳۸﴾

আমি আপন পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক, ও ইয়াকুবের ধর্ম অনুসরণ করছি । আমাদের জন্য শোভা পায়না যে, কোন বস্তুকে আল্লাহর অংশীদার করি । এটা আমাদের প্রতি এবং অন্য সব লোকের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ । কিন্তু অধিকাংশ লোক অনুগ্রহ স্বীকার করে না ।


یٰصَاحِبَیِ السِّجۡنِ ءَاَرۡبَابٌ مُّتَفَرِّقُوۡنَ خَیۡرٌ اَمِ اللّٰہُ الۡوَاحِدُ الۡقَہَّارُ ﴿ؕ۳۹﴾

হে কারাগারের সঙ্গীরা ! পৃথক পৃথক জনের উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী আল্লাহ ?


مَا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اِلَّاۤ اَسۡمَآءً سَمَّیۡتُمُوۡهَاۤ اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمۡ مَّاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ بِہَا مِنۡ سُلۡطٰنٍ ؕ اِنِ الۡحُکۡمُ اِلَّا لِلّٰہِ ؕ اَمَرَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۰﴾

তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের ইবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপদাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছে । আল্লাহ এদের কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেন নি । আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেয়ার ক্ষমতা নেই । তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও ইবাদত করো না । এটাই সরল পথ । কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না ।


یٰصَاحِبَیِ السِّجۡنِ اَمَّاۤ اَحَدُ کُمَا فَیَسۡقِیۡ رَبَّہٗ خَمۡرًا ۚ وَ اَمَّا الۡاٰخَرُ فَیُصۡلَبُ فَتَاۡکُلُ الطَّیۡرُ مِنۡ رَّاۡسِہٖ ؕ قُضِیَ الۡاَمۡرُ الَّذِیۡ فِیۡہِ تَسۡتَفۡتِیٰنِ ﴿ؕ۴۱﴾

হে কারাগারের সঙ্গীরা ! তোমাদের একজন আপন প্রভুকে মদ্যপান করাবে এবং দ্বিতীয়জন, তাকে শ্যূলে চড়ানো হবে । অত:পর তার মস্তক থেকে পাখি আহার করবে । তোমরা যে বিষয়ে জানতে আগ্রহী তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে ।


وَ قَالَ لِلَّذِیۡ ظَنَّ اَنَّہٗ نَاجٍ مِّنۡہُمَا اذۡکُرۡنِیۡ عِنۡدَ رَبِّکَ ۫ فَاَنۡسٰہُ الشَّیۡطٰنُ ذِکۡرَ رَبِّہٖ فَلَبِثَ فِی السِّجۡنِ بِضۡعَ سِنِیۡنَ ﴿ؕ٪۴۲﴾

যে ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা ছিল যে, সে মুক্তি পাবে, তাকে ইউসুফ বলে ‍দিল : আপন প্রভুর কাছে আমার আলোচনা করবে । অত:পর শয়তান তাকে প্রভুর কাছে আলোচনার কথা ভুলিয়ে দিল । ফলে তাঁকে কয়েক বছর কারাগারে থাকতে হলো ।


وَ قَالَ الۡمَلِکُ اِنِّیۡۤ اَرٰی سَبۡعَ بَقَرٰتٍ سِمَانٍ یَّاۡکُلُہُنَّ سَبۡعٌ عِجَافٌ وَّ سَبۡعَ سُنۡۢبُلٰتٍ خُضۡرٍ وَّ اُخَرَ یٰبِسٰتٍ ؕ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَاُ اَفۡتُوۡنِیۡ فِیۡ رُءۡیَایَ اِنۡ کُنۡتُمۡ لِلرُّءۡیَا تَعۡبُرُوۡنَ ﴿۴۳﴾

বাদশাহ বলল : আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি মোটাতাজা গাভী—এদেরকে সাতটি শীর্ণ গাভী খেয়ে যাচ্ছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অন্যগুলো শুষ্ক । হে পারিষদবর্গ ! তোমরা আমাকে আমার স্বপ্নের ব্যাখা বল, যদি ‍তোমরা স্বপ্নের ব্যাখায় পারদর্শী হয়ে থাক ।


قَالُوۡۤا اَضۡغَاثُ اَحۡلَامٍ ۚ وَ مَا نَحۡنُ بِتَاۡوِیۡلِ الۡاَحۡلَامِ بِعٰلِمِیۡنَ ﴿۴۴﴾

তারা বলল : এটা কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন । এরুপ স্বপ্নের ব্যাখা আমাদের জানা নেই ।


وَ قَالَ الَّذِیۡ نَجَا مِنۡہُمَا وَ ادَّکَرَ بَعۡدَ اُمَّۃٍ اَنَا اُنَبِّئُکُمۡ بِتَاۡوِیۡلِہٖ فَاَرۡسِلُوۡنِ ﴿۴۵﴾

দু’জন কারারুদ্ধের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পর স্মরণ হলো, সে বলল, আমি তোমাদেরকে এর ব্যাখা বলছি । তোমরা আমাকে প্রেরণ কর ।


یُوۡسُفُ اَیُّہَا الصِّدِّیۡقُ اَفۡتِنَا فِیۡ سَبۡعِ بَقَرٰتٍ سِمَانٍ یَّاۡکُلُہُنَّ سَبۡعٌ عِجَافٌ وَّ سَبۡعِ سُنۡۢبُلٰتٍ خُضۡرٍ وَّ اُخَرَ یٰبِسٰتٍ ۙ لَّعَلِّیۡۤ اَرۡجِعُ اِلَی النَّاسِ لَعَلَّہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۴۶﴾

সে তথায় পৌঁছে বলল : হে ইউসুফ ! হে সত্যবাদী ! সাতটি মোটাতাজা গাভী—তাদেরকে খাচ্ছে সাতটি শীর্ণ গাভী এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অন্যগুলো শুষ্ক । আপনি আমাদেরকে এ স্বপ্ন সম্পর্কে পথনির্দেশ প্রদান করুন : যাতে আমি তাদের কাছে ফিরে ‍গিয়ে তাদের অবগত করতে পারি ।


