53

আন-নাজম

আয়াত সংখ্যা 62

0.00

4:54

وَ النَّجۡمِ اِذَا هَوٰی ۙ﴿۱﴾

শপথ নক্ষত্রের, যখন তা হয় অস্তমিত,


مَا ضَلَّ صَاحِبُکُمۡ وَ مَا غَوٰی ۚ﴿۲﴾

তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়,


وَ مَا یَنۡطِقُ عَنِ الۡہَوٰی ؕ﴿۳﴾

এবং সে মনগড়া কথাও বলে না।


اِنۡ هُوَ اِلَّا وَحۡیٌ یُّوۡحٰی ۙ﴿۴﴾

তা তো ওহী, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়,


عَلَّمَہٗ شَدِیۡدُ الۡقُوٰی ۙ﴿۵﴾

তাকে শিক্ষা দিয়েছে প্রবল শক্তিধর,


ذُوۡ مِرَّۃٍ ؕ فَاسۡتَوٰی ۙ﴿۶﴾

প্রজ্ঞার অধিকারী। অতঃপর সে স্থির হয়েছিল,


وَ هُوَ بِالۡاُفُقِ الۡاَعۡلٰی ؕ﴿۷﴾

তখন সে ঊর্ধ্ব দিগন্তে।


ثُمَّ دَنَا فَتَدَلّٰی ۙ﴿۸﴾

তারপর সে নিকটবর্তী হল, অতঃপর আরো কাছে এল।


فَکَانَ قَابَ قَوۡسَیۡنِ اَوۡ اَدۡنٰی ۚ﴿۹﴾

তখন সে নৈকট্য ছিল দু’ ধনুকের পরিমাণ, অথবা তারও কম।


فَاَوۡحٰۤی اِلٰی عَبۡدِہٖ مَاۤ اَوۡحٰی ﴿ؕ۱۰﴾

অতঃপর তিনি তাঁর বান্দার প্রতি যা ওহী করার তা ওহী করলেন।


مَا کَذَبَ الۡفُؤَادُ مَا رَاٰی ﴿۱۱﴾

সে যা দেখেছে, অন্তকরণ সে সম্পর্কে মিথ্যা বলেনি।


اَفَتُمٰرُوۡنَہٗ عَلٰی مَا یَرٰی ﴿۱۲﴾

সে যা দেখেছে, সে সম্পর্কে তোমরা কি তার সাথে বিতর্ক করবে?


وَ لَقَدۡ رَاٰہُ نَزۡلَۃً اُخۡرٰی ﴿ۙ۱۳﴾

নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল


عِنۡدَ سِدۡرَۃِ الۡمُنۡتَہٰی ﴿۱۴﴾

প্রান্তবর্তী বদরী বৃক্ষের নিকট,


عِنۡدَهَا جَنَّۃُ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۱۵﴾

যার নিকট অবস্থিত বাসোদ্যান।


اِذۡ یَغۡشَی السِّدۡرَۃَ مَا یَغۡشٰی ﴿ۙ۱۶﴾

যখন কুল গাছটিকে যা আচ্ছাদিত করার তা আচ্ছাদিত করেছিল।


مَا زَاغَ الۡبَصَرُ وَ مَا طَغٰی ﴿۱۷﴾

তার দৃষ্টি এদিক-সেদিক যায়নি এবং সীমাও অতিক্রম করেনি।


لَقَدۡ رَاٰی مِنۡ اٰیٰتِ رَبِّہِ الۡکُبۡرٰی ﴿۱۸﴾

নিশ্চয় সে তার রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ থেকে দেখেছে।


اَفَرَءَیۡتُمُ اللّٰتَ وَ الۡعُزّٰی ﴿ۙ۱۹﴾

তোমরা লাত ও ‘উযযা সম্পর্কে আমাকে বল’?


وَ مَنٰوۃَ الثَّالِثَۃَ الۡاُخۡرٰی ﴿۲۰﴾

আর মানাত সম্পর্কে, যা তৃতীয় আরেকটি?


