28

আল কাসাস

আয়াত সংখ্যা 88

0.00

19:56

طٰسٓمّٓ ﴿۱﴾

তা-সীন-মীম;


تِلۡکَ اٰیٰتُ الۡکِتٰبِ الۡمُبِیۡنِ ﴿۲﴾

এই আয়াতগুলি সুস্পষ্ট কিতাবের।


نَتۡلُوۡا عَلَیۡکَ مِنۡ نَّبَاِ مُوۡسٰی وَ فِرۡعَوۡنَ بِالۡحَقِّ لِقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۳﴾

আমি তোমার কাছে পাঠ করছি মূসা ও ফির‘আউনের কিছু বৃত্তান্ত যথাযথভাবে, এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান আনে।


اِنَّ فِرۡعَوۡنَ عَلَا فِی الۡاَرۡضِ وَ جَعَلَ اَهْلَہَا شِیَعًا یَّسۡتَضۡعِفُ طَآئِفَۃً مِّنۡہُمۡ یُذَبِّحُ اَبۡنَآءَهُمۡ وَ یَسۡتَحۡیٖ نِسَآءَهُمۡ ؕ اِنَّہٗ کَانَ مِنَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۴﴾

নিশ্চয় ফির‘আউন (মিশর) দেশে উদ্ধত হয়েছিল এবং তার অধিবাসীকে নানা দলে বিভক্ত করেছিল। তাদের একদলকে সে দুর্বল করে রেখেছিল, যাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত আর কন্যাদেরকে বাঁচিয়ে রাখত। নিশ্চয় সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্যতম।


وَ نُرِیۡدُ اَنۡ نَّمُنَّ عَلَی الَّذِیۡنَ اسۡتُضۡعِفُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ نَجۡعَلَہُمۡ اَئِمَّۃً وَّ نَجۡعَلَہُمُ الۡوٰرِثِیۡنَ ۙ﴿۵﴾

আর আমি চাইলাম সেই দেশে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে এবং তাদেরকে নেতা বানাতে, আর তাদেরকে উত্তরাধিকারী বানাতে।


وَ نُمَکِّنَ لَہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ وَ نُرِیَ فِرۡعَوۡنَ وَ هَامٰنَ وَ جُنُوۡدَهُمَا مِنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَحۡذَرُوۡنَ ﴿۶﴾

আর যমীনে তাদেরকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে এবং ফির‘আউন, হামান ও তাদের সৈন্যদেরকে দেখিয়ে দিতে, যা তারা তাদের কাছ থেকে আশঙ্কা করছিল।


وَ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلٰۤی اُمِّ مُوۡسٰۤی اَنۡ اَرۡضِعِیۡہِ ۚ فَاِذَا خِفۡتِ عَلَیۡہِ فَاَلۡقِیۡہِ فِی الۡیَمِّ وَ لَا تَخَافِیۡ وَ لَا تَحۡزَنِیۡ ۚ اِنَّا رَآدُّوۡہُ اِلَیۡکِ وَ جَاعِلُوۡہُ مِنَ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۷﴾

আর আমি মূসার মায়ের প্রতি নির্দেশ পাঠালাম, ‘তুমি তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে আশঙ্কা করবে, তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে। আর তুমি ভয় করবে না এবং চিন্তা করবে না। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব’।


فَالۡتَقَطَہٗۤ اٰلُ فِرۡعَوۡنَ لِیَکُوۡنَ لَہُمۡ عَدُوًّا وَّ حَزَنًا ؕ اِنَّ فِرۡعَوۡنَ وَ هَامٰنَ وَ جُنُوۡدَهُمَا کَانُوۡا خٰطِئِیۡنَ ﴿۸﴾

অতঃপর ফির‘আউন পরিবার তাকে উঠিয়ে নিল, পরিণামে সে তাদের শত্রু ও দুঃশ্চিন্তার কারণ হবে। নিশ্চয় ফির‘আউন, হামান ও তাদের সৈন্যরা ছিল অপরাধী।


وَ قَالَتِ امۡرَاَتُ فِرۡعَوۡنَ قُرَّتُ عَیۡنٍ لِّیۡ وَ لَکَ ؕ لَا تَقۡتُلُوۡہُ ٭ۖ عَسٰۤی اَنۡ یَّنۡفَعَنَاۤ اَوۡ نَتَّخِذَہٗ وَلَدًا وَّ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۹﴾

আর ফির‘আউনের স্ত্রী বলল, ‘এ শিশুটি আমার ও তোমার চক্ষু শীতলকারী, তাকে হত্যা করো না। আশা করা যায়, সে আমাদের কোন উপকারে আসবে। অথবা আমরা তাকে সন্তান হিসেবে গ্রহণ করতে পারি’। অথচ তারা উপলব্ধি করতে পারেনি।


وَ اَصۡبَحَ فُؤَادُ اُمِّ مُوۡسٰی فٰرِغًا ؕ اِنۡ کَادَتۡ لَتُبۡدِیۡ بِہٖ لَوۡ لَاۤ اَنۡ رَّبَطۡنَا عَلٰی قَلۡبِہَا لِتَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۰﴾

আর মূসার মায়ের অন্তর বিচলিত হয়ে উঠেছিল। সে তো তার পরিচয় প্রকাশ করেই দিত, যদি আমি তার অন্তরকে দৃঢ় করে না দিতাম, যাতে সে আস্থাশীলদের অন্তর্ভুক্ত হয়।


وَ قَالَتۡ لِاُخۡتِہٖ قُصِّیۡہِ ۫ فَبَصُرَتۡ بِہٖ عَنۡ جُنُبٍ وَّ هُمۡ لَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿ۙ۱۱﴾

আর সে মূসার বোনকে বলল, ‘এর পিছনে পিছনে যাও’। সে দূর থেকে তাকে দেখছিল, কিন্তু তারা টের পায়নি।


وَ حَرَّمۡنَا عَلَیۡہِ الۡمَرَاضِعَ مِنۡ قَبۡلُ فَقَالَتۡ هَلۡ اَدُلُّکُمۡ عَلٰۤی اَهْلِ بَیۡتٍ یَّکۡفُلُوۡنَہٗ لَکُمۡ وَ هُمۡ لَہٗ نٰصِحُوۡنَ ﴿۱۲﴾

আর আমি তার জন্য পূর্ব থেকেই ধাত্রী (স্তন্য পান) নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলাম। তারপর মূসার বোন এসে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি পরিবারের সন্ধান দেব, যারা এ শিশুটিকে তোমাদের পক্ষে লালন পালন করবে এবং তারা তার শুভাকাঙ্ক্ষী হবে’।


فَرَدَدۡنٰہُ اِلٰۤی اُمِّہٖ کَیۡ تَقَرَّ عَیۡنُہَا وَ لَا تَحۡزَنَ وَ لِتَعۡلَمَ اَنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿٪۱۳﴾

অতঃপর আমি তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে যেন কোন দুশ্চিন্তা না করে। আর সে যেন জানতে পারে যে, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।