قَالَ تَزۡرَعُوۡنَ سَبۡعَ سِنِیۡنَ دَاَبًا ۚ فَمَا حَصَدۡتُّمۡ فَذَرُوۡہُ فِیۡ سُنۡۢبُلِہٖۤ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّا تَاۡکُلُوۡنَ ﴿۴۷﴾

বলল : তোমরা সাত বছর উত্তমরুপে চাষাবাদ করবে । অত:পর যা কাটবে, তার মধ্যে যে সামান্য পরিমাণ তোমরা খাবে তা ছাড়া অবশিষ্ট শস্য শীষ সমেত রেখে দেবে ।


ثُمَّ یَاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ سَبۡعٌ شِدَادٌ یَّاۡکُلۡنَ مَا قَدَّمۡتُمۡ لَہُنَّ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّا تُحۡصِنُوۡنَ ﴿۴۸﴾

এবং এরপরে আসবে দুর্ভিক্ষের সাত বছর, তোমরা এ দিনের জন্যে যা রেখেছিলে, তা খেয়ে যাবে, কিন্তু অল্প পরিমান ব্যতিত, যা তোমরা তুলে রাখবে ।


ثُمَّ یَاۡتِیۡ مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ عَامٌ فِیۡہِ یُغَاثُ النَّاسُ وَ فِیۡہِ یَعۡصِرُوۡنَ ﴿٪۴۹﴾

এরপরই আসবে একবছর –এতে মানুষের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হবে এবং এতে তারা রস নিংড়াবে ।


وَ قَالَ الۡمَلِکُ ائۡتُوۡنِیۡ بِہٖ ۚ فَلَمَّا جَآءَہُ الرَّسُوۡلُ قَالَ ارۡجِعۡ اِلٰی رَبِّکَ فَسۡـَٔلۡہُ مَا بَالُ النِّسۡوَۃِ الّٰتِیۡ قَطَّعۡنَ اَیۡدِیَہُنَّ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ بِکَیۡدِهِنَّ عَلِیۡمٌ ﴿۵۰﴾

বাদশাহ বলল : ফিরে যাও তোমাদের প্রভুর কাছে এবং জিজ্ঞেস কর তাকে : ঐ মহিলাদের স্বরুপ কি, যারা স্বীয় হস্ত কর্তন করেছিল ! আমার পালনকর্তা তো তাদের ছলনা সবই জানেন ।


قَالَ مَا خَطۡبُکُنَّ اِذۡ رَاوَدۡتُّنَّ یُوۡسُفَ عَنۡ نَّفۡسِہٖ ؕ قُلۡنَ حَاشَ لِلّٰہِ مَا عَلِمۡنَا عَلَیۡہِ مِنۡ سُوۡٓءٍ ؕ قَالَتِ امۡرَاَتُ الۡعَزِیۡزِ الۡـٰٔنَ حَصۡحَصَ الۡحَقُّ ۫ اَنَا رَاوَدۡتُّہٗ عَنۡ نَّفۡسِہٖ وَ اِنَّہٗ لَمِنَ الصّٰدِقِیۡنَ ﴿۵۱﴾

বাদশাহ মহিলাদেরকে বললেন : তোমাদের হাল-হকিকত কি, যখন তোমরা ইউসুফকে আত্মসংবরন করেছিলে ? তারা বলল ; আল্লাহ মহান, আমরা তার সম্পর্কে মন্দ কিছু জানি না । আযীয পত্নী বলল : এখন সত্য কথা প্রকাশ হয়ে গেছে । আমিই তাকে আত্মসংবরন ফুসলিয়েছিলাম এবং সে সত্যবাদী ।


ذٰلِکَ لِیَعۡلَمَ اَنِّیۡ لَمۡ اَخُنۡہُ بِالۡغَیۡبِ وَ اَنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِیۡ کَیۡدَ الۡخَآئِنِیۡنَ ﴿۵۲﴾

ইউসুফ বললেন : এটা এজন্য ,যাতে আযীয জেনে নেয় যে, আমি গোপনে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি । আরও এই যে, আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের প্রতারণাকে এগুতে দেন না ।


وَ مَاۤ اُبَرِّیُٔ نَفۡسِیۡ ۚ اِنَّ النَّفۡسَ لَاَمَّارَۃٌۢ بِالسُّوۡٓءِ اِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّیۡ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۵۳﴾

আমি নিজেকে নির্দোষ বলি না । নিশ্চয় মানুষের মন মন্দ কর্মপ্রবণ, কিন্তু সে নয়—আমার পালনকর্তা যার প্রতি অনুগ্রহ করেন । নিশ্চয় আমার পালনকর্তা ক্ষমাশীল, দয়ালু ।


وَ قَالَ الۡمَلِکُ ائۡتُوۡنِیۡ بِہٖۤ اَسۡتَخۡلِصۡہُ لِنَفۡسِیۡ ۚ فَلَمَّا کَلَّمَہٗ قَالَ اِنَّکَ الۡیَوۡمَ لَدَیۡنَا مَکِیۡنٌ اَمِیۡنٌ ﴿۵۴﴾

বাদশাহ বলল : তাকে আমার কাছে নিয়ে এস । আমি তাকে নিজের বিশ্বস্ত সহচর করে রাখবো । অত:পর যখন তার সাথে মত বিনিময় করল তখন বলল : নিশ্চয়ই আপনি আমার কাছে আজ থেকে বিশ্বস্ত হিসেবে মর্যাদার স্থান লাভ করেছেন ।


قَالَ اجۡعَلۡنِیۡ عَلٰی خَزَآئِنِ الۡاَرۡضِ ۚ اِنِّیۡ حَفِیۡظٌ عَلِیۡمٌ ﴿۵۵﴾

ইউসুফ বলল : আমাকে দেশের ধন-ভান্ডারে নিযুক্ত করুন । আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও অধিক জ্ঞানবান ।