اَلَکُمُ الذَّکَرُ وَ لَہُ الۡاُنۡثٰی ﴿۲۱﴾

তবে কি তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান এবং আল্লাহ্‌র জন্য কন্যা সন্তান?


تِلۡکَ اِذًا قِسۡمَۃٌ ضِیۡزٰی ﴿۲۲﴾

এ ধরণের বন্টনতো অসঙ্গত।


اِنۡ هِیَ اِلَّاۤ اَسۡمَآءٌ سَمَّیۡتُمُوۡهَاۤ اَنۡتُمۡ وَ اٰبَآؤُکُمۡ مَّاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ بِہَا مِنۡ سُلۡطٰنٍ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ مَا تَہۡوَی الۡاَنۡفُسُ ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَهُمۡ مِّنۡ رَّبِّہِمُ الۡہُدٰی ﴿ؕ۲۳﴾

এগুলো কেবল কতিপয় নাম, যে নামগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষেরা রেখেছ। এ ব্যাপারে আল্লাহ কোন দলীল-প্রমাণ নাযিল করেননি। তারা তো কেবল অনুমান এবং নিজেরা যা চায়, তার অনুসরণ করে। অথচ তাদের কাছে তাদের রবের পক্ষ থেকে হিদায়াত এসেছে।


اَمۡ لِلۡاِنۡسَانِ مَا تَمَنّٰی ﴿۫ۖ۲۴﴾

মানুষ যা চায় তাই কি সে পায় ?


فَلِلّٰہِ الۡاٰخِرَۃُ وَ الۡاُوۡلٰی ﴿٪۲۵﴾

বস্তুত ইহকাল ও পরকাল আল্লাহ্‌রই।


وَ کَمۡ مِّنۡ مَّلَکٍ فِی السَّمٰوٰتِ لَا تُغۡنِیۡ شَفَاعَتُہُمۡ شَیۡئًا اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ اَنۡ یَّاۡذَنَ اللّٰہُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَرۡضٰی ﴿۲۶﴾

আর আসমানসমূহে অনেক ফেরেশতা রয়েছে, তাদের সুপারিশ কোনই কাজে আসবে না। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন এবং যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট, তার ব্যাপারে অনুমতি দেয়ার পর।


اِنَّ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ لَیُسَمُّوۡنَ الۡمَلٰٓئِکَۃَ تَسۡمِیَۃَ الۡاُنۡثٰی ﴿۲۷﴾

নিশ্চয় যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না, তারাই ফেরেশতাদেরকে নারীবাচক নামে নামকরণ করে থাকে।


وَ مَا لَہُمۡ بِہٖ مِنۡ عِلۡمٍ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ ۚ وَ اِنَّ الظَّنَّ لَا یُغۡنِیۡ مِنَ الۡحَقِّ شَیۡئًا ﴿ۚ۲۸﴾

অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞানই নেই। তারা তো কেবল অনুমানেরই অনুসরণ করে। আর নিশ্চয় অনুমান সত্যের মোকাবেলায় কোনই কাজে আসে না।


فَاَعۡرِضۡ عَنۡ مَّنۡ تَوَلّٰی ۬ۙ عَنۡ ذِکۡرِنَا وَ لَمۡ یُرِدۡ اِلَّا الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ﴿ؕ۲۹﴾

অতএব তুমি তাকে উপেক্ষা করে চল, যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয় এবং কেবল দুনিয়ার জীবনই কামনা করে।


ذٰلِکَ مَبۡلَغُہُمۡ مِّنَ الۡعِلۡمِ ؕ اِنَّ رَبَّکَ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ۙ وَ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنِ اهْتَدٰی ﴿۳۰﴾

এটাই তাদের জ্ঞানের শেষসীমা। নিশ্চয় তোমার রবই সবচেয়ে ভাল জানেন তার সম্পর্কে, যে তার পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনিই সবচেয়ে ভাল জানেন তার সম্পর্কে, যে হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছে।


وَ لِلّٰہِ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ۙ لِیَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اَسَآءُوۡا بِمَا عَمِلُوۡا وَ یَجۡزِیَ الَّذِیۡنَ اَحۡسَنُوۡا بِالۡحُسۡنٰی ﴿ۚ۳۱﴾