وَ لَمَّا بَلَغَ اَشُدَّہٗ وَ اسۡتَوٰۤی اٰتَیۡنٰہُ حُکۡمًا وَّ عِلۡمًا ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۴﴾

আর মূসা যখন যৌবনে পদার্পণ করল এবং পরিণত বয়স্ক হলো, তখন আমি তাকে বিচারবুদ্ধি ও জ্ঞান দান করলাম। আর এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি।


وَ دَخَلَ الۡمَدِیۡنَۃَ عَلٰی حِیۡنِ غَفۡلَۃٍ مِّنۡ اَهۡلِهَا فَوَجَدَ فِیۡهَا رَجُلَیۡنِ یَقۡتَتِلٰنِ ٭۫ هٰذَا مِنۡ شِیۡعَتِهٖ وَ هٰذَا مِنۡ عَدُوِّهٖ ۚ فَاسۡتَغَاثَهُ الَّذِیۡ مِنۡ شِیۡعَتِهٖ عَلَی الَّذِیۡ مِنۡ عَدُوِّهٖ ۙ فَوَکَزَهٗ مُوۡسٰی فَقَضٰی عَلَیۡهِ ٭۫ قَالَ هٰذَا مِنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّهٗ عَدُوٌّ مُّضِلٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۵﴾

আর সে শহরে প্রবেশ করল, যখন তার অধিবাসীরা ছিল অসতর্ক। তখন সেখানে সে দু’জন লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত অবস্থায় পেল। একজন তার নিজের দলের এবং অপরজন তার শত্রুদলের। তখন তার নিজের দলের লোকটি তার শত্রুদলের লোকটির বিরুদ্ধে তার কাছে সাহায্য চাইল। অতঃপর মূসা তাকে ঘুষি মারল ফলে সে তাকে মেরে ফেলল। মূসা বলল, ‘এটা শয়তানের কাজ। নিশ্চয় সে পথভ্রষ্টকারী প্রকাশ্য শত্রু’।


قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ ظَلَمۡتُ نَفۡسِیۡ فَاغۡفِرۡ لِیۡ فَغَفَرَ لَہٗ ؕ اِنَّہٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ ﴿۱۶﴾

সে বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফসের প্রতি যুলম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন’। অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।


قَالَ رَبِّ بِمَاۤ اَنۡعَمۡتَ عَلَیَّ فَلَنۡ اَکُوۡنَ ظَہِیۡرًا لِّلۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۷﴾

মূসা বলল, ‘হে আমার রব, আপনি যেহেতু আমার প্রতি নিআমত দান করেন, তাই আমি কখনো আর অপরাধীদের সাহায্যকারী হব না।


فَاَصۡبَحَ فِی الۡمَدِیۡنَۃِ خَآئِفًا یَّتَرَقَّبُ فَاِذَا الَّذِی اسۡتَنۡصَرَہٗ بِالۡاَمۡسِ یَسۡتَصۡرِخُہٗ ؕ قَالَ لَہٗ مُوۡسٰۤی اِنَّکَ لَغَوِیٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۸﴾

অতঃপর ভীত প্রতীক্ষারত অবস্থায় সেই শহরে তার সকাল হল। হঠাৎ সে শুনতে পেল, যে লোকটি গতকাল তার কাছে সাহায্য চেয়েছিল, সে আবার সাহায্যের জন্য চিৎকার করছে। মূসা তাকে বলল, ‘নিশ্চয় তুমি তো একজন স্পষ্ট বিভ্রান্ত ব্যক্তি’।


فَلَمَّاۤ اَنۡ اَرَادَ اَنۡ یَّبۡطِشَ بِالَّذِیۡ هُوَ عَدُوٌّ لَّہُمَا ۙ قَالَ یٰمُوۡسٰۤی اَتُرِیۡدُ اَنۡ تَقۡتُلَنِیۡ کَمَا قَتَلۡتَ نَفۡسًۢا بِالۡاَمۡسِ ٭ۖ اِنۡ تُرِیۡدُ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ جَبَّارًا فِی الۡاَرۡضِ وَ مَا تُرِیۡدُ اَنۡ تَکُوۡنَ مِنَ الۡمُصۡلِحِیۡنَ ﴿۱۹﴾

অতঃপর মূসা যখন উভয়েরই শত্রুকে ধরতে চাইল, তখন লোকটি বলে উঠল, ‘হে মূসা, তুমি কি আমাকেও হত্যা করতে চাও? যেমন গতকাল একটি লোককে তুমি হত্যা করেছ? তুমি তো যমীনে কেবল স্বৈরাচারী হতে চাচ্ছ। আর তুমি তো সংশোধনকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে চাচ্ছ না’।


وَ جَآءَ رَجُلٌ مِّنۡ اَقۡصَا الۡمَدِیۡنَۃِ یَسۡعٰی ۫ قَالَ یٰمُوۡسٰۤی اِنَّ الۡمَلَاَ یَاۡتَمِرُوۡنَ بِکَ لِیَقۡتُلُوۡکَ فَاخۡرُجۡ اِنِّیۡ لَکَ مِنَ النّٰصِحِیۡنَ ﴿۲۰﴾

আর শহরের দূরপ্রান্ত থেকে একজন লোক ছুটে আসল। সে বলল, ‘হে মূসা, নিশ্চয় পারিষদবর্গ তোমাকে হত্যার পরামর্শ করছে, তাই তুমি বেরিয়ে যাও, নিশ্চয় আমি তোমার জন্য কল্যাণকামীদের একজন’।


فَخَرَجَ مِنۡہَا خَآئِفًا یَّتَرَقَّبُ ۫ قَالَ رَبِّ نَجِّنِیۡ مِنَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿٪۲۱﴾

তখন সে ভীত প্রতীক্ষারত অবস্থায় শহর থেকে বেরিয়ে পড়ল। বলল, ‘হে আমার রব, আপনি যালিম কওম থেকে আমাকে রক্ষা করুন’।


وَ لَمَّا تَوَجَّہَ تِلۡقَآءَ مَدۡیَنَ قَالَ عَسٰی رَبِّیۡۤ اَنۡ یَّہۡدِیَنِیۡ سَوَآءَ السَّبِیۡلِ ﴿۲۲﴾

আর যখন মূসা মাদইয়ান অভিমুখে রওয়ানা করল, তখন বলল, ‘আশা করি আমার রব আমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করবেন’।


وَ لَمَّا وَرَدَ مَآءَ مَدۡیَنَ وَجَدَ عَلَیۡہِ اُمَّۃً مِّنَ النَّاسِ یَسۡقُوۡنَ ۬۫ وَ وَجَدَ مِنۡ دُوۡنِہِمُ امۡرَاَتَیۡنِ تَذُوۡدٰنِ ۚ قَالَ مَا خَطۡبُکُمَا ؕ قَالَتَا لَا نَسۡقِیۡ حَتّٰی یُصۡدِرَ الرِّعَآءُ وَ اَبُوۡنَا شَیۡخٌ کَبِیۡرٌ ﴿۲۳﴾