وَ کَذٰلِکَ مَکَّنَّا لِیُوۡسُفَ فِی الۡاَرۡضِ ۚ یَتَبَوَّاُ مِنۡہَا حَیۡثُ یَشَآءُ ؕ نُصِیۡبُ بِرَحۡمَتِنَا مَنۡ نَّشَآءُ وَ لَا نُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۵۶﴾

এমনিভাবে আমি ইউসুফকে সে দেশের বুকে প্রতিষ্ঠা দান করেছি । সে তথায় যেখানে ইচ্ছা স্থান করে নিতে পারত । আমি স্বীয় রহমত যাকে ইচ্ছা পৌঁছে দেই এবং আমি পুণ্যবানদের প্রতিদান বিনষ্ট করি না ।


وَ لَاَجۡرُ الۡاٰخِرَۃِ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ کَانُوۡا یَتَّقُوۡنَ ﴿٪۵۷﴾

এবং ঐ লোকদের জন্য পরকালে প্রতিদান উত্তম যারা ঈমান এনেছে ও সতর্কতা অবলম্বন করে ।


وَ جَآءَ اِخۡوَۃُ یُوۡسُفَ فَدَخَلُوۡا عَلَیۡہِ فَعَرَفَہُمۡ وَ هُمۡ لَہٗ مُنۡکِرُوۡنَ ﴿۵۸﴾

ইউসুফের ভ্রাতারা আগমন করল, অত:পর তার কাছে উপস্থিত হল । সে তাদেরকে চিনল এবং তারা তাকে চিনল না ।


وَ لَمَّا جَہَّزَهُمۡ بِجَہَازِهِمۡ قَالَ ائۡتُوۡنِیۡ بِاَخٍ لَّکُمۡ مِّنۡ اَبِیۡکُمۡ ۚ اَلَا تَرَوۡنَ اَنِّیۡۤ اُوۡفِی الۡکَیۡلَ وَ اَنَا خَیۡرُ الۡمُنۡزِلِیۡنَ ﴿۵۹﴾

এবং সে যখন তাদেরকে তাদের রসদ প্রস্তুত করে দিল, তখন সে বলল : তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে আমার কাছে নিয়ে এসো । তোমরা কি দেখ না যে, আমি পুরা মাপ দেই এবং মেহমানদেরকে উত্তম সমাদর করি ।


فَاِنۡ لَّمۡ تَاۡتُوۡنِیۡ بِہٖ فَلَا کَیۡلَ لَکُمۡ عِنۡدِیۡ وَ لَا تَقۡرَبُوۡنِ ﴿۶۰﴾

অত:পর যদি তাকে আমার কাছে না আন, তবে আমার কাছে তোমাদের কোন বরাদ্দ নেই এবং তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে না ।


قَالُوۡا سَنُرَاوِدُ عَنۡہُ اَبَاہُ وَ اِنَّا لَفٰعِلُوۡنَ ﴿۶۱﴾

তারা বলল : আমরা তার সম্পর্কে তার পিতাকে সম্মত করার চেষ্টা করব এবং আমাদেরকে এ কাজ করতেই হবে ।


وَ قَالَ لِفِتۡیٰنِہِ اجۡعَلُوۡا بِضَاعَتَہُمۡ فِیۡ رِحَالِہِمۡ لَعَلَّہُمۡ یَعۡرِفُوۡنَہَاۤ اِذَا انۡقَلَبُوۡۤا اِلٰۤی اَهْلِہِمۡ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۶۲﴾

এবং সে ভৃত্যদেরকে বলল : তাদের পণ্যমূল্য তাদের রসদ পত্রের মধ্যে রেখে দাও—সম্ভবত তারা গৃহে পৌছে তা বুঝতে পারবে, সম্ভবত : তারা পুনর্বার আসবে ।


فَلَمَّا رَجَعُوۡۤا اِلٰۤی اَبِیۡہِمۡ قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا مُنِعَ مِنَّا الۡکَیۡلُ فَاَرۡسِلۡ مَعَنَاۤ اَخَانَا نَکۡتَلۡ وَ اِنَّا لَہٗ لَحٰفِظُوۡنَ ﴿۶۳﴾

তারা যখন তাদের পিতার কাছে ফিরে এল, যখন বলল : হে আমাদের পিতা, আমাদের জন্য খাদ্যশস্যের বরাদ্দ নিষিদ্ধ করা হয়েছে । অতএব আপনি আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন, যাতে আমরা খাদ্যশস্যের বরাদ্দ আনতে পারি এবং আমরা অবশ্যই তার পুরাপুরি হিফাযত করব ।


قَالَ هْلۡ اٰمَنُکُمۡ عَلَیۡہِ اِلَّا کَمَاۤ اَمِنۡتُکُمۡ عَلٰۤی اَخِیۡہِ مِنۡ قَبۡلُ ؕ فَاللّٰہُ خَیۡرٌ حٰفِظًا ۪ وَّ هُوَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ﴿۶۴﴾

বললেন, আমি তার সম্পর্কে তোমাদেরকে কি সেরুপ বিশ্বাস করব, যেমন ইতিপূর্বে তার ভাই সম্পর্কে বিশ্বাস করেছিলাম ? অতএব আল্লাহ উত্তম হিফাযতকারী এবং তিনিই সর্বাধিক দয়ালু ।


وَ لَمَّا فَتَحُوۡا مَتَاعَهُمۡ وَجَدُوۡا بِضَاعَتَهُمۡ رُدَّتۡ اِلَیۡهِمۡ ؕ قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا مَا نَبۡغِیۡ ؕ هٰذِهٖ بِضَاعَتُنَا رُدَّتۡ اِلَیۡنَا ۚ وَ نَمِیۡرُ اَهۡلَنَا وَ نَحۡفَظُ اَخَانَا وَ نَزۡدَادُ کَیۡلَ بَعِیۡرٍ ؕ ذٰلِکَ کَیۡلٌ یَّسِیۡرٌ ﴿۶۵﴾