আর আসমানসমূহে যা রয়েছে এবং যমীনে যা রয়েছে, তা আল্লাহরই। যাতে তিনি তাদের কাজের প্রতিফল দিতে পারেন যারা মন্দ কাজ করে এবং তাদেরকে তিনি উত্তম পুরস্কার দিতে পারেন যারা সৎকর্ম করে ।


اَلَّذِیۡنَ یَجۡتَنِبُوۡنَ کَبٰٓئِرَ الۡاِثۡمِ وَ الۡفَوَاحِشَ اِلَّا اللَّمَمَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ وَاسِعُ الۡمَغۡفِرَۃِ ؕ هُوَ اَعۡلَمُ بِکُمۡ اِذۡ اَنۡشَاَکُمۡ مِّنَ الۡاَرۡضِ وَ اِذۡ اَنۡتُمۡ اَجِنَّۃٌ فِیۡ بُطُوۡنِ اُمَّہٰتِکُمۡ ۚ فَلَا تُزَکُّوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنِ اتَّقٰی ٪﴿۳۲﴾

যারা ছোট খাট দোষ-ত্রুটি ছাড়া বড় বড় পাপ ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকে, নিশ্চয় তোমার রব ক্ষমার ব্যাপারে উদার, তিনি তোমাদের ব্যাপারে সম্যক অবগত। যখন তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যখন তোমরা তোমাদের মাতৃগর্ভে ভ্রূণরূপে ছিলে। কাজেই তোমরা আত্মপ্রশংসা করো না। কে তাকওয়া অবলম্বন করেছে, সে সম্পর্কে তিনিই সম্যক অবগত।


اَفَرَءَیۡتَ الَّذِیۡ تَوَلّٰی ﴿ۙ۳۳﴾

তুমি কি সেই ব্যক্তিকে দেখেছ, যে মুখ ফিরিয়ে নেয়?


وَ اَعۡطٰی قَلِیۡلًا وَّ اَکۡدٰی ﴿۳۴﴾

আর সামান্য দান করে, তারপর বন্ধ করে দেয়?


اَعِنۡدَہٗ عِلۡمُ الۡغَیۡبِ فَہُوَ یَرٰی ﴿۳۵﴾

তার কাছে কি আছে গায়েবের জ্ঞান যে, সে দেখছে?


اَمۡ لَمۡ یُنَبَّاۡ بِمَا فِیۡ صُحُفِ مُوۡسٰی ﴿ۙ۳۶﴾

নাকি মূসার কিতাবে যা আছে, সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়নি ?


وَ اِبۡرٰهِیۡمَ الَّذِیۡ وَفّٰۤی ﴿ۙ۳۷﴾

আর ইবরাহীমের কিতাবে, যে (নির্দেশ) পূর্ণ করেছিল।


اَلَّا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ﴿ۙ۳۸﴾

তা এই যে, কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না।


وَ اَنۡ لَّیۡسَ لِلۡاِنۡسَانِ اِلَّا مَا سَعٰی ﴿ۙ۳۹﴾

আর এই যে, মানুষ যা চেষ্টা করে, তাই সে পায়।


وَ اَنَّ سَعۡیَہٗ سَوۡفَ یُرٰی ﴿۪۴۰﴾

আর এই যে, তার প্রচেষ্টার ফল শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে।