আর যখন সে মাদইয়ানের পানির নিকট উপনীত হল, তখন সেখানে একদল লোককে পেল, যারা (পশুদের) পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের ছাড়া দু’জন নারীকে পেল, যারা তাদের পশুগুলোকে আগলে রাখছে। সে বলল, ‘তোমাদের ব্যাপার কী’? তারা বলল, ‘আমরা (আমাদের পশুগুলোর) পানি পান করাতে পারি না। যতক্ষণ না রাখালরা তাদের (পশুগুলো) নিয়ে সরে যায়। আর আমাদের পিতা অতিবৃদ্ধ’।


فَسَقٰی لَہُمَا ثُمَّ تَوَلّٰۤی اِلَی الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ اِنِّیۡ لِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ اِلَیَّ مِنۡ خَیۡرٍ فَقِیۡرٌ ﴿۲۴﴾

তখন মূসা তাদের পক্ষে (পশুগুলোকে) পানি পান করিয়ে দিল। তারপর ছায়ায় ফিরে গেল এবং বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী’।


فَجَآءَتۡہُ اِحۡدٰىہُمَا تَمۡشِیۡ عَلَی اسۡتِحۡیَآءٍ ۫ قَالَتۡ اِنَّ اَبِیۡ یَدۡعُوۡکَ لِیَجۡزِیَکَ اَجۡرَ مَا سَقَیۡتَ لَنَا ؕ فَلَمَّا جَآءَہٗ وَ قَصَّ عَلَیۡہِ الۡقَصَصَ ۙ قَالَ لَا تَخَفۡ نَجَوۡتَ مِنَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۲۵﴾

অতঃপর নারীদ্বয়ের একজন লাজুকভাবে হেঁটে তার কাছে এসে বলল যে, আমার পিতা আপনাকে ডাকছেন, যেন তিনি আপনাকে পারিশ্রমিক দিতে পারেন, আমাদের পশুগুলোকে আপনি যে পানি পান করিয়েছেন তার বিনিময়ে’। অতঃপর যখন মূসা তার নিকট আসল এবং সকল ঘটনা তার কাছে খুলে বলল, তখন সে বলল, ‘তুমি ভয় করো না। তুমি যালিম কওম থেকে রেহাই পেয়ে গেছ’।


قَالَتۡ اِحۡدٰىہُمَا یٰۤاَبَتِ اسۡتَاۡجِرۡہُ ۫ اِنَّ خَیۡرَ مَنِ اسۡتَاۡجَرۡتَ الۡقَوِیُّ الۡاَمِیۡنُ ﴿۲۶﴾

নারীদ্বয়ের একজন বলল, ‘হে আমার পিতা, আপনি তাকে মজুর নিযুক্ত করুন। নিশ্চয় আপনি যাদেরকে মজুর নিযুক্ত করবেন তাদের মধ্যে সে উত্তম, যে শক্তিশালী বিশ্বস্ত’।


قَالَ اِنِّیۡۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اُنۡکِحَکَ اِحۡدَی ابۡنَتَیَّ هٰتَیۡنِ عَلٰۤی اَنۡ تَاۡجُرَنِیۡ ثَمٰنِیَ حِجَجٍ ۚ فَاِنۡ اَتۡمَمۡتَ عَشۡرًا فَمِنۡ عِنۡدِکَ ۚ وَ مَاۤ اُرِیۡدُ اَنۡ اَشُقَّ عَلَیۡکَ ؕ سَتَجِدُنِیۡۤ اِنۡ شَآءَ اللّٰہُ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿۲۷﴾

সে বলল, ‘আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে চাই এই শর্তে যে, তুমি আট বছর আমার মজুরী করবে। আর যদি তুমি দশ বছর পূর্ণ কর, তবে সেটা তোমার পক্ষ থেকে (অতিরিক্ত)। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই না। তুমি ইনশাআল্লাহ আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত পাবে’।


قَالَ ذٰلِکَ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکَ ؕ اَیَّمَا الۡاَجَلَیۡنِ قَضَیۡتُ فَلَا عُدۡوَانَ عَلَیَّ ؕ وَ اللّٰہُ عَلٰی مَا نَقُوۡلُ وَکِیۡلٌ ﴿٪۲۸﴾

মূসা বলল, ‘এ চুক্তি আমার ও আপনার মধ্যে রইল। দু’টি মেয়াদের যেটিই আমি পূরণ করি না কেন, তাতে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবে না। আর আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, আল্লাহ তার সাক্ষী’।


فَلَمَّا قَضٰی مُوۡسَی الۡاَجَلَ وَ سَارَ بِاَهْلِہٖۤ اٰنَسَ مِنۡ جَانِبِ الطُّوۡرِ نَارًا ۚ قَالَ لِاَہۡلِہِ امۡکُثُوۡۤا اِنِّیۡۤ اٰنَسۡتُ نَارًا لَّعَلِّیۡۤ اٰتِیۡکُمۡ مِّنۡہَا بِخَبَرٍ اَوۡ جَذۡوَۃٍ مِّنَ النَّارِ لَعَلَّکُمۡ تَصۡطَلُوۡنَ ﴿۲۹﴾

অতঃপর মূসা যখন মেয়াদ পূর্ণ করল এবং সপরিবারে যাত্রা করল, তখন সে তূর পর্বতের পাশে আগুন দেখতে পেল। সে তার পরিবার পরিজনকে বলল, ‘তোমরা অপেক্ষা কর, আমি আগুন দেখতে পেয়েছি, সম্ভবত আমি তা থেকে তোমাদের কাছে আনতে পারব কোন খবর, অথবা একটি জ্বলন্ত আঙ্গার; যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার’।


فَلَمَّاۤ اَتٰىہَا نُوۡدِیَ مِنۡ شَاطِیَٔ الۡوَادِ الۡاَیۡمَنِ فِی الۡبُقۡعَۃِ الۡمُبٰرَکَۃِ مِنَ الشَّجَرَۃِ اَنۡ یّٰمُوۡسٰۤی اِنِّیۡۤ اَنَا اللّٰہُ رَبُّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۳۰﴾

অতঃপর যখন মূসা আগুনের নিকট আসল, তখন উপত্যকার ডান পার্শে পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত বৃক্ষ থেকে তাকে আহবান করে বলা হলো, ‘হে মূসা, নিশ্চয় আমিই আল্লাহ, সৃষ্টিকুলের রব’।


وَ اَنۡ اَلۡقِ عَصَاکَ ؕ فَلَمَّا رَاٰهَا تَہۡتَزُّ کَاَنَّہَا جَآنٌّ وَّلّٰی مُدۡبِرًا وَّ لَمۡ یُعَقِّبۡ ؕ یٰمُوۡسٰۤی اَقۡبِلۡ وَ لَا تَخَفۡ ۟ اِنَّکَ مِنَ الۡاٰمِنِیۡنَ ﴿۳۱﴾

‘আর তুমি তোমার লাঠি ফেলে দাও’। অতঃপর যখন সে ওটাকে দেখল, সাপের মত ছুটাছুটি করছে, তখন সে পিছনের দিকে ছুটল এবং ফিরেও তাকাল না। (বলা হল) ‘হে মূসা, সামনে যাও এবং ভয় পেয়ো না, নিশ্চয় তুমি নিরাপদ’।