এবং যখন তারা আসবাবপত্র খুলল, তখন দেখতে পেল যে, তাদেরকে তাদের পণ্যমূল্য ফেরত দেয়া হয়েছে । তারা বলল : হে আমাদের পিতা, আমরা আর কি চাইতে পারি ! এই আমাদের প্রদত্ত পণ্যমূল্য, আমাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়েছে । এখন আমরা আর আমাদের পরিবারবর্গের জন্যে রসদ আনব এবং আমাদের ভাইয়ের দেখাশোনা করব এবং এক উটের বরাদ্দ খাদ্যশস্য আমরা অতিরিক্ত আনব । ঐ বরাদ্দ সহজ ।


قَالَ لَنۡ اُرۡسِلَہٗ مَعَکُمۡ حَتّٰی تُؤۡتُوۡنِ مَوۡثِقًا مِّنَ اللّٰہِ لَتَاۡتُنَّنِیۡ بِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ یُّحَاطَ بِکُمۡ ۚ فَلَمَّاۤ اٰتَوۡہُ مَوۡثِقَہُمۡ قَالَ اللّٰہُ عَلٰی مَا نَقُوۡلُ وَکِیۡلٌ ﴿۶۶﴾

বললেন : তাকে ততক্ষণ তোমাদের সাথে পাঠাব না, যতক্ষণ তোমরা আমাকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার না দাও যে, তাকে অবশ্যই আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেবে । কিন্তু যদি তোমরা সবাই একাত্তই অসহায় না হয়ে যাও । অত:পর যখন সবাই তাঁকে অঙ্গীকার ‍দিল, তখন তিনি বললেন : আমাদের মধ্যে যা কথাবার্তা হলো যে ব্যাপারে আল্লাহই মধ্যস্থ রইলেন ।


وَ قَالَ یٰبَنِیَّ لَا تَدۡخُلُوۡا مِنۡۢ بَابٍ وَّاحِدٍ وَّ ادۡخُلُوۡا مِنۡ اَبۡوَابٍ مُّتَفَرِّقَۃٍ ؕ وَ مَاۤ اُغۡنِیۡ عَنۡکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ اِنِ الۡحُکۡمُ اِلَّا لِلّٰہِ ؕ عَلَیۡہِ تَوَکَّلۡتُ ۚ وَ عَلَیۡہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُتَوَکِّلُوۡنَ ﴿۶۷﴾

ইয়াকুব বললেন : হে আমার বৎসগণ ! সবাই একই প্রবেশদ্বার ‍দিয়ে যেয়ো না, বরং পৃথক দরজা দিয়ে প্রবেশ করো । আল্লাহর কোন বিধান থেকে আমি তোমাদেরকে রক্ষা করতে পারিনা । নির্দেশ আল্লাহরই চলে । তাঁরই উপর আমি ভরসা করি এবং তাঁরই উপর ভরসা করা উচিত ভরসাকারীদের ।


وَ لَمَّا دَخَلُوۡا مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَهُمۡ اَبُوۡهُمۡ ؕ مَا کَانَ یُغۡنِیۡ عَنۡہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ اِلَّا حَاجَۃً فِیۡ نَفۡسِ یَعۡقُوۡبَ قَضٰہَا ؕ وَ اِنَّہٗ لَذُوۡ عِلۡمٍ لِّمَا عَلَّمۡنٰہُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿٪۶۸﴾

তারা যখন পিতার কথামত প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে তা তাদের বাঁচাতে পারল না । কিন্তু ইয়াকুবের সিদ্ধান্তে তাঁর একটি বাসনা ছিল , যা তিনি পূর্ণ করেছেন । এবং তিনি তো আমার শেখানো বিষয় অবগত ছিলেন । কিন্তু অনেক মানুষ অবগত নয় ।


وَ لَمَّا دَخَلُوۡا عَلٰی یُوۡسُفَ اٰوٰۤی اِلَیۡہِ اَخَاہُ قَالَ اِنِّیۡۤ اَنَا اَخُوۡکَ فَلَا تَبۡتَئِسۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۶۹﴾

যখন তারা ইউসুফের কাছে উপস্থিত হল, তখন সে আপন ভ্রাতাকে নিজের কাছে রাখল । বলল : নিশ্চয়ই আমি তোমার সহোদর । অতএব তাদের কৃতকর্মের জন্য দু:খ করো না ।


فَلَمَّا جَہَّزَهُمۡ بِجَہَازِهِمۡ جَعَلَ السِّقَایَۃَ فِیۡ رَحۡلِ اَخِیۡہِ ثُمَّ اَذَّنَ مُؤَذِّنٌ اَیَّتُہَا الۡعِیۡرُ اِنَّکُمۡ لَسٰرِقُوۡنَ ﴿۷۰﴾

অত:পর যখন ইউসুফ তাদের রসদপত্র প্রস্তুত করে দিলেন, তখন পানপাত্র আপন ভাইয়ের রসদের মধ্যে রেখে দিল । অত:পর একজন ঘোষক ডেকে বলল : হে কাফিলার লোকজন, তোমরা অবশ্যই চোর ।


قَالُوۡا وَ اَقۡبَلُوۡا عَلَیۡہِمۡ مَّا ذَا تَفۡقِدُوۡنَ ﴿۷۱﴾

তারা ওদের দিকে মুখ করে বলল : তোমাদের কি হারিয়েছে ?


قَالُوۡا نَفۡقِدُ صُوَاعَ الۡمَلِکِ وَ لِمَنۡ جَآءَ بِہٖ حِمۡلُ بَعِیۡرٍ وَّ اَنَا بِہٖ زَعِیۡمٌ ﴿۷۲﴾

তারা বলল : আমরা বাদশাহ’র পানপাত্র হারিয়েছি এবং যে কেউ এটা এনে দেবে সে এক উটের বোঝা পরিমাপ মাল পাবে এবং আমি এর যামিন ।


قَالُوۡا تَاللّٰہِ لَقَدۡ عَلِمۡتُمۡ مَّا جِئۡنَا لِنُفۡسِدَ فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا کُنَّا سٰرِقِیۡنَ ﴿۷۳﴾

তারা বলল : আল্লাহর কসম, তোমরা তো জান, আমরা অনর্থ ঘটাতে এদেশে আসিনি এবং আমরা কখনও চোর ছিলাম না ।


قَالُوۡا فَمَا جَزَآؤُہٗۤ اِنۡ کُنۡتُمۡ کٰذِبِیۡنَ ﴿۷۴﴾

তারা বলল : যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও, তবে যে চুরি করেছে তার কি শাস্তি ?