ثُمَّ یُجۡزٰىہُ الۡجَزَآءَ الۡاَوۡفٰی ﴿ۙ۴۱﴾

তারপর তাকে পূর্ণ প্রতিফল প্রদান করা হবে।


وَ اَنَّ اِلٰی رَبِّکَ الۡمُنۡتَہٰی ﴿ۙ۴۲﴾

আর নিশ্চয় তোমার রবের নিকটই হলো শেষ গন্তব্য।


وَ اَنَّہٗ هُوَ اَضۡحَکَ وَ اَبۡکٰی ﴿ۙ۴۳﴾

আর নিশ্চয় তিনিই হাসান এবং তিনিই কাঁদান।


وَ اَنَّہٗ هُوَ اَمَاتَ وَ اَحۡیَا ﴿ۙ۴۴﴾

আর নিশ্চয় তিনিই মৃত্যু দেন এবং তিনিই জীবন দেন।


وَ اَنَّہٗ خَلَقَ الزَّوۡجَیۡنِ الذَّکَرَ وَ الۡاُنۡثٰی ﴿ۙ۴۵﴾

আর তিনিই যুগল সৃষ্টি করেন- পুরুষ ও নারী।


مِنۡ نُّطۡفَۃٍ اِذَا تُمۡنٰی ﴿۪۴۶﴾

এক ফোঁটা শুক্র হতে যখন তা নিক্ষিপ্ত হয়


وَ اَنَّ عَلَیۡہِ النَّشۡاَۃَ الۡاُخۡرٰی ﴿ۙ۴۷﴾

আর নিশ্চয় পুনরায় সৃষ্টির দায়িত্ব তাঁর উপরই।


وَ اَنَّہٗ هُوَ اَغۡنٰی وَ اَقۡنٰی ﴿ۙ۴۸﴾

আর তিনিই অভাবমুক্ত করেন ও সম্পদ দান করেন।


وَ اَنَّہٗ هُوَ رَبُّ الشِّعۡرٰی ﴿ۙ۴۹﴾

আর তিনিই শিরার রব।


وَ اَنَّہٗۤ اَهْلَکَ عَادَۨ ا الۡاُوۡلٰی ﴿ۙ۵۰﴾

আর তিনিই প্রাচীন ‘আদ জাতিকে ধ্বংস করেছেন।


وَ ثَمُوۡدَا۠ فَمَاۤ اَبۡقٰی ﴿ۙ۵۱﴾

আর সামূদ জাতিকেও। কাউকে তিনি অবশিষ্ট রাখেন নি।


وَ قَوۡمَ نُوۡحٍ مِّنۡ قَبۡلُ ؕ اِنَّہُمۡ کَانُوۡا هُمۡ اَظۡلَمَ وَ اَطۡغٰی ﴿ؕ۵۲﴾

আর পূর্বে নূহের কওমকেও। নিশ্চয় তারা ছিল অতিশয় যালিম ও চরম অবাধ্য।


وَ الۡمُؤۡتَفِکَۃَ اَهْوٰی ﴿ۙ۵۳﴾

আর তিনি উল্টানো আবাসভূমিকে নিক্ষেপ করেছিলেন।


فَغَشّٰہَا مَا غَشّٰی ﴿ۚ۵۴﴾

অতঃপর সেটাকে আচ্ছন্ন করেছিল, যা আচ্ছন্ন করার ছিল।


فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّکَ تَتَمَارٰی ﴿۵۵﴾

তাহলে তুমি তোমার রবের কোন্ অনুগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে?


هٰذَا نَذِیۡرٌ مِّنَ النُّذُرِ الۡاُوۡلٰی ﴿۵۶﴾

অতীত সতর্ককারীদের মত এই নবীও একজন সতর্ককারী।


اَزِفَتِ الۡاٰزِفَۃُ ﴿ۚ۵۷﴾

কিয়ামত নিকটবর্তী।


لَیۡسَ لَہَا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ کَاشِفَۃٌ ﴿ؕ۵۸﴾

আল্লাহ ছাড়া কেউই তা প্রকাশ করতে সক্ষম নয়।


اَفَمِنۡ هٰذَا الۡحَدِیۡثِ تَعۡجَبُوۡنَ ﴿ۙ۵۹﴾

তোমরা কি এ কথায় বিস্ময় বোধ করছ?


وَ تَضۡحَکُوۡنَ وَ لَا تَبۡکُوۡنَ ﴿ۙ۶۰﴾

আর হাসছ এবং কাঁদছ না?


وَ اَنۡتُمۡ سٰمِدُوۡنَ ﴿۶۱﴾

তোমরা তো উদাসীন,


فَاسۡجُدُوۡا لِلّٰہِ وَ اعۡبُدُوۡا ﴿٪ٛ۶۲﴾

অতএব আল্লাহ্কে সিজ্দা কর এবং তাঁরই ‘ইবাদত কর।