اُسۡلُکۡ یَدَکَ فِیۡ جَیۡبِکَ تَخۡرُجۡ بَیۡضَآءَ مِنۡ غَیۡرِ سُوۡٓءٍ ۫ وَّ اضۡمُمۡ اِلَیۡکَ جَنَاحَکَ مِنَ الرَّہۡبِ فَذٰنِکَ بُرۡهَانٰنِ مِنۡ رَّبِّکَ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ وَ مَلَا۠ئِہٖ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَوۡمًا فٰسِقِیۡنَ ﴿۳۲﴾

‘তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, এটা ত্রুটিমুক্ত অবস্থায় শুভ্রোজ্জ্বল হয়ে বেরিয়ে আসবে। আর ভয় থেকে রক্ষার জন্য তোমার হাত তোমার নিজের দিকে মিলাও। অতঃপর এ দু’টো তোমার রবের পক্ষ থেকে দু’টি প্রমাণ, ফির‘আউন ও তার পারিষদবর্গের জন্য। নিশ্চয় তারা ফাসিক কওম’।


قَالَ رَبِّ اِنِّیۡ قَتَلۡتُ مِنۡہُمۡ نَفۡسًا فَاَخَافُ اَنۡ یَّقۡتُلُوۡنِ ﴿۳۳﴾

মূসা বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি তাদের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছি, তাই আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে’।


وَ اَخِیۡ هٰرُوۡنُ هُوَ اَفۡصَحُ مِنِّیۡ لِسَانًا فَاَرۡسِلۡهُ مَعِیَ رِدۡاً یُّصَدِّقُنِیۡۤ ۫ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اَنۡ یُّکَذِّبُوۡنِ ﴿۳۴﴾

‘আর আমার ভাই হারূন, সে আমার চেয়ে স্পষ্টভাষী, তাই তাকে আমার সাথে সাহায্যকারী হিসেবে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশঙ্কা করছি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।


قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَکَ بِاَخِیۡکَ وَ نَجۡعَلُ لَکُمَا سُلۡطٰنًا فَلَا یَصِلُوۡنَ اِلَیۡکُمَا ۚۛ بِاٰیٰتِنَاۤ ۚۛ اَنۡتُمَا وَ مَنِ اتَّبَعَکُمَا الۡغٰلِبُوۡنَ ﴿۳۵﴾

আল্লাহ বললেন, ‘আমি তোমার ভাইয়ের মাধ্যমে তোমার বাহু শক্তিশালী করব এবং তোমাদের দু’জনকে ক্ষমতা দান করব, ফলে তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতে পারবে না। আমার নিদর্শনাবলী দ্বারা তোমরা ও তোমাদের অনুসারীরা বিজয়ী হবে’।


فَلَمَّا جَآءَهُمۡ مُّوۡسٰی بِاٰیٰتِنَا بَیِّنٰتٍ قَالُوۡا مَا هٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّفۡتَرًی وَّ مَا سَمِعۡنَا بِهٰذَا فِیۡۤ اٰبَآئِنَا الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۳۶﴾

অতঃপর মূসা যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলো নিয়ে আসল, তখন তারা বলল, ‘এ তো মিথ্যা যাদু ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এরূপ কথা আমাদের পিতৃপুরুষদের মধ্যেও শুনিনি’।


وَ قَالَ مُوۡسٰی رَبِّیۡۤ اَعۡلَمُ بِمَنۡ جَآءَ بِالۡہُدٰی مِنۡ عِنۡدِہٖ وَ مَنۡ تَکُوۡنُ لَہٗ عَاقِبَۃُ الدَّارِ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۳۷﴾

আর মূসা বলল, ‘আমার রব সম্যক অবগত আছেন, কে তাঁর কাছ থেকে হিদায়াত নিয়ে এসেছে এবং আখিরাতে কার পরিণাম শুভ হবে। নিশ্চয় যালিমরা সফল হবে না’।


وَ قَالَ فِرۡعَوۡنُ یٰۤاَیُّہَا الۡمَلَاُ مَا عَلِمۡتُ لَکُمۡ مِّنۡ اِلٰہٍ غَیۡرِیۡ ۚ فَاَوۡقِدۡ لِیۡ یٰہَامٰنُ عَلَی الطِّیۡنِ فَاجۡعَلۡ لِّیۡ صَرۡحًا لَّعَلِّیۡۤ اَطَّلِعُ اِلٰۤی اِلٰہِ مُوۡسٰی ۙ وَ اِنِّیۡ لَاَظُنُّہٗ مِنَ الۡکٰذِبِیۡنَ ﴿۳۸﴾

আর ফির‘আউন বলল, ‘হে পারিষদবর্গ, আমি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ আছে বলে আমি জানি না। অতএব হে হামান, আমার জন্য তুমি ইট পোড়াও, তারপর আমার জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী কর। যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পাই। আর নিশ্চয় আমি মনে করি সে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত’।


وَ اسۡتَکۡبَرَ هُوَ وَ جُنُوۡدُہٗ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ وَ ظَنُّوۡۤا اَنَّہُمۡ اِلَیۡنَا لَا یُرۡجَعُوۡنَ ﴿۳۹﴾

আর ফির‘আউন ও তার সেনাবাহিনী অন্যায়ভাবে যমীনে অহঙ্কার করেছিল এবং তারা মনে করেছিল যে, তাদেরকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনা হবে না।


فَاَخَذۡنٰہُ وَ جُنُوۡدَہٗ فَنَبَذۡنٰہُمۡ فِی الۡیَمِّ ۚ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۴۰﴾

অতঃপর আমি তাকে ও তার সেনাবাহিনীকে পাকড়াও করলাম, তারপর তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। অতএব, দেখ যালিমদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল?


وَ جَعَلۡنٰہُمۡ اَئِمَّۃً یَّدۡعُوۡنَ اِلَی النَّارِ ۚ وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ لَا یُنۡصَرُوۡنَ ﴿۴۱﴾

আর আমি তাদেরকে নেতা বানিয়েছিলাম, তারা জাহান্নামের দিকে আহবান করত এবং কিয়ামতের দিন তাদেরকে সাহায্য করা হবে না।


وَ اَتۡبَعۡنٰهُمۡ فِیۡ هٰذِهِ الدُّنۡیَا لَعۡنَۃً ۚ وَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ هُمۡ مِّنَ الۡمَقۡبُوۡحِیۡنَ ﴿۴۲﴾

এ যমীনে আমি তাদের পিছনে অভিসম্পাত লাগিয়ে দিয়েছি আর কিয়ামতের দিন তারা হবে ঘৃণিতদের অন্তর্ভুক্ত।


وَ لَقَدۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ مِنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَهْلَکۡنَا الۡقُرُوۡنَ الۡاُوۡلٰی بَصَآئِرَ لِلنَّاسِ وَ هُدًی وَّ رَحۡمَۃً لَّعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۴۳﴾