قَالُوۡا جَزَآؤُہٗ مَنۡ وُّجِدَ فِیۡ رَحۡلِہٖ فَہُوَ جَزَآؤُہٗ ؕ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۷۵﴾

তারা বলল : এর শাস্তি এই যে, যার রসদপত্র থেকে তা পাওয়া যাবে, এর প্রতিদানে সে দাসত্বে যাবে । আমরা জালিমদের এভাবেই শাস্তি দেই ।


فَبَدَاَ بِاَوۡعِیَتِہِمۡ قَبۡلَ وِعَآءِ اَخِیۡہِ ثُمَّ اسۡتَخۡرَجَہَا مِنۡ وِّعَآءِ اَخِیۡہِ ؕ کَذٰلِکَ کِدۡنَا لِیُوۡسُفَ ؕ مَا کَانَ لِیَاۡخُذَ اَخَاہُ فِیۡ دِیۡنِ الۡمَلِکِ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ ؕ نَرۡفَعُ دَرَجٰتٍ مَّنۡ نَّشَآءُ ؕ وَ فَوۡقَ کُلِّ ذِیۡ عِلۡمٍ عَلِیۡمٌ ﴿۷۶﴾

অত:পর ইউসুফ আপন ভাইয়ের থলের পূর্বে তাদের থলে তল্লাশী শুরু করলেন । অবশেষে সেই পাত্র আপন ভাইয়ের থলের মধ্য থেকে বের করলেন । এমনিভাবে আমি ইউসুফকে কৌশল শিক্ষা দিয়েছিলাম । সে বাদশাহর আইনে আপন ভাইকে কখনও দাসত্বে দিতে পারত না, কিন্তু আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন । আমি যাকে ইচ্ছা, মর্যাদায় উন্নীত করি এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছে অধিকতর এক জ্ঞানীজন ।


قَالُوۡۤا اِنۡ یَّسۡرِقۡ فَقَدۡ سَرَقَ اَخٌ لَّہٗ مِنۡ قَبۡلُ ۚ فَاَسَرَّهَا یُوۡسُفُ فِیۡ نَفۡسِہٖ وَ لَمۡ یُبۡدِهَا لَہُمۡ ۚ قَالَ اَنۡتُمۡ شَرٌّ مَّکَانًا ۚ وَ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِمَا تَصِفُوۡنَ ﴿۷۷﴾

তারা বলতে লাগল : যদি সে চুরি করে থাকে, তবে তার এক ভাইও ইতিপূর্বে চুরি করেছিল । তখন ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে রাখলেন এবং তাদেরকে জানালেন না । মনে মনে বললেন : তোমরা লোক হিসেবে নিতান্তই মন্দ এবং আল্লাহ খুব জ্ঞাত রয়েছেন, যা তোমরা বর্ণনা করছ ।


قَالُوۡا یٰۤاَیُّہَا الۡعَزِیۡزُ اِنَّ لَہٗۤ اَبًا شَیۡخًا کَبِیۡرًا فَخُذۡ اَحَدَنَا مَکَانَہٗ ۚ اِنَّا نَرٰىکَ مِنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۷۸﴾

তারা বলতে লাগল : হে আযীয, তার পিতা আছেন, যিনি খুবই বৃদ্ধ বয়স্ক । সুতরাং আপনি আমাদের একজনকে তার বদলে রেখে দিন । আমরা আপনাকে অনুগ্রহশীল ব্যক্তিদের একজন দেখতে পাচ্ছি ।


قَالَ مَعَاذَ اللّٰہِ اَنۡ نَّاۡخُذَ اِلَّا مَنۡ وَّجَدۡنَا مَتَاعَنَا عِنۡدَہٗۤ ۙ اِنَّاۤ اِذًا لَّظٰلِمُوۡنَ ﴿٪۷۹﴾

তিনি বললেন : যার কাছে আমরা আমাদের মাল পেয়েছি, তাকে ছাড়া আর কাউকে গ্রেফতার করা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন । তা হলে তো আমরা নিশ্চিতই অন্যায়কারী হয়ে যাব ।


فَلَمَّا اسۡتَیۡـَٔسُوۡا مِنۡہُ خَلَصُوۡا نَجِیًّا ؕ قَالَ کَبِیۡرُهُمۡ اَلَمۡ تَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ اَبَاکُمۡ قَدۡ اَخَذَ عَلَیۡکُمۡ مَّوۡثِقًا مِّنَ اللّٰہِ وَ مِنۡ قَبۡلُ مَا فَرَّطۡتُّمۡ فِیۡ یُوۡسُفَ ۚ فَلَنۡ اَبۡرَحَ الۡاَرۡضَ حَتّٰی یَاۡذَنَ لِیۡۤ اَبِیۡۤ اَوۡ یَحۡکُمَ اللّٰہُ لِیۡ ۚ وَ هُوَ خَیۡرُ الۡحٰکِمِیۡنَ ﴿۸۰﴾

অত:পর যখন তারা তার কাছ থেকে নিরাশ হয়ে গেল, তখন পরামর্শের জন্য একান্তে বসল । তাদের জ্যেষ্ঠ ভাই বলল : তোমরা কি জান না যে, পিতা তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং পূর্বে ইউসুফের ব্যাপারেও তোমরা অন্যায় করেছ ? অতএব আমি তো কিছুতেই এদেশ ত্যাগ করব না, যে পর্যন্ত না পিতা আমাকে আদেশ দেন অথবা আল্লাহ আমার পক্ষে কোন ব্যবস্থা করে দেন । তিনিই সর্বোত্তম ব্যবস্থাপক ।