আর অবশ্যই আমি পূর্ববর্তী বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করার পর মানুষের জন্য আলোকবর্তিকা, হিদায়াত ও রহমতস্বরূপ মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম। যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।


وَ مَا کُنۡتَ بِجَانِبِ الۡغَرۡبِیِّ اِذۡ قَضَیۡنَاۤ اِلٰی مُوۡسَی الۡاَمۡرَ وَ مَا کُنۡتَ مِنَ الشّٰہِدِیۡنَ ﴿ۙ۴۴﴾

আর (হে নবী) আমি যখন মূসাকে বিধান দিয়েছিলাম তখন তুমি (তূর পাহাড়ের) পশ্চিম পার্শে উপস্থিত ছিলে না। আর তুমি প্রত্যক্ষদর্শীদের অন্তর্ভুক্তও ছিলে না।


وَ لٰکِنَّاۤ اَنۡشَاۡنَا قُرُوۡنًا فَتَطَاوَلَ عَلَیۡہِمُ الۡعُمُرُ ۚ وَ مَا کُنۡتَ ثَاوِیًا فِیۡۤ اَهْلِ مَدۡیَنَ تَتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا ۙ وَ لٰکِنَّا کُنَّا مُرۡسِلِیۡنَ ﴿۴۵﴾

কিন্তু আমি অনেক প্রজন্মকে সৃষ্টি করেছি। তারপর তাদের উপর বহু যুগ অতিবাহিত হয়েছিল। তুমি তো মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে অবস্থানকারী ছিলে না যে, তাদের নিকট আমার আয়াতগুলো তুমি তিলাওয়াত করবে। কিন্তু আমিই রাসূল প্রেরণকারী।


وَ مَا کُنۡتَ بِجَانِبِ الطُّوۡرِ اِذۡ نَادَیۡنَا وَ لٰکِنۡ رَّحۡمَۃً مِّنۡ رَّبِّکَ لِتُنۡذِرَ قَوۡمًا مَّاۤ اَتٰىہُمۡ مِّنۡ نَّذِیۡرٍ مِّنۡ قَبۡلِکَ لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۴۶﴾

আর যখন আমি (মূসাকে) ডেকেছিলাম তখন তুমি তূর পর্বতের পাশে উপস্থিত ছিলে না। কিন্তু তোমার রবের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ জানানো হয়েছে, যাতে তুমি এমন কওমকে সতর্ক করতে পার, যাদের কাছে তোমার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি। সম্ভবত তারা উপদেশ গ্রহণ করবে।


وَ لَوۡ لَاۤ اَنۡ تُصِیۡبَہُمۡ مُّصِیۡبَۃٌۢ بِمَا قَدَّمَتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُوۡا رَبَّنَا لَوۡ لَاۤ اَرۡسَلۡتَ اِلَیۡنَا رَسُوۡلًا فَنَتَّبِعَ اٰیٰتِکَ وَ نَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۴۷﴾

তাদের কৃতকর্মের কারণে তাদের উপর কোন বিপদ আসলে তারা যাতে বলতে না পারে, ‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদের কাছে কোন রাসূল পাঠালেন না কেন? তাহলে আমরা আপনার আয়াতসমূহ অনুসরণ করতাম আর আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুর্ক্ত হতাম’।


فَلَمَّا جَآءَهُمُ الۡحَقُّ مِنۡ عِنۡدِنَا قَالُوۡا لَوۡ لَاۤ اُوۡتِیَ مِثۡلَ مَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی ؕ اَوَ لَمۡ یَکۡفُرُوۡا بِمَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی مِنۡ قَبۡلُ ۚ قَالُوۡا سِحۡرٰنِ تَظٰہَرَا ۟ وَ قَالُوۡۤا اِنَّا بِکُلٍّ کٰفِرُوۡنَ ﴿۴۸﴾

অতঃপর যখন আমার নিকট থেকে তাদের কাছে সত্য আসল তখন তারা বলল, ‘মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তাকে(মুহাম্মাদকে) কেন সেরূপ দেয়া হল না’? ইতঃপূর্বে মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তারা কি তা অস্বীকার করেনি? তারা বলেছিল, ‘দু’টিই যাদু, একটি অপরটিকে সাহায্য করে’। আর তারা বলেছিল, ‘আমরা সবই অস্বীকারকারী’।


قُلۡ فَاۡتُوۡا بِکِتٰبٍ مِّنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ هُوَ اَهْدٰی مِنۡہُمَاۤ اَتَّبِعۡہُ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۴۹﴾

বল, ‘তাহলে তোমরা আল্লাহর কাছ থেকে এমন একটি কিতাব নিয়ে আস যা এ দু’টো কিতাব থেকে উৎকৃষ্ট; আমি তারই অনুসরণ করব, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক’।


فَاِنۡ لَّمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَکَ فَاعۡلَمۡ اَنَّمَا یَتَّبِعُوۡنَ اَهْوَآءَهُمۡ ؕ وَ مَنۡ اَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوٰىہُ بِغَیۡرِ هُدًی مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿٪۵۰﴾

অতঃপর তারা যদি তোমার আহবানে সাড়া না দেয়, তাহলে জেনে রাখ, তারা তো নিজেদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে। আর আল্লাহর দিকনির্দেশনা ছাড়া যে নিজের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ যালিম কওমকে হিদায়াত করেন না।


وَ لَقَدۡ وَصَّلۡنَا لَہُمُ الۡقَوۡلَ لَعَلَّہُمۡ یَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿ؕ۵۱﴾

আর আমি তো তাদের কাছে একের পর এক বাণী পৌঁছে দিয়েছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।


اَلَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ مِنۡ قَبۡلِہٖ هُمۡ بِہٖ یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۲﴾

এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এর প্রতি ঈমান আনে।


وَ اِذَا یُتۡلٰی عَلَیۡہِمۡ قَالُوۡۤا اٰمَنَّا بِہٖۤ اِنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّنَاۤ اِنَّا کُنَّا مِنۡ قَبۡلِہٖ مُسۡلِمِیۡنَ ﴿۵۳﴾

আর যখন তাদের নিকট তা তিলাওয়াত করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা এর প্রতি ঈমান এনেছি, নিশ্চয় তা সত্য আমাদের রবের পক্ষ থেকে। নিশ্চয় আমরা এর পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম’।


اُولٰٓئِکَ یُؤۡتَوۡنَ اَجۡرَهُمۡ مَّرَّتَیۡنِ بِمَا صَبَرُوۡا وَ یَدۡرَءُوۡنَ بِالۡحَسَنَۃِ السَّیِّئَۃَ وَ مِمَّا رَزَقۡنٰہُمۡ یُنۡفِقُوۡنَ ﴿۵۴﴾

তাদেরকে দু’বার প্রতিদান দেয়া হবে। এ কারণে যে, তারা ধৈর্যধারণ করে এবং ভাল দ্বারা মন্দকে প্রতিহত করে। আর আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।