اِرۡجِعُوۡۤا اِلٰۤی اَبِیۡکُمۡ فَقُوۡلُوۡا یٰۤاَبَانَاۤ اِنَّ ابۡنَکَ سَرَقَ ۚ وَ مَا شَہِدۡنَاۤ اِلَّا بِمَا عَلِمۡنَا وَ مَا کُنَّا لِلۡغَیۡبِ حٰفِظِیۡنَ ﴿۸۱﴾

তোমরা আমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও এবং বল পিতা :আপনার ছেলে চুরি করেছে । আমরা তাই বলে ‍দিলাম, যা আমাদের জানা ছিল এবং অদৃশ্য বিষয়ের প্রতি আমাদের লক্ষ্য ছিল না ।


وَ سۡـَٔلِ الۡقَرۡیَۃَ الَّتِیۡ کُنَّا فِیۡہَا وَ الۡعِیۡرَ الَّتِیۡۤ اَقۡبَلۡنَا فِیۡہَا ؕ وَ اِنَّا لَصٰدِقُوۡنَ ﴿۸۲﴾

জিজ্ঞেস করুন ঐ জনপদের লোকদেরকে যেখানে আমরা ছিলাম এবং ঐ কাফেলাকে, যাদের সাথে আমরা এসেছি । নিশ্চিতই আমরা সত্য বলছি ।


قَالَ بَلۡ سَوَّلَتۡ لَکُمۡ اَنۡفُسُکُمۡ اَمۡرًا ؕ فَصَبۡرٌ جَمِیۡلٌ ؕ عَسَی اللّٰہُ اَنۡ یَّاۡتِـیَنِیۡ بِہِمۡ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّہٗ هُوَ الۡعَلِیۡمُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۸۳﴾

তিনি বললেন : কিছুই না, তোমরা মনগড়া একটি কথা নিয়েই এসেছ । এখন ধৈর্য ধারণই উত্তম । সম্ভবত আল্লাহ তাদের সবাইকে একসঙ্গে আমার কাছে নিয়ে আসবেন । তিনিই সুবিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় ।


وَ تَوَلّٰی عَنۡہُمۡ وَ قَالَ یٰۤاَسَفٰی عَلٰی یُوۡسُفَ وَ ابۡیَضَّتۡ عَیۡنٰہُ مِنَ الۡحُزۡنِ فَہُوَ کَظِیۡمٌ ﴿۸۴﴾

এবং তাদের দিক থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন : হায় আফসোস ইউসুফের জন্য ! এবং দু:খে তাঁর চক্ষুদয় সাদা হয়ে গেল । এবং অসহনীয় মনস্তাপে তিনি ছিলেন ক্লিষ্ট ।


قَالُوۡا تَاللّٰہِ تَفۡتَؤُا تَذۡکُرُ یُوۡسُفَ حَتّٰی تَکُوۡنَ حَرَضًا اَوۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡہٰلِکِیۡنَ ﴿۸۵﴾

তারা বলতে লাগল : আল্লাহর কসম ! আপনি তো ইউসুফের স্মরণ থেকে নিবৃত হবেন না । যে পর্যন্ত মরণাপন্ন না হয়ে যান কিংবা মৃত্যুবরণ না করেন ।


قَالَ اِنَّمَاۤ اَشۡکُوۡا بَثِّیۡ وَ حُزۡنِیۡۤ اِلَی اللّٰہِ وَ اَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۸۶﴾

তিনি বললেন : আমি তো আমার দু:খ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি যা জানি, তা তোমরা জান না !


یٰبَنِیَّ اذۡهَبُوۡا فَتَحَسَّسُوۡا مِنۡ یُّوۡسُفَ وَ اَخِیۡہِ وَ لَا تَایۡـَٔسُوۡا مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ لَا یَایۡـَٔسُ مِنۡ رَّوۡحِ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿۸۷﴾

বৎসগণ ! যাও, ইউসুফ ও তার ভাইকে তালাশ কর এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না । নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফির সম্প্রদায় ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না ।


فَلَمَّا دَخَلُوۡا عَلَیۡہِ قَالُوۡا یٰۤاَیُّہَا الۡعَزِیۡزُ مَسَّنَا وَ اَهْلَنَا الضُّرُّ وَ جِئۡنَا بِبِضَاعَۃٍ مُّزۡجٰىۃٍ فَاَوۡفِ لَنَا الۡکَیۡلَ وَ تَصَدَّقۡ عَلَیۡنَا ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَجۡزِی الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ ﴿۸۸﴾

অত:পর যখন তারা ইউসুফের কাছে পৌঁছাল তখন বলল : হে আযীয, আমরা ও আমাদের পরিবারবর্গ কষ্টের সম্মুখীন হয়ে পড়েছি এবং আমরা অপর্যাপ্ত পুঁজি নিয়ে এসেছি । অতএব আপনি আমাদেরকে পুরাপুরি বরাদ্দ দিন এবং আমাদেরকে দান করুন । আল্লাহ দাতাদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকেন ।


قَالَ هَلۡ عَلِمۡتُمۡ مَّا فَعَلۡتُمۡ بِیُوۡسُفَ وَ اَخِیۡہِ اِذۡ اَنۡتُمۡ جٰہِلُوۡنَ ﴿۸۹﴾

ইউসুফ বললেন : তোমাদের জানা আছে কি, যা তোমরা ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সাথে করেছ, যখন তোমরা অপরিণামদশী ছিলে ?


قَالُوۡۤا ءَاِنَّکَ لَاَنۡتَ یُوۡسُفُ ؕ قَالَ اَنَا یُوۡسُفُ وَهٰذَ اۤ اَخِیۡ ۫ قَدۡ مَنَّ اللّٰہُ عَلَیۡنَا ؕ اِنَّہٗ مَنۡ یَّـتَّقِ وَ یَصۡبِرۡ فَاِنَّ اللّٰہَ لَا یُضِیۡعُ اَجۡرَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۹۰﴾

তারা বলল, তবে কি তুমিই ইউসুফ । বললেন ; আমিই ইউসুফ এবং এ হল আমার সহোদর ভাই । আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন । নিশ্চয় যে তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সবর করে, আল্লাহ এহেন সৎকর্মশীলদের প্রতিদান বিনষ্ট করেন না ।


قَالُوۡا تَاللّٰہِ لَقَدۡ اٰثَرَکَ اللّٰہُ عَلَیۡنَا وَ اِنۡ کُنَّا لَخٰطِئِیۡنَ ﴿۹۱﴾

তারা বলল : আল্লাহর কসম, আমাদের চাইতে আল্লাহ তোমাকে পছন্দ করেছেন এবং আমরা অবশ্যই অপরাধী ছিলাম ।


قَالَ لَا تَثۡرِیۡبَ عَلَیۡکُمُ الۡیَوۡمَ ؕ یَغۡفِرُ اللّٰہُ لَکُمۡ ۫ وَ هُوَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ ﴿۹۲﴾

বললেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই । আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন । তিনি সব মেহেরবানের চাইতে অধিক মেহেরবান ।


اِذْهَبُوۡا بِقَمِیۡصِیۡ هٰذَا فَاَلۡقُوۡہُ عَلٰی وَجۡہِ اَبِیۡ یَاۡتِ بَصِیۡرًا ۚ وَ اۡتُوۡنِیۡ بِاَهْلِکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿٪۹۳﴾

তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও । এটি আমার পিতার মুখমন্ডলের উপর রেখে দিও, এতে তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে । আর তোমাদের পরিবারবর্গের সবাইকে আমার কাছে নিয়ে এস ।


وَ لَمَّا فَصَلَتِ الۡعِیۡرُ قَالَ اَبُوۡهُمۡ اِنِّیۡ لَاَجِدُ رِیۡحَ یُوۡسُفَ لَوۡ لَاۤ اَنۡ تُفَنِّدُوۡنِ ﴿۹۴﴾

যখন কাফেলা রওনা হল, তখন তাদের পিতা বললেন : যদি তোমরা আমাকে অপ্রকৃতিস্থ না বল, তবে বলি : আমি নিশ্চিতরুপেই ইউসুফের গন্ধ পাচ্ছি ।


قَالُوۡا تَاللّٰہِ اِنَّکَ لَفِیۡ ضَلٰلِکَ الۡقَدِیۡمِ ﴿ٙ۹۵﴾

লোকের বলল : আল্লাহ’র কসম, আপনি তো সেই পুরানো ভ্রান্তিতেই পড়ে আছেন ।


فَلَمَّاۤ اَنۡ جَآءَ الۡبَشِیۡرُ اَلۡقٰىہُ عَلٰی وَجۡہِہٖ فَارۡتَدَّ بَصِیۡرًا ۚ قَالَ اَلَمۡ اَقُلۡ لَّکُمۡ ۚۙ اِنِّیۡۤ اَعۡلَمُ مِنَ اللّٰہِ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹۶﴾

অত:পর যখন সুসংবাদদাতা পৌঁছাল, সে জামাটি তাঁর মুখে রাখল । অমনি তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলেন । বললেন আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু জানি তোমরা তা জান না ?


قَالُوۡا یٰۤاَبَانَا اسۡتَغۡفِرۡ لَنَا ذُنُوۡبَنَاۤ اِنَّا کُنَّا خٰطِئِیۡنَ ﴿۹۷﴾

তারা বলল : পিতা, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন । নিশ্চয় আমরা অপরাধী ছিলাম ।


قَالَ سَوۡفَ اَسۡتَغۡفِرُ لَکُمۡ رَبِّیۡ ؕ اِنَّہٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۹۸﴾

বললেন, সত্বরই আমি পালনকর্তার কাছে তোমাদের জন্য ক্ষমা চাইব । নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু ।


فَلَمَّا دَخَلُوۡا عَلٰی یُوۡسُفَ اٰوٰۤی اِلَیۡہِ اَبَوَیۡہِ وَ قَالَ ادۡخُلُوۡا مِصۡرَ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ اٰمِنِیۡنَ ﴿ؕ۹۹﴾

অত:পর যখন তারা ইউসুফের কাছে পৌঁছাল, তখন ইউসুফ পিতা মাতাকে নিজের কাছে জায়গা দিলেন এবং বললেন : আল্লাহ চাহেন তো শান্ত চিন্তে মিসরে প্রবেশ করুন ।


وَ رَفَعَ اَبَوَیۡهِ عَلَی الۡعَرۡشِ وَ خَرُّوۡا لَهٗ سُجَّدًا ۚ وَ قَالَ یٰۤاَبَتِ هٰذَا تَاۡوِیۡلُ رُءۡیَایَ مِنۡ قَبۡلُ ۫ قَدۡ جَعَلَهَا رَبِّیۡ حَقًّا ؕ وَ قَدۡ اَحۡسَنَ بِیۡۤ اِذۡ اَخۡرَجَنِیۡ مِنَ السِّجۡنِ وَ جَآءَ بِکُمۡ مِّنَ الۡبَدۡوِ مِنۡۢ بَعۡدِ اَنۡ نَّزَغَ الشَّیۡطٰنُ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَ اِخۡوَتِیۡ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ لَطِیۡفٌ لِّمَا یَشَآءُ ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡعَلِیۡمُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۱۰۰﴾

এবং তিনি পিতামাতাকে সিংহাসনের উপর বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সিজদাবরত হল । তিনি বললেন : পিত: এ হচ্ছে আমার ইতিপূর্বেকার স্বপ্নের বর্ণনা । আমার পালনকর্তা একে সত্য পরিণত করেছেন এবং তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন । আমাকে জেল থেকে বের করেছেন এবং আপনাদেরকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করে দেওয়ার পর । আমার পালনকর্তা যা চান, কৌশলে সম্পন্ন করেন । নিশ্চয় তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় ।


رَبِّ قَدۡ اٰتَیۡتَنِیۡ مِنَ الۡمُلۡکِ وَ عَلَّمۡتَنِیۡ مِنۡ تَاۡوِیۡلِ الۡاَحَادِیۡثِ ۚ فَاطِرَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ۟ اَنۡتَ وَلِیّٖ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ۚ تَوَفَّنِیۡ مُسۡلِمًا وَّ اَلۡحِقۡنِیۡ بِالصّٰلِحِیۡنَ ﴿۱۰۱﴾