وَ اِذَا سَمِعُوا اللَّغۡوَ اَعۡرَضُوۡا عَنۡہُ وَ قَالُوۡا لَنَاۤ اَعۡمَالُنَا وَ لَکُمۡ اَعۡمَالُکُمۡ ۫ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ ۫ لَا نَبۡتَغِی الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۵۵﴾

আর তারা যখন অনর্থক কথাবার্তা শুনে তখন তা থেকে বিমুখ হয় এবং বলে, ‘আমাদের আমল আমাদের জন্য, আর তোমাদের আমল তোমাদের জন্য। তোমাদের প্রতি ‘সালাম’। আমরা অজ্ঞদের সাহচর্য চাই না’।


اِنَّکَ لَا تَہۡدِیۡ مَنۡ اَحۡبَبۡتَ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَهُُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۵۶﴾

নিশ্চয় তুমি যাকে ভালবাস তাকে তুমি হিদায়াত দিতে পারবে না; বরং আল্লাহই যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন। আর হিদায়াতপ্রাপ্তদের ব্যাপারে তিনি ভাল জানেন।


وَ قَالُوۡۤا اِنۡ نَّتَّبِعِ الۡہُدٰی مَعَکَ نُتَخَطَّفۡ مِنۡ اَرۡضِنَا ؕ اَوَ لَمۡ نُمَکِّنۡ لَّہُمۡ حَرَمًا اٰمِنًا یُّجۡبٰۤی اِلَیۡہِ ثَمَرٰتُ کُلِّ شَیۡءٍ رِّزۡقًا مِّنۡ لَّدُنَّا وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَهُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۵۷﴾

আর তারা বলে, ‘আমরা যদি তোমার সাথে হিদায়াতের অনুসরণ করি তবে আমাদেরকে আমাদের দেশ থেকে উৎখাত করা হবে’। আমি কি তাদের জন্য এক নিরাপদ ‘হারাম’ এর সুব্যবস্থা করিনি? সেখানে সব ধরনের ফলমূল আমদানী করা হয়, আমার পক্ষ থেকে রিয্কস্বরূপ? কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।


وَ کَمۡ اَهْلَکۡنَا مِنۡ قَرۡیَۃٍۭ بَطِرَتۡ مَعِیۡشَتَہَا ۚ فَتِلۡکَ مَسٰکِنُہُمۡ لَمۡ تُسۡکَنۡ مِّنۡۢ بَعۡدِهِمۡ اِلَّا قَلِیۡلًا ؕ وَ کُنَّا نَحۡنُ الۡوٰرِثِیۡنَ ﴿۵۸﴾

আর আমি কত জনপদকে ধ্বংস করেছি, যার বাসিন্দারা তাদের জীবন উপকরণ নিয়ে দম্ভ করত! এগুলো তো তাদের বাসস্থান। তাদের পরে (এখানে) সামান্যই বসবাস করা হয়েছে। আর আমিই চূড়ান্ত মালিকানার ওয়ারিস।


وَ مَا کَانَ رَبُّکَ مُہۡلِکَ الۡقُرٰی حَتّٰی یَبۡعَثَ فِیۡۤ اُمِّہَا رَسُوۡلًا یَّتۡلُوۡا عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتِنَا ۚ وَ مَا کُنَّا مُہۡلِکِی الۡقُرٰۤی اِلَّا وَ اَهْلُہَا ظٰلِمُوۡنَ ﴿۵۹﴾

আর তোমার রব কোন জনপদকে ধ্বংস করেন না, যতক্ষণ না তিনি তার মূল ভূখন্ডে রাসূল প্রেরণ করেন, যে তাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে। আর কোন জনপদের অধিবাসীরা যালিম না হলে আমি তাদেরকে ধ্বংস করি না।


وَ مَاۤ اُوۡتِیۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَمَتَاعُ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ زِیۡنَتُہَا ۚ وَ مَا عِنۡدَ اللّٰہِ خَیۡرٌ وَّ اَبۡقٰی ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿٪۶۰﴾

আর তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা দুনিয়ার জীবনের ভোগ ও সৌন্দর্য মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা আছে তাই উত্তম ও স্থায়ী। তোমরা কি বুঝবে না?


اَفَمَنۡ وَّعَدۡنٰہُ وَعۡدًا حَسَنًا فَہُوَ لَاقِیۡہِ کَمَنۡ مَّتَّعۡنٰہُ مَتَاعَ الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا ثُمَّ هُوَ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ مِنَ الۡمُحۡضَرِیۡنَ ﴿۶۱﴾

আমি যাকে উত্তম ওয়াদা দিয়েছি সে তা পাবেই; সে কি তার মতই যাকে আমি দুনিয়ার জীবনের ভোগসামগ্রী দিয়েছি? তারপর কিয়ামতের দিনে সে উপস্থিতকৃতদের মধ্যে থাকবে।


وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُ اَیۡنَ شُرَکَآءِیَ الَّذِیۡنَ کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿۶۲﴾

আর সে দিন তিনি তাদেরকে আহবান করবেন, অতঃপর বলবেন, ‘তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তারা কোথায়’?


قَالَ الَّذِیۡنَ حَقَّ عَلَیۡهِمُ الۡقَوۡلُ رَبَّنَا هٰۤؤُلَآءِ الَّذِیۡنَ اَغۡوَیۡنَا ۚ اَغۡوَیۡنٰهُمۡ کَمَا غَوَیۡنَا ۚ تَبَرَّاۡنَاۤ اِلَیۡکَ ۫ مَا کَانُوۡۤا اِیَّانَا یَعۡبُدُوۡنَ ﴿۶۳﴾

যাদের জন্য (শাস্তির) বাণী অবধারিত হবে তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, ওরা তো তারা যাদেরকে আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম। তাদেরকে আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম যেমন আমরা বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। আমরা আপনার কাছে দায় মুক্তি চাচ্ছি। তারা তো আমাদের ইবাদাত করত না’।


وَ قِیۡلَ ادۡعُوۡا شُرَکَآءَکُمۡ فَدَعَوۡهُمۡ فَلَمۡ یَسۡتَجِیۡبُوۡا لَہُمۡ وَ رَاَوُا الۡعَذَابَ ۚ لَوۡ اَنَّہُمۡ کَانُوۡا یَہۡتَدُوۡنَ ﴿۶۴﴾

আর বলা হবে, ‘তোমাদের দেবতাগুলোকে ডাক, অতঃপর তারা তাদেরকে ডাকবে, তখন তারা তাদের ডাকে সাড়া দেবে না। আর তারা আযাব দেখতে পাবে। হায়, এরা যদি সৎপথ প্রাপ্ত হত!


وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُ مَاذَاۤ اَجَبۡتُمُ الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۶۵﴾

আর সেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেন, ‘তোমরা রাসূলদেরকে কী জবাব দিয়েছিলে’?