হে পালনকর্তা, আপনি আমাকে রাজত্বের অংশবিশেষ দান করেছেন এবং আমাকে বিভিন্ন বিষয় যথাযথ তাৎপর্যসহ ব্যাখা করার বিদ্যা শিখিয়ে দিয়েছেন । হে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা, আপনিই আমার কার্যনির্বাহী ইহকাল ও পরকালে । আমাকে ইসলামের উপর মৃত্যদান করুন এবং আমাকে স্বজনদের সাথে মিলিত করুন ।


ذٰلِکَ مِنۡ اَنۡۢبَآءِ الۡغَیۡبِ نُوۡحِیۡہِ اِلَیۡکَ ۚ وَ مَا کُنۡتَ لَدَیۡہِمۡ اِذۡ اَجۡمَعُوۡۤا اَمۡرَهُمۡ وَ هُمۡ یَمۡکُرُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾

এগুলো অদৃশ্যের খবর, আমি আপনার কাছে প্রেরণ করি । আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা স্বীয় কাজ সাব্যস্ত করছিল এবং চক্রান্ত করছিল ।


وَ مَاۤ اَکۡثَرُ النَّاسِ وَ لَوۡ حَرَصۡتَ بِمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰۳﴾

আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয় ।


وَ مَا تَسۡـَٔلُہُمۡ عَلَیۡہِ مِنۡ اَجۡرٍ ؕ اِنۡ هُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾٪

আপনি এর জন্য তাদের কাছে কোন বিনিময় চান না । এটা তো সারা বিশ্বের জন্য উপদেশ বৈ নয় ।


وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ اٰیَۃٍ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ یَمُرُّوۡنَ عَلَیۡہَا وَ هُمۡ عَنۡہَا مُعۡرِضُوۡنَ ﴿۱۰۵﴾

অনেক নিদর্শন রয়েছে নভোমন্ডলে ও ভূ-মন্ডলে যেগুলোর উপর দিয়ে তারা পথ অতিক্রম করে এবং তারা এসবের দিকে মনোনিবেশ করে না ।


وَ مَا یُؤۡمِنُ اَکۡثَرُهُمۡ بِاللّٰہِ اِلَّا وَ هُمۡ مُّشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۰۶﴾

অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে ।


اَفَاَمِنُوۡۤا اَنۡ تَاۡتِیَہُمۡ غَاشِیَۃٌ مِّنۡ عَذَابِ اللّٰہِ اَوۡ تَاۡتِیَہُمُ السَّاعَۃُ بَغۡتَۃً وَّ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۰۷﴾

তারা কি নির্ভীক হয়ে গেছে এ বিষয়ে যে, আল্লাহর আযাবের কোন বিপদ তাদেরকে আবৃত করে ফেলবে অথবা তাদের কাছে হঠাৎ কিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা টেরও পাবে না ।


قُلۡ هٰذِهٖ سَبِیۡلِیۡۤ اَدۡعُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ ۟ؔ عَلٰی بَصِیۡرَۃٍ اَنَا وَ مَنِ اتَّبَعَنِیۡ ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰهِ وَ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۰۸﴾

বলে দিন ; এই আমার পথ । আমি আল্লাহর দিকে বুঝে সুঝে দাওয়াত দেই—আমি এবং আমার অনুসারীরা । আল্লাহ পবিত্র । আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই ।


وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِکَ اِلَّا رِجَالًا نُّوۡحِیۡۤ اِلَیۡہِمۡ مِّنۡ اَهْلِ الۡقُرٰی ؕ اَفَلَمۡ یَسِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ فَیَنۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ ؕ وَ لَدَارُ الۡاٰخِرَۃِ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ اتَّقَوۡا ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۰۹﴾

আপনার পূর্বে আমি যতজনকে রসূল করে পাঠিয়েছি, তারা সবাই পুরুষই ছিল জনপদবাসীদের মধ্য থেকে । আমি তাদের কাছে ওহী প্রেরণ করতাম । তারা কি দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করে না, যাতে দেখে নিত কিরুপ পরিণতি হয়েছে তাদের , যারা পূর্বে ছিল ? সংযমকারীদের জন্য পরকালের আবাসই উত্তম । তারা কি এখনও বুঝে না ?


حَتّٰۤی اِذَا اسۡتَیۡـَٔسَ الرُّسُلُ وَ ظَنُّوۡۤا اَنَّہُمۡ قَدۡ کُذِبُوۡا جَآءَهُمۡ نَصۡرُنَا ۙ فَنُجِّیَ مَنۡ نَّشَآءُ ؕ وَلَا یُرَدُّ بَاۡسُنَا عَنِ الۡقَوۡمِ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۱۰﴾

এমনকি, যখন পয়গাম্বরগণ নৈরাশ্যে পতিত হয়ে যেতেন, এমনকি এরুপ ধারণা করতে শুরু করতেন যে, তাদের অনুমান বুঝি মিথ্যায় পরিণত হওয়ার ‍উপক্রম হয়ে ছিল, তখন তাদের কাছে আমার সাহায্য পৌঁছে । অত:পর আমি যাদের চেয়েছি তারা উদ্ধার পেয়েছে । আমার শাস্তি অপরাধী সম্প্রদায় থেকে প্রতিহত হয় না ।


لَقَدۡ کَانَ فِیۡ قَصَصِہِمۡ عِبۡرَۃٌ لِّاُولِی الۡاَلۡبَابِ ؕ مَا کَانَ حَدِیۡثًا یُّفۡتَرٰی وَ لٰکِنۡ تَصۡدِیۡقَ الَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡہِ وَ تَفۡصِیۡلَ کُلِّ شَیۡءٍ وَّ هُدًی وَّ رَحۡمَۃً لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۱۱﴾

তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর শিক্ষনীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্য পূর্বেকার কালামের সমর্থন এবং প্রত্যেক বস্তুর বিবরণ রহমত ও হিদায়ত ।