فَعَمِیَتۡ عَلَیۡہِمُ الۡاَنۡۢبَآءُ یَوۡمَئِذٍ فَہُمۡ لَا یَتَسَآءَلُوۡنَ ﴿۶۶﴾

অতঃপর সেদিন সকল সংবাদ তাদের কাছ থেকে গোপন হয়ে যাবে, তখন তারা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করতে পারবে না।


فَاَمَّا مَنۡ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَعَسٰۤی اَنۡ یَّکُوۡنَ مِنَ الۡمُفۡلِحِیۡنَ ﴿۶۷﴾

তবে যে তাওবা করেছিল, ঈমান এনেছিল এবং সৎকর্ম করেছিল, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।


وَ رَبُّکَ یَخۡلُقُ مَا یَشَآءُ وَ یَخۡتَارُ ؕ مَا کَانَ لَہُمُ الۡخِیَرَۃُ ؕ سُبۡحٰنَ اللّٰہِ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۶۸﴾

আর তোমার রব যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং মনোনীত করেন, তাদের কোন এখতিয়ার নাই। আল্লাহ পবিত্র মহান এবং তারা যা শরীক করে তিনি তা থেকে ঊর্ধ্বে।


وَ رَبُّکَ یَعۡلَمُ مَا تُکِنُّ صُدُوۡرُهُمۡ وَ مَا یُعۡلِنُوۡنَ ﴿۶۹﴾

আর তোমার রব জানেন, তাদের অন্তর যা গোপন করে আর তারা যা প্রকাশ করে।


وَ هُوَ اللّٰہُ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا هُوَ ؕ لَہُ الۡحَمۡدُ فِی الۡاُوۡلٰی وَ الۡاٰخِرَۃِ ۫ وَ لَہُ الۡحُکۡمُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿۷۰﴾

আর তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। দুনিয়া ও আখিরাতে সমস্ত প্রশংসা তাঁরই; বিধান তাঁরই। আর তাঁর কাছেই তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।


قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ جَعَلَ اللّٰہُ عَلَیۡکُمُ الَّیۡلَ سَرۡمَدًا اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ مَنۡ اِلٰہٌ غَیۡرُ اللّٰہِ یَاۡتِیۡکُمۡ بِضِیَآءٍ ؕ اَفَلَا تَسۡمَعُوۡنَ ﴿۷۱﴾

বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ রাতকে তোমাদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে দেন, তবে তাঁর পরিবর্তে কোন ইলাহ আছে কি যে তোমাদের আলো এনে দেবে? তবুও কি তোমরা শুনবে না’?


قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ جَعَلَ اللّٰہُ عَلَیۡکُمُ النَّہَارَ سَرۡمَدًا اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ مَنۡ اِلٰہٌ غَیۡرُ اللّٰہِ یَاۡتِیۡکُمۡ بِلَیۡلٍ تَسۡکُنُوۡنَ فِیۡہِ ؕ اَفَلَا تُبۡصِرُوۡنَ ﴿۷۲﴾

বল, ‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ দিনকে তোমাদের উপর কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী করে দেন, তবে তাঁর পরিবর্তে কোন ইলাহ আছে কি, যে তোমাদের রাত এনে দেবে যাতে তোমরা বিশ্রাম করবে? তবুও কি তোমরা ভেবে দেখবে না’?


وَ مِنۡ رَّحۡمَتِہٖ جَعَلَ لَکُمُ الَّیۡلَ وَ النَّہَارَ لِتَسۡکُنُوۡا فِیۡہِ وَ لِتَبۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِہٖ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۷۳﴾

আর তাঁর অনুগ্রহে তিনি তোমাদের জন্য রাত ও দিন করেছেন যাতে তোমরা বিশ্রাম নিতে পার এবং তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যেন তোমরা শোকর আদায় করতে পার।


وَ یَوۡمَ یُنَادِیۡہِمۡ فَیَقُوۡلُ اَیۡنَ شُرَکَآءِیَ الَّذِیۡنَ کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿۷۴﴾

আর সেদিন তিনি তাদের ডাকবেন। অতঃপর বলবেন, ‘তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তারা কোথায়’?


وَ نَزَعۡنَا مِنۡ کُلِّ اُمَّۃٍ شَہِیۡدًا فَقُلۡنَا هَاتُوۡا بُرۡهَانَکُمۡ فَعَلِمُوۡۤا اَنَّ الۡحَقَّ لِلّٰہِ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿٪۷۵﴾

আর আমি প্রত্যেক জাতি থেকে একজন সাক্ষী বের করে নেব। অতঃপর আমি বলব, ‘তোমাদের প্রমাণ নিয়ে আস’। তখন তারা জানতে পারবে যে, নিশ্চয় সত্য আল্লাহর কাছেই এবং তারা যে সব মিথ্যা উদ্ভাবন করত তা তাদের থেকে হারিয়ে যাবে।


اِنَّ قَارُوۡنَ کَانَ مِنۡ قَوۡمِ مُوۡسٰی فَبَغٰی عَلَیۡہِمۡ ۪ وَ اٰتَیۡنٰہُ مِنَ الۡکُنُوۡزِ مَاۤ اِنَّ مَفَاتِحَہٗ لَتَنُوۡٓاُ بِالۡعُصۡبَۃِ اُولِی الۡقُوَّۃِ ٭ اِذۡ قَالَ لَہٗ قَوۡمُہٗ لَا تَفۡرَحۡ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ الۡفَرِحِیۡنَ ﴿۷۶﴾

নিশ্চয় কারূন ছিল মূসার কওমভুক্ত। অতঃপর সে তাদের উপর ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে। অথচ আমি তাকে এমন ধনভান্ডার দান করেছিলাম যে, নিশ্চয় তার চাবিগুলো একদল শক্তিশালী লোকের উপর ভারী হয়ে যেত। স্মরণ কর, যখন তার কওম তাকে বলল, ‘দম্ভ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ দাম্ভিকদের ভালবাসেন না’।


وَ ابۡتَغِ فِیۡمَاۤ اٰتٰىکَ اللّٰہُ الدَّارَ الۡاٰخِرَۃَ وَ لَا تَنۡسَ نَصِیۡبَکَ مِنَ الدُّنۡیَا وَ اَحۡسِنۡ کَمَاۤ اَحۡسَنَ اللّٰہُ اِلَیۡکَ وَ لَا تَبۡغِ الۡفَسَادَ فِی الۡاَرۡضِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یُحِبُّ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۷۷﴾

আর আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন তাতে তুমি আখিরাতের নিবাস অনুসন্ধান কর। তবে তুমি দুনিয়া থেকে তোমার অংশ ভুলে যেয়ো না। তোমার প্রতি আল্লাহ যেরূপ অনুগ্রহ করেছেন তুমিও সেরূপ অনুগ্রহ কর। আর যমীনে ফাসাদ করতে চেয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ ফাসাদকারীদের ভালবাসেন না’।


قَالَ اِنَّمَاۤ اُوۡتِیۡتُہٗ عَلٰی عِلۡمٍ عِنۡدِیۡ ؕ اَوَ لَمۡ یَعۡلَمۡ اَنَّ اللّٰہَ قَدۡ اَهْلَکَ مِنۡ قَبۡلِہٖ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مَنۡ هُوَ اَشَدُّ مِنۡہُ قُوَّۃً وَّ اَکۡثَرُ جَمۡعًا ؕ وَ لَا یُسۡـَٔلُ عَنۡ ذُنُوۡبِہِمُ الۡمُجۡرِمُوۡنَ ﴿۷۸﴾

সে বলল, ‘আমি তো এই ধনভান্ডার প্রাপ্ত হয়েছি আমার কাছে থাকা জ্ঞান দ্বারা’। সে কি জানত না যে, আল্লাহ তার পূর্বে বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিয়েছেন, যারা ছিল তার থেকে শক্তিমত্তায় প্রবলতর এবং জনসংখ্যায় অধিক। আর অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না।


فَخَرَجَ عَلٰی قَوۡمِہٖ فِیۡ زِیۡنَتِہٖ ؕ قَالَ الَّذِیۡنَ یُرِیۡدُوۡنَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا یٰلَیۡتَ لَنَا مِثۡلَ مَاۤ اُوۡتِیَ قَارُوۡنُ ۙ اِنَّہٗ لَذُوۡ حَظٍّ عَظِیۡمٍ ﴿۷۹﴾

অতঃপর সে তার কওমের সামনে জাঁকজমকের সাথে বের হল। যারা দুনিয়ার জীবন চাইত তারা বলল, ‘আহা! কারূনকে যেমন দেয়া হয়েছে আমাদেরও যদি তেমন থাকত! নিশ্চয় সে বিরাট সম্পদশালী।’


وَ قَالَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡعِلۡمَ وَیۡلَکُمۡ ثَوَابُ اللّٰہِ خَیۡرٌ لِّمَنۡ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا ۚ وَ لَا یُلَقّٰہَاۤ اِلَّا الصّٰبِرُوۡنَ ﴿۸۰﴾

আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল, তারা বলল, ‘ধিক তোমাদেরকে! আল্লাহর প্রতিদানই উত্তম যে ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তার জন্য। আর তা শুধু সবরকারীরাই পেতে পারে।’


فَخَسَفۡنَا بِہٖ وَ بِدَارِہِ الۡاَرۡضَ ۟ فَمَا کَانَ لَہٗ مِنۡ فِئَۃٍ یَّنۡصُرُوۡنَہٗ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ٭ وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُنۡتَصِرِیۡنَ ﴿۸۱﴾

অতঃপর আমি কারূন ও তার প্রাসাদকে মাটিতে দাবিয়ে দিলাম। তখন তার জন্য এমন কোন দল ছিল না, যে আল্লাহর মোকাবিলায় তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও নিজেকে সাহায্য করতে সক্ষম ছিল না।


وَ اَصۡبَحَ الَّذِیۡنَ تَمَنَّوۡا مَکَانَہٗ بِالۡاَمۡسِ یَقُوۡلُوۡنَ وَیۡکَاَنَّ اللّٰہَ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ وَ یَقۡدِرُ ۚ لَوۡ لَاۤ اَنۡ مَّنَّ اللّٰہُ عَلَیۡنَا لَخَسَفَ بِنَا ؕ وَیۡکَاَنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الۡکٰفِرُوۡنَ ﴿٪۸۲﴾

আর গতকাল যারা তার মত হতে প্রত্যাশা করেছিল তারা বলতে লাগল, ‘আশ্চর্য! দেখলে তো, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যার জন্য ইচ্ছা রিয্ক প্রসারিত অথবা সংকুচিত করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন তবে আমাদেরকেও তিনি দাবিয়ে দিতেন। দেখলে তো, কাফিররা সফল হয় না’।


تِلۡکَ الدَّارُ الۡاٰخِرَۃُ نَجۡعَلُہَا لِلَّذِیۡنَ لَا یُرِیۡدُوۡنَ عُلُوًّا فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا فَسَادًا ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۸۳﴾

এই হচ্ছে আখিরাতের নিবাস, যা আমি তাদের জন্য নির্ধারিত করি, যারা যমীনে ঔদ্ধত্য দেখাতে চায় না এবং ফাসাদও চায় না। আর শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য।


مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَہٗ خَیۡرٌ مِّنۡہَا ۚ وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَلَا یُجۡزَی الَّذِیۡنَ عَمِلُوا السَّیِّاٰتِ اِلَّا مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸۴﴾

কেউ পূণ্য নিয়ে আসলে তার জন্য থাকবে তা থেকে উত্তম প্রতিদান। আর কেউ পাপ নিয়ে আসলে তবে যারা মন্দকর্ম করেছে তাদের শুধু তারই প্রতিদান দেওয়া হবে যা তারা করেছে।


اِنَّ الَّذِیۡ فَرَضَ عَلَیۡکَ الۡقُرۡاٰنَ لَرَآدُّکَ اِلٰی مَعَادٍ ؕ قُلۡ رَّبِّیۡۤ اَعۡلَمُ مَنۡ جَآءَ بِالۡہُدٰی وَ مَنۡ هُوَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۸۵﴾

নিশ্চয় যিনি তোমার প্রতি কুরআনকে বিধানস্বরূপ দিয়েছেন, অবশ্যই তিনি তোমাকে প্রত্যাবর্তনস্থলে ফিরিয়ে নেবেন। বল, ‘আমার রব বেশী জানেন, কে হিদায়াত নিয়ে এসেছে, আর কে রয়েছে স্পষ্ট পথভ্রষ্টতায়’।


وَ مَا کُنۡتَ تَرۡجُوۡۤا اَنۡ یُّلۡقٰۤی اِلَیۡکَ الۡکِتٰبُ اِلَّا رَحۡمَۃً مِّنۡ رَّبِّکَ فَلَا تَکُوۡنَنَّ ظَہِیۡرًا لِّلۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۫۸۶﴾

আর তুমি আশা করছিলে না যে, তোমার প্রতি কিতাব (কুরআন) নাযিল করা হবে, বরং তা তোমার রবের পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। অতএব, তুমি কখনো কাফিরদের জন্য সাহায্যকারী হয়ো না।


وَ لَا یَصُدُّنَّکَ عَنۡ اٰیٰتِ اللّٰہِ بَعۡدَ اِذۡ اُنۡزِلَتۡ اِلَیۡکَ وَ ادۡعُ اِلٰی رَبِّکَ وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿ۚ۸۷﴾

আর আল্লাহর আয়াতসমূহ তোমার প্রতি নাযিল হওয়ার পর তারা যেন তোমাকে তা থেকে বিরত রাখতে না পারে, তোমার রবের প্রতি তুমি আহবান কর এবং তুমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।


وَ لَا تَدۡعُ مَعَ اللّٰہِ اِلٰـہًا اٰخَرَ ۘ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا هُوَ ۟ کُلُّ شَیۡءٍ هَالِکٌ اِلَّا وَجۡہَہٗ ؕ لَہُ الۡحُکۡمُ وَ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ ﴿٪۸۸﴾

আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তাঁর চেহারা (সত্ত্বা) ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল, সিদ্ধান্ত তাঁরই এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।